শুক্রবার ১৭ই মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ৩রা জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

শিরোনাম

শুক্রবার ১৭ই মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

শিরোনাম

পুঁজিবাজারে শেয়ার কারসাজিতে সাকিবের নাম !

বুধবার, ১৫ মার্চ ২০২৩
113 ভিউ
পুঁজিবাজারে শেয়ার কারসাজিতে সাকিবের নাম !

কক্সবাংলা ডটকম(১৫ মার্চ) :: বাংলাদেশ ন্যাশনাল ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি লিমিটেডের (বিএনআইসি) শেয়ার নিয়ে কারসাজি করা ব্যক্তিদের তালিকায় এসেছে ক্রিকেটার সাকিব আল হাসানের নাম। বাংলাদেশের টি-২০ ও টেস্ট ক্রিকেট দলের এ অধিনায়কের নাম এসেছে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) তদন্ত প্রতিবেদনে।

ওই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০২০ সালের ২৯ অক্টোবর থেকে ২৯ ডিসেম্বর পর্যন্ত সময়ে বিএনআইসির শেয়ারের দাম ৭১ দশমিক ৫ শতাংশ বৃদ্ধি পায়।

শেয়ার লেনদেন সংক্রান্ত অনুসন্ধানে তদন্ত কমিটি দেখতে পায় যে ৩৭ টাকা ৫০ পয়সার শেয়ার দুই মাসের ব্যবধানে বেড়ে ৭১ টাকায় লেনদেন হয়। অর্থাৎ এ সময়ে শেয়ারটির দর কারসাজির মাধ্যমে ৭১ দশমিক ৫ শতাংশ বাড়ানো হয়।

dhakapost

এ কারসাজিতে অংশ নেন পুঁজিবাজারে বহুল আলোচিত বিনিয়োগকারী সমবায় অধিদপ্তরের ডেপুটি রেজিস্ট্রার আবুল খায়ের হিরো। তিনি তার স্ত্রীর বেনিফিশিয়ারি ওনার্স (বিও) অ্যাকাউন্ট এবং তার কোম্পানির ডিআইটি কো-অপারেটিভের (প্রতিষ্ঠানটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক হিরো) বিওর মাধ্যমে বিএনআইসির শেয়ারের দাম বাড়ান। হিরোর সঙ্গে শেয়ার কিনে কারসাজিতে সহযোগিতা করেন ক্রিকেটার সাকিব আল হাসানসহ আরও কয়েকজন।

সাকিব সেই সময় নয় লাখ ৪৬ হাজার ৫০৬টি শেয়ার কেনেন। সেখান থেকে ৪৪ হাজার ২৩৭টি শেয়ার বিক্রি করেন। অর্থাৎ সাকিব বিএনআইসির নয় লাখ ৯০ হাজার ৭৪৩টি শেয়ার কেনা-বেচা করেন।

প্রতিবেদনে দেখা যায়, সাকিব আল হাসান ইবিএল সিকিউরিটিজ লিমিটেডের মাধ্যমে বেনিফিশিয়ারি ওনার্স (বিও) অ্যাকাউন্ট (1201950064976237) ব্যবহার করে এসব শেয়ার কেনা-বেচা করেন।

dhakapost

এর আগেও হিরো চক্রের সঙ্গে আরেক বিমা কোম্পানি এশিয়া ইন্স্যুরেন্স লিমিটেডের শেয়ার করসাজিতে জড়িয়েছিলেন সাকিব আল হাসান। ব্যাংক খাতের কোম্পানির মধ্যে ওয়ান ব্যাংক ও এনআরবিসি ব্যাংক লিমিটেড এবং আর্থিক প্রতিষ্ঠান খাতের কোম্পানি আইপিডিসি ফাইন্যান্স লিমিটেডের শেয়ার কারসাজিতেও সাকিবের নাম আসে।

