বৃহস্পতিবার ২রা মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ১৯শে বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

শিরোনাম

বৃহস্পতিবার ২রা মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

শিরোনাম

দেশে রপ্তানি আয় ও রেমিট্যান্সে ফের নিম্নগতি

শুক্রবার, ০৪ নভেম্বর ২০২২
48 ভিউ
দেশে রপ্তানি আয় ও রেমিট্যান্সে ফের নিম্নগতি

কক্সবাংলা ডটকম :: বৈদেশিক মুদ্রা আয়ের প্রধান খাত রপ্তানি ও রেমিট্যান্সে ফের নিম্নগতি দেখা দিয়েছে। গত সেপ্টেম্বরের মতো অক্টোবরেও তা কমেছে। ফলে এ দুই খাতের মাধ্যমে রিজার্ভ বাড়ানোর সুযোগ এবারও হচ্ছে না।

আমদানি ব্যয় ও বৈদেশিক ঋণের কিস্তি পরিশোধে এমনিতেই রিজার্ভ নিয়ে হিমশিম খাচ্ছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এর মধ্যে রপ্তানি আয় ও রেমিট্যান্স কমায় এর (রিজার্ভ) চাপ আরও বাড়বে।

এদিকে ৮ নভেম্বরের মধ্যে এশিয়ান ক্লিয়ারিং ইউনিয়নের (আকু) বড় অঙ্কের দেনা একসঙ্গে পরিশোধ করতে হবে। এতে রিজার্ভ আরও কমে যাবে। বর্তমানে রিজার্ভ আছে ৩ হাজার ৫৭২ কোটি ডলার বা সাড়ে ৩৫ বিলিয়ন ডলার। এটি ৩৪ বিলিয়ন ডলারের ঘরে নেমে আসতে পারে।

সূত্র জানায়, অক্টোবরে লক্ষ্যমাত্রা এবং গত বছরের একই মাসের তুলনায় রপ্তানি আয় কমেছে। অক্টোবরে রপ্তানি আয়ের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৫০০ কোটি ডলার। আয় হয়েছে ৪৩৫ কোটি ডলার। লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় আয় কমেছে ১২ দশমিক ৮৭ শতাংশ। গত বছরের অক্টোবরে আয় হয়েছিল ৪৭৩ কোটি ডলার। গত বছরের অক্টোবরের তুলনায় চলতি বছরের একই মাসে আয় কমেছে ৮ শতাংশের বেশি।

চলতি বছরের গত সেপ্টেম্বরে আয় হয়েছিল ৩৯০ কোটি ডলার। গত সেপ্টেম্বরের তুলনায় অক্টোবরে আয় বেড়েছে ১১ দশমিক ৫৪ শতাংশ। চলতি অর্থবছরের জুলাই অক্টোবরে রপ্তানির আয়ের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ১ হাজার ৭৪২ কোটি ডলার। আয় হয়েছে ১ হাজার ৬৮৫ কোটি ডলার। আলোচ্য সময়ে লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় আয় কমেছে ৩ দশমিক ২৫ শতাংশ। গত অর্থবছরের একই সময়ে রপ্তানি আয় হয়েছিল ১ হাজার ৫৭৫ কোটি ডলার। ওই সময়ের তুলনায় আয় বেড়েছে ৭ শতাংশ।

বৈশ্বিকভাবে বর্তমানে যে মন্দা চলছে, তা আগামী বছরও অব্যাহত থাকবে বলে আভাস দিয়েছে জাতিসংঘ, বিশ্বব্যাংক, আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলসহ (আইএমএফ) আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলো। বাংলাদেশের প্রধান রপ্তানি বাজার হচ্ছে ইউরোপ ও আমেরিকা। মোট রপ্তানির ৮৩ শতাংশ হচ্ছে ওইসব দেশে। এসব দেশেই মন্দা জেঁকে বসেছে। ফলে ক্রেতাদের ক্রয়ক্ষমতা কমেছে। এতে রপ্তানির আদেশও কমে গেছে। রপ্তানিকারকরা আশঙ্কা করছেন, আগামী কয়েক মাস রপ্তানি আয় কমে যেতে পারে।

এ প্রসঙ্গে বাংলাদেশ নিটওয়্যার প্রস্তুতকারক ও রপ্তানিকারক সমিতির নির্বাহী সভাপতি মোহাম্মদ হাতেম বলেছেন, রপ্তানির আদেশ কমে যাচ্ছে। রপ্তানি আয়ও ঠিকমতো আসছে না। মন্দা না কাটলে রপ্তানির বাজার চাঙা হওয়ার সম্ভাবনা নেই। এখন বিকল্প বাজার ধরার চেষ্টা করছে রপ্তানিকারকরা। এ ধরনের বাজারও খুব কম। কারণ সব দেশেই এখন মন্দা।

