বৃহস্পতিবার ২রা মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ১৯শে বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

শিরোনাম

বৃহস্পতিবার ২রা মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

শিরোনাম

চালের বাজারের অস্থিরতা কাটছেই না

বৃহস্পতিবার, ১৪ সেপ্টেম্বর ২০১৭
331 ভিউ
চালের বাজারের অস্থিরতা কাটছেই না

কক্সবাংলা ডটকম(১৪ সেপ্টেম্বর) :: চাল নিয়ে অস্থিরতা কাটছেই না। সরকারি মজুদের পরিমাণ অন্য যে কোনো সময়ের তুলনায় এখনো তলানিতে।চাল নিয়ে এক ধরনের লুকোচুরি চলছে, যার সুযোগ নেওয়ার চেষ্টা করছেন একশ্রেণির মুনাফালোভী ব্যবসায়ী।

তবে সরকারের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা বলছেন, ২০০৭-২০০৮ মৌসুমে চাল নিয়ে যে সংকট তৈরি হয়েছিল, সে রকম কোনো পরিস্থিতি এখন নেই। বিশ্ববাজারে সর্বত্রই চাল পাওয়া যাচ্ছে। অন্যদিকে ভারত চাল রপ্তানি নভেম্বর পর্যন্ত বন্ধ রেখেছে। তবে বাংলাদেশি ব্যবসায়ীরা দেশটি থেকে চাল আনছেন। কিন্তু ভারত থেকে সরকারি পর্যায়ে কোনো চাল আমদানি হচ্ছে না বলে নিশ্চিত করেছেন খাদ্য বিভাগের কর্মকর্তারা।

তারা বলছেন, ভারত যদি চাল রপ্তানি বন্ধ করে দেয় তাহলেও কোনো সংকট বা সমস্যা হবে না। এ ছাড়া আগামী নভেম্বর মাস পর্যন্ত ভারত চাল রপ্তানি বন্ধের যে চিঠি ইস্যু করেছে, সেটিও কতটা বিশ্বাসযোগ্য তা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা। কারণ ওই চিঠিতে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তার কোনো স্বাক্ষর নেই।

এদিকে খাদ্যমন্ত্রী কামরুল ইসলাম জানিয়েছেন, আগামী রবিবার থেকে খোলাবাজারে চাল বিক্রি শুরু করবে সরকার। একই সঙ্গে ২০ সেপ্টেম্বর থেকে চালু করা হবে খাদ্যবান্ধব কর্মসূচি। চলবে তিন মাস। এ কর্মসূচির আওতায় ১০ টাকা কেজি দরে ৫০ লাখ দরিদ্র লোককে খাদ্য সহায়তা দেওয়া হবে।

খাদ্য অধিদফতর সূত্রে জানা গেছে, বর্তমানে সরকারি খাদ্যগুদামে মজুদের পরিমাণ হচ্ছে চাল ও গম মিলিয়ে চার লাখ ৬০ হাজার মেট্রিক টন। এর মধ্যে চালের পরিমাণ হচ্ছে চার লাখ ৩৭ হাজার মেট্রিক টন। বাকি ২৩ হাজার মেট্রিক টন গম।

কয়েক মাস ধরেই অন্য যে কোনো বছরের তুলনায় সরকারি গুদামে চালের মজুদের পরিমাণ কমছে। মজুদের পরিমাণ কমে যাওয়ার তথ্য প্রথম ফাঁস হয় গত মার্চে হাওরাঞ্চলের আগাম বন্যার সময়। হাওরজুড়ে হাহাকার দেখা দিলে সরকার দ্রুত পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে সরকারি গুদাম থেকে চাল ছাড়ার সিদ্ধান্ত নেয়।

