কক্সবাংলা ডটকম(১৪ আগস্ট) :: তুরস্কের কাছে সর্বাধুনিক এফ-৩৫ যুদ্ধবিমান বিক্রি সাময়িকভাবে বন্ধ করে দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। এক মার্কিন ধর্মযাজককে গ্রেফতার করা ও বাণিজ্য যুদ্ধ নিয়ে চলমান উত্তেজনার মধ্যেই সোমবার এই ঘোষণা দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। একইসঙ্গে তুরস্কের কাছে কমপক্ষে ৯০ দিনের জন্য বড় ধরনের সামরিক সরঞ্জাম বিক্রি না করার জন্যও নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। খবর রয়টার্স।
খবরে বলা হয়েছে, মার্কিন খ্রিস্টান ধর্মযাজক ব্রানসনকে তুরস্কের আদালতে গৃহবন্দি রাখার নির্দেশ দেওয়ার পরই দেশটির ওপর অবরোধের হুমকি দেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও ভাইস প্রেসিডেন্ট মাইক পেন্স। এরপরও যুক্তরাষ্ট্রের কাছ থেকে কেনা এফ-৩৫ যুদ্ধবিমান হাতে পাওয়ার আশায় ছিল তুরস্ক।
সোমবার স্বাক্ষরিত যুক্তরাষ্ট্রের বার্ষিক প্রতিরক্ষা বাজেটে বলা হয়েছে কমপক্ষে ৯০ দিনের জন্য তুরস্কের কাছে এফ-৩৫ যুদ্ধবিমান বিক্রি বন্ধ রাখবে যুক্তরাষ্ট্র। একই সময়ে তুরস্কের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্কের বর্তমান অবস্থান সম্পর্কে কংগ্রেসের কাছে প্রতিবেদন দিতে প্রতিরক্ষা বিভাগকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। প্রতিবেদন জমা না হওয়া পর্যন্ত তুরস্কের কাছে বড় ধরনের প্রতিরক্ষা সরঞ্জাম বিক্রি করা যাবে না।
মার্কিন খ্রিস্টান ধর্মযাজক অ্যান্ড্রু ব্রুনসনকে গ্রেফতার করা নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র ও তুরস্কের মধ্যে টানাপোড়েন অনেক জটিল হয়ে উঠেছে। ইতোমধ্যে তুরস্কের ওপর বেশ কিছু বিধি-নিষেধও আরোপ করেছে যুক্তরাষ্ট্র। যুক্তরাষ্ট্র ব্রুনসনর মুক্তি দাবি করছে আর তুরস্ক বলছে সে ২০১৬ সালের ব্যর্থ অভ্যুত্থানের সঙ্গে জড়িত ছিল।
প্রেসিডেন্ট রজব তাইয়েপ এরদোয়ান বলে আসছেন, ব্রানসনকে ফিরিয়ে দেওয়ার বিনিময়ে ফেতুল্লাহ গুলেনকে ফেরত চায় তুরস্ক। ফেতুল্লাহ গুলেনকে ওই অভ্যুত্থানের মূল পরিকল্পনাকারী হিসেবে অভিহিত করে থাকে তুরস্ক।
এদিকে ব্রুনসনের মুক্তির ব্যাপারে তুরস্ক ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে আলোচনা হচ্ছে বলে জানিয়েছে হোয়াইট হাউস। যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা জন বোল্টন সোমবার সেদেশে নিযুক্ত তুর্কি রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে ব্রুনসনের গ্রেফতারের বিষয়ে আলোচনা করেন। হোয়াইট হাউসের মুখপাত্র সারাহ স্যান্ডার্স বলেন, তুর্কি রাষ্ট্রদূত সেরদার কিলিকের অনুরোধে জন বোল্টন হোয়াইট হাউসে বৈঠক করেছেন। তারা অ্যান্ড্রু ব্রুনসনের আটক ও যুক্তরাষ্ট্র ও তুরস্কের সম্পর্কে নিয়ে আলোচনা করেছেন। তবে ব্রুনসনকে মুক্তি দিতে সময় সীমা বেঁধে দেওয়ার কথা অস্বীকার করেছেন মার্কিন কর্মকর্তারা।
এদিকে যুক্তরাষ্ট্রের গৃহীত বেশ কয়েকটি নতুন পদক্ষেপে ধুঁকতে থাকা তুর্কি লিরার রেকর্ড ১৮ শতাংশ পতন হয়েছে।শুক্রবার মাত্র ২৪ ঘণ্টার ব্যবধানে লিরার মানে ১৮ শতাংশ পতনের বিষয়টি ২০০১ সালের আর্থিক সংকটের পর তুরস্কের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় দরপতন। মুদ্রার এ দরপতনের জন্য বিদেশী শক্তিগুলোর ‘প্রচারণাকে’ দায়ী করেছেন এরদোগান। শুল্ক আরোপের প্রতিক্রিয়ায় পাল্টা পদক্ষেপ নেয়ারও হুঁশিয়ারি দিয়েছে আঙ্কারা।