শুক্রবার ৩রা মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ২০শে বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

শিরোনাম

শুক্রবার ৩রা মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

শিরোনাম

ধরাছোঁয়ার বাইরেই রয়ে গেল টেকনাফের ইয়াবা গডফাদাররা

শুক্রবার, ২৭ জুলাই ২০১৮
365 ভিউ
ধরাছোঁয়ার বাইরেই রয়ে গেল টেকনাফের ইয়াবা গডফাদাররা

কক্সবাংলা রিপোর্ট(২৬ জুলাই) :: ধরাছোঁয়ার বাইরেই রয়ে গেছেন টেকনাফের মাদকের(ইয়াবা) গডফাদাররা। আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর অভিযান শুরুর পর চিহ্নিত অনেক মাদক গডফাদার তারা এলাকায় রয়েছেন। যারা আত্মগোপনে ছিলেন ইতিমধ্যে তাদের কেউ কেউ নিজ এলাকায় ফিরেও এসেছেন। কিন্তু তাদের গ্রেফতার করার সাধ্য যেন কারো নেই। সব জায়গায় তাদের লোক আছে।

মন্ত্রণালয়, প্রশাসনের শীর্ষ পর্যায়েও তাদের হাত রয়েছে। মাদকের গডফাদারদের অর্থের দাপটে অনেকটা অসহায় র্যাব-পুলিশসহ আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারীর বাহিনীর সদস্যরা। যার কারণে তাদেরকে আইনের আওতায় আনা যাচ্ছে না।

অনুসন্ধানে জানা গেছে, সরকারের পাঁচটি সংস্থা মাদক ব্যবসায়ীদের যে তালিকা জমা দিয়েছে তা পর্যালোচনা করে ১৪ হাজার মাদক ব্যবসায়ীর সন্ধান পাওয়া গেছে। এরমধ্যে সারাদেশে মাদকের গডফাদার রয়েছেন ৯০০ জন। শুধু টেকনাফে ২৫ গডফাদার এবং ১৭৫ জন মাদকের বড় ব্যবসায়ী আছেন।

৫০০ আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য মাদক ব্যবসায় প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে জড়িত।

এদিকে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে এ পর্যন্ত ২৫৯ জন মারা গেছে। গ্রেফতার হয়েছে ৪৫ হাজারেরও বেশি। এতো কিছুর পরেও এখনো অবাধে আসছে ইয়াবাসহ বিভিন্ন মাদক।

টেকনাফ দিয়ে যতগুলো মাদকের চালান আসে তার ৩০ ভাগ বড় বড় চালান। অভিযানের কারণে স্থল পথের পরিবর্তে সমুদ্র পথেই বেশি আসছে ইয়াবার বড় চালান।

সূত্র জানায়, আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে এক শ্রেণীর রাজনৈতিক নেতাদের সব অর্থের যোগান দেওয়ার প্রতিশ্রুতিও দিচ্ছেন মাদকের গডফাদাররা।

গত ১৮ মে থেকে এ পর্যন্ত পুলিশের মাদক নির্মুল অভিযানে গ্রেফতার করা হয়েছে ৩৭২২৫ জনকে। ইয়াবা উদ্ধার করা হয়েছে ৪০ লাখ পিস। এছাড়া গাজা ৬ হাজার ৯শ’ কেজি, হেরোইন ৯৫ কেজি ও ফেনসিডিল ৭৫ হাজার বোতল উদ্ধার করা হয়েছে। পুলিশের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে ২০৫ জন মারা গেছে। অস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে ৪১টি। গুলি উদ্ধা হয় ১০১৩ রাউন্ড। র্যাব মাদক নির্মুল অভিযান শুরু করে গত ৪ মে থেকে। এ পর্যন্ত র্যাব ৭ হাজার ১৯৫ জনকে গ্রেফতার করেছে। র্যাবের হাতে বন্দুকযুদ্ধে নিহত হয়েছে ৫৪ শীর্ষ মাদক ব্যবসায়ী।

তবে ধরাছোয়ার বাইরে রয়েছে টেকনাফ ও চট্রগ্রামের ইয়াবার শীর্ষ ডন হাজি সাইফুল করিম। সরকারের ঘোষিত বাণিজ্যিক গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি বা সিআইপি তিনি। ক্ষমতাসীন দলের নেতা, প্রশাসনের কর্মকর্তা-সবার সঙ্গেই তাঁর মেলামেশা। কক্সবাজার জেলা পুলিশের করা ইয়াবার গডফাদারদের তালিকায়ও তাঁর নাম রয়েছে।

আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কর্মকর্তারা বলছেন, মিয়ানমার থেকে আসা মোট ইয়াবার ৯০ ভাগ শতাংশ আসে সাইফুলসহ ২৫ গডফাদারের মাধ্যমে।

ইয়াবা একমাত্র মিয়ানমার থেকে আসে এবং এর বেশির ভাগ কক্সবাজারের টেকনাফ সীমান্ত দিয়ে বাংলাদেশে ঢোকে। দেশব্যাপী আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর মাদকবিরোধী অভিযানে ২৫৯ মাদক ব্যবসায়ী বন্দুকযুদ্ধে নিহত হয়েছেন। কিন্তু সাইফুল করিমের মতো বড় ইয়াবা কারবারিরা কেউ গ্রেপ্তার হননি। আবার এত কঠোর অভিযানের মধ্যেও ইয়াবা আসা বন্ধ হয়নি।

পুলিশের কর্মকর্তারা বিষয়টি স্বীকার করে বলছেন, সাইফুল করিমকে ধরতে পারলে দেশে ইয়াবা আসা উল্লেখযোগ্য হারে কমে যাবে। এ পরিস্থিতিতে প্রশ্ন উঠেছে, এত বড় অভিযানে তাহলে কারা ধরা পড়ছেন?

