বৃহস্পতিবার ২রা মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ১৯শে বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

শিরোনাম

বৃহস্পতিবার ২রা মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

শিরোনাম

পেকুয়ায় স্কুলে হট্রগোল, সভাপতির বাড়িতে ইটপাটকেল

বৃহস্পতিবার, ১৬ আগস্ট ২০১৮
365 ভিউ
পেকুয়ায় স্কুলে হট্রগোল, সভাপতির বাড়িতে ইটপাটকেল

নাজিম উদ্দিন,পেকুয়া(১৬ আগষ্ট) :: পেকুয়ায় শিলখালী উচ্চ বিদ্যালয়ে ব্যাপক হট্রগোল হয়েছে। খন্ডকালীন শিক্ষক নিয়োগ নিয়ে অপ্রীতিকর পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে। এ সময় শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভে ফেটে পড়ে। অবসরপ্রাপ্ত দুই শিক্ষককে চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ দাবীতে শিক্ষার্থীরা ক্লাস বর্জনসহ রাস্তায় নেমে বিক্ষোভ করে।

এ সময় এস,এম,সির সভাপতির বাড়িতে আক্রমন করা হয়েছে। শত শত শিক্ষার্থী উত্তেজিত হয়ে বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতির বাড়িতে অবস্থান নেয়। এ সময় তারা ইট পাটকেলসহ বাড়ি ভাংচুর চেষ্টা চালায়।

খবর পেয়ে পেকুয়ার ইউএনও ও মাধ্যমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের একাডেমিক সুপারভাইজার দ্রুত ওই স্থানে পৌছে। এ সময় তারা উত্তেজিত শিক্ষার্থীদের নিবৃত করার চেষ্টা চালায়। এক পর্যায়ে শিক্ষার্থীদের দাবীর প্রতি সহমত পোষন করে কর্মসুচী থেকে সরিয়ে নিয়ে আসা হয়েছে।

এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত খন্ডকালীন শিক্ষক নিয়োগকে ঘিরে শিলখালী উচ্চ বিদ্যালয় ও তৎসংলগ্ন এলাকায় উত্তেজনা বিরাজ করছিল। সভাপতির বাড়ি আক্রমন হয়েছে। এর প্রতিবাদে এলাকাবাসী এ পরিস্থিতির জন্য শিলখালী উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ইব্রাহীমকে দায়ী করেছেন।

শিক্ষার্থীদের লেলিয়ে দিয়ে প্রধান শিক্ষক বিদ্যালয়ে অচলাবস্থা তৈরীর প্রচেষ্টা চালায় বলে অভিভাবক ও প্রত্যক্ষদর্শীরা দাবী করছে।
১৬ আগষ্ট বৃহস্পতিবার সকাল ১১ টার দিকে উপজেলার শিলখালী উচ্চ বিদ্যালয়ে হট্রগোল ও বিক্ষোভ হয়েছে।

এর সুত্র ধরে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ইব্রাহীম ও একই বিদ্যালয়ের পরিচালনা কমিটির সভাপতি ও পরিচালনা কমিটির অপর সদস্যদের মধ্যে পরষ্পরবিরোধী বক্তব্য পাওয়া গেছে।

এর একটি পক্ষ জানায়, বিদ্যালয়ে দুইজন খন্ডকালীন শিক্ষক নিয়োগ নিয়ে প্রধান শিক্ষক ও পরিচালনা কমিটির মধ্যে দ্বন্ধ তৈরী হয়েছে। আবদুল মালেক ও আবদুল মোনাফ তারা দুইজন এ বিদ্যালয় থেকে অবসরে গেছেন। প্রধান শিক্ষক এ দুইজনকে খন্ডকালীন শিক্ষক হিসেবে স্কুলে চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ দিতে চেষ্টা করছিলেন।

