শুক্রবার ৩রা মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ২০শে বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

শিরোনাম

শুক্রবার ৩রা মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

শিরোনাম

চীন বিরোধী বিক্ষোভে উত্তাল গণতন্ত্রকামী হংকং

মঙ্গলবার, ০২ জুলাই ২০১৯
230 ভিউ
চীন বিরোধী বিক্ষোভে উত্তাল গণতন্ত্রকামী হংকং

কক্সবাংলা ডটকম(১ জুলাই) :: চীন বিরোধী বিক্ষোভে সোমবার ফের উত্তাল হয়ে উঠেছে হংকং। চীনের কাছে অঞ্চলটির হস্তান্তরের বার্ষিকী উপলক্ষে এদিন সকাল থেকেই রাজপথে তীব্র বিক্ষোভ প্রদর্শন করেন হাজার হাজার গণতন্ত্রকামী মানুষ। এক পর্যায়ে সরকারি দফতরে ভাঙচুর চালায় বিক্ষোভকারীরা। তীব্র বিক্ষোভের মধ্যেই কয়েকশ তরুণের একটি দল অঞ্চলটির পার্লামেন্ট ভবনের কাচ ভেঙে অধিবেশন কক্ষে ঢুকে পড়ে। এ সময় তারা স্প্রে-পেইন্ট দিয়ে কক্ষের দেয়ালে নিজেদের নানা বার্তা লিখে দেয়।.

পার্লামেন্টের অধিবেশন কক্ষের দেয়ালে হংকং-এর প্রতীকের ওপর একজন বিক্ষোভকারী কালো রঙ ছিটিয়ে দেন। আরেকজন পুরোনো ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক যুগের ইউনিয়ন জ্যাক-আঁকা পতাকা তুলে ধরেন। পুলিশ বলেছে, বিক্ষোভকারীদের বিরুদ্ধে তাদের ভাষায় ‘যথাযথ ব্যবস্থা’ নেওয়া হবে। এরপর আইনসভা ভবন ঘিরে থাকা বিক্ষোভকারীদের ওপর টিয়ার গ্যাস নিক্ষেপ করা হয়। শত শত পুলিশ এখন ভবনটির বাইরে অবস্থান নিয়েছে।

পার্লামেন্ট ভবনে ঢুকে পড়ার আগে বিক্ষোভকারীরা কয়েক ঘন্টা ধরে ভবনটি ঘেরাও করে রেখেছিল। লাখ লাখ বিক্ষোভকারী লেজিসলেটিভ কাউন্সিল বা লেজকো ভবনের দিকে অগ্রসর হওয়ার চেষ্টাকালে দাঙ্গা পুলিশের সঙ্গে তাদের সংঘর্ষ হয়। পুলিশ কাঁদানে গ্যাস ও পেপার স্প্রে (মরিচের গুঁড়ো) নিক্ষেপ করে তাদের ছত্রভঙ্গ করার চেষ্টা করে।

হংকং এক সময় ছিল চীনের কাছ থেকে লিজ নেয়া ব্রিটিশ উপনিবেশ – যা ১৯৯৭ সালে আবার চীনের হাতে ফিরিয়ে দেয় ব্রিটেন। তখন একটা চুক্তি হয়েছিল যে ‘এক দেশ দুই পদ্ধতি’ ভিত্তিতে হংকং শাসিত হবে এবং স্বায়ত্বশাসনের গ্যারান্টি থাকবে। সেই হস্তান্তরের বার্ষিকীতে হাজার হাজার মানুষ গণতন্ত্রের দাবিতে শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভে অংশ নেয়।

১৫০ বছর ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক শাসনে থাকার পর লিজ চুক্তির মেয়াদ শেষে ১৯৯৭ সালের ১ জুলাই অঞ্চলটি চীনের কাছে ফেরত দেওয়া হয়েছিল। সেই দিবসের ২২ বছর পূর্তিতে সোমবার আন্দোলনে নামেন গণতন্ত্রকামী মানুষেরা। প্রতিবছরই এই দিনে কর্মকর্তারা সরকারি ভবনে উৎসব করেন আর রাজপথ অবস্থান নেন গণতন্ত্রকামী মানুষ।

