শুক্রবার ৩রা মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ২০শে বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

শিরোনাম

শুক্রবার ৩রা মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

শিরোনাম

দক্ষিণ এশিয়ায় চীনের প্রভাব মোকাবিলায় ভারতের তিন কৌশল

সোমবার, ০৯ জুলাই ২০১৮
308 ভিউ
দক্ষিণ এশিয়ায় চীনের প্রভাব মোকাবিলায় ভারতের তিন কৌশল

কক্সবাংলা ডটকম(৯ জুলাই) :: দক্ষিণ এশিয়া ও ভারত মহাসাগরে চীনের ক্রমবর্ধমান প্রভাব মোকাবিলায় তিন কৌশল নিয়েছে ভারত। এই কৌশলগুলো হচ্ছে, বেইজিংয়ের গতিপ্রকৃতি সতর্কতার সঙ্গে পর্যবেক্ষণ, নিজেদের প্রকল্প ও প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়ন এবং চীনের সঙ্গে লেনদেনের ফলাফল সম্পর্কে প্রতিবেশী দেশগুলোকে পরামর্শ দেওয়া।

ভারতীয় সংবাদমাধ্যম হিন্দুস্তান টাইমস’র খবরে বলা হয়েছে, দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী সুষমা স্বরাজ গত মঙ্গলবার প্রতিবেশী দেশগুলোতে নিযুক্ত ভারতীয় মিশন প্রধানদের কনফারেন্সের পার্শ্ব বৈঠকে এই কৌশল তুলে ধরেছেন। বৈঠক সম্পর্কে জ্ঞাত চারজন কূটনীতিক হিন্দুস্তান টাইমসকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন ভারতের পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী এমজে আকবর, পররাষ্ট্র সচিব বিজয় গোখলে, চীনে নিযুক্ত ভারতীয় রাষ্ট্রদূত গৌতম বাম্বাওয়ালে এবং সার্কভুক্ত দেশগুলোতে নিযুক্ত ভারতীয় দূতরা। এদের মধ্যে ছিলেন পাকিস্তানে নিযুক্ত অজয় বিসারিয়া, আফগানিস্তানের বিনয় কুমার, নেপালের মানজিব সিং, বাংলাদেশের হর্ষ বর্ধন শ্রীংলা, শ্রীলংকার তারানজিৎ সাধু, মালদ্বীপের অখিলেশ মিশরা এবং ভুটানের জয়দিপ সরকার।

আরও উপস্থিত ছিলেন মৌরিতাসে নিযুক্ত ভারতীয় হাইকমিশনার অভয় ঠাকুর এবং মিয়ানমারের নিযুক্ত বিক্রম মিসরি।

বৈঠক সম্পর্কে জ্ঞাত পঞ্চম এক কূটনীতিক জানান, এই কনফারেন্সটি ছিল বড় আকারে মিশন প্রধানদের সম্মেলনের পূর্ব প্রস্তুতি। ভারতীয় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় প্রতিবছর এই রুদ্ধদ্বার বৈঠক আয়োজন করে। এবারের সম্মেলনে বেশ কয়েকটি প্রতিপাদ্য রাখা হয়েছে।

এসবের মধ্যে রয়েছে, মহাত্মা গান্ধীর দেড়শতম জন্মবার্ষিকী উদযাপন, বিদেশে ভারতের অবস্থান তৈরি, বৈশ্বিক বিনিয়োগে ভারতীয় সহযোগিতা, আঞ্চলিক ও ভৌগোলিক গতিপ্রকৃতিতে সহায়তা। সুষমা স্বরাজ বৈঠকে উদ্বোধনী ভাষণ দেন এবং ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি কি-নোট ভাষণ দেন।

একজন কূটনীতিক জানান, ইউরোপ, মধ্যপ্রাচ্য, আফ্রিকা ও লাতিন আমেরিকার দেশগুলোর মিশন প্রধানদের সঙ্গেও পার্শ্ব বৈঠকে মিলিত হয়েছেন সুষমা স্বরাজ।

প্রতিবেশী দেশগুলোর মিশন প্রধানদের সঙ্গে বৈঠকের শুরুতে সুষমা তাদের কাছে জানতে চান, তাদের দেশগুলোতে চীন কী করছে। তখন একে একে নিজেদের দায়িত্বপ্রাপ্ত দেশে চীনের ভূমিকার কথা তুলে ধরেন কূটনীতিকরা।

চার কূটনীতিকের প্রথম জন জানান,  বৈঠকে যা উঠে এসেছে তা হলো পাকিস্তানে চীনের অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক প্রভাব বেড়েই চলেছে। আফগানিস্তানে চীন কৌশলগত অংশীদার হতে পারেনি। সেখানে তাদের অর্থনৈতিক ও উন্নয়ন সহযোগিতা ছিল ন্যূনতম। তবে দেশটিতে এখনও সুযোগ রয়েছে চীনের। নেপালে বেড়েছে চীনের অংশগ্রহণ। নেপালি প্রধানমন্ত্রীর সাম্প্রতিক চীন সফরে নতুন কিছু ঘটেনি। কিন্তু পুরোনো চুক্তিগুলো বহাল রয়েছে।