সরকারিভাবে বলা হচ্ছে, দেশে এখন মাদকসেবীর সংখ্যা কমবেশি ৭০ লাখ। তাঁদের অধিকাংশই ইয়াবায় আসক্ত। গত বছর দেশের সব আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী মিলে চার কোটি ইয়াবা উদ্ধার করে।

পুলিশের কর্মকর্তারা বলছেন, টেকনাফ-কক্সবাজারের কিছু স্থানীয় ব্যক্তির কাছে ইয়াবা আর দশটা ব্যবসার মতোই স্বাভাবিক রোজগারের উপায়। এই ব্যবসা করে কেউ কেউ টেকনাফের বিভিন্ন পাড়ায় আলিশান বাড়ি করেছেন। ব্যবহার করছেন পাজেরো, প্রাডোর মতো দামি গাড়ি। বিদেশে বানিয়েছেন সেকেন্ড হোম ও রয়েছে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান। অথচ তাঁরা একসময় দরিদ্র জেলে কিংবা সাধারণ লবণচাষি ছিলেন।

সম্প্রতি গ্রেপ্তার হওয়া কক্সবাজারের এক ইয়াবা ব্যবসায়ীর তথ্য মতে, ২৫ গডফাদারের নেটওয়ার্ক মিয়ানমারেও বিস্তৃত। তাঁদের কাজ কেবল ইয়াবা চালান বাংলাদেশের ভূমিতে নিরাপদে পৌঁছে দেওয়া এবং ঘাটের নিরাপত্তা দেখা ও প্রশাসনকে হাতে রাখা। ইয়াবা আসার পর ‘ডিলারের’ লোকজনই চালান খালাস করে নেন। মাঝখান থেকে ইয়াবাপ্রতি পাঁচ টাকা করে কমিশন কেটে রাখেন ‘গডফাদাররা’। এ রকম গডফাদাররা সপ্তাহে চার থেকে পাঁচটি চালান নিয়ে আসেন। প্রতি চালানে ৫ থেকে ১০ লাখ ইয়াবা থাকে। ‘ঘাট খরচ’, ‘প্রশাসন খরচ’ সব বাদ দিয়ে গড়ে তাঁদের সাপ্তাহিক আয় কোটি টাকার ওপরে। এরপরের ধাপে আসে টেকনাফের ডিলাররা। যাঁরা ইয়াবা দেশের বিভিন্ন জায়গায় সরবরাহ করেন।

আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একাধিক কর্মকর্তা স্বীকার করেছেন, এত অভিযানের পরেও নাফ নদী ও সাগরপথে এখনো ইয়াবার চালান আসছে। টেকনাফ থেকেই তা সারা দেশে ছড়িয়ে পড়ছে।

একজন কর্মকর্তা বলেন, সীমান্তের নিয়োজিত আইন প্রয়োগকারী সংস্থা প্রতিদিন ছোট-বড় ইয়াবার চালান ধরছে। কিন্তু মূল হোতারা ধরাছোঁয়ার বাইরে থাকায় মাদক পাচার বন্ধ করা যাচ্ছে না। এদিকে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর এক শেণীর সদস্যরা মাদক ব্যবসায় জড়িয়ে পড়েছেন। শুধু তাই নয়, উদ্ধার হওয়া মাদক নিয়েও তারা ব্যবসা করেন। যেমন- ১০ লাখ পিস ইয়াবা উদ্ধার হলে, ১ লাখ উদ্ধার হয়েছে চালিয়ে দিয়ে। বাকি ৯ লাখ পিস ইয়াবা ৩০ টাকা করে বিক্রি করেন মাদক ব্যবসায়ীদের কাছে।

মাদক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের অতিরিক্ত পরিচালক (ইন্টেলিজেন্স) নজরুল ইসলাম বলেন, আমরা খোঁজ-খবর রাখছি। অনুসন্ধান চালিয়ে যাচ্ছি। তালিকা করা হয়েছে। গডফাদারসহ সব মাদক ব্যবসায়ীকে ধরা হবে।

দুই জন পুলিশ সুপার জানান, মাদকের গডফাদাররা অনেক ক্ষমতাধর। তাদের হাত অনেক উপরে। আমরা অনেকে অতঙ্কে থাকি। যে কোন জায়গায় বদলি করার ক্ষমতাও তাদের আছে।

এ ব্যাপারে র্যাবের মহাপরিচালক বেনজীর আহমদ বলেন, গডফাদার হোক আর যেই হোক আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর হাত থেকে রক্ষা পাবে না। তাদেরকে চরম পরিণতি ভোগ করতে হবে।

365 ভিউ

Posted ১:৫০ পূর্বাহ্ণ | শুক্রবার, ২৭ জুলাই ২০১৮

coxbangla.com |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

Editor & Publisher

Chanchal Dash Gupta

Member : coxsbazar press club & coxsbazar journalist union (cbuj)
cell: 01558-310550 or 01736-202922
mail: chanchalcox@gmail.com
Office : coxsbazar press club building(1st floor),shaheed sharanee road,cox’sbazar municipalty
coxsbazar-4700
Bangladesh
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
বাংলাদেশের সকল পত্রিকা সাইট
Bangla Newspaper

ABOUT US :

coxbangla.com is a dedicated 24x7 news website which is published 2010 in coxbazar city. coxbangla is the news plus right and true information. Be informed be truthful are the only right way. Because you have the right. So coxbangla always offiers the latest news coxbazar, national and international news on current offers, politics, economic, entertainment, sports, health, science, defence & technology, space, history, lifestyle, tourism, food etc in Bengali.

design and development by : webnewsdesign.com