এম.জিয়াবুল হক,চকরিয়া(২২ মে) :: চকরিয়া উপজেলার কৈয়ারবিলে বাড়িভিটার বিরোধের জেরে নারী, শিশুসহ ৭ জনকে কুপিয়ে জখমের ঘটনায় মামলা হলেও বেশির ভাগ আসামি এখনো গ্রেফতার হয়নি। এই সুযোগে মামলার অভিযুক্ত আসামিরা ঘটনাকে ভিন্নখাতে প্রবাহিত করতে এবং নিজেদের অপরাধ অপর্কম থেকে বাঁচতে নানা ধরণের কৌশলের আশ্রয় নিয়েছে।
সর্বশেষ সোমবার মামলার এজাহারনামীয় আসামি নুর মোহাম্মদের মেয়ের জামাতা সেনা সদস্য তারেক আজিজকে ব্যবহার করে আসামিপক্ষের লোকজন নতুন নাটকের অবতারণা করেছে বলে অভিযোগ তুলেছেন মামলার বাদি ওসমান গনী।
ইভটিজিংয়ের নতুন নাটক তৈরী করে তাতে বাঁধা দেয়ার অজুহাত দেখিয়ে পরিকল্পিতভাবে ঘটনাটি তৈরী করেছে আসামি পক্ষের লোকজন। আবার কাল্পনিক ঘটনায় স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যানকে জড়িয়ে আসামিপক্ষের লোকজন অনৈতিক মিথ্যাচারও শুরু করেছেন বলে দাবি করেছেন বাদি ওসমান গনী।
চকরিয়া থানায় গত ৮ মে দায়ের করা মামলার আর্জিতে বাদি কৈয়ারবিল ইউনিয়নের এক নম্বর ওয়ার্ডের খিলছাদক চরপাড়া গ্রামের আবদুল কুদ্দুছের ছেলে ওসমান গনী (৫২) জানান, বর্তমানে তাঁর বসতবাড়িতে নির্মাণ কাজ চলছে। পক্ষান্তরে স্থানীয় মৃত ফকির মোহাম্মদের ছেলে নুর মোহাম্মদ নানা চলচাতুরীর আশ্রয় নিয়ে তাঁর (বাদির) বসতবাড়ির জায়গা দখলের অপচেষ্ঠা চালিয়ে আসছিলেন।
সর্বশেষ ৭ মে সন্ধ্যা ছয়টার দিকে নুর মোহাম্মদের নেতৃত্বে একদল দুর্বৃত্ত অকর্কিত হামলা চালায় ওসমান গনীর বাড়িতে। হামলার সময় দুর্বৃত্তদের ধারালো কিরিচের কোপে নারী, শিশুসহ অন্তত ৭জন আহত হয়। আহতরা হলেন বাদি ওসমান গনী, তার স্ত্রী শাহিনা আক্তার, মেয়ে বাবেয়া বেগম, মোহাম্মদ ইসমাইল, মোহাম্মদ ইউছুপ, ছোট শিশু বুলবুল জন্নাত ও শিশু জাবেদ। ঘটনার সময় বাড়িতে ব্যাপক লুটপাটও চালায় হামলাকারীরা।
এ ঘটনায় ওসমান গনী বাদি হয়ে ৮ মে চকরিয়া থানায় একটি মামলা (নং ২১) দায়ের করে। এতে আসামি করা হয় নুর মোহাম্মদের ছেলে রায়হান, মৃত ফকির মোহাম্মদের ছেলে নুর মোহাম্মদ, কবির আহমের ছেলে শওকত ওসমান, মৃত মনিরুজ্জামানের ছেলে কবির আহমদ, নুর মোহাম্মদের মেয়ে সাবেকুন্নাহার ও নুর মোহাম্মদের স্ত্রী আনোয়ারা বেগম বেবীকে। এছাড়াও মামলায় আরো ১০-১২জনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়। পুলিশ ইতোমধ্যে মামলার আসামি কবির আহমদকে গ্রেফতার করে জেলহাজতে পাঠিয়েছে।
মামলার বাদি ওসমান গনী অভিযোগ করেছেন, ঘটনার পর মামলার আসামিরা পুলিশের গ্রেফতার এড়াতে আত্মগোপনে রয়েছে। এই সুযোগে সোমবার (২১ মে) সকালে আসামি নুর মোহাম্মদের মেয়ের জামাতা সেনা সদস্য তারেক আজিজ ৫-৬জন সহযোগি নিয়ে জড়ো হয়ে শ^শুড় নুর মোহাম্মদের ক্ষেতে ঢুকে ফসল তুলে নিয়ে চলে যাচ্ছিলেন। ঘটনাটি পরে আমাদের উপর চাপিয়ে দেবে এই আশঙ্কায় এলাকাবাসিকে সাথে নিয়ে ফসল লুট না করতে তারেক আজিজকে বাঁধা দিই। অবশ্য পরে নুর মোহাম্মদের মেয়ের জামাতা তারেক আজিজ ঘটনাস্থল থেকে সাঙ্গ-পাঙ্গদের নিয়ে চলে যায়।
বাদি ওসমান গনী দাবি করেছেন, শ^শুড় বাড়ির ফসল লুটের সময় বাঁধা দেয়া হলেও সেনা সদস্য পরিচয়ধারী তারেক আজিজ কৌশলে আসামিপক্ষের যোগসাজসে ঘটনাটি ভিন্নখাতে প্রবাহিত করতে ইভটিজিংয়ে বাঁধা দেয়ার নতুন নাটক তৈরী করে। এ ঘটনায় নতুন করে আমাদের নামে থানায় অভিযোগ দিয়েছে। আবার এসব কল্পকাহিনী সাজিয়ে ভিত্তিহীন সংবাদও প্রকাশ করেছে। প্রকাশিত উক্ত সংবাদের সাথে ঘটনার কোন ধরণের মিল নেই। বাস্তব ঘটনাটি আড়াঁল করে আসামি পক্ষের লোকজনকে অপরাধ থেকে বাচঁতে সেনা সদস্য তারেক আজিজ অপকৌশলের আশ্রয় নিয়েছে।
মামলার বাদি ওসমান গনী বলেন, ঘটনার সাথে ইউপি চেয়ারম্যান মক্কী ইকবালের নাম জড়ানো হয়েছে। মুলত আমার পরিবারের উপর হামলা চালিয়ে নারী-শিশুসহ সাতজনকে কুপিয়ে জখমের ঘটনায় মামলার প্রেক্ষিতে পুলিশ এলাকায় তদন্তে আসলে ইউপি চেয়ারম্যান জনগনের সামনে প্রকাশ্যে ঘটনার ব্যাপারে নিরপেক্ষ স্বাক্ষী দেন।
তাতে ক্ষুদ্ধ হন নুর মোহাম্মদ গং তথা আসামিপক্ষের লোকজন। এরই অংশহিসেবে নতুন নাটকে তৈরী করা ঘটনাটি ইউপি চেয়ারম্যানের নির্দেশে করা হয়েছে বলে প্রকাশ করা হয়েছে। এই ধরণের মিথ্যা ঘটনার ব্যাপারে যাছাই বাছাই করতে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন ভুক্তভোগী মামলার বাদি ও তাঁর ক্ষতিগ্রস্থ পরিবার।
Posted ১২:১৫ পূর্বাহ্ণ | বুধবার, ২৩ মে ২০১৮
coxbangla.com | Chanchal Das Gupta