বাংলাদেশে চীন বড় ধরনের অর্থনৈতিক প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। ঢাকায় অনেকেই শ্রীলঙ্কার মতো চীনা ঋণের ফাঁদে পড়ার বিষয়ে উদ্বিগ্ন। শ্রীলঙ্কা সরকার রাজনৈতিকভাবে ভারতের বন্ধু হলেও চীনের সঙ্গে অর্থনৈতিক সম্পর্ক আগের মতোই রয়েছে।

প্রথম ও দ্বিতীয় কূটনীতিকের মতে, মালদ্বীপের বিষয়ে বৈঠকে তুলে ধরা হয় কিভাবে ভারতীয় প্রভাব খর্ব করতে সরকার সচেতন উদ্যোগ নিয়েছে। এতে চীন ব্যাপক সুবিধা পেয়েছে। বিমানবন্দর, দ্বীপ, সেতু ও বন্দরে চীন ইতোমধ্যেই বিনিয়োগ করেছে বা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।

তৃতীয় কর্মকর্তা জানান, বেইজিংয়ের হেজিমনি তৈরির উচ্চাকাঙ্ক্ষার কথা তুলে ধরে এক রাষ্ট্রদূত উল্লেখ করেছেন চীন রক্ষণাত্মক অবস্থান ছেড়ে দিয়েছে এবং ‘প্যাক্স সিনিকা’র দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। ভারতের এটা চিহ্নিত করা এবং সে অনুযায়ী পদক্ষেপ নেওয়া উচিত।

প্রথম ও দ্বিতীয় কূটনীতিক জানান, সবার কথা শুনে সুষমা স্বরাজ বলেছেন চীনের সঙ্গে সম্পদের দিক থেকে প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নামা উচিত হবে না। বরং ভারতের উচিত হবে চীনের গতিবিধি নজরদারির আওতায় রাখা। দিল্লির উচিত হবে নিজেদের কাজ পূর্ণ উদ্যোগে বাস্তবায়ন করা। সুষমা মিশন প্রধানদের পরামর্শ দেন, চীনের সঙ্গে বাণিজ্য ও লেনদেনের নেতিবাচক পরিণতির বিষয়ে প্রতিবেশীদের জানানোর জন্য।

পঞ্চম কূটনীতিক জানান, বৈঠকে বলা হয়েছে এটাকে নীতি হিসেবে গ্রহণ করা ঠিক হবে না। এটাকে দেখতে হবে অভ্যন্তরীণ চিন্তাভাবনার অংশ হিসেবে। বৈঠকের মূল লক্ষ্য ছিল সবার মত জেনে নেওয়া। এটা ছিল খোলামেলা মতবিনিময়। সবাইকে নিজেদের কথা বলতে উৎসাহিত করা হয়েছে। এটা কোনও নীতিগত নির্দেশনা নয়। এটাকে নীতি হিসেবে ধরে নেওয়া হবে ভুল।

চীনে দায়িত্ব পালন করা সাবেক রাষ্ট্রদূত এবং ইন্সটিটিউট অব চাইনিজ স্টাডিজের পরিচালক অশোক কণ্ঠ জানান, আমাদের দিক থেকে গুরুত্বপূর্ণ হলো চীনকে নকল বা অনুকরণ করা যাবে না। প্রতিবেশীদেরও আমাদের আতঙ্কিত করার প্রয়োজন নেই। তাদের নিজেদের সুবিধা ও অসুবিধা রয়েছে। আমাদের তা নিয়ে কাজ করতে হবে এবং সুবিধা নিতে হবে।

অশোক আরও বলেন, এটা তাদেরকে শিক্ষিত করার বিষয় নয়। কিন্তু দেশগুলো ধীরে ধীরে নিজেরাই দেখতে পাবে অর্থনৈতিকভাবে অলাভজনক প্রকল্পের তালিকা দীর্ঘ হচ্ছে। তারা দেখতে পাবে বেল্ট অ্যান্ড রোড উদ্যোগ বিনামূল্যের কিছু নয়, যেমনটা হওয়ার দাবি করে চীন। শ্রীলঙ্কা তাদের জন্য সতর্ক সংকেত হতে পারে।

308 ভিউ

Posted ১:৩০ পূর্বাহ্ণ | সোমবার, ০৯ জুলাই ২০১৮

coxbangla.com |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

এ বিভাগের আরও খবর

Editor & Publisher

Chanchal Dash Gupta

Member : coxsbazar press club & coxsbazar journalist union (cbuj)
cell: 01558-310550 or 01736-202922
mail: chanchalcox@gmail.com
Office : coxsbazar press club building(1st floor),shaheed sharanee road,cox’sbazar municipalty
coxsbazar-4700
Bangladesh
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
বাংলাদেশের সকল পত্রিকা সাইট
Bangla Newspaper

ABOUT US :

coxbangla.com is a dedicated 24x7 news website which is published 2010 in coxbazar city. coxbangla is the news plus right and true information. Be informed be truthful are the only right way. Because you have the right. So coxbangla always offiers the latest news coxbazar, national and international news on current offers, politics, economic, entertainment, sports, health, science, defence & technology, space, history, lifestyle, tourism, food etc in Bengali.

design and development by : webnewsdesign.com