শুক্রবার ৩রা মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ২০শে বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

শিরোনাম

শুক্রবার ৩রা মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

শিরোনাম

টেকনাফ স্থলবন্দরে সীমান্ত বাণিজ্যে মন্দাভাব

শুক্রবার, ২৯ সেপ্টেম্বর ২০১৭
492 ভিউ
টেকনাফ স্থলবন্দরে সীমান্ত বাণিজ্যে মন্দাভাব

বিশেষ প্রতিবেদক(২৮ সেপ্টেম্বর) :: মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে সহিংসতার পর থেকে মিয়ানমারের সাথে স্থল পথে সীমান্ত বাণিজ্যে মন্দাভাব বিরাজ করছে। গত এক মাস ধরে মিয়ানমারে চলমান সহিংসতার কারণে এ অবস্থা বিরাজ করছে। বাংলাদেশ–মিয়ানমারের সীমান্ত ব্যবসা–বাণিজ্য টেকনাফ–মংডু এলাকা দিয়ে পরিচালিত হয়। বর্তমান পরিস্থিতিতে এ বাণিজ্য অনেকটা বন্ধ রয়েছে।

তবে সহিংসতা শুরুর আগে মংডু থেকে বাণিজ্যিক পণ্য বোঝাই ট্রলার নিয়ে আসা ৪৪ জন মিয়ানমার নাগরিক এখনো স্বদেশে যেতে পারেনি। এরা টেকনাফ স্থল বন্দরে আটকে রয়েছে বলে জানান সংশ্লিষ্টরা।

বৃহস্পতিবার টেকনাফ স্থল বন্দরে গিয়ে দেখা যায়, মিয়ানমার থেকে আসা চাল, কাঁচা মাছ ও কিছু আচার ট্রাকে করে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। এর বাইরে আর কোনও পণ্য বোঝাই ট্রলার বা জাহাজ বন্দরে আসেনি। অথচ প্রতিদিন গড়ে ১০/১২ টি পণ্য বোঝাই ট্রলার বা জাহাজ নোঙ্গর করা হত এই বন্দরে। বন্দরের আগের চিত্র এবং বর্তমান চিত্রের মধ্যে অনেক পার্থক্য রয়েছে।

বন্দর শ্রমিকরা পণ্যের অভাবে লোড–আনলোড করতে পারছেন না। তাদের মাঝে বিরাজ করছে হতাশা ও অভাব।

বন্দর শ্রমিক মাঝি মোঃ করিম জানান, মিয়ানমারে সহিংসতার কারণে পণ্য আসা একেবারে কমে গেছে। এর ফলে প্রায় এক মাস ধরে অভাব অনটনের মধ্যে দিন কাটাতে হচেছ।

এভাবে আর কত দিন থাকতে হবে জানি না। টেকনাফ স্থল বন্দর দিয়ে দু’দেশের মধ্যে আমদানি রপ্তানি বাণিজ্য হয়। এই বন্দরে পণ্য নিয়ে বড় জাহাজও ভিড়ে। গতবছর লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে অধিক রাজস্ব আয় করা হয়েছে। চলতি বছরের জুলাই ও আগস্ট মাসেও এর ধারাবাহিকতা শুরু হয়। কিন্তু রাখাইন রাজ্যে সহিংসতার কারণে ব্যবসায় মন্দা বিরাজ করছে।

তবে সরকার এই বন্দর থেকে কোটি কোটি টাকার রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। তাছাড়া মিয়ানমারে ব্যবসায়ীদের কয়েকশত কোটি টাকা আটকা পড়েছে। তবে পরিস্থিতি শান্ত না হলে এই বাণিজ্য স্বাভাবিক হওয়ার সম্ভাবনা দেখছেন না ব্যবসায়ীসহ সংশ্লিষ্টরা।

এই বন্দর দিয়ে মিয়ানমার থেকে ৯০ ভাগ পণ্য আমদানি হলেও রপ্তানি হয় মাত্র ১০ ভাগ। বন্দর দিয়ে মংডু ও আকিয়াব থেকে কম সময়ে পণ্য আনা নেয়া হয়। টেকনাফ থেকে মংডু যেতে সময় লাগে মাত্র ৪০ মিনিট। আর আকিয়াব (সিটুয়ে) বন্দর যেতে ৬ ঘণ্টা। অথচ চট্টগ্রাম বন্দর থেকে জাহাজ সিঙ্গাপুর ঘুরে আকিয়াব আসতে ছয়দিন সময় লাগে। ফলে টেকনাফ স্থল বন্দরের ব্যবসায়ীরা এই সুবিধা পেয়ে থাকেন।

