নাজিম উদ্দিন,পেকুয়াু(১৪ সেপ্টেম্বর) :: পেকুয়ায় নির্বাচন স্থগিত হওয়ায় অচলাবস্থা তৈরী হয়েছে উপজেলার মগনামা উচ্চ বিদ্যালয়ে। গত ৬ সেপ্টেম্বর মগনামা উচ্চ বিদ্যালয়ে অভিভাবক কেবিনেট নির্বাচনে ভোট গ্রহনের দিনক্ষন ধার্য্য ছিল। ভোট গ্রহনের চুড়ান্ত সময়ে নির্বাচন স্থগিত করা হয়। কেবিনেট নির্বাচনকে ঘিরে মগনামা উচ্চ বিদ্যালয়ে অচলাবস্থা বিরাজ করছে। অভিভাবক ও শিক্ষার্থীদের মাঝে এর নীতিবাচক প্রভাব পরিলক্ষিত হচ্ছে।
ঘোষিত তফসিলে নির্বাচন স্থগিত হয়ে যাওয়ায় বিরুপ প্রভাব দেখা দিয়েছে। ক্ষোভ ও অসন্তোষ বিরাজ করছে অভিভাবকদের মধ্যে। তারা এ প্রক্রিয়াকে ষড়যন্ত্র ও গণতন্ত্র চর্চার পরিপন্থী বলে আখ্যায়িত করছেন। নির্বাচনে প্রতিদ্বন্ধিতাকারী প্রার্থীরা এ ঘটনাকে দু:খজনক ও নীতিবাচক প্রভাব উল্লেখ করেছেন।
তারা স্থগিতাদেশের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ প্রদান করেন। মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষাবোর্ড এর চেয়ারম্যান চট্রগ্রাম বরাবর লিখিত অভিযোগ দেন। অভিভাবক কেবিনেট নির্বাচনের প্রার্থী আবুল হোসেন এ লিখিত অভিযোগ চেয়ারম্যান বরাবর প্রেরন করেছেন।
সুত্র জানা গেছে, অভিভাবক ক্যাটাগরিতে নির্বাচন অনুষ্টিত হতে তফসিল ঘোষনা করে মগনামা উচ্চ বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।
উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার কক্সবাজার ৮৮/২০১৭/৯৫(২৩) স্মারকমুলে নির্বাচনের জন্য প্রজ্ঞাপন জারি করে স্কুল কর্তৃপক্ষ। সাধারন পদে ৪ টি পদের জন্য ৮ জন প্রার্থী মনোনয়ন পত্র জমা দেন। সংরক্ষিত একটি পদের জন্য দুইজন মহিলা প্রার্থী হয়েছেন। দীর্ঘ প্রচার প্রচারনা চালায় তারা। নির্বাচনে ভোট গ্রহনের তারিখ ছিল ৬ সেপ্টেম্বর। এ দিকে ভোট গ্রহনের চুড়ান্ত মুহুর্তে অচলাবস্থা তৈরী হয়। জেলা প্রশাসকের নির্দেশে নির্বাচন স্থগিত করা হয়। জানানো হয়েছে, আইন শৃংখলা অবনতির আশংকা বিদ্যমান।
জানা গেছে, বিদ্যালয়ের দাতা সদস্যের প্রশ্নে মগনামা জমিদার বাড়ীর মাহাবুর রহমান চৌধুরীর ছেলে সোলতান মোহাম্মদ রিপন ভোট স্থগিত রাখতে জেলা প্রশাসক বরাবর অভিযোগ দেন। জেলা প্রশাসক সেটি আমলে নিয়ে নির্বাচন স্থগিত রাখতে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক শিক্ষাকে নির্দেশনা দেন। এতে করে নির্বাচন স্থগিত হয়ে যায়। এ দিকে নির্বাচন স্থগিত নিয়ে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে ভোটার ও প্রার্থীদের মাঝে।