সূত্র জানায়, গত অক্টোবরে প্রবাসীরা রেমিট্যান্স পাঠিয়েছেন ১৫২ কোটি ৫৪ লাখ ডলার। গত বছরের অক্টোবরে এসেছিল ১৬৫ কোটি ডলার। ওই সময়ের চেয়ে রেমিট্যান্স কমেছে প্রায় সাড়ে ৭ শতাংশ। গত সেপ্টেম্বরে এসেছিল ১৫৩ কোটি ৯৫ লাখ ডলার। এক মাসের ব্যবধানে রেমিট্যান্স কমেছে প্রায় ১ শতাংশ।

এদিকে আমদানি ব্যয় বাড়ার হার কমেছে। সেপ্টেম্বরে আমদানি ব্যয় হয়েছে ৬৮৩ কোটি ডলার। গত বছরের একই সময়ে হয়েছিল ৬০৯ কোটি ডলার। গত বছরের সেপ্টেম্বরে আমদানি বেড়েছিল ৭৩ শতাংশ। এ বছরের সেপ্টেম্বরে বেড়েছে ১২ শতাংশ। বৃদ্ধির হার কমেছে ৬১ শতাংশ। গত জুলাইয়ে এ খাতে ব্যয় হয়েছিল ৫৮৬ কোটি ডলার। এক মাসের ব্যবধানে আমদানি কমেছে ১৬ শতাংশ।

গত অর্থবছরের জুলাই-সেপ্টেম্বরে আমদানি ব্যয় হয়েছিল ১ হাজার ৮৫ কোটি ডলার। ওই সময়ে আমদানি বেড়েছিল ৪৬ শতাংশ। চলতি অর্থবছরের একই সময়ে আমদানি ব্যয় হয়েছে ১ হাজার ২৬৯ কোটি ডলার। এ সময়ে আমদানি বেড়েছে ১৭ শতাংশ। গত অর্থবছরের তুলনায় চলতি অর্থবছরের একই সময়ে আমদানি ব্যয় বৃদ্ধির হার কমেছে ২৯ শতাংশ।

আমদানি ব্যয় নিয়ন্ত্রণে কেন্দ্রীয় ব্যাংক ও জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) বহুমুখী পদক্ষেপ নেওয়ায় আমদানি কমেছে।

রপ্তানি আয় ও রেমিট্যান্স কমায় ডলারের বাজারে অস্থিরতা রয়েছে। ডলারের দাম বেড়ে যাচ্ছে। গত এক বছরে এর দাম ৮৬ টাকা থেকে বেড়ে ১০৭ টাকায় উঠেছে। এ দুটি খাতে আয় কমার কারণে ডলারের বাজারেও এর নেতিবাচক প্রভাব পড়বে।

আকুর মাধ্যমে সদস্য দেশগুলো দুই মাসের বাকিতে পণ্য আমদানি-রপ্তানি করে। দুই মাস পরপর দেনা-পাওয়া সমন্বয় করা হয়। গত সেপ্টেম্বর-অক্টোবরের দেনা চলতি মাসের প্রথম ৫ কার্যদিবসের মধ্যে পরিশোধ করতে হবে। অন্যথায় সুদ দিতে হবে। এ কারণে কেন্দ্রীয় ব্যাংক যথাসময়ের মধ্যে এ দেনা পরিশোধ করে দেয়। এ হিসাবে ৮ নভেম্বরের মধ্যে ওই দেনা শোধ করা হবে।

কেন্দ্রীয় ব্যাংক সূত্র জানায়, আগামী সোমবারই তারা দেনা শোধ করে দেবে। এবার দেনা বাবদ অর্থ পরিশোধ করলে রিজার্ভ কমে যাবে। কেননা এখন রপ্তানি আয় ও রেমিট্যান্স দিয়ে রিজার্ভ বাড়ছে না।

