নাজিম উদ্দিন,পেকুয়া(২৫ ফেব্রুয়ারী) :: পেকুয়ায় কিশোরী আসমা জন্নাত(১৫) এর বাল্য বিয়ে সোমবার ২৬ ফেব্রুয়ারী। উপজেলার সদর ইউনিয়নের সৈকতপাড়ায় ওই ছাত্রীর পৈত্রিক নিবাস। ওই এলাকার আবু ছিদ্দিকের মেয়ে আসমা জন্নাত।
সোমবার ধুমধাম বিয়ের আমেজে বাল্য বিয়ের পিড়িতে বসবে কিশোরী আসমা। বর দুবাই প্রবাসী এ সুবাধে বয়স কম হলেও আসমার পিতা-মাতা মেয়েকে জোরপূর্বক বিয়ের পিড়িতে বসাতে বাধ্য করছে। জানা গেছে, আসমা জন্নাত সদর ইউনিয়নের মেহেরনামা উচ্চ বিদ্যালয়ের ১০ম শ্রেণীর ছাত্রী। অত্যন্ত মেধাবী এ শিক্ষার্থী বিয়ে মেনে নিতে চাইনি।
তবে অভিভাবকরা তাকে অনেকটা বাধ্য করছে বিয়ের জন্য। বর দুবাই প্রবাসী। সম্প্রতি দেশে আসে প্রচুর অর্থ কুড়ি ও সম্পদশালী হওয়ায় আসমার অভিভাবকরা কিছুতেই এ বিয়ে হাতছাড়া করতে চাইনি। স্বর্ন অলংকার ও উপযুক্ত মোহরনা প্রাপ্তি হওয়ায় মেয়ে ও জামাতাকে নিয়ে তারা উচ্চাকাংখী।
প্রাপ্ত সুত্রে জানায়, আসমা জন্নাত এর বয়স হয়েছে ১৫ বছরের কিছু বেশী। তার জন্ম তারিখ ২৩-১২-২০০১। সে হিসেবে এখনও বিবাহের পরিপূর্নতা পেতে তার আরও ৩ বছর সময় অতিবাহিত।আসমার বিয়ের আনুষ্টানিকতা সম্পন্ন হয়েছে। কনে দেখাদেখি হয়েছে মাত্র কয়েকদিন আগে। এরই মধ্যে বিয়ের ঠিকপর্দ চুড়ান্ত করে বরপক্ষ। কনে অত্যন্ত সুন্দরী। বয়স কম হলেও এ বিয়ে বরকে করতে হবে। এ বাসনায় বর ও কনে পক্ষ বিয়ের চুক্তিতে সম্মত হয়।
রবিবার ২৫ ফেব্রুয়ারী মেহেদী সন্ধ্যা সম্পন্ন হয়। ব্যাপক আয়োজন করে মেহেদী সন্ধ্যায়। মঞ্চ ও গান বাজনা বাদ্যযন্ত্রের তালে তালে নৃত্য পরিবেশিত হয়। এক মনোমুদ্ধকর মেহেদী আয়োজন সম্পন্ন করে আসমার পরিবার। বিয়ে বাড়িতে আলোক সজ্জা ও ঝিলিক বাতির সজ্জায় কিশোরী আসমার এ বিয়েকে দৃষ্টিনন্দন করে। বর প্রবাসী তাই বাড়িতে বিশাল ভোজের আয়োজন করে। গরু ও হাসি জবাই করে বৈরাত ও আমন্ত্রিত অতিথিদের খাওয়াবে আজ।
জানা গেছে, আসমা ওই স্কুলের মানবিক বিভাগের ছাত্রী। পড়ালেখা করে সমাজ আলোকিত করার স্বপ্ন তার মধ্যে বিরাজ করছে। মেয়েটি বিয়ের পক্ষে নয়। তবে নাছাড় বান্দা তার পিতা-মাতা। বরের নাম মিজানুর রহমান ইরান। সদর ইউনিয়নের মেহেরনামা বাজারপাড়ায় তার বাড়ি। মেয়ে ও ছেলের বাড়ি এক কিলোমিটারের মধ্যে। ইরান ওই এলাকার মৌলভী আবদুল মালেকের ছেলে। তারা ধনবান ছেলের ফাঁদে পড়ে এ মেয়েকে বাল্য বিয়ের অন্ধকার অভিশাপে ধাবিত করছে।
জানতে চাইলে পেকুয়ার মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা জানায়, বাল্য বিয়ে অবশ্যই প্রতিরোধ করা হবে। আমরা শিশু ও নারীর বিকাশ ঘটাতে সামাজিক কর্মসুচী বাস্তবায়ন করছি। বিষয়টি অবশ্যই গুরুত্বের সাথে প্রাধান্য দেয়া হচ্ছে। পেকুয়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার মাহাবুবউল করিম জানায়, বাল্য বিয়ে হতে দেয়া হবে না। অবশ্যই এর বিরুদ্ধে আইনী ব্যবস্থা নেব।
Posted ৭:৩১ অপরাহ্ণ | রবিবার, ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৮
coxbangla.com | Chanchal Das Gupta