শনিবার ১১ই মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ২৮শে বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

শিরোনাম

শনিবার ১১ই মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

শিরোনাম

জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে দুর্ভাবনায় ব্যাংকাররা

রবিবার, ১৮ নভেম্বর ২০১৮
312 ভিউ
জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে দুর্ভাবনায় ব্যাংকাররা

কক্সবাংলা ডটকম(১৭ নভেম্বর) :: ৩০ ডিসেম্বর দেশের ব্যাংকগুলোর বার্ষিক হিসাবায়ন সমাপ্তের দিন। সারা বিশ্বের বেশির ভাগ ব্যাংকেরই হিসাবায়ন চূড়ান্তের জন্য এ দিনটি নির্ধারিত। লাভ-লোকসানের খতিয়ান চূড়ান্ত করার পর ৩১ ডিসেম্বর ‘ব্যাংক হলিডে’ হিসেবে পালন করেন দেশের ব্যাংকাররা। কোনো ব্যাংক হিসাবায়ন চূড়ান্ত করতে না পারলে এদিন প্রধান কার্যালয়ে বসে সে হিসাব চূড়ান্ত করা হয়। দিনটিতে বন্ধ থাকে দেশের ব্যাংকগুলোর সব ধরনের লেনদেন। কেবল খোলা থাকে প্রধান কার্যালয়সহ গুরুত্বপূর্ণ কিছু শাখা।

ব্যাংকের বার্ষিক হিসাবায়ন চূড়ান্তের দিনই একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ভোটের তারিখ নির্ধারণ হওয়ায় দুর্ভাবনায় পড়েছেন ব্যাংকাররা। তারা বলছেন, ডিসেম্বরের শেষ সপ্তাহ ব্যাংকারদের জন্য সবচেয়ে ব্যস্ততম সময়।

খেলাপি ঋণ আদায়, লাভ-লোকসানের খতিয়ান তৈরিসহ বার্ষিক হিসাবায়ন চূড়ান্ত করার জন্য এ সময়ে ব্যাংকারদের দিন-রাত কাজ করতে হয়। ৩০ ডিসেম্বর ভোট হলে তার তিন-চারদিন আগে থেকে ভোটগ্রহণ কর্মকর্তারা নির্বাচনী প্রশিক্ষণ, ভোটের উপকরণ গ্রহণসহ আনুষঙ্গিক কাজে ব্যস্ত থাকবেন।

রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকের পাশাপাশি বেসরকারি ব্যাংকের অনেক কর্মকর্তা ৩০ ডিসেম্বর ভোটগ্রহণ কর্মকর্তার দায়িত্বে থাকবেন। তাছাড়া ভোট উপলক্ষে এদিন সাধারণ ছুটিও। এর পরদিন আবার ব্যাংক হলিডে। সব মিলিয়ে বার্ষিক হিসাবায়ন নিয়ে দুশ্চিন্তায় আছেন ব্যাংকাররা।

নির্বাচনে ভোটগ্রহণ ও বার্ষিক হিসাবায়ন চূড়ান্তকরণ একই দিনে হওয়ায় দেশের এক ডজনের বেশি ব্যাংকের প্রধান নির্বাহীরা বণিক বার্তার কাছে তাদের দুর্ভাবনার কথা জানান। একই ধরনের অভিব্যক্তি প্রকাশ করেছেন ব্যাংকের শাখা ব্যবস্থাপকরাও। তবে বিষয়টিকে স্পর্শকাতর আখ্যায়িত করে নাম প্রকাশ করতে চাননি ব্যাংকারদের কেউ। বাংলাদেশ ব্যাংকসহ নীতিনির্ধারক মহলে বিষয়টি এরই মধ্যে জানিয়েছেন বলে নিশ্চিত করেছেন তারা।

যদিও জাতীয় নির্বাচনের তারিখ ঘিরে কোনো সমস্যা দেখছে না নির্বাচন কমিশন। নির্বাচন কমিশনের সচিব হেলালুদ্দীন আহমদ এ প্রসঙ্গে বলেন, দেশে পাঁচ বছর পর পর জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। এ দেশের মানুষের সবচেয়ে বড় উৎসব হলো জাতীয় নির্বাচনের ভোট। আশা করছি, ব্যাংকের হিসাবায়ন চূড়ান্ত করার দিন এক্ষেত্রে বাধা হবে না। বাংলাদেশ ব্যাংক এ বিষয়ে সার্কুলার জারি করে হিসাবায়ন চূড়ান্ত করার দিন এগিয়ে আনতে পারে।