এছাড়া ফরচুন সুজ ও বিডিকম অনলাইন লিমিটেডের শেয়ার কেনা-বেচায় কারসাজিতে সাকিবের নাম উঠে আসে। সবমিলিয়ে এখন পর্যন্ত সাত কোম্পানির শেয়ার কারসাজির ঘটনায় গঠিত তদন্ত প্রতিবেদনে সাকিবের নাম এসেছে।

dhakapost

ডিএসইর তথ্যে দেখা গেছে, ২৯ ডিসেম্বর, ২০২০ সালের পর থেকে ২৭ অক্টোবর, ২০২১ পর্যন্ত সময়ে বিএনআইসি কোম্পানির শেয়ার সর্বোচ্চ ১৬৩ টাকা ৮০ পয়সা পর্যন্ত লেনদেন হয়েছে। অর্থাৎ সাকিবসহ অন্যরা শেয়ার বিক্রি করেছেন আরও বেশি মুনাফায়।

dhakapost

কারসাজিতে নাম আসার পরও কেন সাকিবকে শাস্তি দেওয়া হয়নি— জানতে চাইলে বিএসইসির নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র মো. রেজাউল করিম  বলেন, ‘যারা কারসাজি করে মুনাফা তুলে নিয়েছেন, তাদের জরিমানা করা হয়েছে। সাকিবের বিষয়েও শুনানি হয়েছে। শুনানিতে তার কারসাজির বিষয়টি প্রমাণিত হয়নি। তাই তাকে জরিমানা করা হয়নি।’

তবে, নাম প্রকাশ না করার শর্তে বিএসইসির ঊর্ধ্বতন এক কর্মকর্তা বলেন, সাকিব জাতীয় দলের একজন ক্রিকেটার। তিনি সম্মানিত ব্যক্তি। তিনি নিজে ট্রেড করেন না। তার হয়ে যারা ট্রেড করছেন তাদের জরিমানা করা হচ্ছে। তার বক্তব্য, ‘তাকে (সাকিব) শুধু শুধু হয়রানি করা হচ্ছে। এভাবে হয়রানি করা হলে সম্মানিত লোকজন পুঁজিবাজারে বিনিয়োগ করতে আসবেন না।’

এ বিষয়ে জানতে গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে সাবিক আল হাসানের গ্রামীণ ও বাংলালিংকের দুটি নম্বরে যোগাযোগ করা হয়। কিন্তু নম্বর দুটি বন্ধ পাওয়া যায়। এরপর ক্ষুদে বার্তা পাঠানো হয়। কিন্তু কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি।

dhakapost

বিএনআইসির শেয়ার কারসাজিতে সাকিব ছাড়াও যাদের নাম এসেছে তাদের মধ্যে দুজন হলেন- হিরোর সহযোগী সাইফ উল্লাহ ও তার ভাই মো. এজি মাহমুদ। এছাড়া অন্য ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান হলো- প্রিমিয়ার ব্যাংক, প্যারামাউন্ট ইন্স্যুরেন্স, সাইদুর রহমান মনির, হোসাম মো. সিরাজ, কবির আহমেদ, নওফেল বিন রেজা, হাবিবুর রহমান (বাসার), আলহাজ সৈয়দ আহমেদ, সাইফুল ইসলাম ও আলমগীর হোসেন।

সূত্র জানায়, বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের নির্দেশে ২০২০ সালের নভেম্বর ও ডিসেম্বর মাসে শেয়ার কারসাজির ঘটনা নিয়ে চারটি তদন্ত করা হয়। চারটির মধ্যে দুটিতে সাকিব আল হাসানের নাম উঠে আসে। কিন্তু তাকে কোনো জরিমানা কিংবা শাস্তির আওতায় আনা হয়নি।

