শুক্রবার ৩রা মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ২০শে বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

শিরোনাম

শুক্রবার ৩রা মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

শিরোনাম

জামায়াতকে ত্যাগ করবে না বিএনপি

সোমবার, ২৪ সেপ্টেম্বর ২০১৮
413 ভিউ
জামায়াতকে ত্যাগ করবে না বিএনপি

কক্সবাংলা ডটকম(২৩ সেপ্টেম্বর) :: জাতীয় ঐক্য প্রক্রিয়ার নেতাদের দাবিতে জামায়াতকে ত্যাগ করবে না বিএনপি। বিএনপির সঙ্গে ২০ দলীয় জোটেই থাকবে জামায়াত। তবে জামায়াতকে ‘জাতীয় ঐক্যে’ সম্পৃক্ত করবে না বিএনপি। ডা. একিউএম বদরুদ্দোজা চৌধুরীর বিকল্পধারা বাদে জাতীয় ঐক্যের বাকি দলগুলোরও সম্মতি রয়েছে বিএনপির এ কৌশলে। জামায়াতের অবস্থানও অভিন্ন।

স্বাধীনতার বিরোধীতাকারী জামায়াতের সঙ্গ ছাড়তে বিএনপির ওপর দীর্ঘদিন ধরেই দেশি-বিদেশি চাপ রয়েছে। বি. চৌধুরী ও ড. কামাল হোসেনের নেতৃত্বাধীন জাতীয় ঐক্য প্রক্রিয়াও একই ইস্যুতে চাপ দিচ্ছে। কিন্তু ভোটের অঙ্কের হিসাব মেলাতেই জামায়াতকে ছাড়তে নারাজ বিএনপি। দলটির আশঙ্কা, তারা ছেড়ে দিলে আওয়ামী লীগের সঙ্গে সমঝোতায় যেতে পারে জামায়াত। তাতে ভোটের সমীকরণে এগিয়ে যাবে আওয়ামী লীগ।

সরকারের বাইরে থাকা সব দলকে নিয়ে ‘বৃহত্তর জাতীয় ঐক্য’ গঠনের ডাক দিয়েছেন বি. চৌধুরী ও ড. কামাল হোসেন। বিএনপিও এই ঐক্য প্রক্রিয়ায় যুক্ত হয়েছে। স্বাধীনতাবিরোধী কোনো দলকে ‘বৃহত্তর জাতীয় ঐক্যে’ না রাখার ঘোষণা দিয়েছেন বি. চৌধুরী এবং ড. কামাল হোসেন।

জাতীয় ঐক্যের নেতারা নিশ্চিত করেছেন, বি. চৌধুরী ও তার ছেলে মাহী বি. চৌধুরী জামায়াতকে বাইরে রাখার প্রশ্নে অনমনীয়। তবে বাকিরা এ বিষয়ে ততটা কঠোর নন। তারা জামায়াত ইস্যুতে বিবাদের চেয়ে  সরকারের বিরুদ্ধে বৃহত্তর ঐক্য গড়ে তোলাকেই বেশি গুরত্ব দিচ্ছেন। তাদের কৌশল হচ্ছে, জামায়াতকে ঐক্যে নেওয়া হবে না; কিন্তু বিএনপি-জামায়াতের জোটের বিষয়েও আপত্তি করবেন না।

স্বাধীনতাবিরোধী শক্তি জামায়াতের সঙ্গে জোট থাকায় জাতীয় ঐক্যে বিএনপির অন্তর্ভুক্তি নিয়ে সমস্যা দেখছেন না এই প্রক্রিয়ার আহ্বায়ক ড. কামাল হোসেন। রোববার তিনি  বলেছেন, জামায়াতকে বাদ দিয়েই বিএনপি জাতীয় ঐক্যে এসেছে।

জাতীয় ঐক্যের পক্ষ থেকেও বিএনপিকে বলা হয়েছে, স্বাধীনতাবিরোধী কাউকেই এখানে স্থান দেওয়া হবে না। বিএনপি যদি জামায়াতকে তাদের নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোটে রাখে, তাহলে সেটা হবে তাদের দলীয় বিষয়। এর সঙ্গে জাতীয় ঐক্যের কোনো সম্পর্ক নেই।

গণফোরাম সভাপতি ড. কামাল আরও বলেন, ‘আমরা জানি, শুধু বিএনপি আমাদের সঙ্গে আছে। এখানে জামায়াতের কোনো স্থান নেই।’ একই সঙ্গে বিএনপির সঙ্গে ঐক্য গড়তেও কোনো বাধা নেই বলে তিনি স্পষ্ট করেন।