গত জুলাই-আগস্টের দেনা বাবদ ১৯৬ কোটি ডলার পরিশোধ করা হয়েছিল। আমদানি ব্যয় কমায় এবার দেনা শোধের পরিমাণ আরও কমবে। গত সেপ্টেম্বরে আকুর মাধ্যমে আমদানি কমেছে ১৪ শতাংশ এবং রপ্তানি কমেছে সাড়ে ৩ শতাংশ। আকুর মাধ্যমে বাংলাদেশসহ আটটি দেশ বাকিতে পণ্য আমদানি-রপ্তানি করে থাকে। এগুলো হচ্ছে ভারত, পাকিস্তান, মিয়ানমার, ইরান, নেপাল, ভুটান ও মালদ্বীপ। এর মধ্যে শ্রীলংকা ১৫ অক্টোবর থেকে আকুর সদস্যপদ থেকে সাময়িকভাবে সরে দাঁড়িয়েছে। কারণ তারা অর্থনৈতিক মন্দার কারণে ঋণ শোধ করতে পারছে না।

বাংলাদেশকে ঋণ দিতে আইএমএফের একটি মিশন বাংলাদেশ সফর করছে। তারা রিজার্ভের নিট হিসাব প্রকাশ করার শর্ত দিয়েছে। বর্তমানে কেন্দ্রীয় ব্যাংক গ্রস হিসাব প্রকাশ করছে। নিট হিসাব প্রকাশ করলে রিজার্ভ থেকে বিভিন্ন তহবিলে বরাদ্দ অর্থ বাবদ প্রায় ৮০০ কোটি ডলার বাদ দিতে হবে। তখন রিজার্ভ ২ হাজার ৬০০ কোটি ডলারে নেমে আসবে।

সূত্র জানায়, বৈদেশিক স্বল্পমেয়াদি ঋণ, বায়ার্স ক্রেডিট ও সাপ্লায়ার্স ক্রেডিটের পরিশোধের কিস্তিও বেড়েছে। করোনার সময় যেগুলো স্থগিত করা হয়েছিল, সেগুলো এখন পরিশোধ করতে হচ্ছে। এতেও রিজার্ভে চাপ বাড়ছে।

দেশের বৈদেশিক ঋণ প্রায় ৩ হাজার কোটি ডলার। এর মধ্যে বেসরকারি খাতে ঋণ ২ হাজার ২০৯ কোটি ডলার। বেসরকারি খাতের স্বল্পমেয়াদি ঋণের মধ্যে রয়েছে-বায়ার্স ক্রেডিট ৮২১ কোটি ডলার, স্থগিত পেমেন্ট ৯৬ কোটি ডলার, বৈদেশিক ব্যাক টু ব্যাক এলসি ১১৪ কোটি ডলার, সরাসরি স্বল্পমেয়াদি ঋণ ৪৪৬ কোটি ডলার, অন্যান্য স্বল্পমেয়াদি দেনা ৭০ কোটি ডলার। বেসরকারি খাতে দীর্ঘমেয়াদি ঋণ ৭৬২ কোটি ডলার।

সরকারি খাতে মোট ঋণ ৬৭২ কোটি ডলার। এর মধ্যে স্বল্পমেয়াদি দেনা ৪৪ কোটি ডলার এবং দীর্ঘমেয়াদি ঋণ ৬৪৯ কোটি ডলার।

স্বল্পমেয়াদি ঋণ কম সময়ের মধ্যে পরিশোধ করতে হয় বলে রিজার্ভে চাপ পড়ে। বেসরকারি খাতে স্বল্পমেয়াদি ঋণ বেশি। দীর্ঘমেয়াদি ঋণ কম। সরকারি খাতে দীর্ঘমেয়াদি ঋণ বেশি, স্বল্পমেয়াদি ঋণ কম। এসব ঋণের বড় অংশই করোনার সময়ে পরিশোধ স্থগিত করা হয়েছিল। এখন সেগুলো পরিশোধ করতে হচ্ছে। রিজার্ভের ওপর চাপ বাড়ার এটিও একটি কারণ।

48 ভিউ

Posted ৯:৩৪ অপরাহ্ণ | শুক্রবার, ০৪ নভেম্বর ২০২২

coxbangla.com |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

Editor & Publisher

Chanchal Dash Gupta

Member : coxsbazar press club & coxsbazar journalist union (cbuj)
cell: 01558-310550 or 01736-202922
mail: chanchalcox@gmail.com
Office : coxsbazar press club building(1st floor),shaheed sharanee road,cox’sbazar municipalty
coxsbazar-4700
Bangladesh
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
বাংলাদেশের সকল পত্রিকা সাইট
Bangla Newspaper

ABOUT US :

coxbangla.com is a dedicated 24x7 news website which is published 2010 in coxbazar city. coxbangla is the news plus right and true information. Be informed be truthful are the only right way. Because you have the right. So coxbangla always offiers the latest news coxbazar, national and international news on current offers, politics, economic, entertainment, sports, health, science, defence & technology, space, history, lifestyle, tourism, food etc in Bengali.

design and development by : webnewsdesign.com