কক্সবাংলা ডটকম(২৫ নভেম্বর) :: জলবায়ু পরিবর্তনের ক্ষতিকর প্রভাব সারা বিশ্বেই পড়ছে। তবে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিতে পড়বে যুক্তরাষ্ট্র। কার্বন নিঃসরণ নিয়ন্ত্রণে রাখতে না পারলে এ শতকের শেষের দিকে প্রতি বছর প্রায় লাখ কোটি ডলার খোয়াবে যুক্তরাষ্ট্র। শুক্রবার প্রকাশিত যুক্তরাষ্ট্র সরকারের একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রতিবেদনে এ আশঙ্কার কথা জানানো হয়। খবর এএফপি ও সিএনএন বিজনেস।
ন্যাশনাল ক্লাইমেট অ্যাসেসমেন্টের সর্বশেষ প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘ঐতিহাসিক হারে কার্বন নিঃসরণ বৃদ্ধি পাওয়ায় এ শতক শেষে বেশকিছু অর্থনৈতিক খাতে বার্ষিক ক্ষতির পরিমাণ প্রায় লাখ কোটি ডলারে দাঁড়াবে। ওই ক্ষতির পরিমাণ যুক্তরাষ্ট্রের বেশির ভাগ প্রদেশের বর্তমান জিডিপির চেয়ে বেশি থাকবে।’
প্রতিবেদনটিতে আরো বলা হয়, ‘কার্বন নিঃসরণ বাস্তবসম্মতভাবে কমাতে সক্ষম না হলে এবং আঞ্চলিক অভিযোজন প্রচেষ্টা না চালালে জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে যুক্তরাষ্ট্রের অবকাঠামো ও সম্পদের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হবে, যা চলতি শতকে দেশটির অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ব্যাহত করবে।’
জলবায়ু পরিবর্তনের এ প্রভাব পড়বে বৈশ্বিক বাণিজ্যে। অন্যান্য দেশের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের আমদানি, রফতানি ও সাপ্লাই চেইন ক্ষতিগ্রস্ত হবে। এরই মধ্যেই যুক্তরাষ্ট্রে কিছু প্রভাব পড়তে শুরু করেছে বলে প্রতিবেদনটিতে বলা হচ্ছে। সাম্প্রতিক খারাপ আবহাওয়া ও জলবায়ুসংশ্লিষ্ট দুর্ঘটনার পেছনে মানবসৃষ্ট উষ্ণায়ন কাজ করছে।
প্রায় ৩০০ জন বিজ্ঞানী মিলে এক হাজার পৃষ্ঠার এ প্রতিবেদনটি তৈরি করেছেন। কংগ্রেসের নির্দেশনায় ফোর্থ ন্যাশনাল ক্লাইমেট অ্যাসেসমেন্ট তাদের দ্বিতীয় পর্বের এ প্রতিবেদনটি পেশ করেছে।
গত বছরের প্রতিবেদন প্রত্যাখ্যান করেছিলেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। এমনকি কার্বন নিঃসরণ ঠেকাতে ১৯০ দেশের স্বাক্ষরিত প্যারিস জলবায়ু চুক্তি-২০১৫ থেকে যুক্তরাষ্ট্রকে সরিয়ে নিয়েছেন তিনি।
জলবায়ু পরিবর্তনের দাবিকে ভুয়া হিসেবে অভিহিত করে এবারের থ্যাংকসগিভিং ডের তীব্র শীতের দিকে ইঙ্গিত করে ট্রাম্প তার টুইটে প্রশ্ন করেন, ‘বৈশ্বিক উষ্ণতার কী হলো?’ এ দিনটিতে শতাব্দীর সবচেয়ে ভয়াবহ শীতের মুখোমুখি হয়েছে বেশির ভাগ আমেরিকান।
তবে ট্রাম্পের এ প্রশ্নের উত্তর রয়েছে বিজ্ঞানে। একদিন বা এক সপ্তাহের খারাপ আবহাওয়া দিয়ে পুরো জলবায়ু পরিবর্তনটা ধরা যায় না। এটা দীর্ঘমেয়াদে ধরা পড়ে। আধুনিক সময়ের সবচেয়ে উষ্ণতম সময়ে বসবাস করছে মানুষ। আমরা এমন একটি অবস্থায় পৌঁছেছি যে, সবকিছু ইতিবাচক থাকলেও বৈশ্বিক উষ্ণতা ১ দশমিক ১০ ডিগ্রি ফারেনহাইট বাড়তে যাচ্ছে।
ন্যাশনাল সেন্টার্স ফর এনভায়রনমেন্টাল ইনফরমেশনের কৌশলগত সহায়তা বিভাগের পরিচালক ডেভিড ইস্টারলিং জানান, প্রতিবেদনটি তৈরিতে কারো হস্তক্ষেপ ছিল না। বিজ্ঞানীরা সুস্পষ্ট ও বিশ্বাসযোগ্য প্রমাণ পেয়েছেন যে, বৈশ্বিক গড় উষ্ণতা আধুনিককালের যেকোনো সময়ের তুলনায় অধিক হারে বাড়ছে।’
গবেষণায় দেখা গেছে, জি২০ সদস্যভুক্ত কোনো দেশই জলবায়ু লক্ষ্যমাত্রা পূরণ করছে না। বড় আকারে গ্রিনহাউজ গ্যাস নিঃসরণ না থামালে বৈশ্বিক উষ্ণতার বার্ষিক গড় এ শতাব্দী শেষে শিল্প বিপ্লব-পূর্ব যুগের তাপমাত্রার চেয়ে ৯ ডিগ্রি ফারেনহাইট (৫ সেলসিয়াস) বা তার চেয়ে বেশি দাঁড়াতে পারে।
Posted ৮:০৫ অপরাহ্ণ | রবিবার, ২৫ নভেম্বর ২০১৮
coxbangla.com | Chanchal Das Gupta