জাতীয় ঐক্যের বাকি নেতারা জামায়াত প্রশ্নে কৌশলী হলেও বিকল্পধারা এই ইস্যুতে তাদের চাপ অব্যাহত রেখেছে। তবে এটিকে আমলে নিচ্ছে না বিএনপি। তাদের অবস্থান হচ্ছে, জামায়াতের সঙ্গে নির্বাচনী জোট অটুট রাখা।

দলীয় সূত্র নিশ্চিত করেছে, বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার চিন্তাও অভিন্ন। কারাগারে তার সঙ্গে দেখা করতে গেলে দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে তিনি বলেছেন, ২০ দলীয় জোটকে অটুট রেখেই জাতীয় ঐক্য করতে হবে। লন্ডন থেকে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানও একই বার্তা দিয়েছেন।

জামায়াতের সঙ্গে জোট অটুট রাখার বিষয়ে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ২০ দলীয় জোট ও বৃহত্তর জাতীয় ঐক্য পৃথক বিষয়। সাংঘর্ষিক নয়। জামায়াত ২০ দলীয় জোটের শরিক। তারা বৃহত্তর জাতীয় ঐক্যে থাকছে না। তিনি জানান, জাতীয় ঐক্যের বিষয়ে ২০ দলীয় জোটে আলোচনা হয়েছে। জোট শরিকরা এটিকে সমর্থন করেছে। জামায়াতও এ প্রক্রিয়ায় দ্বিমত করেনি।

তবে জাতীয় ঐক্যের নেতারা জামায়াত নিয়ে প্রশ্ন তোলায় দলটির বিভিন্ন স্তরের নেতারা অসন্তুষ্ট। তারা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে জাতীয় ঐক্যের নেতাদের বক্তব্যের সমালোচনা করে তাদের উদ্দেশ্য নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন।

জামায়াতের নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগর উত্তরের আমির মুহাম্মদ সেলিম উদ্দিন ফেসবুকে লিখেছেন, বিএনপি-জামায়াতের জোট ভাঙতে সরকারের ইন্ধনে জাতীয় ঐক্যের নেতারা স্বাধীনতাবিরোধী ইস্যু তুলেছেন। তবে তিনি এ বিষয়ে গণমাধ্যমে কথা বলতে রাজি হননি।

জামায়াতের আনুষ্ঠানিক বক্তব্য বিএনপির মতোই। দলটির নায়েবে আমির গোলাম পরওয়ার রোববার বলেছেন, যারা বিএনপিকে জামায়াত ছাড়তে বলছেন তারা কেউ ২০ দলের শরিক নন। শরিকদের কেউ জামায়াতকে বাদ দেওয়ার দাবি জানালে তারা এ বিষয়ে বক্তব্য দেওয়া জরুরি মনে করতেন। জামায়াত যেহেতু জাতীয় ঐক্য প্রক্রিয়ায় নেই, তাই এর নেতাদের বক্তব্যের জবাব দেওয়ার প্রয়োজন নেই বলেও মনে করেন তিনি।

এদিকে বিকল্পধারার মাহী বি. চৌধুরী জামায়াতের যে কোনো প্রকার সংশ্নিষ্টতার বিরোধিতায় এখনও অনমনীয়। তিনি বলেছেন, তার অবস্থান হচ্ছে, যতদিন জামায়াতের বিষয়ে স্পষ্ট ঘোষণা না দেবে ততদিন বিএনপিকেও জাতীয় ঐক্যে নেওয়ার বিষয়ে স্পষ্ট ঘোষণা দেওয়া হবে না। জাতীয় ঐক্যে স্বাধীনতাবিরোধী কোনো দলের স্থান হবে না।

নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না বলেছেন, তাদের ঘোষণাপত্র স্পষ্ট- জাতীয় ঐক্যে স্বাধীনতাবিরোধী দলের স্থান নেই। ঐক্য প্রক্রিয়া নিয়ে বিএনপির সঙ্গে আলোচনা চলছে, জামায়াতের সঙ্গে নয়। জামায়াত বিএনপির শরিক। জামায়াতের প্রশ্নে বিএনপি কী করবে, সেটা তাদের নিজস্ব বিষয়।