কিন্তু সরকারি খাদ্যগুদামে ওই সময় মজুদের পরিমাণ কম থাকায় সরকার খোলাবাজারে চাল বিক্রি (ওএমএস) বন্ধ করে দেয়। এ সুযোগে কৃত্রিম সংকট তৈরি করে বাজার অস্থির করে তোলেন ব্যবসায়ীরা। তখনই শুরু হয় সরকারি পর্যায়ে চাল আমদানির তৎপরতা।

কিন্তু গত প্রায় ছয় মাসে সরকার আশানুরূপ চাল আমদানি করতে পারেনি। এপ্রিল মাসেই বেসরকারি পর্যায়ে সরকার চাল আমদানির জন্য দরপত্র আহ্বান করে। তাতে সাড়ে তিন লাখ মেট্রিক টন চাল আমদানির চুক্তি হয়। কিন্তু আমদানি শুল্ক কমানো নিয়ে টানাপড়েন চলার কারণে বেসরকারি পর্যায়ে চাল আমাদনি বিলম্ব হতে থাকে।

যদিও শেষ পর্যন্ত সরকার চাল আমদানির ওপর শুল্ক কমিয়ে মাত্র ২ শতাংশে নামিয়ে এনেছে। এখন বেসরকারি আমদানিকারকরা চাল ক্রয় ও শিপপেন্ট করছেন বলে দাবি করছে খাদ্য বিভাগ। ইতিমধ্যে খাদ্য অধিদফতর বেসরকারি পর্যায় থেকে মাত্র ৩০ হাজার মেট্রিক টন চাল পেয়েছে।

অন্যদিকে সরকারি পর্যায়ে চাল আমদানির জন্য তৎপরতা চালায় খাদ্য মন্ত্রণালয় ও খাদ্য অধিদফতর। খাদ্যমন্ত্রী কামরুল ইসলাম ভিয়েতনাম ও কম্বোডিয়া সফর করে ওই দুই দেশের সরকারের সঙ্গে চাল আমদানির জন্য চুক্তি স্বাক্ষর করেন। এর মধ্যে ভিয়েতনাম থেকে আড়াই লাখ মেট্রিক টন এবং কম্বোডিয়া থেকে তিন লাখ মেট্রিক টন চাল আমদানির চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়।

খাদ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক বদরুল হাসান বলেন, ইতিমধ্যে ভিয়েতনাম থেকে দেড় লাখ মেট্রিক টন চাল বাংলাদেশে এসেছে। বাকি এক লাখ মেট্রিক টন পথে রয়েছে।

অন্যদিকে কম্বোডিয়া থেকে আমদানি করা তিন লাখ মেট্রিক টন চাল ইতিমধ্যে শিপমেন্ট হয়েছে। শিগগিরই ওই চাল আসবে। এ ছাড়া খাদ্যমন্ত্রী সম্প্রতি মিয়ানমার সফর করেছেন। সেখান থেকে চাল আনতেই তার এই সফর। সেখানে মিয়ানমার সরকারের সঙ্গে একটা এমওইউ স্বাক্ষরিত হয়েছে। তবে কী পরিমাণ চাল এবং কত টাকা কেজি দরে তা আনা হবে সেটি এখনো ঠিক হয়নি।

খাদ্য অধিদফতর সূত্রে জানা গেছে, আগামী ১৬ সেপ্টেম্বর মিয়ানমারের একটি প্রতিনিধিদলের ঢাকায় আসার কথা রয়েছে। তখন দামদর ও চালের পরিমাণ চূড়ান্ত করা হবে। যদিও মিয়ানমার থেকে চাল আমাদনি নিয়ে ইতিমধ্যে বিতর্ক দেখা দিয়েছে।

অনেকেই বলছেন, মিয়ানমার সরকার যেভাবে দমন-পীড়ন, হত্যা ও জ্বালাও-পোড়াওয়ের মাধ্যমে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীকে সে দেশ থেকে বিতাড়িত করে বাংলাদেশে পাঠাচ্ছে, তখন মিয়ানমার থেকে সরকার কেন চাল আমদানি করবে!