চারটি তদন্ত প্রতিবেদনের আলোকে তিন ব্যক্তি ও এক প্রতিষ্ঠানকে শাস্তি বা জরিমানা করা হয়েছে। এর মধ্যে প্রথম তদন্তে আবুল খায়ের হিরোর স্ত্রী কাজী সাদিয়া হাসানকে এক কোটি ৪০ লাখ টাকা, দ্বিতীয় তদন্তে হিরোর প্রতিষ্ঠান ডিআইটি কো-অপারেটিভকে ৩৫ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে। ওই দুই প্রতিবেদনেও সাকিব আল হাসানের নাম রয়েছে।

dhakapost

এছাড়া তৃতীয় তদন্তে হিরোর সহযোগী সাইফ উল্লাহকে ৫০ লাখ টাকা এবং চতুর্থ তদন্তে এজি মাহমুদকে ১৫ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে।

জানা গেছে, বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ অর্ডিন্যান্স ১৯৬৯-এর সেকশন ২ (সিসি) অনুসারে, ‘বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন আইন, ১৯৯৩-এর অধীনে’ ডিএসইকে শেয়ার কারসাজির তদন্ত কমিটি গঠনের নির্দেশ দেওয়া হয়। পরে ডিএসই সার্ভেইল্যান্স নোট-০৭৪/২০২০ অনুযায়ী এবং রেগুলেশন ১৬(৩) (সি) (আআই) এবং (ডি) (ভি) অব ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (বোর্ড অ্যান্ড অ্যাডমিনিস্ট্রেশন) রেগুলেশনস, ২০১৩-এর প্রদত্ত ক্ষমতাবলে তদন্ত করে।

একটি তদন্ত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ওই সময়ে কোম্পানিটির শেয়ার সিরিয়াল ট্রেডিংয়ের (সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ অর্ডিন্যান্স ১৯৬৯-এর সেকশন ১৭ (ই) (ভি) (৩) (২)-এর লঙ্ঘন, যা সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ অর্ডিন্যান্স ১৯৬৯-এর সেকশন ২২ অনুযায়ী শাস্তিযোগ্য অপরাধ) মাধ্যমে প্রথমে কিনে দাম বাড়িয়ে পরে বিক্রি করে মুনাফা তুলে নেওয়া হয়েছে। এতে আবুল খায়ের হিরোর স্ত্রী কাজী সাদিয়া হাসান প্রতিটি শেয়ারে ১২ টাকা ১ পয়সা করে মোট তিন কোটি ৪১ লাখ ৭৬ হাজার ৩০৩ টাকা রিয়েলাইজড গেইন (তুলে নিয়েছেন) করেছেন।

আর ৫৬ লাখ ৭ হাজার ৯৬৩ টাকার শেয়ার আন-রিয়েলাইজড গেইন (সমুদয় টাকার শেয়ার তখনও হাতে ছিল) করেছেন। এ ঘটনায় হিরোর স্ত্রীকে এক কোটি ৪০ লাখ টাকা জরিমানা করেছে বিএসইসি। কাজী সাদিয়া হাসান ওই সময়ে ২৮ লাখ ৬৭ হাজার ৪৮৮টি শেয়ার কিনে দাম বাড়িয়ে ২৬ লাখ ৪৩ হাজার ৮০০টি শেয়ার বিক্রি করেছেন। যা মোট শেয়ার কেনা-বেচার ৬ দশমিক ৫৩ শতাংশ।

dhakapost

এ ধরনের ঘটনা সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ অর্ডিন্যান্স ১৯৬৯-এর সেকশন ২২ অনুযায়ী শাস্তিযোগ্য অপরাধ। এ বিষয়ে শুনানিতে বিষয়টি স্বীকার করায় কমিশন কাজী সাদিয়া হাসান ও ডিআইটি কো-অপারেটিভকে মোট এক কোটি ৭৫ লাখ টাকা জরিমানা করেছে।

অপর দুটি তদন্ত প্রতিবেদনে বলা হয়, সাইফ উল্লাহ ও এজি মাহমুদ মিলে ২০২০ সালের অক্টোবর থেকে ডিসেম্বর, ওই দুই মাসে সিরিয়াল ট্রেডিংয়ের মাধ্যমে দাম বাড়িয়ে শেয়ারপ্রতি গড়ে চার টাকা ৬৭ পয়সা মুনাফায় বিক্রি করে মোট এক কোটি ২১ লাখ ৩২ হাজার ৩৩৪ টাকা রিয়েলাইজড গেইন করেছেন।