তিনি বলেন, নির্বাচনে ভোটগ্রহণের জন্য সারা দেশে প্রায় সাত লাখ প্রিসাইডিং, সহকারী প্রিসাইডিং ও পোলিং অফিসার নিয়োগ দিতে হবে। দেশের সব উপজেলার ব্যাংকারসহ সরকারি কর্মকর্তারা এক্ষেত্রে দায়িত্ব পালন করবেন। কোনো উপজেলায় সরকারি কর্মকর্তা দিয়ে ভোটগ্রহণকারী কর্মকর্তার পদ পূর্ণ না হলে বেসরকারি কর্মকর্তাদেরও নিয়োগ দেয়া হবে।

ব্যাংকের হিসাবায়ন চূড়ান্ত করার দিন এগিয়ে আনার মধ্যেও সমাধান দেখছেন না ব্যাংকাররা। ২০১৮ সালের দিনপঞ্জিকাও দিচ্ছে একই ধরনের তথ্য। ২২ ডিসেম্বর শনিবার সরকারি ছুটি দিয়ে শুরু হবে ডিসেম্বরের শেষ সপ্তাহ। ২৩ ও ২৪ ডিসেম্বর কর্মদিবসের পর ২৫ ডিসেম্বর মঙ্গলবার বড়দিন উপলক্ষে সরকারি ছুটি।

এরপর ২৬ ও ২৭ তারিখ বুধ ও বৃহস্পতিবার অফিস খোলা থাকবে। তবে নির্বাচনের আগের দিন ২৮ ও ২৯ তারিখ শুক্র ও শনিবার সরকারি ছুটি। ৩০ ডিসেম্বর নির্বাচন হলে ৩১ ডিসেম্বর ‘ব্যাংক হলিডে’ উপলক্ষে ব্যাংকের সব ধরনের লেনদেন বন্ধ থাকবে।

এ হিসাবে ব্যাংক কর্মকর্তারা বার্ষিক হিসাবায়ন চূড়ান্ত করার জন্য সময় পাবেন ২৬ কিংবা ২৭ ডিসেম্বর। কিন্তু ওই দুদিন ভোটগ্রহণ কর্মকর্তা হিসেবে নিয়োগপ্রাপ্ত ব্যাংকাররা ব্যস্ত থাকবেন নির্বাচনী প্রশিক্ষণ গ্রহণ, জেলা প্রশাসক, রিটার্নিং অফিসার ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার দপ্তরে ছোটাছুটি নিয়ে।

তাহলে ব্যাংকের হিসাবায়ন কীভাবে সম্ভব হবে, এমন প্রশ্ন তুলে রাষ্ট্রায়ত্ত একটি ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) বলেন, ব্যাংকাররা গ্রাহকদের কাছ থেকে টাকা আদায় ও হিসাবায়নের মাস হিসেবে ডিসেম্বরকে বিবেচনায় রাখেন। বছরের শেষ মাসের শেষ সপ্তাহে ব্যাংকারদের দিন-রাত কাজ করতে হয়। এ অবস্থায় জাতীয় নির্বাচনের জন্য শেষ সপ্তাহ ব্যয় করতে হলে ব্যাংকগুলোর জন্য সমস্যা তৈরি হবে।

তাছাড়া হিসাবায়ন চূড়ান্ত করার দিন এগিয়ে কিংবা পিছিয়ে দিয়েও সমস্যার সমাধান দেখছি না। কারণ ব্যাংকের শাখা পর্যায়ের কর্মকর্তাদের সিংহভাগকে পুরো সপ্তাহ নির্বাচনী কাজে ব্যস্ত থাকতে হবে। ভোটের পরদিন ৩১ ডিসেম্বর পরিস্থিতি কেমন থাকে, তাও বলা যাচ্ছে না।

৩০ ডিসেম্বর থেকে ব্যাংকের হিসাবায়ন এক-দুদিন এগিয়ে আনা সম্ভব নয় কেন? এমন প্রশ্নের উত্তরে দেশের শীর্ষস্থানীয় একটি বেসরকারি ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) বলেন, ২৮ ও ২৯ ডিসেম্বর শুক্র ও শনিবার। এ অবস্থায় ২৭ ডিসেম্বর হিসাবায়ন চূড়ান্ত করা যায়। কিন্তু সমস্যা হলো, ২৮ থেকে ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত টানা চারদিন ব্যাংকিং লেনদেন বন্ধ রাখতে হবে। এছাড়া ২০১৮ সালের সব লেনদেনের হিসাব এ বছরের আর্থিক প্রতিবেদনেই অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। বাংলাদেশসহ বিশ্বব্যাপী এটিই প্রথা হিসেবে চলে আসছে।

