কক্সবাংলা ডটকম(১৫ আগস্ট) :: বঙ্গবন্ধু। একটি রাষ্ট্রের জন্মদাতার নাম। মানুষটির নাম উচ্চারণের সঙ্গে সঙ্গে রচিত হয়ে যায় ইতিহাসের শত শত পাতা। ইতিহাস নিজেকে ঠুনকো মনে করে এই মহান মানুষটির সামনে। আর মনে হবেই না বা কেন? বঙ্গবন্ধু নিজেই এক মূর্তিমান ইতিহাস, গৌরবের ইতিহাস, প্রাণের ইতিহাস বলে মনে করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগের ছাত্র দেলোয়ার শাহজাদা।
এই তরুণ বলেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান একটি নাম, যে নাম শুনলেই ভেসে ওঠে সেই ছবিটি, যেখানে একটি লোক জনসমুদ্রের সামনে দাঁড়িয়ে তর্জনী তুলে জাতির উদ্দেশে ভাষণ দিচ্ছেন। যে ভাষণে স্বাধীনতার ডাক পেয়ে যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েছিল সর্বস্তরের বাঙালি। সেদিনের সে ভাষণে জেগে উঠেছিল তরুণ সমাজ।
তরুণদের শক্তি একত্রিত হয়ে পাকিস্তানি হানাদারের বিরুদ্ধে বুলডুজার হিসেবে কাজ করেছিল। একই বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের শিক্ষার্থী শাহেদ খান বলেন, বঙ্গবন্ধু স্বাধীন বাংলাদেশের ইতিহাসের উজ্জ্বল নক্ষত্রের নাম। যিনি চিরভাস্বর হয়ে আছেন বর্তমান প্রজন্মের কাছে।
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগের শিক্ষার্থী আব্দুল্লাহ আল নিলয় বলেন, আজীবন অসামপ্রদায়িক রাজনীতিতে বিশ্বাসী ছিলেন বলেই সারাটা জীবন সামপ্রদায়িকতা, ধর্মান্ধতার বিরুদ্ধে লড়াই করে গেছেন বঙ্গবন্ধু। বঙ্গবন্ধু আজ আমাদের মাঝে নেই। তবুও মনে হয় আজ যদি তিনি থাকতেন, অনেক কিছুই অন্যরকম হতে পারত। আজ ২০১৭ সালেও তিনি সমান প্রাসঙ্গিক।
শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের এগ্রিবিজনেস ম্যানেজমেন্ট অনুষদের স্নাতকোত্তরের শিক্ষার্থী রাজেস চক্রবর্তীর মতে, বঙ্গবন্ধু ও বাংলাদেশ সমর্থক দুটি শব্দ। একই বিশ্ববিদ্যালয়ের কৃষি অনুষদের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী গৌতম রয় বলেন, একাত্তরে যেমন বাঙালির মুখে ‘জয়বাংলা’ আর হূদয়ে ‘বঙ্গবন্ধু’-এই দুটিই ছিল পাকিস্তানি হানাদারবাহিনীর বিরুদ্ধে যুদ্ধরত বাঙালির মূল অস্ত্র, তেমনি বর্তমান তরুণ প্রজন্মকে তারই আদর্শে উজ্জীবিত হয়ে সোনার বাংলা গড়ার প্রত্যয়ে নিজেকে উত্সর্গ করতে হবে।
স্ট্যামফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষার্থী ফারজানা সুমি বলেন, মুক্তিযুদ্ধের অবিনাশী চেতনায় আজ দেশের তরুণ প্রজন্ম জেগে উঠেছে।
ধর্ম নয়, বর্ণ নয়, গোত্র নয়; একটি ভাষা ও সংস্কৃতির ভিত্তিতে বাংলাদেশ নামে একটি আলাদা দেশের স্বপ্ন দেখেছেন এবং বাস্তবায়ন করেছেন বঙ্গবন্ধু। তার লালিত জাতীয়তাবাদের ভিত্তির উপরেই দাঁড়িয়ে আছে গোটা বাংলাদেশ, বললেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগের শিক্ষার্থী আরিফুর রহমান।
’৫২ ও ’৭১-এ সবার আগে তরুণ প্রজন্মই এগিয়ে এসেছিল নিজেদের প্রাণের মায়া ত্যাগ করে। তেমনি বর্তমান প্রজন্মও ঠিক তাদের পূর্বসূরীদের অনুসরণ করে যাচ্ছে। স্বাধীনতার চেতনা ও বঙ্গবন্ধুর চেতনাকে বুকে আঁকড়ে ধরে ঠিকই আজ এগিয়ে যাচ্ছে বলে মনে করেন বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের কৃষি অর্থনীতি বিভাগের শিক্ষার্থী সিরাজ সোলায়মান।
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী রায়হান রাজ বলেন, বঙ্গবন্ধুর অবদানকে তরুণ প্রজন্ম সবসময় স্মরণ করে শ্রদ্ধাভরে। পালন করে তার আদর্শ।
এ বিষয়ে নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. এম অহিদুজ্জামান বলেন, যারা জাতির জনকের আদর্শ জানবে, তারাই অনুসরণ করবে। জাতির পিতার দর্শন তরুণ প্রজন্মকে জাতীয়তাবাদে উদ্বুদ্ধ করছে। তার আদর্শকে অনুসরণ করে তরুণদের দেশ গড়ার কাজে এগিয়ে আসতে হবে।