কক্সবাংলা ডটকম(৩১ জুলাই) :: হামেশ রদ্রিগেজকে তো সহ্যই করতে পারেন না জিনেদিন জিদান। আর সম্প্রতি গ্যারেথ বেলকে নিয়েও তার ভীষণ অ্যালার্জি তৈরি হয়েছে। এ দুজনকে পারলে একদিনেই বিদায় করে দেন জিদান। কিন্তু এক হারেই বদলে গেল রিয়ালের ভেতরের চিত্র। যুক্তরাষ্ট্রে প্রাক-মৌসুম সফরে নগর প্রতিদ্বন্দ্বী অ্যাতলেটিকো মাদ্রিদের কাছে ৩-৭ গোলে হারের পর দলবদল নীতিতে পিছু হটেছেন জিদান। রদ্রিগেজ কিংবা বেলের দলবদল আটকে দিয়েছেন তিনি। তার মানে, দুই তারকা ন্যূনতম আরেক মৌসুম স্যান্টিয়াগো বার্নাব্যুতে থাকছেন।
কলম্বিয়ান তারকা রদ্রিগেজ গত দুই মৌসুমে বায়ার্ন মিউনিখে ধারে খেলে এসেছেন। বাভারিয়ানদের সঙ্গে চুক্তির মেয়াদ শেষ হয়ে যাওয়ার পরও তাকে ফেরানোর কোনো উদ্যোগ ছিল না রিয়ালের। এমন সময় তাকে দলে ভেড়াতে আগ্রহ প্রকাশ করে সিরি-এ ক্লাব ন্যাপোলি ও লা লিগার অ্যাতলেটিকো মাদ্রিদ। যদিও নাটকীয় সিদ্ধান্তে পাল্টে গেল সবকিছু। রিয়ালের পক্ষ থেকে রদ্রিগেজকে বলে দেয়া হয়েছে, এ মৌসুমে তিনি বার্নাব্যু ছাড়ছেন না। তাই ৭৮৭ দিন পর সোমবার রিয়াল সতীর্থদের সঙ্গে অনুশীলনও করেন এ খেলোয়াড়টি।
দিয়ারিও এএস পত্রিকার ভাষ্যমতে, শনিবার নিউজার্সিতে অ্যাতলেটিকোর কাছে ৩-৭ গোলে হারের পরই মত পাল্টেছেন রিয়াল প্রেসিডেন্ট ফ্লোরেন্তিনো পেরেজ। এছাড়া দলের একঝাঁক খেলোয়াড় রয়েছে ইনজুরিতে। আগামী মৌসুমে তাই খর্বশক্তির স্কোয়াড নিয়ে লিগ শুরু করতে হতো জিদানকে। এটা বুঝতে পেরেই বেল ও রদ্রিগেজের মতো পরীক্ষিত খেলোয়াড় রেখে দেয়ার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন পেরেজ। হামেশকে ধরে রাখার বড় কারণ মার্কো অ্যাসেনসিওর ইনজুরি। হাঁটুর লিগামেন্ট মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় প্রায় পুরোটা মৌসুমই মাঠের বাইরে কাটাতে হবে স্প্যানিশ ফরোয়ার্ডকে। এতেই কপাল খুলে যায় হামেশের। জিদান চেয়েছিলেন ২৮ বছর বয়সী খেলোয়াড় বিদায় নিক, কিন্তু এখন হামেশ ও বেল দুজনকেই রেখে দিচ্ছেন ফরাসি কোচ। হয়তো তিনি দুজনকে পছন্দ করেন না, কিন্তু পরিস্থিতি তাকে বাধ্য করছে।
যা-ই হোক, হাঁফ ছেড়ে বাঁচলেন হামেশ। ২০১৭ সালের পর রিয়াল সতীর্থদের সঙ্গে অনুশীলন করলেন তিনি। সর্বশেষ দুই বছর আগে কার্ডিফে চ্যাম্পিয়ন্স লিগ ফাইনালে লস ব্লাঙ্কোসদের স্কোয়াডে ছিলেন তিনি। এরপরই ঠিকানা বদল হয় তার, চলে যান জার্মানিতে। নতুন মৌসুম সামনে রেখে এক সপ্তাহ আগেও কথা ছিল, দলবদল হচ্ছে হামেশের। কিন্তু লা লিগা ও উয়েফা চ্যাম্পিয়ন্স লিগে গত মৌসুমের মতো ভাগ্য বরণ করতে যেন না হয়, সেটা নিশ্চিত করতেই তার দলবদল আটকে দেন পেরেজ।
হামেশকে কিনতে এগিয়ে ছিল ন্যাপোলি ও অ্যাতলেটিকো। তবে রিয়াল ও বায়ার্নের সাবেক কোচ কার্লো অ্যানচেলত্তি ছিলেন বলে তার ন্যাপোলিতে নাম লেখানোর সম্ভাবনাই বেশি ছিল। যদিও ন্যাপোলি প্রেসিডেন্ট অরেলিও ডি লরেনতিস তাকে ৩৬ মিলিয়ন পাউন্ডে না কিনে শুধু ধার চুক্তিতে দলভুক্ত করতে চেয়েছেন। যুক্তরাষ্ট্র সফরের সময়ই হামেশের প্রতি আগ্রহের কথা পুনর্ব্যক্ত করেন অ্যাতলেটিকো মাদ্রিদের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মিগুয়েল অ্যাঞ্জেল গিল মারিন। কিন্তু ৩-৭ গোলে হারের পরই রিয়াল সিদ্ধান্ত নিয়ে নেয়, প্রতিবেশী ক্লাবের কাছে হামেশকে বিক্রি করা চলবে না। এখন দেখার বিষয়, আসন্ন মৌসুমে হামেশকে কীভাবে ব্যবহার করবেন জিদান।
এদিকে বেল ও হামেশকে বিক্রি না করে স্কোয়াডে রেখে দেয়াটা জিদানের কাছে খানিকটা নৈতিক পরাজয়ই। কেননা তিনি সবসময়ই দুজনকে বিদায়ের পরামর্শ দিয়েছেন। এমনকি যুক্তরাষ্ট্রে প্রাক-মৌসুম ম্যাচে বেলকে খেলানোর পর দৃঢ়তার সঙ্গে বলেছেন, তিনি সিদ্ধান্ত পাল্টাননি এবং বেলকে চলে যেতে হবে। এরপর বেলকে রেখে দিতে হচ্ছে মনের অনিচ্ছাতেই। হামেশের ক্ষেত্রে ঘটেছে তেমনই।
এদিকে দলবদল আটকে গেলেও এখনই বেল ও হামেশের সুখের দিন ফিরছে না। অডি কাপ খেলতে সোমবার জার্মানি উড়াল দিয়েছে জিদানের দল, যে দলে নেই বেল আর হামেশ। চার দলের আসরে গতকাল টটেনহামের মুখোমুখি হওয়ার কথা স্প্যানিশ জায়ান্টদের, আজ ফাইনাল। এ মিশনে ৩০ বছর বয়সী বেল কিংবা ২৮ বছর বয়সী হামেশকে রাখা হয়নি।
স্পোর্টসমেইল,
Posted ৩:০০ পূর্বাহ্ণ | বুধবার, ৩১ জুলাই ২০১৯
coxbangla.com | Chanchal Das Gupta