হংকং চীনের বিশেষ প্রশাসনিক অঞ্চল হিসেবে বিবেচিত হলেও ২০৪৭ সাল অবধি অঞ্চলটির স্বায়ত্তশাসনের নিশ্চয়তা দিয়েছে দেশটি। গত মাসেই চীনপন্থী এক বিল নিয়েও উত্তাল হয়ে উঠেছিলো হংকং। মূলত চীনে ও তাইওয়ানে অপরাধী প্রত্যর্পণ সংক্রান্ত প্রস্তাবিত একটি বিলের বিপক্ষে হংকংজুড়ে এই গণবিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে। আন্দোলনকারীদের মূল ক্ষোভ চীনের সঙ্গে সমঝোতা নিয়ে। বেইজিংয়ের দুর্বল আইন এবং মানবাধিকার রেকর্ডের কারণে সেখানে কাউকে ফেরত পাঠানো নিরাপদ মনে করছেন না হংকংয়ের সাধারণ মানুষ। তারা মনে করছেন, বিলটি পাস হলে তা অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতে চীনের হস্তক্ষেপের সুযোগ বাড়িয়ে দেবে।.

হংকং কনভেনশন অ্যান্ড এক্সিবিশন সেন্টারে এই দিবসটি উপলক্ষে অনুষ্ঠান আয়োজনের প্রস্তুতি চলছিলো। অন্যদিকে শত শত তরুণ কালো পোশাকে মুখোশ পরে আন্দোলনে নামে। তাদের মাথায় ছিল কালো টুপি। তাদের দমনে হেলমেট ও ঢাল নিয়ে দেয়াল হয়ে দাঁড়ায় দাঙ্গা পুলিশ। বৃষ্টিও পড়ছিলো তখন। তারপরও আন্দোলনকারীরা দমে যাননি। ‘এই শয়তানি আইন বাতিল করো’ বলে স্লোগান দিতে থাকে বিক্ষোভকারীরা।

ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ানকে এক আন্দোলনকরী জানান, তাদের ওপর মরিচের গুঁড়া স্প্রে করা হয়েছে। মরিচের ঝাঁঝে কাতরাচ্ছিল অনেকে। তিনি বলেন, আমরা ভাগ্যবান যে পুলিশ লাঠি চালালেও আমরা আহত হইনি। নিজেদের ছাতা ঢাল হিসেবে ব্যবহার করেছিলাম আমরা।

সাধারণত এই দিনে শহরের হারবার ফ্রন্টে পতাকা উত্তোলন অনুষ্ঠান হয়ে থাকে। তবে এবার সেই অনুষ্ঠান দফতরের ভেতরে আয়োজনের সিদ্ধান্তের কথা জানান সরকারি কর্মকর্তারা। চীনের সরকারি ও সামরিক নেতাদের সঙ্গে অনুষ্ঠানে ক্যারি ল্যাম বলেন, চীনের অর্থনৈতিক শক্তিমত্তার কারণে উপকৃত হচ্ছে হংকং। তিনি দেশটির উন্নতি ও হংকংয়ের স্থিতিশীলতা কামনা করেন।.

