মো: ফারুক,পেকুয়া(৬ ডিসেম্বর) :: পেকুয়া উপজেলা প্রশাসনের আওতাধীন স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) অফিস চলছে প্রভাবশালী সিন্ডিকেটের নিয়ন্ত্রনে। প্রকৌশল কর্মকর্তা জাহেদুল ইসলাম চৌধুরীর যোগসাজশে যার নেতৃত্বে রয়েছে বিএনপি দলীয় বেশ কিছু ঠিকাদার ও অফিস উম্মেদার। যা নিয়ে সরকার দলীয় নেতাকর্মীদের মাঝে ক্ষোভ দেখা দিয়েছে।
এমনকি প্রকৌশল কর্মকর্তা গোপনে ঠিকাদারদের সাথে আতাঁত করে টেন্ডার বক্স খুলে থাকে। যার কারণে বেশির ভাগ কাজ বাগিয়ে নেয় বিএনপি পন্থি ঠিকাদারেরা। এছাড়াও অফিস উম্মেদার নামে পরিচিত বিএনপির কর্মী মো:ফোরকান প্রকৌশল কর্মকর্তার সাথে সম্পর্ক থাকায় বিভিন্ন সময় কাজ বাগিয়ে নেয়।
এমন অভিযোগের ভিত্তিতে বুধবার (৬ডিসেম্বর) সকালে জেলা পরিষদ সদস্য জাহাঙ্গীর আলম সরাসরি অফিসে গিয়ে এর কারণ জানতে চাই প্রকৌশল কর্মকর্তার কাছে। এছাড়াও টেন্ডার বিজ্ঞাপণ গোপনে দেওয়া ও বক্স খুলতেও গোপনে করা নিয়েও প্রশ্ন করেন তিনি। সে সময় উপজেলা প্রকৌশল কর্মকর্তা তার কোন সঠিক জবাব দিতে পারেনি বলে জানা গেছে। তাৎক্ষনিকভাবে জেলা পরিষদ সদস্য জাহাঙ্গীর আলম বিষয়টি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে অবগত করেন।
জানা গেছে, বুধবার এডিবি বরাদ্ধের ১০টি প্রকল্প টেন্ডার করে উপজেলা প্রকৌশল কর্মকর্তার কার্যালয়। যার বক্স বুধবার(৬ডিসেম্বর) খুলা হয়। এর মধ্যে পেকুয়া ইউএনও অফিসের উম্মেদার পরিচয়দানকারী বিএনপি কর্মী মো: ফোরকানের মা এন্টারপ্রাইজ নামে ২টি, যুবদল নেতা তারেকুল ইসলামের তারেক এন্ড ব্রাদার্স নামে ১টিসহ ৭টি প্রকল্প চকরিয়ার বিভিন্ন ঠিকাদার প্রতিষ্টান বাগিয়ে নেয়। অভিযোগ রয়েছে টেন্ডারের ক্ষেত্রে পত্রিকার বিজ্ঞাপণ, টেন্ডার দেওয়া ও বক্স খোলতে ব্যাপক গোপনীয়তা রক্ষা করা হয়েছে। বিভিন্ন সময় প্রকৌশল কর্মকর্তা এ কাজ করে থাকেন।
এমনকি স্থানীয় সিনিয়র জনপ্রতিনিধি ও সরকারদলীয় নেতাদের কাছে ঠিকাদারী লাইন্সেস থাকার স্বত্বেও গোপনীয়তা রক্ষা করায় টেন্ডার দেওয়া ও বক্স খুলার সময় তারা জানতে পারেননা।
আরো জানা গেছে, পেকুয়া প্রকৌশল কর্মকর্তার কার্যালয় ঘিরে একটি ঠিকাদার সিন্ডিকেট রয়েছে। নেতৃত্ব দিচ্ছে বিএনপিপন্থি স্থানীয় ঠিকাদারেরা। তাদের কথাতেই চলে প্রকৌশল কর্মকর্তা জাহেদুল ইসলাম চৌধুরী। প্রকল্পের টেন্ডার নোটিশ কখন হচ্ছে তারাই আগে জানতে পারে। সবসময় ঠিকাদার মো: ফোরকান উপজেলায় অবস্থান করায় তাদের সিন্ডিকেটের কাছে খবর পৌছে যায়। এছাড়াও কমিশন ভিত্তিতে জাহেদুল ইসলাম চৌধুরী প্রকল্প থেকে টাকা আদায় করায় সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারেরা কাজে নয়ছয় করে শেষ করে। যার কারণে বিভিন্ন কাজের মান নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে এলাকাবাসীর।
জেলা পরিষদ সদস্য জাহাঙ্গীর আলম বলেন, প্রকৌশল কর্মকর্তার কার্যালয় দখল করে রেখেছে বিএনপিপন্থি একটি সিন্ডিকেট। তাদের কাছ থেকে অনৈতিক সুবিধা নেন কর্মকর্তা জাহেদুল ইসলাম। যার কারণে আমরা জনপ্রতিনিধি হয়েও জানিনা কখন টেন্ডার হচ্ছে আর কখন বক্স খুলা হচ্ছে। এর কারণ জানতে চেয়েছি কর্মকর্তা জাহেদুল ইসলামের কাছ থেকে। ইউএনও মহোদয়কে বিষয়টি অবগত করেছি। এভাবে হলে সরকারের ব্যাপক উন্নয়ন বাঁধাগ্রস্থ হবে।
প্রকৌশল কর্মকর্তা জাহেদুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, আসলে ই-টেন্ডার অনলাইনে হয়। এখানে ঠিকাদার ও স্থানীয় কারো থাকার সুযোগ নাই। বুধবারের টিন্ডারটি ই-টেন্ডার। ডিজিটাল পদ্ধিতে টেন্ডার হওয়ায় কোন ধরণের হাত থাকেনা আমাদের। তবে জেলা পরিষদ সদস্য জাহাঙ্গীর আলম সিনিয়র জনপ্রতিনিধি হওয়ায় টেন্ডারের আগে থাকে বলার দরকার ছিল। যা আমার ভূল হয়েছে। কার্যালয় সিন্ডিকেটের দখল কেন জানতে চাইলে তিনি বলেন, এখানে সব ঠিকাদার আসে।
প্রকৌশল কর্মকর্তা হিসাবে তাদের সাথে আমার সম্পর্ক। কিন্তু তাদের সাথে আমার কোন অনৈতিক সম্পর্ক নাই। সর্বশেষ তিনি এ বিষয়ে সংবাদ না পরিবেশন না করার জন্য অনুরোধ করেন।
Posted ১০:০১ অপরাহ্ণ | বুধবার, ০৬ ডিসেম্বর ২০১৭
coxbangla.com | Chanchal Das Gupta