এদিকে গত মাসের মাঝামঝি সময় থেকে দেশের উত্তরাঞ্চলের ২০ জেলাসহ দেশের ৩৩ জেলার বিস্তীর্ণ এলাকা বন্যাকবলিত হয়। এবার এমন কিছু জেলা বন্যাকবলিত হয়েছে, অতীতে যা কখনো হয়নি। ভয়াবহ এই বন্যার কারণেও চালের বাজারে অস্থির হয়ে উঠেছে। ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হওয়ায় ব্যবসায়ীরা এ সুযোগ কাজে লাগিয়ে চালের দাম বাড়িয়ে দেন। এমন পরিস্থিতিতেও বাজার নিয়ন্ত্রণে সরকারের মোক্ষম অস্ত্র হিসেবে পরিচিত ওএমএস কার্যক্রম চালু করা যায়নি। আর তা চালু করা যায়নি শুধু পর্যাপ্ত মজুদ না থাকার কারণে।

খাদ্য অধিদফতর সূত্রে জানা গেছে, মজুদ কম থাকায় বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত ৫০ লাখ লোকের জন্য সরকার ১০ টাকা কেজি দরে যে খাদ্যবান্ধব কর্মসূচি চালুর ঘোষণা দিয়েছিল, সেটিও চালু করা সম্ভব হচ্ছে না। চলতি মাসের শুরুর দিকেই এ কর্মসূচি চালুর কথা ছিল। তবে তারা আশা করছে, এ মাসের শেষ দিকে ওই কর্মসূচি চালু করা যাবে। অবশ্য মজুদের যে অবস্থা তাতে এখনই নিশ্চিত করে বলা বেশ কঠিন।

সার্বিক বিষয়ে জানতে চাইলে খাদ্যমন্ত্রী কামরুল ইসলাম গতকাল রাতে  বলেন, ‘বাজার নিয়ন্ত্রণ করা খাদ্যমন্ত্রীর কাজ নয়। এ ছাড়া সরকার যে আমদানি করে কিংবা অভ্যন্তরীণ বাজার থেকে ক্রয় করে, সেটি ব্যবহার করা হয় সরকারের বিভিন্ন খাতে এবং নানা কর্মসূচিতে। এটা তো বাজারে ছাড়া হয় না। তাহলে কেন খাদ্য মজুদের পরিমাণ কম এমন অজুহাত দেখিয়ে বাজার অস্থির করা হবে? আমাদের হাতে সরকারি সব খাত চালানোর মতো পর্যাপ্ত মজুদ আছে।

’ ওএমএস কেন বন্ধ রাখা হয়েছে—জানতে চাইলে খাদ্যমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা যখন অভ্যন্তরীণ বাজার থেকে চাল ক্রয় করি, তখন ওএমএস কার্যক্রম বন্ধ থাকে। এটা সব সময়ই থাকে। ’

 

 

331 ভিউ

Posted ৭:৪৭ পূর্বাহ্ণ | বৃহস্পতিবার, ১৪ সেপ্টেম্বর ২০১৭

coxbangla.com |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

Editor & Publisher

Chanchal Dash Gupta

Member : coxsbazar press club & coxsbazar journalist union (cbuj)
cell: 01558-310550 or 01736-202922
mail: chanchalcox@gmail.com
Office : coxsbazar press club building(1st floor),shaheed sharanee road,cox’sbazar municipalty
coxsbazar-4700
Bangladesh
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
বাংলাদেশের সকল পত্রিকা সাইট
Bangla Newspaper

ABOUT US :

coxbangla.com is a dedicated 24x7 news website which is published 2010 in coxbazar city. coxbangla is the news plus right and true information. Be informed be truthful are the only right way. Because you have the right. So coxbangla always offiers the latest news coxbazar, national and international news on current offers, politics, economic, entertainment, sports, health, science, defence & technology, space, history, lifestyle, tourism, food etc in Bengali.

design and development by : webnewsdesign.com