বৃহস্পতিবার ২রা মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ১৯শে বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

শিরোনাম

বৃহস্পতিবার ২রা মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

শিরোনাম

নেপালে ইউএস-বাংলার বিমান বিধ্বস্ত : ২৫ বাংলাদেশি সহ নিহত-৫০, আহত-১০

মঙ্গলবার, ১৩ মার্চ ২০১৮
727 ভিউ
নেপালে ইউএস-বাংলার বিমান বিধ্বস্ত : ২৫ বাংলাদেশি সহ নিহত-৫০, আহত-১০

কক্সবাংলা ডটকম(১২ মার্চ) :: নেপালের কাঠমাণ্ডুতে বেসরকারি বিমান পরিচালনা সংস্থা ইউএস-বাংলার একটি বিমান বিধ্বস্তে ৫০ যাত্রী নিহত হয়েছেন।সোমবার সন্ধ্যায় নেপালের সামরিক বাহিনীর বরাত দিয়ে বার্তা সংস্থা এপি এ তথ্য জানিয়েছে।

আর নেপালে ইউএস বাংলা এয়ারলাইন্সের ফ্লাইট বিধ্বস্তের ঘটনায় ২৫ জন বাংলাদেশি নিহত হয়েছেন। ওই ফ্লাইটে থাকা মোট ৩৬ জন বাংলাদেশির মধ্যে ১০ জন আহত অবস্থায় নেপালের বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। একজনের এখনও সন্ধান পাওয়া যায়নি।

পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মো. শাহরিয়ার আলম তার ফেসবুকে নিহত ও আহতদের নামের তালিকা প্রকাশ করেছেন। আহতরা কে কোন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন, তা-ও মন্ত্রীর ওই ফেসবুক পোস্টে জানানো হয়েছে।

প্রতিমন্ত্রীর দেওয়া তথ্য থেকে জানা যায়, ইউএস বাংলা এয়ারলাইন্সের ওই ফ্লাইটে মোট ৩৬ ছিলেন বাংলাদেশি। এর মধ্যে চার জন্য ইউএস বাংলার পাইলট ও ক্রু। বাকি ৩২ জন ছিলেন যাত্রী। এই মোট ৩৬ জনের মধ্যে মাত্র ৯ জন জীবিত রয়েছেন, বাকিরা নিহত হয়েছেন এই মর্মান্তিক দুর্ঘটনায়।

এদিন দুপুরে ৭৬ জন আরোহী ক্ষমতাসম্পন্ন বিমানটি কাঠমাণ্ডুর উদ্দেশ্যে ঢাকা ত্যাগ করে। পরে নেপালের ত্রিভূবন আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণকালে বিমানটি পাশের একটি ফুটবল খেলার মাঠে বিধ্বস্ত হয়।

দুর্ঘটনার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বিমান পরিচালনাকারী সংস্থাটির মার্কেটিং ব্যবস্থাপক এবং জনসংযোগ কর্মকর্তা মো. কামরুল ইসলাম। তবে তিনি হতাহতের বিষয়ে বিস্তারিত কিছু জানাননি।

কামরুল ইসলাম বলেন, বিমানটিতে ৬৭ যাত্রীর মধ্যে বাংলাদেশি ৩২ জন, নেপালের ৩৩ জন এবং চায়না ও মালদ্বীপের একজন করে যাত্রী ছিল। আর ক্রু ছিল ৪ জন।

নেপালের পর্যটন মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব সুরেশ আচার্য দেশটির সংবাদমাধ্যমকে জানান, দুর্ঘটনার পর ১৭ জন আহত যাত্রীকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নেয়া হয়েছে।

অপরদিকে বিমান দুর্ঘটনার পর উদ্ধারকারী সেনাদের বরাত দিয়ে এপি জানায়, বিমানটি থেকে ৫০ জনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে।

ইউএস-বাংলার ওয়েবসাইট সূত্র থেকে জানা যায়, বিমানটি দুপুর ১২টা ৩০ মিনিটে ঢাকা ছেড়ে যায়। কাঠমাণ্ডুতে এটি অবতরণের কথা ছিল বেলা ২টা ১৫ মিনিটে।

নেপালের স্থানীয় সংবাদমাধ্যম কাঠমাণ্ডু পোস্ট জানায়, ২টা ২০ মিনিটে বিমান দুর্ঘটনার পর ত্রিভূবন আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে বিমান উঠা-নামা বন্ধ করে দেয় কর্তৃপক্ষ।

নেপালের বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের মহাপরিচালক সঞ্জিব গৌতম সংবাদমাধ্যমটিকে বলেন, বিমানটি রানওয়েতে নামার সময় নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলে।

তিনি বলেন, বিমানবন্দরের রানওয়ের দক্ষিণ পাশ দিয়ে নামার অনুমতি দিলেও বিমানটি উত্তর পাশ দিয়ে নামার চেষ্টা করে।

