শনিবার ১১ই মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ২৮শে বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

শিরোনাম

শনিবার ১১ই মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

শিরোনাম

নগদ টাকার সংকটে ৪০ ব্যাংক : সরকারের অভ্যন্তরীণ ঋণ এক লাখ কোটি টাকা

বুধবার, ৩১ জানুয়ারি ২০২৪
45 ভিউ
নগদ টাকার সংকটে ৪০ ব্যাংক : সরকারের অভ্যন্তরীণ ঋণ এক লাখ কোটি টাকা

কক্সবাংলা ডটকম :: ব্যাংক খাতে তারল্যসংকট দিনদিন বেড়েই চলছে। এতে আন্তব্যাংক মুদ্রাবাজারও অস্থিরতার দিকে ধাবিত হচ্ছে, যা তারল্যসংকটকে আরও উসকে দিয়েছে।

ব্যাংকগুলোর পক্ষে নগদ অর্থের বাড়তি চাহিদা মেটাতে হিমশিম খেতে হচ্ছে। নগদ টাকার অতিরিক্ত চাপ সামলাতে আন্তব্যাংক স্বল্পকালীন ধার (কলমানি মার্কেট) করতে বাধ্য হচ্ছে অধিকাংশ ব্যাংক।

সে ক্ষেত্রে কলমানি রেটকে তোয়াক্কা না করে সুদের হার বেড়েই চলছে।

সোমবার কলমানিতে সুদের হার ছিল ৯ দশমিক ৬৫ শতাংশ। ওই দিন কলমানিতে প্রায় আড়াই হাজার কোটি টাকা লেনদেন হয়েছে বলে বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে জানা গেছে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের একজন কর্মকর্তা জানান, নগদ টাকার সংকটে কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকেও সম্প্রতি টাকা ধার নেওয়া বাড়িয়ে দিয়েছে বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলো।

মূলত খেলাপি আদায়ে ভাটা, রিজার্ভ থেকে ডলার বিক্রি করে বাজার থেকে টাকা উত্তোলন, বাণিজ্যিক ব্যাংকনির্ভর সরকারের ঋণ তারল্য সংকটকে তীব্র করে তুলেছে।

এমন পরিস্থিতিতে সংকট সামাল দিতে এক ব্যাংক আরেক ব্যাংকের কাছে ধারের জন্য ছুটছে। অন্তত ৪০টি ব্যাংক এভাবে ধার করে নগদ টাকার জন্য কলমানি থেকে ধার করে চলছে। টাকার সংকট কাটাতে উচ্চ সুদেও আমানত সংগ্রহ করছে অনেক ব্যাংক।

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য বিশ্লেষণে দেখা গেছে, উচ্চ মূল্যস্ফীতি কমাতে কেন্দ্রীয় ব্যাংক সুদের হার বৃদ্ধিকে অন্যতম অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করেছে।

চলতি অর্থবছরে (২০২৩-২৪) শুরু থেকেই সুদের হারে সর্বোচ্চ সীমা তুলে দিয়েছে, যার সরাসরি প্রভাব কলমানি মার্কেটেও পড়েছে। সোমবার কলমানিতে লেনদেনের হার ছিল ৯ দশমিক ৬৫ শতাংশ।

যদিও ২০২২ সালের জানুয়ারিতে কলমানির সুদের হার ছিল ২ দশমিক ৭২ শতাংশ। সেই হিসাবে দুই বছরে কলমানির গড় সুদহার সাড়ে ৬ দশমিক ৪৫ শতাংশ বেড়েছে। এভাবে চড়া সুদে ধার বিনিয়োগ ও উৎপাদনে নেতিবাচক প্রভাব ফেলেছে, যা কর্মসংস্থানের ওপর বিরূপ প্রভাব ফেলতে পারে এমন ইঙ্গিত অর্থনীতিবিদ ও সংশ্লিষ্টদের।

মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সৈয়দ মাহবুবুর রহমান বলেন, ‘ব্যাংক খাতে টাকার বাড়তি চাহিদা তৈরি হয়েছে। কয়েকটি ব্যাংকে তারল্যসংকট রয়েছে। এসব কারণে কলমানিতে ধার নিয়ে নগদ টাকার চাহিদা মেটাচ্ছে অধিকাংশ ব্যাংক। এ ক্ষেত্রে সুদের হার খানিকটা বেশি হলেও সেদিকে গুরুত্ব কম বলা যায়।

বাংলাদেশ ব্যাংকের হালনাগাদ তথ্য অনুযায়ী, কলমানির (এভার নাইট) সুদ ছিল ৯ দশমিক ৬৫ শতাংশ। ২০২৩ সালের জানুয়ারিতে হার ছিল ৬ দশমিক ৭৪ শতাংশ। তার আগের বছরে (২০২২) জানুয়ারিতে কলমানির গড় সুদের হার ছিল ২ দশমিক ৭২ শতাংশ। তবে বিদায়ী বছরের শেষ কর্মদিবসে সুদের হার ছিল ৯ দশমিক ১৯ শতাংশ।

পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউটের (পিআরআই) নির্বাহী পরিচালক ড. আহসান এইচ মনসুর বলেন, ‘অর্থ পাচার, ডলারের মূল্যবৃদ্ধিতে ব্যাংকে তারল্যসংকট দেখা দিয়েছে। তারল্যসংকটের মোকাবিলা করতে এক ব্যাংক অন্য ব্যাংক থেকে চড়া সুদে টাকা ধার নিচ্ছে। এটা ছাড়া কোনো উপায় নেই।

সরকারের অভ্যন্তরীণ ঋণ বেড়েছে এক লাখ কোটি টাকা
সরকারের রাজস্ব আদায় ব্যাপকহারে কমেছে। এ জন্য সরকারকে খরচ মেটাতে ঋণের ওপর নির্ভর করতে হচ্ছে। গত ১ বছরে দেশের ব্যাংক ও নন-ব্যাংকিং উৎস থেকে সরকারের পুঞ্জীভূত ঋণের পরিমাণ বেড়েছে ১ লাখ ১ হাজার ৯২৬ কোটি টাকা। সরকারের অভ্যন্তরীণ ঋণ নিয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে এমন তথ্য উঠে এসেছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, ২০২২ সালের নভেম্বর মাসে সরকারের অভ্যন্তরীণ উৎসের পুঞ্জীভূত ঋণের পরিমাণ ছিল ৭ লাখ ১৪ হাজার ৮৩১ কোটি টাকা। গত বছরের একই মাসে যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৮ লাখ ১৬ হাজার ৭৫৮ কোটি টাকা। আলোচ্য ১ বছরে সরকারের ঋণ বেড়েছে ১ লাখ ১ হাজার ৯২৬ কোটি টাকা।
সরকার বিল-বন্ড ও সঞ্চয়পত্র বিক্রি করে বিভিন্ন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে ঋণ নেয়। বাংলাদেশ ব্যাংক ও তফসিলি ব্যাংক থেকে সরকারের নেওয়া সরাসরি ঋণই হলো ব্যাংক খাতের ঋণ। প্রায় ১ বছর ধরে দেশে মূল্যস্ফীতির ঊর্ধ্বগতি বজায় রয়েছে। এর প্রভাবে ২০২৩ সালের জুলাই থেকে বাংলাদেশ ব্যাংক সরকারকে ঋণ দেওয়া কমিয়ে দিয়েছে।
তথ্য মতে, চলতি ২০২৩-২৪ অর্থবছরের প্রথম ৫ মাসে (জুলাই-নভেম্বর) ব্যাংকবহির্ভূত খাত থেকে সরকার মোট ৯ হাজার ৮০৬ কোটি টাকা ঋণ করেছে। এর মধ্যে সরকার সঞ্চয়পত্রের আসল বাবদ ৩ হাজার ৮৫৯ কোটি টাকা ফেরত দিয়েছে। ফলে ব্যাংকবহির্ভূত খাত থেকে সরকারের প্রকৃত ঋণ কমে ৫ হাজার ৯৪৭ কোটি টাকায় নেমেছে।
এদিকে গত নভেম্বর শেষে ব্যাংক থেকে নেওয়া সরকারের পুঞ্জীভূত ঋণের পরিমাণ দাঁড়ায় ৩ লাখ ৮৯ হাজার ৫০১ কোটি টাকা। আর ব্যাংকবহির্ভূত খাত থেকে নেওয়া পুঞ্জীভূত ঋণের পরিমাণ দাঁড়ায় ৪ লাখ ২৭ হাজার ২৫৬ কোটি টাকা।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, গত জুলাই-নভেম্বরে সরকার বাংলাদেশ ব্যাংক ও অন্যান্য তফসিলি ব্যাংক থেকে সরাসরি ঋণ নিয়েছে ৩ হাজার ১৮৮ কোটি টাকা। আগের অর্থবছরের একই সময়ে ব্যাংকে সরকারের প্রকৃত ঋণ ছিল ৩২ হাজার কোটি টাকা। আলোচ্য সময়ে সরকার ব্যাংক থেকে ঋণ কিছুটা কম নিলেও ব্যাংকবহির্ভূত খাত থেকে ঋণের পরিমাণ বেড়েছে। চলতি অর্থবছরের প্রথম ৫ মাসে এ খাত থেকে সরকারের প্রকৃত ঋণ দাঁড়িয়েছে ৫ হাজার ৯৪৭ কোটি টাকা, যা আগের অর্থবছরের একই সময়ে ছিল ২ হাজার ৫৩০ কোটি টাকা।
সদ্য সমাপ্ত বছরের শুরু থেকে দেশে মূল্যস্ফীতির ঊর্ধ্বগতি বজায় রয়েছে। মূল্যস্ফীতির ঊর্ধ্বগতির সময়ে ব্যাংক থেকে সরকারের ঋণ নেওয়া বাড়লে পরোক্ষভাবে তা মূল্যস্ফীতিকে আরও বাড়িয়ে দেয়। এ কারণে অর্থনীতিবিদরা ব্যাংক খাত থেকে সরকারকে ঋণ না দিতে পরামর্শ দিয়ে আসছিলেন। এরই ধারাবাহিকতায় বাংলাদেশ ব্যাংক সরকারকে ঋণ দেওয়া বন্ধ করে দেয়।
