নাজিম উদ্দিন,পেকুয়া(৩১ মে) :: কক্সবাজারের পেকুয়া উপজেলার টইটং ইউনিয়নের ধনিয়াকাটা এলাকা থেকে এক আফ্রিকা প্রবাসির স্ত্রীর লাশ উদ্ধার করে পুলিশ।
৩১মে (বৃহষ্পতিবার) সকাল ৯টার দিকে পেকুয়া থানার পুলিশ গলায় ফাঁস লাগানো অবস্থায় লাশটি উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসে। পরে ময়না তদন্তের জন্য কক্সবাজার সদর হাসপাতালে মর্গে প্রেরন করে। গৃহবধুর নাম রাজিয়া সোলতানা খুকি (২৪)।
তিনি কুতুবদিয়া উপজেলার উত্তর ধুরুং ইউনিয়নের চতর উদ্দিন পাড়ার আফ্রিকা প্রবাসি জসিম উদ্দিনের স্ত্রী। হত্যা নাকি আত্নহত্যা এ নিয়ে ধুম্রজাল দেখা দিয়েছে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন পুলিশ যে অবস্থায় লাশ উদ্ধার করেছে সেটি কখনো আত্নহত্যার ঘটনা হতে পারেনা।
জানা গেছে ধনিয়াকাটা এলাকার আব্দু রশিদের মেয়ে রাজিয়া সোলতানা খুকির সাথে ২০১৩ সালে কুতুবদিয়া উপজেলার উত্তর ধুরুং চতর উদ্দিন পাড়ার ছালেহ আহমদের ছেলে দক্ষিন আফ্রিকা প্রবাসি জসিম উদ্দিনের বিয়ে হয়। বিয়ের কয়েক মাস পর খুকিসহ জসিম উদ্দিন আফ্রিকা চলে যায়। ইসফিয়া সোলতানা নামের তিন বছর বয়সের এক কন্যা সন্তানের দম্পতি তার।
রাজিয়া সোলতানার মা কামরুন্নাহার, বড় বোন নাসরিন আক্তার জানায় বিয়ের পর স্বামীর সাথে বিদেশে চলে যায় খুকি। কয়েক মাস সুখে ছিল। এরপর খুকির উপর পাষবিক নির্যাতন চালাত স্বামী জসিম উদ্দিন। জসিম ছিল লম্পট প্রকৃতির লোক। বিদেশে এক মহিলার সাথে অবৈধ সম্পর্কে জড়িয়ে পড়ে।
প্রতিনিয়ত মদ্যপান করে নির্যাতন চালাত খুকিকে। খুকি ফোনে বিষয়টি আমাদের জানাত। ৭/৮ মাস আগে মেয়ে ইসফিয়াকে নিয়ে দেশে চলে আসে খুকি। মেয়ের জন্য প্রায় সময় কান্নাকাটি করত। মানষিকভাবে ভেঙ্গে পড়ে। খুকি ঘুমের ওষুদ খেয়ে রাতে ঘুমিয়ে পড়ে। সহেরী খায়নি। সকালে ঘুম থেকে উঠতে দেরি করলে আমাদের সন্দেহ হয়। অনেক ডাকাডাকি করেছি। দরজা ভেতর থেকে হুক লাগানো ছিল। তালা খুলে ভিতরে ঢুকি।
এ সময় সিলিং ফ্যানের লোহার রড়ে ওড়না প্যাচানো খুকির ঝুলন্ত লাশ দেখি। খুকির বড় ভাই সোহেল জানায় আমার বোন তার মেয়ের জন্য কান্নাকাটি করত। মেয়ের জন্য প্রায় সময় দু:চিন্তা করত। কয়েক মাস আগে সংসার বিচ্ছিন্ন হয়েছে। স্বামী নির্যাতন করত। কুতুবদিয়া ইউনিয়ন পরিষদ গ্রাম আদালত,থানায় একাধিক বিচার রয়েছে। এদিন সবার অগোচরে গলায় ফাঁস লাগিয়ে আত্নহত্যা করেছে।
টইটং ইউপি’র চেয়ারম্যান জাহেদুল ইসলাম চৌধুরী জানায় খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়েছি। স্বামীর সাথে তার বনিবনা ছিল। বিদেশ থেকে চলে আসার পর বাপের বাড়িতে থাকত। কি কারনে আত্নহত্যা করেছে এখনো ঠিক বলতে পারছিনা।
পেকুয়া থানার এসআই আশিকুর রহমান জানায় ঝুলন্ত অবস্থায় লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। ময়না তদন্তের জন্য লাশ মর্গে প্রেরন করা হয়েছে।
সোহেলের দোকানের কর্মচারী মো: ফারক ও জাহেদ জানায় যে কক্ষে খুকি আত্নহত্যা করেছে ওই কক্ষে আমরা রাতে ঘুমায়। এদিন রাতে খুকি আমাদের কক্ষে ঘুমালে আমরা অন্য রুমে ঘুমায়। সকালে তার গলায় ফাঁস লাগানো ঝুলন্ত লাশ পাওয়া যায়।
এদিকে গৃহবধুর আত্নহত্যা নিয়ে এলাকায় তোলপাড় সৃষ্টি হয়েছে। পরিবারের লোকজন একেক সময় একেক কথাবার্তা বলছে। মা কামরুন্নাহার একবার বলছে দরজা ভেঙ্গে লাশ বের করা হয়েছে। আবার বলছে চাবি দিয়ে দরজা খোলা হয়েছে।
যে রুমে আত্নহত্যা করেছে ওই রুমে কেউ থাকেনা। তবে লাশের ছবি দেখলে মনে হয় সে আত্নহত্যা করেনি। ফ্লোরে পা লাগানো,গলায় ওড়না প্যাচানো ছিল।
Posted ২:৪১ অপরাহ্ণ | শুক্রবার, ০১ জুন ২০১৮
coxbangla.com | Chanchal Das Gupta