বিমানটিতে যান্ত্রিক কোনো গোলযোগের কারণে এমনটি হতে পারে বলে মনে করলেও এখনো সঠিক কারণ জানতে পারেননি ওই সিভিল এভিয়েশনের এই কর্তা ব্যক্তি।

বিমানবন্দরের মুখপাত্র প্রেম নাথ ঠাকুর জানান, ৭৬ জন যাত্রী বহন করতে সক্ষম বোমবারডায়ার ড্যাশ-৮ মডেলের বিমানটি বন্দরে নামার আগেই পাশের ফুটবল খেলার মাঠে বিধস্ত হয়।

বাংলাদেশের বেসরকারি বিমান কোম্পানি ইউএস-বাংলার ওই বিমানটি ২০১৬ সালের ১৫ জুন ঢাকা-কাঠমাণ্ডু আন্তর্জাতিক রুটে প্রথমবার যাত্রী বহন করে। ওই রুটে বিমানটি সপ্তাহে চারবার আসা-যাওয়া করে।

বিমানের যাত্রীদের একজন করে আত্মীয় নেপালে নিয়ে যাবে ইউ-এস বাংলা:

নেপালে গিয়ে নিকটাত্মীয়দের খোঁজখবর সংগ্রহ করার জন্য বিশেষ উদ্যোগ নিয়েছে ইউ-এস বাংলা এয়ারলাইনস। সংস্থাটির যে ফ্লাইটটি নেপালে দুর্ঘটনা কবলিত হয়েছে সে ফ্লাইটের যাত্রীদের একজন করে আত্মীয়কে মঙ্গলবার নেপাল নিয়ে যাবে এয়ারলাইন্সটি। এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন এয়ারলাইন্সটির জিএম কামরুল ইসলাম।

তিনি বলেন, আমরা যাত্রীদের আত্মীয়দের অনুরোধ করছি যেন তারা রাতের মধ্যে আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। ইউ-এস বাংলা এয়ারলাইনসের হটলাইন ০১৭৭৭৭৭৭৭৬৬।

নেপালে বিধ্বস্ত বিমানে সিলেটের শিক্ষার্থী ছিল ১৩ জন

জালালাবাদ রাগীব রাবেয়া মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ১৩ শিক্ষার্থী নেপালে বিধ্বস্ত হওয়া বিমানের যাত্রী ছিলেন। তারা সকলেই নেপালী বংশোদ্ভূত।

এই বিমানে যাত্রী ছিলেন রাগীব রাবেয়া মেডিকেল কলেজের শিক্ষার্থী- সঞ্জয় পৌডেল, সঞ্জয়া মহারজন, নেগা মহারজন, অঞ্জলি শ্রেষ্ঠ, পূর্নিমা লোহানি, শ্রেতা থাপা, মিলি মহারজন, শর্মা শ্রেষ্ঠ, আলজিরা বারাল, চুরু বারাল, শামিরা বেনজারখার, আশ্রা শখিয়া ও প্রিঞ্চি ধনি। সূূূত জানায় ১৯তম ব্যাচের এই শিক্ষার্থীরা ফাইনাল প্রুফ দিয়ে ছুটিতে নিজেদের দেশে বেড়াতে গিয়েছিলেন।

জালালাবাদ রাগীব রাবেয়া রাবেয়া মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক ডা. মো. আবেদ হোসেন বলেন, বিধ্বস্ত হওয়া বিমানে আমাদের কিছু শিক্ষার্থী ছিলো বলে শুনেছি। তবে কতজন ছিলো তা এখনো নিশ্চিত হতে পারিনি।

তিনি বলেন, চুড়ান্ত বর্ষের পরীক্ষা শেষে ফলাফল প্রকাশের জন্য দুই মাসের মতো সময় লাগে। এই সময়ে সকলেই নিজেদের বাড়িতে চলে যায়।

মেডিকেল কলেজের একটি সূত্রে জানা গেছে, এদের মধ্যে একজন নিহত ও ছয়জন আহত হওয়ার খবর পেয়েছেন তারা। বাকীদের এখনো কোনো খোঁজ পাওয়া যায়নি।
এই মেডিকেল কলেজের সহযোগী অধ্যাপক ডা. মৈত্রেয়ী দেব বলেন, একজন শিক্ষার্থী মারা গেছেন বলে শুনেছি। তবে এখনো নিশ্চিত হতে পারিনি।

নেপালে সংঘঠিত ইউএস বাংলা বিমান দুর্ঘটনায় জালালাবাদ রাগীব রাবেয়া মেডিকেল কলেজের নেপালী ছাত্র-ছাত্রীসহ বিমান যাত্রী যারা নিহত হয়েছেন তাদের আত্মার শান্তি কামনা করে এবং তাদের শোক সস্তুপ্ত পরিবারের সদস্যদের প্রতি গভীর সমবেদনা জ্ঞাপন করে শোক প্রকাশ করেন জালালাবাদ রাগীব রাবেয়া মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান ড. সৈয়দ রাগীব আলী। সেই সাথে আহত যাত্রীদের দ্রুত সুস্থ্যতা কামনা করেন তিনি। সোমবার রাতে এক প্রেস বার্তায় তিনি এ শোক প্রকাশ করেন।

