বুধবার ৮ই মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ২৫শে বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

শিরোনাম

বুধবার ৮ই মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

শিরোনাম

খালেদা জিয়ার মামলা শেষ পর্যায়ে : কী করবে বিএনপি ?

রবিবার, ২৪ ডিসেম্বর ২০১৭
243 ভিউ
খালেদা জিয়ার মামলা শেষ পর্যায়ে : কী করবে বিএনপি ?

কক্সবাংলা ডটকম(২৩ ডিসেম্বর) :: বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে দুটি দুর্নীতি মামলার কার্যক্রম শেষ হতে চলেছে। আগামী বছরের শুরুর দিকে এসব মামলায় রায় হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। রায়টি অনুকূলে না এলে তা মোকাবিলা করার বিষয়ে ভেতরে-ভেতরে চিন্তাভাবনা করছেন বিএনপির সিনিয়র নেতারা।

ঘরে-বাইরে আনুষ্ঠানিক-অনানুষ্ঠানিক বৈঠকে চলছে চুলচেরা বিশ্লেষণ। খালেদা জিয়াকে গ্রেফতারের কোনও শঙ্কা দেখা দিলে সেক্ষেত্রে প্রতিবাদ ও প্রতিরোধের ধরন, রাজপথে প্রতিক্রিয়ার কৌশল নিয়েও চিন্তাভাবনা চলছে দলটির ভেতরে।

বিএনপির নেতারা বলছেন, জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট ও জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট মামলার রায় যে সময়ই হোক না কেন, দলে দুই ধরনের প্রস্তুতি রয়েছে। প্রথমত, রায়ের পর পরবর্তী আইনি পদক্ষেপ নেওয়া হবে এবং দ্বিতীয়ত, রাজনৈতিকভাবেও মোকাবিলার চিন্তা চলছে। এক্ষেত্রে খালেদা জিয়াকে গ্রেফতারের প্রতিবাদে তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়া অনেক তীব্র হবে বলে জানিয়েছেন কেন্দ্রীয় ও তৃণমূলের অনেক নেতা।

বিষয়টি স্পষ্ট হয়েছে গত শুক্রবার দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের বক্তব্যেও। অবশ্য রায়টি কোনোভাবে প্রভাবিত না হলে খালেদা জিয়ার সাজা হচ্ছে না, বক্তৃতা-বিবৃতিতে এমনটি বলে চলেছেন দলটির নেতারা।

মামলা, সম্ভাব্য রায় ও দলীয় চিন্তাভাবনা বিষয়ে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সিনিয়র সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, ‘আমরা বৈঠক করে তো কোনও ধারণা করি না। ব্যক্তিগতভাবে আমার ধারণা, যদি সুবিচার হয়; যেহেতু এই দুটি মামলায় কোনও শক্ত অভিযোগ নেই, সেজন্য এই মামলায় আদালত (খালেদা জিয়াকে) সাজা দিতে পারবেন না।

সঠিক বিচার হলে সম্ভব নয়। যে কথা বলা হচ্ছে, এতিমের টাকা আত্মসাৎ করা হয়েছে, এটা তো ঘটেইনি। ম্যাটারিয়ালসের (বস্তুগত) দিক থেকে যদি বিচার করা হয়, তাহলে সাজা দেওয়া সম্ভব হবে নয়।’

স্থায়ী কমিটির আরেক সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ বলেন, ‘নিরপেক্ষভাবে বিচার করা হলে খালেদা জিয়া সম্পূর্ণভাবে খালাস পাবেন। তার বিরুদ্ধে কোনও অভিযোগ প্রমাণিত হয়নি, (দুদক)পারেনি।’

তিনি আরও বলেন, ‘এই মামলা যে কারণে করা হলো, অথচ কোনও কাগজে তার সই নেই, কোনও ব্যাংক চেকে সই নেই। বিএনপির চেয়ারপারসন এই ট্রাস্টি বোর্ডের সদস্য নন, ট্রাস্টের সঙ্গে সংশ্লিষ্টতা নেই, কোনও সম্পর্ক নেই। একটি ট্রাস্ট পরিচালনার জন্য যে লোকজন থাকে, তিনি সেখানেও নেই। এমনকি আদালতেও তার সংশ্লিষ্টতা দেখাতে পারেনি।’

বিএনপির চেয়ারপারসনের গণমাধ্যম বিভাগের কর্মকর্তা শায়রুল কবির খান জানান, ‘খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে এক-এগারো সরকারের সময়ে করা দুটি মামলা রয়েছে। এছাড়া, রাজনৈতিকভাবে গত কয়েক বছরে তার বিরুদ্ধে আরও ১৪টি মামলা হয়েছে।’

জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট ও চ্যারিটেবল ট্রাস্ট মামলা দুটি দুদকের করা। খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে আদালতে ৩৭টি মামলা বিচারাধীন রয়েছে। পাঁচটি মামলা প্রধানমন্ত্রী থাকার সময় দুর্নীতির অভিযোগে করা। দুর্নীতির মামলাগুলো এক-এগারোর তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় করা। বাকি মামলাগুলোয় গাড়িতে অগ্নিসংযোগ, হত্যা, মানহানি ও রাষ্ট্রদ্রোহের অভিযোগে করা হয়েছে।

বিচারিক কার্যক্রম শেষের দিকে থাকা মামলা দুটি সম্পর্কে জানা গেছে, দুই কোটি ১০ লাখ ৭১ হাজার ৬৭১ টাকা আত্মসাতের অভিযোগে করা জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট এবং তিন কোটি ১৫ লাখ ৪৩ হাজার টাকা আত্মসাতের অভিযোগে করা জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট মামলায় খালেদা জিয়াসহ আরও কয়েকজন আসামি আছেন। তাদের মধ্যে অন্যতম তার বড় ছেলে ও দলের সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমান।

খালেদা জিয়ার আইনজীবী ও বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার জমির উদ্দিন সরকার বলেন, ‘মামলার বিচার যদি আইনের স্বাভাবিক গতিতে যায়, মামলার কাগজপত্র পড়ে যা দেখলাম, তাতে তার জেল হওয়ার কারণ নেই। তবে সম্পূর্ণরূপে আদালতের ওপর নির্ভর করছে। কোর্ট যদি মনের মতো, মানে আইনমতো হয়, আমার বিশ্বাস খালেদা জিয়া দুটি মামলাতেই খালাস পাবেন।’

তিনি আরও বলেন, ‘এখন পর্যন্ত আইন যা আছে, তাতে আপিল করলে জামিন পাবেন এবং জামিন পেলেই তিনি নির্বাচন করতে পারবেন। আপিলটা ট্রায়াল কোর্টের কন্টিনিউশন। এটা শেষ নয়। আপিল কোর্টে যা হবে, এটাই ফাইনাল। যতক্ষণ না ফাইনাল হচ্ছে, ততক্ষণ পর্যন্ত আপনার জেল হয়নি। জেল হিসেবে কাউন্ট হবে জাজমেন্টের পর।’

বিএনপির একাধিক নেতা জানিয়েছেন, খালেদা জিয়াকে সাজা দেওয়া হলে কয়েকটি ধাপ অনুসরণ করতে হবে। প্রথমত, তাকে কাস্টডিতে নেওয়া হবে। এরপর খুব দ্রুততম সময়ের মধ্যেই আপিলের ব্যবস্থা করবেন তার আইনজীবীরা। এক্ষেত্রে চেয়ারপারসনের সাজার ঘটনা ছড়িয়ে পড়ামাত্রই সারাদেশে প্রতিবাদ শুরু করবে বিএনপির নেতাকর্মীরা।

বিএনপির সিলেট বিভাগের একজন দায়িত্বশীল নেতার ভাষ্য, সরকার কি ভাবতে পারছে, ম্যাডামকে গ্রেফতার করা হলে কী পরিস্থিতি হবে। সতর্ক করে এই নেতা বলেন, ‘শুধু রায় ঘোষণা হোক, এরপর দেখা যাবে।’

স্থায়ী কমিটির এক নেতা জানান, তারা আদালতকে খালেদা জিয়ার বাড়িটিকেই কারাগার ঘোষণা করতে বলবেন। এক্ষেত্রে তার শারীরিক অবস্থার অবনতির বিষয়টিও আদালতের সামনে আনা হবে। বিশেষ করে খালেদা জিয়ার শারীরিক ফিটনেস আগের চেয়ে অনেক কমে গেছে বলেও মনে করেন কয়েক জন নেতা।

যদিও সরকারের প্রভাবশালী একটি গোয়েন্দা সংস্থার সূত্রমতে, খালেদা জিয়াকে গ্রেফতারের সম্ভাবনা দেখা দিলে তার আগেই ব্যবস্থা নেবে সরকার। এক্ষেত্রে মামলার রায় দেওয়ার দিনক্ষণ ঠিক হওয়ার পরই দলটির নেতাকর্মীদের গ্রেফতার শুরু হবে। পুরনো মামলায় গ্রেফতার দেখানো হবে কেন্দ্রীয় নেতাদের। একইসঙ্গে, সারাদেশে চলবে চিরুনি অভিযান।

