বাংলাদেশ ব্যাংকের হালনাগাদ প্রতিবেদন থেকে এই তথ্য জানা গেছে।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, বাংলাদেশে এখন রাজনৈতিক পরিস্থিতি শান্ত, অবকাঠামোর ও ব্যবসার পরিবেশে অভাবনীয় উন্নয়ন হচ্ছে। এছাড়া সরকার ধাপে ধাপে শিল্প ও অবকাঠামোগত ক্ষেত্রে বেসরকারি অংশগ্রহণকে উৎসাহিত করছে। এর ফলে সরাসরি বিদেশি বিনিয়োগে (এফডিআই) তার প্রতিফলন দেখা যাচ্ছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্যমতে, গত অর্থবছরের জুলাই-আগস্ট দুই মাসে বিদেশি বিনিয়োগ এসেছিল ৬৮ কোটি ৮০ লাখ ডলার। চলতি বছরের একই সময়ে এসেছে ৭৩ কোটি ৭ লাখ ডলার।
তথ্য অনুযায়ী, ৪৫০ কোটি ডলার বিদেশি বিনিয়োগ নিয়ে শেষ হয়েছে গত অর্থবছর। যা আগের (২০১৭-১৮) অর্থবছরের তুলনায় ৩৭ শতাংশ বেশি। ধারাবাহিকভাবে এখনও এগিয়ে যাচ্ছে এই বিনিয়োগ।
নানামুখী ব্যবসাবান্ধব পরিবেশ গড়ে তোলায় বাংলাদেশ এর সুফল পাচ্ছে বলে মনে করেন বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কতৃপক্ষের (বিডা) সাবেক নির্বাহী চেয়ারম্যান কাজী আমিনুল ইসলাম।
তিনি বলেন, দেশে বর্তমানে রাজনৈতিক অবস্থা স্থিতিশীল। অবকাঠামোর উন্নয়ন হচ্ছে। সহজে ব্যবসা করার সূচকেও মোটামুটি ভাল অবস্থানে রয়েছে। আগের তুলনায় বিদ্যুৎ ও গ্যাসের সরবরাহ স্বাভাবিক। বন্দরগুলোতে অভাবনীয় উন্নয়ন হয়েছে। অর্থনৈতিক অঞ্চল ও হাইটেক পার্ক প্রতিষ্ঠিত হচ্ছে। সামগ্রিকভাবে দেশকে বিনিয়োগ উপযোগী করার জন্য যা প্রয়োজন তার সবই হচ্ছে। এসব কারণে বিদেশি বিনিয়োগ আসছে।
তিনি বলেন, বিদেশি বড় বড় যে বাজারগুলো রয়েছে সেগুলোর প্রায় মাঝামাঝি স্থানে বাংলাদেশের অবস্থান। অর্থাৎ ভৌগোলিক অবস্থা সুবিধাজনক। বিনিয়োগকারী দেশগুলো এখানে উৎপাদিত পণ্য সহজে বড় বাজারগুলোতে স্থানান্তর করতে পারবে। এসব কারণে তারা বিনিয়োগের জন্য বেছে নিচ্ছে বাংলাদেশকে।
বিশ্ববিনিয়োগ মন্দায়ও বাংলাদেশ ভাল করছে উল্লেখ করে আমিনুল ইসলাম বলেন, গত বছর সারা বিশ্বে বিদেশি বিনিয়োগ কমেছে প্রায় ৩০ শতাংশ। কিন্তু বাংলাদেশ এই বিনিয়োগ বেড়ে হয়েছে প্রায় ৬৮ শতাংশ। গত বছরও জাপানের একটি কোম্পানি এককভাবে প্রায় দেড় বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করেছে।
অর্থাৎ এর মাধ্যমে বহির্বিশ্বে ইতিবাচক ধারণা পৌছেছে বাংলাদেশ সম্পর্কে। যা বিনিয়োগবান্ধব। আর সেই ধারাবাহিকতায় এখন বিনিয়োগ বাড়ছে বলে মনে করেন তিনি।
বিদেশি বিনিয়োগে প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ উদ্যোগে প্রতিষ্ঠাধীন বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলগুলোও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে বলে জানান বাংলাদেশ বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল কতৃপক্ষের (বেজা) নির্বাহী চেয়ারম্যান পবন চৌধুরী।
তিনি বলেন, বিদেশি বিনিয়োগ আকর্ষণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলগুলো। এসব অঞ্চলে ইতোমধ্যে চীন, জাপান, ইইউ, সৌদি আরবসহ অনেক দেশ বিনিয়োগ করেছে।
পবন চৌধুরী বলেন, বাংলাদেশ এখন ব্যবসাবান্ধব দেশে রূপান্তরিত হয়েছে। বিভিন্ন দেশ বিনিয়োগে আগ্রহ প্রকাশ করছে। সুযোগ হাত ছাড়া করা যাবে না। এই ধারা অব্যাহত রাখতে হবে। সেজন্য দরকার অবকাঠামোসহ ব্যবসা সংক্রান্ত যাবতীয় বিষয়ে আরো উন্নত করা।