জানতে চাইলে বিশ্ব ব্যাংকের ঢাকা কার্যালয়ের সাবেক প্রধান অর্থনীতিবিদ ড. জাহিদ হোসেন বলেন, সরকার বর্তমানে বাণিজ্যিক ব্যাংগুলো থেকে ঋণ নিচ্ছে বেশি। এখান থেকে ঋণ নিয়ে বাংলাদেশ ব্যাংককে পরিশোধ করছে। মূল্যস্ফীতিতে এর প্রভাব কিছুটা হলেও পড়বে। কারণ বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে সরকার ঋণ নিলে মূল্যস্ফীতি বেড়ে যায়। বাণিজ্যিক ব্যাংক থেকে ঋণ নিলে মূল্যস্ফীতিতে বড় কোনো প্রভাব পড়ে না।
তথ্য অনুযায়ী, ২০২৩-২৪ অর্থবছরের প্রথম ৬ মাসে সরকার বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলো থেকে ২৭ হাজার ৯৫২ কোটি টাকা ঋণ নিয়েছে। পাশাপাশি এই সময়ের মধ্যে বাংলাদেশ ব্যাংককে ৩৪ হাজার ৭৮৯ কোটি টাকা পরিশোধ করেছে। ২০২২ সালের জুলাই-ডিসেম্বর সময়ে ব্যাংকিং খাত থেকে সরকারের নিট ঋণ ছিল ২৬ হাজার ৯৭ কোটি টাকা। কিন্তু মঙ্গলবার (৩০ জানুয়ারি) যে প্রতিবেদনটি প্রকাশ করা হয়েছে, সেটি জুলাই-নভেম্বর সময়কালের।
অর্থনীতিবিদরা বলছেন, নিত্যপণ্যের দাম অস্বাভাবিকভাবে বেড়ে গেছে। এ কারণে সীমিত আয়ের মানুষকে জীবনযাত্রার ব্যয় মেটাতে হিমশিম খেতে হয়। ফলে মানুষ আগের মতো সঞ্চয় করতে পারছে না। অনেকে আগের সঞ্চয় ভেঙে ব্যয় করে ফেলছে।
চলতি অর্থবছরের বাজেটে সরকার অভ্যন্তরীণ উৎস থেকে ১ লাখ ৫৫ হাজার ৩৯৫ কোটি টাকা ঋণ গ্রহণের ঘোষণা দিয়েছে। এর মধ্যে ব্যাংক থেকে ১ লাখ ৩২ হাজার ৩৯৫ কোটি টাকা এবং ব্যাংকবহির্ভূত খাত থেকে ২৩ হাজার কোটি টাকা ঋণ নেওয়ার কথা। ব্যাংকবহির্ভূত খাতের মধ্যে সঞ্চয়পত্র বিক্রি করে ১৮ হাজার কোটি টাকা সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে সরকার।
45 ভিউ

Posted ২:৪২ পূর্বাহ্ণ | বুধবার, ৩১ জানুয়ারি ২০২৪

coxbangla.com |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

এ বিভাগের আরও খবর

Editor & Publisher

Chanchal Dash Gupta

Member : coxsbazar press club & coxsbazar journalist union (cbuj)
cell: 01558-310550 or 01736-202922
mail: chanchalcox@gmail.com
Office : coxsbazar press club building(1st floor),shaheed sharanee road,cox’sbazar municipalty
coxsbazar-4700
Bangladesh
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
বাংলাদেশের সকল পত্রিকা সাইট
Bangla Newspaper

ABOUT US :

coxbangla.com is a dedicated 24x7 news website which is published 2010 in coxbazar city. coxbangla is the news plus right and true information. Be informed be truthful are the only right way. Because you have the right. So coxbangla always offiers the latest news coxbazar, national and international news on current offers, politics, economic, entertainment, sports, health, science, defence & technology, space, history, lifestyle, tourism, food etc in Bengali.

design and development by : webnewsdesign.com