কক্সবাংলা ডটকম(১৪ জুলাই) :: দিনের কোন সময়টি শরীরচর্চার জন্য সবচেয়ে উপযোগী সে প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে গিয়ে জানা গেছে, বিকালের শেষভাগে দেহের সামর্থ্য ও স্থিতিস্থাপকতা তুঙ্গে থাকে। এ কারণে তখন শরীরচর্চার চাপ দেহে সবচেয়ে কম অনুভূত হয়। খবর সিএনএন।
ব্যায়াম বা শরীরচর্চার জন্য সেরা সময় সম্পর্কে জানতে চান অনেকে। ফিটনেস বিশেষজ্ঞরা সাধারণত দিনের শুরুতেই শরীরচর্চার পরামর্শ দেন। কারণ এ সময়টায় অন্য কোনো কাজ শরীরচর্চার প্রাত্যহিক রুটিনে ঢুকে পড়ার আশঙ্কা কম থাকে। একই কারণে নিয়মিত শরীরচর্চা চালিয়ে যেতেও সমস্যা হয় না।
ভোরে বা সকালে ঘুম ভাঙার পর যারা ব্যায়াম ও শরীরচর্চা করেন, তারা নিজেরাও দিনভর চাঙ্গা ও সতেজ বোধ করার কথা বলে থাকেন। কিন্তু যারা সকালে ঘুম থেকে ওঠেন না অথবা যাদের রাতে ঘুমাতে যেতে দেরি হয়, তাদের কি উপায়? জার্নাল অব স্ট্রেংথ অ্যান্ড কন্ডিশনিং রিসার্চে প্রকাশিত একটি গবেষণা প্রতিবেদন সকালে জাগতে অপারগ মানুষদের জন্য সুখবর এনেছে।
গবেষকরা জানাচ্ছেন, সকালের চেয়ে বিকালের শেষ সময়টুকু ব্যায়ামের জন্য অনেক বেশি উপযোগী। বিশেষত নিবিড় চর্চার জন্য এ সময়টিকে মোক্ষম বলা যায়। বিকালের শেষদিকে দেহঘড়ির কাঁটা সবচেয়ে ছন্দোবদ্ধ থাকে। এ কারণে সে সময় নিবিড় শরীরচর্চার চাপ সবচেয়ে কম অনুভূত হয়। যার ফলে কঠিনতর এক্সারসাইজগুলোও অনেক কম আয়াসে সেরে নেয়া সম্ভব। কারকেডিয়ান রিদম বা দেহঘড়ির দৈনন্দিন চলার সঙ্গে সঙ্গে আমাদের দেহের তাপমাত্রাও ধীরে ধীরে বাড়তে থাকে। এ প্রক্রিয়ায় শেষ বিকালে দেহের তাপমাত্রা সবচেয়ে বেশি থাকে। সবচেয়ে বেশি তাপধারী দেহ তাই কঠিনতর ব্যায়াম ও আসনের চাপ বোধ হতে দেয় না।
শরীরচর্চার জন্য বিকাল ভালো বলে কি সকালের সব প্রয়াস বৃথা? বিষয়টি তা নয়। সকালে শরীরচর্চা করলে তাতে দেহের কম উপকার হবে— এমন ভাবার কিছু নেই। গবেষকরা জানিয়েছেন, সকালে শরীরচর্চার কাজটি যদি নিয়মিত অব্যাহত রাখা যায়, তা হলে দৈহিক তাপ ও ছন্দকে বিকালের স্তরে উন্নীত করা সম্ভব। একটি গবেষণায় দেখা গেছে, সকালে প্রশিক্ষণে অংশগ্রহণকারী অ্যাথলেটরা নিবিড় অনুশীলনের মাধ্যমে পারফরম্যান্স ঘাটতি পুষিয়ে নিতে পারেন। এমনকি বিকালে প্রশিক্ষণে অংশগ্রহণকারীদের চেয়েও তাদের পারফরম্যান্স কখনো কখনো ভালো হতে পারে।
শরীরচর্চার কারণে দেহের উত্তাপ বাড়ে এবং মানুষ চাঙ্গাবোধ করে। কাজেই বিকালে শরীরচর্চা করলে রাতে ঘুমে ব্যাঘাত ঘটতে পারে বলে অনেকে মনে করেন। কিন্তু বিভিন্ন গবেষণায় এ ধারণাটির কোনো ভিত্তি পাওয়া যায়নি। জার্নাল অব স্লিপ রিসার্চ ফিনল্যান্ডে একদল তরুণকে নিয়ে পরিচালিত গবেষণার খবর ছেপেছিল। ওই গবেষণায় দেখা গেছে, ঘুমাতে যাওয়ার ২ ঘণ্টা আগে কঠোর অ্যারোবিক এক্সারসাইজ করলেও যথাসময়ে ঘুমিয়ে পড়তে সমস্যা হয়নি এবং ঘুমে কোনো ব্যাঘাতও ঘটেনি। শিকাগোর নর্থওয়েস্টার্ন ইউনিভার্সিটির গবেষণায় দেখা গেছে, একদল বয়স্ক মানুষ প্রতিদিন সন্ধ্যা ৭টা থেকে সাড়ে ৮টা পর্যন্ত হালকা অ্যারোবিক এক্সারসাইজ করলেও তাদের ঘুমাতে কোনো সমস্যা হয়নি।
Posted ৮:২৪ অপরাহ্ণ | শুক্রবার, ১৪ জুলাই ২০১৭
coxbangla.com | Chanchal Das Gupta