বৃহস্পতিবার থেকেই করোনা ভাইরাসের ভ্যাক্সিন ট্রায়াল শুরু হতে চলেছে, এমন সুখবর জানাচ্ছে ব্রিটেন সরকার। করোনার ভ্যাকসিন মানব শরীরে পরীক্ষা করতে চলেছেন ব্রিটিশ বিশেষজ্ঞরা। আশা করা যাচ্ছে এতে নির্মূল হবে করোনা ভাইরাস
কক্সবাংলা ডটকম(২২ এপ্রিল) :: বৈশ্বিক মহামারি করোনাভাইরাসে কানাডায় হু হু করে বেড়েই চলছে আক্রান্ত ও মৃতের সংখ্যা। ইতিমধ্যে কানাডায় ছয়জন প্রবাসী বাঙালি মৃত্যুবরণ করেছেন এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে।
তবে আশার কথা হলো- এন্টিবায়োটিক এজিথ্রোমাইসিন এবং ম্যালেরিয়ার ওষুধ ক্লোরোকুইন সেবনের মাধ্যমে করোনাভাইরাসের রোগীকে সারিয়ে তোলা যায় কি না তার আনুষ্ঠানিক পরীক্ষা শুরু করেছে কানাডা।
কানাডার স্বাস্থ্য বিভাগ মঙ্গলবার এই ক্লিনিক্যাল টেস্টের অনুমোদন দেওয়ার পর থেকে হ্যামিল্টনে এর পরীক্ষা শুরু হয়েছে।
এরই মধ্যে হ্যামিল্টনের বিভিন্ন হাসপাতালে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত ৫০০ রোগীকে পরীক্ষার আওতায় আনার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে।একই সঙ্গে নিজেদের বাড়িতে রেখে আরও এক হাজার রোগীকে এই পরীক্ষার আওতায় চিকিৎসা দেওয়া হবে। দ্বৈব চয়নের ভিত্তিতে এসব রোগীদের মধ্য থেকে কাউকে এই ওষুধের মিশ্রণ এবং কাউকে থেরাপি দিয়ে দিয়ে চিকিৎসা করা হবে।
গবেষকরা দেখবেন কোন প্রক্রিয়াটি কার্যকর এবং নিরাপদ।
গবেষক দলের অন্যতম ড. সোনিয়া আনন্দ মঙ্গলবার প্রথম রোগীকে এই ওষুধ সেবন করতে দিয়ে এক টুইট বার্তায় উচ্ছাস প্রকাশ করেন।
ম্যাকমাস্টার ইউনিভার্সিটির পপুলেশন হেলথ রিসার্চ ইন্সটিটিউট এবং হ্যামিল্টন হেলথ সায়েন্স সম্মিলিতভাবে এই ক্লিনিক্যাল টেস্ট শুরু করেছে।
এই উদ্যোগের প্রধান গবেষক ড. এমিলি বেইলি টরন্টো স্টারকে বলেছেন, এই ওষুধটি কাজ করে কি-না সেটি আমরা দেখতে চাই। ওষুধটি যদি আসলেই কোনো কাজ না করে সেটিও আমাদের নিশ্চিত হতে হবে যাতে নতুন কোনো সমাধানের দিকে আমরা মনোযোগি হতে পারি।
বিশ্বের ১০টি দেশের গবেষকরা এই ক্লিনিক্যাল টেষ্টের সঙ্গে সম্পৃক্ত রয়েছেন বলে জানা গেছে।
কানাডায় এখন পর্যন্ত করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা ৩৮ হাজার ৪২২ এবং মারা গেছেন ১ হাজার ৮৩৪ জন। এ ছাড়া করোনা থেকে ইতোমধ্যেই সুস্থ হয়ে উঠেছেন ১৩ হাজার ১৮৮ জন।
বৃহস্পতিবার থেকেই করোনা ভাইরাসের ভ্যাক্সিন ট্রায়াল শুরু হতে চলেছে, এমন সুখবর জানাচ্ছে ব্রিটেন সরকার। করোনার ভ্যাকসিন মানব শরীরে পরীক্ষা করতে চলেছেন ব্রিটিশ বিশেষজ্ঞরা। আশা করা যাচ্ছে এতে নির্মূল হবে করোনা ভাইরাস
ব্রিটেন সরকার জানিয়েছে, আগামীকাল থেকে শুরু হবে মানবদেহে এই ভ্যাক্সিন পরীক্ষা। একটি ভ্যাকসিন নিয়ে এই মুহূর্তে কাজ চলছে বলে জানিয়েছেন গিলবার্ট। এটির নাম ChAdOx1 nCoV-19। ৫১০ জন স্বেচ্ছাসেবকের টিম বানানো হয়েছে পরীক্ষার জন্য। এদের প্রত্যেকের বয়স ১৮ থেকে ৫৫ বছরের মধ্যে।
সারা বিশ্বের অন্য গবেষকদের মতো অক্সফোর্ডের গবেষকেরাও কোভিড ১৯ -এর অ্যান্টিবায়োটিক তৈরিতে কাজে লেগে পড়েছে। তবে প্রাথমিক ভাবে মনে করা হচ্ছিল এই ভাইরাসের বিরুদ্ধে কার্যকরী ওষুধ তৈরিতে কমপক্ষে ১২ থেকে ১৮ মাস সময় লাগবে।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ‘হু’ (ওয়ার্ল্ড হেলথ অর্গানাইজেশন) জানাচ্ছে, এই মুহূর্তে বিশ্বজুড়ে মোট ৭০ টি করোনার ভ্যাকসিন তৈরি করা হচ্ছে। চিনে একদল গবেষক ও যুক্তরাষ্ট্রে অপর দুই গবেষক দল ইতিমধ্যেই মানব শরীরে তাঁদের তৈরি ভ্যাকসিনের পরীক্ষা করতে শুরু করেছে।
অক্সফোর্ডের ভ্যাকসিন পরীক্ষার ক্ষেত্রে ইতিমধ্যেই ৫১০ জনকে নিয়োগ করা হয়েছে। এদের প্রত্যেকেরই বয়স ১৮ থেকে ৫৫- এর মধ্যে। এরা অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের তৈরি ওই ওষুধ নিজেদের শরীরে পরীক্ষার জন্য প্রস্তুত। আপাতত আশা করা হচ্ছে, জেনার ইনস্টিটিউট এবং অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের এই ভ্যাকসিন সেপ্টেম্বরে প্রস্তুত হবে।
তবে এখনও পর্যন্ত যতদূর কাজ এগিয়েছে, সফলতা মিলেছে। যে ওষুধ তৈরি করা হচ্ছে, তা সরাসরি গিয়ে এই ভাইরাস বা এনজাইমের ওপর কাজ করবে। শুধু করোনা ভাইরাসই নয়, এই ধরণের ড্রাগ বা ওষুধ হৃদরোগ, আর্থারাইটিস, স্ট্রোক, ক্যান্সারের মতো রোগেরও উত্তর হতে পারে বলে জানান লিউক। তিনি বলেন করোনার উত্তর রয়েছে ওই ৬টি ড্রাগ কম্পাউন্ডের মধ্যে।
Posted ২:৪৯ অপরাহ্ণ | বুধবার, ২২ এপ্রিল ২০২০
coxbangla.com | Chanchal Das Gupta