এম.জিয়াবুল হক,চকরিয়া(৯ অক্টোবর) :: চকরিয়ায় দিনদুপুরে পুলিশের ভয় দেখিয়ে জুয়ার আসরে ধাওয়া ও চিৎকার-চেচাঁমেচি করেছে অপর জুয়াড়ি চক্রের লোকজন। ওইসময় ভয়ে নদীতে ঝাঁপ দিয়ে পালাতে গিয়ে পানিতে ডুবে মো. মহিউদ্দিন (৪২) নামের একব্যক্তি মারা গেছেন।
মাতামুহুরী নদীর বাটাখালী সেতু পয়েন্টে পানিতে ডুবে যাওয়ার প্রায় ১২ ঘন্টা পর বৃহস্পতিবার সকাল ছয়টার দিকে তার মরদেহ জনতার সহায়তায় উদ্ধার করেছে পুলিশ। মহিউদ্দিন চকরিয়া পৌরসভার ৩নম্বর ওয়ার্ডের কসাইপাড়ার ওমর আলীর ছেলে।
পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, উপজেলার সাহারবিল ইউনিয়নের মাইজঘোনাস্থ মাতামুহুরী নদীর বাটাখালী সেতুর অদূরে নদীর তীরে স্থানীয় বেলাল ও আরমানের নেতৃত্বে দুইদল যুবক জুয়ার আসর বসায় প্রতিদিন। বুধবার বিকাল আড়াইটার দিকে প্রতিদিনের মতো জুয়ার আসর বসলে খবর পেয়ে পুলিশের একটি দল সেখানে গিয়ে ধাওয়া দেন।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে এসময় আরমান গ্রুপের জুয়াড়ীরা পালিয়ে যায়। তবে ওইসময় পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে ৩ জুয়াড়িকে আটক করে থানায় নিয়ে যায়। পুলিশ চলে গেলে বিকাল পাঁচটার দিকে একই স্থানে বেলাল গ্রুপের যুবকরা জুয়া খেলতে বসেন। এসময় পূর্বে পুলিশের ধাওয়া খেয়ে পালানো আরমান গ্রুপের লোকজন জুয়ার আসরে এসে পুলিশ আসছে বলে চিৎকার-চেচাঁমেচি করলে ভয়ে কয়েকজন জুয়াড়ি পালাতে নদীতে ঝাঁপ দেয়।
তাদের মধ্যে দুইজন দু’জন সাঁতরিয়ে তীরে উঠে আসলেও মহিউদ্দিন পানিতে ডুবে যায়। তাঁর সন্ধানে নদীর বিভিন্ন পয়েন্টে রাতভর খোঁজ করেও তাকে পাওয়া যায়নি। গতকাল বৃহস্পতিবার সকাল ৬টার ঘটনাস্থলেই নদীতে তার মরদেহ ভেসে উঠে। খবর পেয়ে থানা পুলিশের একটিদল সেখান থেকে নিহতের লাশ উদ্ধার করে।
চকরিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. বখতিয়ার উদ্দিন চৌধুরী বলেন, থানা পুলিশের একটিদল গোপন সংবাদের ভিত্তিতে বুধবার তিনটার দিকে জুয়াড়িদের ধরতে অভিযান চালালেও সেখানে কাউকে ধাওয়া দেয়নি। তবে তাঁরা (জুয়াড়ি) পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে পালিয়ে যেতে চেষ্ঠাকালে ওইসময় তিনজনকে আটক করা হয়। অভিযানের সময় তাদের কাছ থেকে ৪১ হাজার টাকাও উদ্ধার করা হয়েছে।
তিনি বলেন, অভিযানের পর পুলিশ আটক তিনজনকে নিয়ে থানায় চলে আসেন। পরে সন্ধ্যার আগে একই স্থানে অপর একটি চক্র জুয়ার আসর বসালে সেখানে কিছু লোক গিয়ে তাদেরকে (জুয়াড়ি) পুলিশ আসছে বলে ভয় দেখায় এবং চিৎকার-চেঁচামেচি শুরু করে। ওইসময় জুয়াড়িরা দিকবিদিক পালিয়ে যায়। এক পর্যায়ে কয়েকজন পাশের নদীতে ঝাঁপ দেন।
ওসি বখতিয়ার চৌধুরী আরো বলেন, নদী থেকে দুইজন তীরে উঠে আসলেও একজন ডুবে যায়। গতকাল সকালে উদ্ধার করা মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য কক্সবাজার সদর হাসপাতার মর্গে পাঠানো হয়েছে। পরিবারের পক্ষ থেকে লিখিত অভিযোগ পেলে এব্যাপারে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে। তবে ঘটনার ব্যাপারে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য সেলিম নামের একজনকে আটক করা হয়েছে।
Posted ১১:৪৭ অপরাহ্ণ | বৃহস্পতিবার, ০৯ নভেম্বর ২০১৭
coxbangla.com | Chanchal Das Gupta