বিষয়টি সমাধানে হিসাবায়নের দিন এগিয়ে আনা যেতে পারে বলে মনে করেন বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র মো. সিরাজুল ইসলাম। তিনি বলেন, জাতীয় নির্বাচনের ভোট দেশের বৃহৎ কর্মসূচি। এজন্য ব্যাংকারদের ছাড় দেয়ার মানসিকতা নিয়ে প্রস্তুত থাকতে হবে। হিসাবায়নের দিন এগিয়ে আনা যেতে পারে। বিষয়টি নিয়ে অন্য কোনো ভাবনার কথা আমার জানা নেই।

দেশে কার্যক্রম পরিচালনা করছে বাংলাদেশ ব্যাংকের তফসিলভুক্ত ৫৯টি বাণিজ্যিক ব্যাংক। এর মধ্যে রাষ্ট্রায়ত্ত প্রধান চারটি বাণিজ্যিক ব্যাংকে কর্মরত ৪৮ হাজার ৩৩১ জন। সবচেয়ে বেশি ১৮ হাজার ১৬৭ রয়েছেন সোনালী ব্যাংকে।

এছাড়া জনতা ব্যাংকে ১১ হাজার ৮৭৬, অগ্রণী ব্যাংকে ১২ হাজার ৭৯৮ ও রূপালী ব্যাংকে ৫ হাজার ৪৯০ জন ব্যাংকার কর্মরত। বেসরকারি ব্যাংকগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বেশি সাড়ে ১১ হাজার কর্মকর্তা রয়েছেন ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ লিমিটেডে। অন্যান্য সরকারি-বেসরকারি ব্যাংক মিলিয়ে দেশের ব্যাংকিং খাতে কর্মরত প্রায় দুই লাখ জনবল।

আগামী ৩০ ডিসেম্বর ভোটগ্রহণ কর্মকর্তা (প্রিসাইডিং, সহকারী প্রিসাইডিং ও পোলিং অফিসার) হিসেবে দায়িত্ব পালন করতে হবে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকের অফিসার, সিনিয়র অফিসার ও প্রিন্সিপাল অফিসারদের। ভোটগ্রহণ কর্মকর্তা হিসেবে নির্বাচন কমিশন নিয়োগ দিতে পারবে দেশের বেসরকারি ব্যাংকগুলোর কর্মকর্তাদেরও। ভোটার হিসেবে অন্য ব্যাংকাররা পাড়ি দেবেন নিজ নিজ এলাকায়।

গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ-১৯৭২-এর ৯ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী, জাতীয় সংসদ নির্বাচনের জন্য ভোটগ্রহণকারী কর্মকর্তা অর্থাৎ প্রিসাইডিং, সহকারী প্রিসাইডিং ও পোলিং অফিসার নিয়োগের জন্য রিটার্নিং অফিসার একটি প্যানেল প্রস্তুত করবেন। রিটার্নিং অফিসার তার অধীন নির্বাচনী এলাকা বা জেলায় স্থাপিত সব সরকারি অথবা বেসরকারি অফিস, প্রতিষ্ঠান ও সংস্থার প্রধানদের কাছে ভোটগ্রহণ কর্মকর্তা-কর্মচারীর লিখিত তালিকা সরবরাহের নির্দেশ দেবেন। ভোটগ্রহণ কর্মকর্তার তালিকা থেকে প্রতিটি ভোটকেন্দ্রে একজন প্রিসাইডিং অফিসার ও প্রতি ভোটকক্ষে একজন সহকারী প্রিসাইডিং অফিসার ও দুজন পোলিং অফিসার নিয়োগ দেবেন।

312 ভিউ

Posted ১০:৫৮ পূর্বাহ্ণ | রবিবার, ১৮ নভেম্বর ২০১৮

coxbangla.com |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

এ বিভাগের আরও খবর

Editor & Publisher

Chanchal Dash Gupta

Member : coxsbazar press club & coxsbazar journalist union (cbuj)
cell: 01558-310550 or 01736-202922
mail: chanchalcox@gmail.com
Office : coxsbazar press club building(1st floor),shaheed sharanee road,cox’sbazar municipalty
coxsbazar-4700
Bangladesh
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
বাংলাদেশের সকল পত্রিকা সাইট
Bangla Newspaper

ABOUT US :

coxbangla.com is a dedicated 24x7 news website which is published 2010 in coxbazar city. coxbangla is the news plus right and true information. Be informed be truthful are the only right way. Because you have the right. So coxbangla always offiers the latest news coxbazar, national and international news on current offers, politics, economic, entertainment, sports, health, science, defence & technology, space, history, lifestyle, tourism, food etc in Bengali.

design and development by : webnewsdesign.com