এদিকে নেপালী ১১ ছাত্রী ও ২ ছাত্র বিমান দুর্ঘটনায় নিহত হওয়ার ঘটনায় জালালাবাদ রাগীব রাবেয়া মেডিকেল কলেজ ক্যম্পাসে শোকের ছায়া নেমে আসে। সহপাঠীরা অনেকেই কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন। শিক্ষকরাও ছিলেন বিমর্ষ।

বিধ্বস্ত বিমানে গাজীপুরের একই পরিবারের পাঁচজন

নেপালে বিধ্বস্ত বিমানে শ্রীপুরের ৫ জন
নেপালে ত্রিভুবন বিমান বন্দরে সোমবার দুপুরে বিধ্বস্ত হওয়া ইউএস-বাংলা বিমানে ছিলেন গাজীপুরের শ্রীপুরের ৫জন। তাদের ভাগ্যে কি ঘটেছে এখনো জানতে পারেনি তাঁদের পরিবার। অনেক উদ্বেগ-উৎকন্ঠা নিয়ে অপেক্ষার প্রহর গুনছেন তাঁরা।

বিমানে থাকা পাঁচজন হলেন, উপজেলার নগরহাওলা গ্রামের মৃত শরাফত আলীর ছেলে ফারুক আহমেদ প্রিয়ক (৩২), তাঁর স্ত্রী এ্যালমুন নাহার এ্যান্নি (২৫), তাদের এক মাত্র সন্তান প্রেয়সী (৩), নগরহাওলা গ্রামের  তোফাজ্জল হোসেনের ছেলে মেহেদী হাসান অমিও (৩৩) ও তাঁর স্ত্রী সাঈদা কামরুন্নাহার স্বর্ণা আক্তার (২৫)। ফারুক পেশায় একজন ফটোগ্রাফার, মেহেদী হাসান পেশায় ব্যবসায়ী ছিলেন। ফারুক ও মেহেদী হাসান সম্পর্কে মামাতো ফুফাতো ভাই।

তাঁরা উভয়ের পরিবার ভ্রমণের উদ্দেশ্যে নেপাল যাচ্ছিলেন বলে নিশ্চিত করেন তাঁর বন্ধু ফরহাদ হক। বিমান বিধ্বস্তের খবরে নগরহাওলা এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে। স্বজনদের বুকফাটা কান্নায় বাতাস ভারি হয়ে যাচ্ছে। এলাকাবাসী কামনা করছে তারা সবাই জীবিত ফিরে আসবে।

মেহেদী হাসানের বোন ফারহানা  জানিয়েছে, মেহেদী হাসান তাকে ফোন করে জানিয়েছে, বিমান দূর্ঘটনায় সে এবং প্রিয়কের স্ত্রী এ্যালমুন নাহার এ্যানি সুস্থ্য আছে। তবে ফারুক আহমেদ প্রিয়ক ও মেহেদী হাসান অমিও’র স্ত্রী সাঈদা কামরুন্নাহার স্বর্ণা আক্তার আহত হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। কিন্তু প্রিয়কের একমাত্র কন্যা সন্তান প্রেয়সী বিধ্বস্ত হওয়ার সময় সিটকে পড়ে গিয়ে গুরুতর জখম হয়েছে। তাকে কোথায় রাখা হয়েছে তা সে জানে না।

এ ব্যাপারে শ্রীপুর থানার ওসি আসাদুজ্জামান জানান, দূর্ঘটনা কবলিত পরিবারের খোঁজখবর নেয়াসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগের চেষ্টা চলছে।

727 ভিউ

Posted ১:০২ পূর্বাহ্ণ | মঙ্গলবার, ১৩ মার্চ ২০১৮

coxbangla.com |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

এ বিভাগের আরও খবর

Editor & Publisher

Chanchal Dash Gupta

Member : coxsbazar press club & coxsbazar journalist union (cbuj)
cell: 01558-310550 or 01736-202922
mail: chanchalcox@gmail.com
Office : coxsbazar press club building(1st floor),shaheed sharanee road,cox’sbazar municipalty
coxsbazar-4700
Bangladesh
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
বাংলাদেশের সকল পত্রিকা সাইট
Bangla Newspaper

ABOUT US :

coxbangla.com is a dedicated 24x7 news website which is published 2010 in coxbazar city. coxbangla is the news plus right and true information. Be informed be truthful are the only right way. Because you have the right. So coxbangla always offiers the latest news coxbazar, national and international news on current offers, politics, economic, entertainment, sports, health, science, defence & technology, space, history, lifestyle, tourism, food etc in Bengali.

design and development by : webnewsdesign.com