বিক্ষোভ ঘিরে কড়া নজরদারি পুলিশের

গার্ডিয়ান জানায়, হংকংয়ের চীনপন্থী নেতাদের সহায়তায় চীন দেশটির স্বাধীনতা ও সংস্কৃতি কেড়ে নিতে পারে এমন আশঙ্কাতেই আসলে এই আন্দোলন এমন রূপ নিয়েছে। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে হংকংয়ে এমন বেশ কয়েকটি আন্দোলন হয়েছে। কিন্তু বেইজিং থেকে আলাদা হতে পারেনি। তবে সর্বশেষ কথিত অপরাধী প্রত্যর্পণ বিলের বিরুদ্ধে গত ৯ জুন রাতে অঞ্চলটির রাজপথে নামে প্রায় পাঁচ লাখ মানুষ। রাজপথে বিক্ষোভকারীদের ঢল টানা কয়েক দিন পর্যন্ত অব্যাহত থাকে। অঞ্চলটির সরকারি অফিসে যাওয়ার প্রধান সড়কগুলো অবরোধ করে রাখেন হাজার হাজার বিক্ষোভকারী। মাসজুড়ে সেই্ আন্দোলন শান্তিপূর্ণ থাকলেও ১২ জুন তা সহিংস হয়ে ওঠে। আন্দোলকারীদের ওপর রাবার বুলেট ও টিয়ার গ্যাস নিক্ষেপ করে পুলিশ। আন্দোলনকারীরাও বিভিন্ন বস্তু ছুড়ে প্রতিবাদ জানায়। ব্যাপক গণআন্দোলনের তীব্রতায় বিলটির কার্যক্রম স্থগিতের ঘোষণা দেয় কর্তৃপক্ষ।

হংকংয়ের জনসংখ্যা প্রায় ৭৪ লাখ হলেও ১২০০ জনের একটি বিশেষ কমিটি নেতা বাছাইয়ে ভোট দেওয়ার সুযোগ পান। অঞ্চলটির নেতা বা প্রধান নির্বাহী ক্যারি ল্যামের দাবি, হংকং যে বিশেষ স্বাধীনতা উপভোগ করে, নতুন আইনের ফলে তার কোনও ক্ষতি হবে না। তবে গণতন্ত্রপন্থী বিক্ষোভকারীরা বলছেন, আইনটির মাধ্যমে অঞ্চলটির রাজনৈতিক ভিন্নমতাবলম্বীদের লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত করবে বেইজিং। এর প্রতিবাদ জানাতেই তারা রাজপথের বিক্ষোভে শামিল হন।

প্রতিবাদের মুখে হংকং-এর চীনপন্থী সরকার অনির্দিষ্টকালের জন্য বিলটি স্থগিত করে। কিন্তু বিক্ষোভ অব্যাহত থাকে। আন্দোলনকারীরা বিলটি স্থগিতের বদলে পুরোপুরি বাতিল এবং ‘চীনের পুতুল’ প্রধান নির্বাহী ক্যারি ল্যামের পদত্যাগের দাবিতে আওয়াজ তোলে।

সোমবারের বিক্ষোভে পুলিশ একাধিকবার আন্দোলনকারীদের বিরুদ্ধে শক্তি প্রয়োগ এবং গ্রেফতারের হুঁশিয়ারি দেয়। তবে বিক্ষোভকারীরা তা উপেক্ষা করে এগিয়ে গেলে পুলিশ কোনও পাল্টা পদক্ষেপ নেয়নি।

সূত্র: বিবিসি, রয়টার্স।

230 ভিউ

Posted ১:৫১ পূর্বাহ্ণ | মঙ্গলবার, ০২ জুলাই ২০১৯

coxbangla.com |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

Editor & Publisher

Chanchal Dash Gupta

Member : coxsbazar press club & coxsbazar journalist union (cbuj)
cell: 01558-310550 or 01736-202922
mail: chanchalcox@gmail.com
Office : coxsbazar press club building(1st floor),shaheed sharanee road,cox’sbazar municipalty
coxsbazar-4700
Bangladesh
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
বাংলাদেশের সকল পত্রিকা সাইট
Bangla Newspaper

ABOUT US :

coxbangla.com is a dedicated 24x7 news website which is published 2010 in coxbazar city. coxbangla is the news plus right and true information. Be informed be truthful are the only right way. Because you have the right. So coxbangla always offiers the latest news coxbazar, national and international news on current offers, politics, economic, entertainment, sports, health, science, defence & technology, space, history, lifestyle, tourism, food etc in Bengali.

design and development by : webnewsdesign.com