তারা জানায়, শিক্ষার বিকাশ ঘটাতে সরকার বিদ্যালয় সমুহে সুষ্টু পরিচালনার জন্য কমিটিকে সর্বাধিক গুরুত্ব দিয়েছেন। এ নিয়ে সংশ্লিস্ট বিভাগ নীতিমালা প্রনয়ন করেছে। এরই প্রেক্ষিতে সারাদেশে শিক্ষা প্রতিষ্টান সমুহে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় ব্যবস্থাপনা নির্বাচন হচ্ছে। আদালতের আদেশ ছাড়া এ নির্বাচন স্থগিত করার বাধ্যবাধকতা নেই। দাতা নিয়ে বিদ্যালয়ে দ্বন্ধ দেখা দিয়েছে। মগনামা উচ্চ বিদ্যালয় ১৯৫২ সালে প্রতিষ্টিত হয়। বিদ্যালয়ের জায়গা দান করেছেন আবদুল আজিজ চৌধুরী।
এরপর থেকে দাতায় তাদের নাম অর্šÍভূক্ত। সম্প্রতি পরিচালনা কমিটিতে দাতা ক্যাটাগরিতে আবদুল আজিজ চৌধুরীর পুত্রবধূ সাবেক সাংসদ মাহামুদুল করিম চৌধুরীর স্ত্রী মনোয়ারা করিমকে স্থান দেয়া হয়। শিক্ষানুরাগী পুরুষ, শিক্ষানুরাগী মহিলা ও দাতা বাছাই নির্বাচন হয়েছে। ৪ টি পদে তারা নির্বাচিত হয়েছে। এ সব চুড়ান্তের ভিত্তিতে স্কুল কর্তৃপক্ষ কেবিনেট নির্বাচনে ভোট গ্রহনের তপশিল ঘোষনা করে। সোলতান মোহাম্মদ রিপন দাতা হিসেবে অন্তর্ভূক্ত হতে যে আবেদন উত্তাপন করেছেন তা নাকচ করেছেন মুল দাতাগোষ্টী।
খাজ নিয়ে জানা গেছে, বর্তমান সভাপতি আবু হেনা মোস্তফা কামাল চৌধুরী স্বপদে বহাল থাকতে নির্বাচনে অচলাবস্থার জন্য দাতাগোষ্টী অন্তর্ভূক্ত করতে রিপনের সাথে একত্রিত হয়েছেন। যে জায়গাটি স্কুলের নামে হস্তান্তরের কথা এসেছে সেটি তার জায়গা নয়। বিএস রেকর্ড স্কুলের নামে প্রচার আছে।
এ ব্যাপারে অভিভাবক কেবিনেট নির্বাচনের প্রার্থী আবুল হোসন, নাজেম উদ্দিন, জুবাইদুল হক, নুর মোহাম্মদ, আবুল হাসনাত আব্বাসী জানায়, ভোট বন্ধ হয়ে যাওয়ায় মগনামা উচ্চ বিদ্যালয়ে গণতন্ত্রকে ব্যাহত করা হচ্ছে। বর্তমান সভাপতি ও প্রধান শিক্ষক এ পরিস্থিতির জন্য দায়ী। স্কুলে শিক্ষার পরিবেশ ব্যাহত হয়েছে। ফলাফল বিপর্যয় হয়েছে। ব্যাপক অর্থ লুট করা হয়েছে। একটি পরিবর্তনের জন্য আমরা সবাই বদ্ধপরিকর। তবে ষড়যন্ত্র হওয়ায় স্কুলটিতে অচলাবস্থা দেখা দিয়েছে।
মগনামার সাবেক চেয়ারম্যান খাইরুল এনাম জানায়, বর্তমানে যিনি দাতা হিসেবে আবেদন করছেন সেটি অগ্রহনযোগ্য। গোপনে স্কুলের জমি খতিয়ান করলে সে মালিক হয় না। রেকর্ড আছে স্কুলের নামে। আর মনোয়ারা করিম দাতা হিসেবে নির্বাচিত হয়েছেন আগে।
উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আ.ফ.ম হাসান জানায়, যিনি দাতা হতে আবেদন করেছেন তার স্বপক্ষে যুক্তি থাকতে হবে। অন্যথায় ভোট বন্ধ করে দেয়া অন্যায় হবে। জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মহোদয় সরেজমিনে আসবেন। তিনি সেখানে বিস্তারিত জেনে নিবেন।
Posted ১২:৪০ পূর্বাহ্ণ | শুক্রবার, ১৫ সেপ্টেম্বর ২০১৭
coxbangla.com | Chanchal Das Gupta