কক্সবাংলা ডটকম(৭ জুন) :: দায়েশ নামে পরিচিত চরম উগ্রপন্থী ইসলামিক স্টেস বা আইএস পাকিস্তানের জন্য নতুন গুরুতর নিরাপত্তা চ্যালেঞ্জ সৃষ্টি করেছে। গত কয়েক বছরে সন্ত্রাসবাদের ধরন, কৌশল ও প্রকৃতিও বদলে গেছে।
গত সপ্তাহে কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা অনুমোদিত নতুন অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা নীতি (এনআইএসপি)-তে বলা হয়েছে, “পাকিস্তানের অতি নিকটে দায়েশের উত্থান নতুন অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা চ্যালেঞ্জ সৃষ্টি করেছে। টিটিপি ও এর সমর্থকদের সহযোগিতা ও সহায়তায় পাকিস্তানে ওই গোষ্ঠীর (দায়েশে) প্রভাব সৃষ্টির সম্ভাবনাকে উপেক্ষা করা যায় না। সিরিয়া ও ইরাকের যুদ্ধক্ষেত্র থেকে জঙ্গিরা ফিরে আসায় পরিস্থিতি আরো জটিল হয়েছে।”
২০১৮-২০২৩ মেয়াদের জন্য এই এনআইএসপি প্রণয়নের কাজে ১২০ জন বিশেষজ্ঞ অংশ নেন। লক্ষ্য পূরণের জন্য এতে বহুমুখি কৌশল গ্রহণ করা হয়েছে।
এই প্রতিবেদকের হাতে সংশ্লিষ্ট নীতির একটি কপি রয়েছে। এতে বলা হয়, “আন্ত:জাতীয় সন্ত্রাসবাদ আবারো মাথা তুলছে। টিটিপি সন্ত্রাসীরা আফগানিস্তানে পালিয়ে গেছে। পাকিস্তান সীমান্তের কাছে আফগানিস্তানে দায়েশের পদচিহ্ন পড়েছে। এর প্রভাব পাকিস্তানের বিভিন্ন অংশেও ছড়িয়ে পড়ার বাস্তব সম্ভাবনা রয়েছে। ইরাক ও সিরিয়া থেকে যুদ্ধ-পক্ক সন্ত্রাসীদের আগমনে পরিস্থিতি আরো জটিল হয়েছে।”
মৌলবাদ ও জঙ্গিবাদ শুধু মাদ্রাসায় সীমিত না থাকার যথেষ্ঠ প্রমাণ রয়েছে বলেও নীতিতে উল্লেখ করা হয়েছে।
“তুলনামূলক স্বচ্ছল ও মধ্যবিত্ত শ্রেণী থেকে আসা, মূল ধারার বিশ্ববিদ্যালয় ও স্কুলে পড়ুয়া তরুণ ও যুবকরাও চরমপন্থী ধারণা ও বিবরণ সহজেই গ্রহণ করতে পারে। গ্রাম এলাকার মতো সন্ত্রাসবাদ একটি শহুরে বিষয়ও বটে এবং তা মোকাবেলা করা প্রয়োজন। চরমপন্থী ধারণা বিস্তারের জন্য সাইবার স্পেস একটি গুরুত্বপূর্ণ ক্ষেত্র হয়ে দাঁড়িয়েছে।”
“পুনর্বিন্যস্ত, পুনরায় কল্পনা, সংশোধন, পুনর্বিবেচনা, স্বীকৃতি এবং একটি আঞ্চলিক দৃষ্টিভঙ্গি গ্রহণের” কথাও নীতির সারসংক্ষেপে বলা হয়েছে।
এনআইএসপি-২০১৮ নিয়মিত দেখভাল করার জন্য একটি এনআইএসপি বাস্তবায়ন কমিটিও গঠন করা হবে। এতে থাকবেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী (সভাপতি), জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা, স্বরাষ্ট্র, পররাষ্ট্র, প্রতিরক্ষা, অর্থ, তথ্য, সম্প্রচার ও ধর্ম মন্ত্রলালয়ের সচিবরা, এনএসিটিএ’র জাতীয় সমন্বয়ক, আইবি’র মহা পরিচালক, আইএসআই’র মহা পরিচালক, প্রাদেশিক মূখ্যসচিবরা এবং সকল আইজিপি।
পাকিস্তানের কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা এই প্রথম এ ধরনের কোন নীতি অনুমোদন করলো। এতে আরো বলা হয়েছে যে, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে সহিংস চরমপন্থার উত্থান লক্ষ্য করা যাচ্ছে।
“সাইবার হামলা অনেক বেড়েছে এবং আরো সুক্ষ্ম হয়েছে। এই নতুন চ্যালেঞ্জ ছাড়াও অভ্যন্তরিণ নিরাপত্তার প্রতি প্রচলিত হুমকিগুলোর মধ্যে রয়েছে ধর্মীয়, গোষ্ঠীগত, জাতি-রাজনৈতিক ও উপ-জাতীয় গোষ্ঠীগুলোর দ্বারা সহিংসতা।
নিরাপত্তাহীনতার গুরুত্বপূর্ণ চলকগুলোর মধ্যে একাকীত্ব, হতাশা, বিচ্ছিন্নতাবোধ, সামাজিক ন্যায়বিচার ও আইনের শাসনের অভাব, আঞ্চলিক বৈষম্য, জবাবদিহিতার অভাব এবং বৈদেশিক সংযোগকে চিহ্নিত করেছে এনআইএসপি।
তাছাড়া ধর্মীয় ও জাতিগত জঙ্গিবাদের কারণ এবং কেন সৃষ্টি হচ্ছে তা অনুধাবনের জন্য মানসম্মত গবেষণার অভাব প্রমাণভিত্তিক কর্মসূচি ও নীতি উন্নয়নের পথে বাধা হয়ে আছে বলে নীতিতে উল্লেখ করা হয়েছে।
Posted ১১:৩১ পূর্বাহ্ণ | বৃহস্পতিবার, ০৭ জুন ২০১৮
coxbangla.com | Chanchal Das Gupta