এম.নজরুল ইসলাম,কুতুবদিয়া(২৫ ফেব্রুয়ারী) :: কক্সবাজারের দ্বীপ উপজেলা কুতুবদিয়ায় স্থাপিত ১২ টি কমিউনিটি ক্লিনিক টানা ১মাস বন্ধ থাকায় দুর্ভোগে পড়েছে গ্রামীণ জনপদের দরিদ্র রোগীরা। কমিউনিটি ক্লিনিকে কর্মরত হেলথ প্রোভাইডার (সিএইচসিপি)গণ চাকরি জাতীয় করণের দাবীতে আনন্দোলনে নামায় দীর্ঘ ১ মাস ধরে বন্ধ রয়েছে উপজেলার বিভিন্ন প্রান্তে অবস্থিত কমিউনিটি ক্লিনিকগুলো। এতে চরম দুভোর্গ পোহাচ্ছে স্থানীয় রোগীরা।
গ্রামীণ জনপদের মৌলিক স্বাস্থ্য সেবা নিশ্চিত করার লক্ষে ১৯৯৮ সালে শুরু হয় কমিউনিটি ক্লিনিকের যাত্রা। গ্রামীণ দরিদ্র জনগোষ্ঠীর দোরগোড়ায় স্বাস্থ্য সেবা পৌঁছে দিতে আ’লীগ সরকারই নিয়েছিল কমিউনিটি ক্লিনিক প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ। তাতে সফলতাও পেয়েছে সরকার। মাতৃ মৃত্যু ও শিশু মৃত্যুর হার কমেছে তুলনা মূলক হারে।
কুতুবদিয়া থেকে আনন্দোলনরত সিএইচসিপি এসোসিয়েশনেনর সভাপতি মজনু মোর্শেদ চৌধুরী জানান, কমিউনিটি ক্লিনিকগুলোতে সকল রোগের প্রাথমিক সেবা, শিশুর প্রাথমিক চিকিৎসা,গর্ভবতী মায়েদের নরমাল চেকআপ ও চিকিৎসা, ডায়াবেটিক পরীক্ষা,মা ও শিশু পরিচর্যা পরামর্শ প্রদান করার পাশাপাশি প্রায় ৩০ ধরণের ওষুধ বিনামূল্যে রোগীদের কাছে পৌঁছে দিচ্ছে সরকার।
যার ফলে গ্রামীণ পর্যায়ে কমিউনিটি ক্লিনিকগুলো অল্প সময়ের মধ্যেই জনপ্রিয়তা লাভ করেছে। কিন্তু সরকার দীর্ঘদিন ধরে কমিউনিটি হেলথ প্রোভাইডারদের চাকরি রাজস্বখাতে না নেয়ায় সরকারিকরণের দাবিতে আনন্দোলন করতে বাধ্য হয়েছে সারাদেশে কর্মরত সিএইচসিপিরা। সবার একটাই দাবী ‘‘ চাকরি জাতীয়করণ চাই’।
একই দাবী জানিয়েছেন কুতুবদিয়া সিএইসসিপি এসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক ছৈয়দ আলমসহ অন্যান্যরা।
এদিকে দীর্ঘ মাস ধরে এলাকার কমিউনিটি ক্লিনিক বন্ধ থাকায় বিপাকে পড়েছে স্থানীয়রা। অতিরিক্ত টাকা ও সময় ব্যয় করে ঝুঁকি নিয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ছুটছেন দূর্গম এলাকার রোগীরা। এতে চরম ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে তাদের।
লেমশীখালী ইউনিয়নের ঠান্ডা চকিদার পাড়ায় অবস্থিত কমিউনিটি ক্লিনিকে সরেজমিন পরিদর্শন করতে গেলে কথা হয় স্থানীয়দের সাথে।
তারা জানান কমিউনিটি ক্লিনিক বন্ধ থাকায় রোগে-শোকে দূর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে স্থানীয়দের। তবে কেউ জানে না কমিউনিটি ক্লিনিক আবার কখন খোলা হবে? এলাকার গরীব আবু শামা জানান, তার শিশু সন্তান ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে কষ্ট পাচ্ছে কয়েকদিন ধরে। কমিউনিটি ক্লিনিক খোলা থাকলে এতদিন কষ্ট পেতে হত না,বললেন তিনি।
এলাকার প্রতিবন্ধী সালেহা বেগম ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, দীর্ঘ একমাস ধরে ক্লিনিক বন্ধ থাকায় আমরা সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছি। আমি একজন প্রতিবন্ধী উপজেলা সদরে গিয়ে সেবা নেয়া আমার পক্ষে কিভাবে সম্ভব? তিনি ক্লিনিকগুলো খোলে দেওয়ার দাবী জানান।
একই ধরনের অবস্থা দেখা গেছে উপজেলার অন্যান্য কমিউনিটি ক্লিনিকগুলোতেও। উপজোর কৈয়ারবিল ইউনিয়নের বিন্দা পাড়া কমিউনিটি ক্লিনিকে দেখা গেল প্রধান ফটকে তালা ঝুলছে। মার্কার কালিতে নোটিস করা হয়েছে “অনির্দিষ্ট কালের জন্য ক্লিনিক বন্ধ থাকবে, সাময়িক অসুবিধার জন্য দুঃখিত”।
Posted ৭:২১ অপরাহ্ণ | রবিবার, ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৮
coxbangla.com | Chanchal Das Gupta