বিএনপির অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনগুলোর একাধিক সূত্রের ভাষ্য, খালেদা জিয়ার গ্রেফতারের প্রতিক্রিয়া সহিংস হবে না। তবে নেতাকর্মীরা রাজপথে অবস্থান নেওয়ার চেষ্টা করবেন। অবশ্য জনপ্রিয়তার বিচারে তার গ্রেফতারের শঙ্কা এখনও অনেক কম বলে বিশ্বাস করেন তারা। বিএনপির কেন্দ্রীয় এক নেতা অবশ্য রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের আশঙ্কাও করছেন।

ওই গোয়েন্দা সূত্রটিও সন্দিহান, আদৌ সরকার এমন পরিস্থিতি ডেকে আনতে চাইবে কি না। প্রথমত, আগামী নির্বাচনের আগে জনপ্রিয় নেত্রীকে গ্রেফতারের মধ্য দিয়ে জনরোষ তৈরি হবে-এমন ভাবনাও রয়েছে অনেকের মধ্যে।

শুক্রবার পঞ্চগড়ে এক সভায় বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ‘খালেদা জিয়াকে অন্যায়ভাবে মিথ্যা মামলা দিয়ে কোনও সাজা দিলে সব কারাগার আমরা বন্ধ করে দেব। খালেদা জিয়াকে কারাগারে রেখে আমরা দেশে কোনও নির্বাচন হতে দেব না।’

তবে বিএনপির জামায়াতঘেঁষা একটি অংশ মনে করে, খালেদা জিয়াকে গ্রেফতারের কোনও নমুনা দেখা দিলে অবশ্যই জামায়াত-শিবিরের নেতাকর্মীদের মাঠে অবস্থান নিতে হবে। এক্ষেত্রে আগামী নির্বাচনকে কেন্দ্র করে উভয় দলের সমঝোতা নিশ্চিত করতে হবে। অন্যথায় জামায়াত তার কর্মীবাহিনীকে রাজপথে নামতে নিরুৎসাহিত করতে পারে। যদিও বিএনপির কোনও দায়িত্বশীল সূত্র এ তথ্যকে আমলে নিতে চাইছেন না।

এ বিষয়ে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু বলেন, ‘খালেদা জিয়াকে সাজা দেওয়া হলে প্রভাব বিএনপিতে পড়বে না; পড়বে আওয়ামী লীগের ওপর। বড় ধরনের ক্ষতির শিকার হবে তারা। তাকে তারা রাজনৈতিকভাবে মোকাবিলা না করে মামলা দিয়ে মোকাবিলা করছে। মাইনাস ওয়ান ফর্মূলা নিয়ে সরকার এগিয়ে গেলেও লাভ হবে না।’

জানতে চাইলে স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, ‘রাজনৈতিকভাবে সাজা দেওয়া হলে রাজনৈতিকভাবেই মোকাবিলা করবো। বর্তমান প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে তিনটি মামলা ছিল প্রমাণসহ। কিন্তু আমাদের ম্যাডামের ক্ষেত্রে তথ্য-প্রমাণ না থাকলেও ভিন্নতা দেখা যাচ্ছে। ফলে, শাস্তি দিলে আইনি ও রাজনৈতিক–দুটো পথেই মোকাবিলা করবো।’

243 ভিউ

Posted ১:৩৯ পূর্বাহ্ণ | রবিবার, ২৪ ডিসেম্বর ২০১৭

coxbangla.com |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

Editor & Publisher

Chanchal Dash Gupta

Member : coxsbazar press club & coxsbazar journalist union (cbuj)
cell: 01558-310550 or 01736-202922
mail: chanchalcox@gmail.com
Office : coxsbazar press club building(1st floor),shaheed sharanee road,cox’sbazar municipalty
coxsbazar-4700
Bangladesh
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
বাংলাদেশের সকল পত্রিকা সাইট
Bangla Newspaper

ABOUT US :

coxbangla.com is a dedicated 24x7 news website which is published 2010 in coxbazar city. coxbangla is the news plus right and true information. Be informed be truthful are the only right way. Because you have the right. So coxbangla always offiers the latest news coxbazar, national and international news on current offers, politics, economic, entertainment, sports, health, science, defence & technology, space, history, lifestyle, tourism, food etc in Bengali.

design and development by : webnewsdesign.com