মিয়ানমার থেকে আমদানি করা হয়, কাঠ, মাছ, চাল, শুটকি, বরই আচার, পেঁয়াজ, আদা ও হলুদ। আর রপ্তানি করা হয়, তৈরি পোশাক, এলুমিনিয়াম, পহ্মাস্টিক সামগ্রী, মানুষের চুল, ওষুধ ও গেঞ্জি।

স্থল বন্দর শুল্ক স্টেশন সূত্র জানায়, চলতি অর্থবছরের জুলাই মাসে ৮ কোটি ৮৪ লাখ ৪৮ হাজার টাকার রাজস্ব আদায় হয়েছে। এই মাসে লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৬ কোটি ২৯ লাখ টাকা। একইভাবে আগস্ট মাসে ১০ কোটি ৭ লাখ ৬২ হাজার টাকার রাজস্ব আদায় হয়েছে। এই মাসে লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৬ কোটি ৫৫ লাখ টাকা।

এই দুইমাসে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ২ কোটি ৭৯ লাখ ৩২ হাজার টাকা বেশি রাজস্ব আয় হয়েছে। কিন্তু গত ২৫ আগস্ট রাখাইন রাজ্যে সহিংসতার পর থেকেই সীমান্ত বাণিজ্য অনেকটা বন্ধ হয়ে যায়। বন্দর দিয়ে আমদানি রপ্তানি একেবারে বন্ধ হয়ে যায়। পরবর্তীতে অল্প কিছু চাল, আচার ও আদা আমদানি করা হয়েছে।

তবে চলতি সেপ্টেম্বর মাসের ২৮ দিনে স্থলবন্দরে রাজস্ব আদায় হয় মাত্র ২ কোটি ৮০ লাখ টাকা। অথচ এই মাসে লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৬ কোটি ৮২ লাখ টাকা। সেই হিসেবে এই মাসে প্রায় চার কোটি টাকার মত রাজস্ব আয় থেকে বঞ্চিত হতে হয়েছে।

টেকনাফ স্থলবন্দর শুল্ক কর্মকর্তা এ এস এম মোশাররফ হোসেন জানান, সীমান্ত বাণিজ্য অনেকটা নিয়ন্ত্রণে আনা হয়েছিল। গত অর্থ বছরের রাজস্ব আয়ে রেকর্ড সৃষ্টি করা হয়েছে। এই অর্থ বছরের দুই মাসেও এর ধারাবহিকতা শুরু হয়েছিল। হঠাৎ করে মিয়ানমারে সমস্যার কারণে বাণিজ্য বন্ধ থাকায় কোটি কোটি টাকার রাজস্ব হারাচ্ছি। এভাবে সমস্যা লেগে থাকলে স্থলবন্দরের ব্যবসা আরও তির মুখে পড়তে পারে। এতে দুই দেশের আমদানি রপ্তানি সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা ক্ষতিগ্রস্থ হবেন বলে জানান তিনি। এর থেকে উত্তরণে সংশ্লিষ্টসহ সকলকে এগিয়ে আসার আহবান জানান তিনি।

প্রসঙ্গত, গত বছরের ৯ অক্টোবর মিয়ানমারে সন্ত্রাসী হামলার পর থেকে টেকনাফ স্থলবন্দর দিয়ে মংডু যাতায়াতের বর্ডার পাস বন্ধ রয়েছে। এতে অনেকটা প্রভাব পড়েছে আমদানি–রপ্তানি বানিজ্যে। এই বর্ডার পাসে ব্যবসায়ী থেকে নির্ধারিত ফি হিসেবে অর্থ আদায় করা হতো। প্রায় এক বছর ধরে এটি বন্ধ থাকায় অর্ধ কোটি টাকার রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হয়েছে বলে জানান টেকনাফ অভিবাসন কর্মকর্তা, উপ–পরিদর্শক (এসআই) মোহাম্মদ হোসেন।

492 ভিউ

Posted ১১:৪৬ পূর্বাহ্ণ | শুক্রবার, ২৯ সেপ্টেম্বর ২০১৭

coxbangla.com |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

এ বিভাগের আরও খবর

Editor & Publisher

Chanchal Dash Gupta

Member : coxsbazar press club & coxsbazar journalist union (cbuj)
cell: 01558-310550 or 01736-202922
mail: chanchalcox@gmail.com
Office : coxsbazar press club building(1st floor),shaheed sharanee road,cox’sbazar municipalty
coxsbazar-4700
Bangladesh
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
বাংলাদেশের সকল পত্রিকা সাইট
Bangla Newspaper

ABOUT US :

coxbangla.com is a dedicated 24x7 news website which is published 2010 in coxbazar city. coxbangla is the news plus right and true information. Be informed be truthful are the only right way. Because you have the right. So coxbangla always offiers the latest news coxbazar, national and international news on current offers, politics, economic, entertainment, sports, health, science, defence & technology, space, history, lifestyle, tourism, food etc in Bengali.

design and development by : webnewsdesign.com