এম.জিয়াবুল হক,চকরিয়া(২২ মে) :: চকরিয়ায় পারিবারিক কলহের জেরে গলায় ফাঁস দিয়ে তছলিমা বেগম (৩৪) নামের তিন সন্তানের জননী এক গৃহবধু আত্মহত্যা করেছে।
সোমবার দুপুরে উপজেলার কোনাখালী ইউনিয়নের ৪ নম্বর ওয়ার্ডের মধ্যম কোনাখালীস্থ লতাবনিয়াপাড়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
ঘটনার খবর পেয়ে ওইদিন রাতে চকরিয়া থানা পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে লাশ উদ্ধার করেছে। নিহত তছলিমা ওই এলাকার দিনমুজুর নুরুল আমিনের স্ত্রী। কোনাখালী ইউপি চেয়ারম্যান দিদারুল হক সিকদার ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, নিহত তছলিমা বেগমের স্বামী নুরুল আমিন একজন দিনমজুর। দিনমজুরী কাজ করে কোন রকম সে অভাবের সংসার চালাতো। প্রায় সময় নিহত তছলিমার সঙ্গে পারিবারিক বিষয় নিয়ে তার ঝগড়া হতো। ঘটনার পূর্বের দিন রাতেও নুরুল আমিন বাহির থেকে দিন মজুরী কাজ সেরে আসলে পারিবারিক বিষয়ে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে ঝগড়া হয়। ওই দিন রাতে তাকে বেধড়ক মারধর করে আঘাত করে তার স্বামী। পারিবারিক কলহের জের ধরে স্বামীর সঙ্গে রাগ করে তছলিমা এ আত্মহত্যা করেছে বলেই স্থানীয় এলাকাবাসীর ধারণা।
স্থানীয়রা আরো জানান, সোমবার দুপুরের দিকে শিশু সন্তানরা তাদের মাকে (তছলিমা) ঝুলন্ত দেখতে পেয়ে কান্নাকাটি করতে থাকলে পার্শ্ববর্তী এলাকাবাসী ও নিহতের স্বামী তাকে ঝুলন্তাবস্থা থেকে উদ্ধার করে প্রথমে স্থানীয় চিকিৎসকের স্মরনাপন্ন হয়। ওই চিকিৎসক তাকে চকরিয়া স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যেতে বলেন। পরে স্থানীয়দের সহয়তায় তাকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
হাসপাতাল থেকে ফিরে তছলিমার লাশ বাড়িতে রেখে পালিয়ে যায় নুরুল আমিন। পরে স্থানীয়রা ঘটনার বিষয়টি কোনাখালী ইউপি চেয়ারম্যান দিদারুল হক সিকদারকে অবগত করলে সে দ্রুত থানা পুলিশকে খবর দেয়।
ঘটনার খবর পেয়ে কক্সবাজারের সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার (চকরিয়া সার্কেল) কাজী মো. মতিউল ইসলাম ও চকরিয়া থানার ওসি মো. বখতিয়ার উদ্দিন চৌধুরীর নেতৃত্বে সঙ্গীয় পুলিশসহ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। মাতামুহুরী পুলিশ ফাঁড়ির এসআই মংথোয়াই হ্লা চাক ঘটনাস্থল থেকে নিহতের লাশ উদ্ধার করেন।
কোনাখালী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান দিদারুল হক সিকদার বলেন, সোমবার দুপুরের দিকে মধ্যম কোনাখালী লতাবনিয়া পাড়া এলাকায় এক গৃহবধু আত্মহত্যা করেছে বলে স্থানীয় লোকজন ফোন করে আমাকে জানায়। ঘটনার ব্যাপারটি জানতে পেরে আমি তাৎক্ষণিকভাবে বিষয়টি থানা পুলিশকে অবহিত করি। পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে নিহতের লাশ উদ্ধার করেছেন।
চকরিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. বখতিয়ার উদ্দিন চৌধুরী বলেন, কোনাখালী এলাকায় এক গৃহবধু আত্মহত্যা খবর পেয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করা হয়েছে। এসআই মংথোয়াই হ্লা চাক নিহতের লাশ উদ্ধার করে সুরুতহাল রিপোর্ট তৈরি করার পর ময়নাতদন্তের জন্য লাশ কক্সবাজার সদর হাসপাতাল মর্গে করেছে। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট হাতে পেলেই তার মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করা যাবে।
Posted ১২:৩৬ পূর্বাহ্ণ | বুধবার, ২৩ মে ২০১৮
coxbangla.com | Chanchal Das Gupta