এদিকে, জামায়াতের বিষয়ে জোরালো বিরোধিতা থাকলেও জাতীয় ঐক্যের গত শনিবারের সমাবেশে ছিল খেলাফত মজলিসের উপস্থিতি। ২০ দলের শরিক এ দলটির আমির মাওলানা মুহম্মদ ইসহাক মুক্তিযুদ্ধের সময় মালেক মন্ত্রিসভার সদস্য ছিলেন। ১৯৭৩ সালে দালাল আইনে তার যাবজ্জীবন কারাদণ্ড হয়েছিল। বিকল্পধারা মহাসচিব মেজর (অব.) আবদুল মান্নানের বিরুদ্ধেও মুক্তিযুদ্ধে বিরোধিতার অভিযোগ উঠেছে।

জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল-জেএসডির সাধারণ সম্পাদক আবদুল মালেক রতন বলেছেন, বিএনপির সঙ্গে এখনও আলোচনার টেবিলে বসা হয়নি। তাদের সঙ্গে আনুষ্ঠানিক বৈঠকে জামায়াতের বিষয়ে কথা হবে। সমাবেশের বক্তব্য দিয়ে সবকিছু নির্ধারণ হয় না।

আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে ১৯৯৯ সালে জামায়াত, জাতীয় পার্টি ও ইসলামী ঐক্যজোট নিয়ে চারদলীয় জোট গড়ে তোলে বিএনপি। পরের বছর হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ জোট ছাড়লেও ১৯ বছর ধরে বিএনপির সঙ্গে রয়েছে জামায়াত।

নানামুখী চাপ থাকলেও জামায়াত-সঙ্গ ছাড়েনি বিএনপি। ২০০১ ও ২০০৮ সালে জোটবদ্ধ নির্বাচন করে তারা। ২০১৪ সালে বিএনপির সিদ্ধান্তে নির্বাচন থেকে দূরে থাকে নিবন্ধন হারানো জামায়াত। ২০১০ সালের পর যুদ্ধাপরাধের বিচার ও ধরপাকড়ে কোণঠাসা হয়ে পড়লেও জামায়াত জোট ছেড়ে যায়নি।

২০০১ সালের নির্বাচনে ৩১ আসনে প্রার্থী দিয়ে ৪ দশমিক ২৫ এবং ২০০৮ সালে ৩৯ আসনে লড়ে ৪ দশমিক ৭ শতাংশ ভোট পায় জামায়াত। ১৯৯৬ সালে ৩০০ আসনে প্রার্থী দিয়ে তারা প্রায় ৯ শতাংশ ভোট পেয়েছিল। ভোটের এ অঙ্কের কারণেই প্রতিনিয়ত বিরূপ সমালোচনার মুখেও জামায়াতকে ছাড়তে রাজি হয়নি বিএনপি।

বিএনপির হিসাব অনুযায়ী, ভোটের মাঠে জামায়াত গুরত্বপূর্ণ প্রভাবক। যেসব আসনে আওয়ামী লীগের সঙ্গে তাদের ব্যবধান সামান্য, সেখানে জামায়াতকে তাদের প্রয়োজন।

জাতীয় ঐক্যের উদ্যোক্তা গণফোরাম, বিকল্পধারা ও জেএসডির নির্বাচনী পরিসংখ্যান জামায়াতের তুলনায় দুর্বল। ২০০৮ সালে এই তিন দলের তিনটি বাদে সব আসনে জামানত বাজেয়াপ্ত হয়েছে।

রাজনৈতিক বিশ্নেষকরা বলছেন, জাতীয় ঐক্যে সুপরিচিত মুখ থাকলেও তাদের ভোটব্যাংক নেই। কর্মী-সমর্থক সংখ্যাও নগণ্য। জামায়াতের এ শক্তি থাকায় তারা বিএনপির কাছে এত গুরুত্ব পাচ্ছে।

413 ভিউ

Posted ৩:২৫ পূর্বাহ্ণ | সোমবার, ২৪ সেপ্টেম্বর ২০১৮

coxbangla.com |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

এ বিভাগের আরও খবর

Editor & Publisher

Chanchal Dash Gupta

Member : coxsbazar press club & coxsbazar journalist union (cbuj)
cell: 01558-310550 or 01736-202922
mail: chanchalcox@gmail.com
Office : coxsbazar press club building(1st floor),shaheed sharanee road,cox’sbazar municipalty
coxsbazar-4700
Bangladesh
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
বাংলাদেশের সকল পত্রিকা সাইট
Bangla Newspaper

ABOUT US :

coxbangla.com is a dedicated 24x7 news website which is published 2010 in coxbazar city. coxbangla is the news plus right and true information. Be informed be truthful are the only right way. Because you have the right. So coxbangla always offiers the latest news coxbazar, national and international news on current offers, politics, economic, entertainment, sports, health, science, defence & technology, space, history, lifestyle, tourism, food etc in Bengali.

design and development by : webnewsdesign.com