শুনানিতে বিষয়টি স্বীকার করায় কমিশন সাইফ উল্লাহকে ৫০ লাখ এবং তার ভাই মো. এজি মাহমুদকে ১৫ লাখ টাকা জরিমানা করে। ব্লক মার্কেটে সাইফ উল্লাহ ১৬ লাখ ৩৬ হাজার ৩টি এবং এজি মাহমুদ সাত লাখ ১৪ হাজার ৪৪টি শেয়ার কেনেন।

কারসাজির বিষয়ে জানতে চাইলে আবুল খায়ের ঢাকা পোস্টকে বলেন, ‘বিষয়টি পুরোনো। আমি তো দুর্বল মানুষ, তাই আমাকে জরিমানা করা হয়েছে। বর্তমানে বাজারে আরও কত আইটেম চলছে, কই এখন তো সে বিষয়ে কোনো সংবাদ নেই।’

উল্লেখ্য, ক্রিকেটার সাকিব আল হাসান পুঁজিবাজারে কারসাজির নায়ক আবুল খায়ের হিরো গ্রুপের সদস্য। তিনি মোনার্ক হোল্ডিং লিমিটেডের চেয়ারম্যান। আবুল খায়ের হিরোর স্ত্রী কাজী সাদিয়া হাসান মোনার্কের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি)।

dhakapost

সিরিয়াল ট্রেডিং কী

সিরিয়াল ট্রেডিং হলো সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ অর্ডিন্যান্স ১৯৬৯-এর সেকশন ১৭ (ই) (ভি) (৩) (২)-এর লঙ্ঘন। যা সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ অর্ডিন্যান্স ১৯৬৯-এর সেকশন ২২ অনুযায়ী শাস্তিযোগ্য অপরাধ। এই আইনে ন্যূনতম এক লাখ টাকা অর্থদণ্ডের বিধান রয়েছে। তবে সর্বোচ্চ কত অর্থদণ্ড দেওয়া যাবে তা নির্ধারিত নেই। অর্থাৎ কমিশন ইচ্ছেমতো জরিমানা করতে পারে।

এছাড়া কমিশন যদি মনে করে এটি ক্রিমিনাল অফেন্স, তবে আদালতে ফৌজদারি মামলা করতে পারবে। এ ক্ষমতা বলে কমিশন ১৯৯৬ ও ২০১০-সহ বিভিন্ন সময়ে শেয়ার কারসাজির ঘটনায় মামলা করেছে। যে মামলাগুলো বর্তমানে স্পেশাল ট্রাইব্যুনালে বিচারাধীন।

113 ভিউ

Posted ১০:২৯ অপরাহ্ণ | বুধবার, ১৫ মার্চ ২০২৩

coxbangla.com |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

এ বিভাগের আরও খবর

Editor & Publisher

Chanchal Dash Gupta

Member : coxsbazar press club & coxsbazar journalist union (cbuj)
cell: 01558-310550 or 01736-202922
mail: chanchalcox@gmail.com
Office : coxsbazar press club building(1st floor),shaheed sharanee road,cox’sbazar municipalty
coxsbazar-4700
Bangladesh
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
বাংলাদেশের সকল পত্রিকা সাইট
Bangla Newspaper

ABOUT US :

coxbangla.com is a dedicated 24x7 news website which is published 2010 in coxbazar city. coxbangla is the news plus right and true information. Be informed be truthful are the only right way. Because you have the right. So coxbangla always offiers the latest news coxbazar, national and international news on current offers, politics, economic, entertainment, sports, health, science, defence & technology, space, history, lifestyle, tourism, food etc in Bengali.

design and development by : webnewsdesign.com