তারা অবসরে গেছেন ২০১৪ সালে। গত কয়েক মাস ধরে বিদ্যালয়ে শ্রেনী কার্যক্রমে সম্পৃক্ত হন। গত কিছুদিন ধরে এ দুইজনের শিক্ষকতা নিয়ে প্রশ্ন তৈরী হয়েছে। এমনকি তারা দুইজন এমপিওভূক্ত শিক্ষক ছিলেন। অবসরে যাওয়ার পর ফের একই প্রতিষ্টানে চুক্তিভিত্তিত নিয়োগে খন্ডকালীন শিক্ষক হিসেবে অন্তর্ভূক্ত হওয়ার বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন তোলা হয়। এ সময় বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটি এ সম্পর্কিত বিষয়ে স্কুলে বৈঠকে মিলিত হয়েছে।

তারা স্পষ্ট জানিয়ে দেন, আইনী জটিলতা রয়েছে। কোন শিক্ষক স্ব-প্রতিষ্টান থেকে অবসরে গিয়ে থাকলে একই প্রতিষ্টানে চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ পাওয়ার সক্ষমতা হারিয়ে ফেলে। বিশেষ করে, শিক্ষা মন্ত্রনালয় থেকে এ সম্পর্কিত পরিপত্র জারি আছে। মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগ বে-সরকারী মাধ্যমিক-৩ পরিপত্রে এ সম্পর্কিত নীতিমালা প্রনয়ন করেছে। বে-সরকারী শিক্ষা প্রতিষ্টান(স্কুল-কলেজ)এর জনবল কাঠামো ও এমপিও নীতিমালা ২০১৮ জারিকরন হয়েছে।

সুত্রোক্ত নীতিমালা প্রনীত হয়েছে। সেখানে শিক্ষক নিয়োগে বয়সসীমা নির্ধারন করা হয়েছে। ৬০ বছর বয়স পূর্ন হওয়ার পর থেকে কোন প্রতিষ্টান (প্রধান,সহ প্রধান, শিক্ষক কর্মচারীকে) কোন অবস্থাতেই পুন: নিয়োগ কিংবা চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ দেয়া যাবেনা মর্মে স্পষ্ট পরিপত্রে উল্লেখ করা হয়েছে। তবে সরকারের পরিপত্র ও শিক্ষক নিয়োগ নিয়ে সাংঘর্ষিক অবস্থা তৈরী হয়েছে এ বিদ্যালয়ে।

সুত্র জানায়, প্রধান শিক্ষক ইব্রাহীম স্কুলে তার অনুগত বলয় তৈরী করতে অবসরপ্রাপ্ত এ দুই শিক্ষককে নিয়ে সরাসরি দ্বন্ধে জড়িয়ে যায়। এ দিকে খন্ডকালীন শিক্ষক নিয়োগ নিয়ে শিলখালী উচ্চ বিদ্যালয়ে অচলাবস্থা বিরাজ করছিল। নীতিমালাকে বৃদ্ধাঙ্গুলী প্রদর্শন করে খোদ প্রধান শিক্ষক সরকারের অনুসৃত নীতি মালা অবজ্ঞা করছিলেন। এস,এম,সি কমিটি ও প্রধান শিক্ষকের দ্বন্ধ চরম আকার ধারন করছিল।

এর সুত্র ধরে ওই দিন বিদ্যালয়ে শত শত শিক্ষার্থীদের জড়ো করে বিক্ষোভে নামতে বাধ্য করেন প্রধান শিক্ষক। এক পর্যায়ে কোমলমতি এ সব শিক্ষার্থীরা মুহুর্তের মধ্যে স্কুল এরিয়া থেকে রাস্তায় নেমে যায়।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, প্রধান শিক্ষক এসব শিক্ষার্থীদের লেলিয়ে দিয়েছেন। এস,এম,সির সভাপতির বাড়িতে উত্তেজিত এ সব শিক্ষার্থী ঢুকে পড়ছিলেন। এ সময় তারা বিভিন্ন বাক্যসহ সভাপতিকে উদ্দেশ্য করে উত্তেজিত ভাব প্রকাশসহ ইটপাটকেল ছুটে। মুলত এস,এম,সি কমিটিকে ভীতি ছড়াতে প্রধান শিক্ষক শিক্ষার্থীদের নিয়ে এ কান্ডের জানান দিচ্ছিলেন বলে প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়। ওই দিন সকালে বিদ্যালয়ে এসেম্বলী ক্লাস বর্জন করে শিক্ষার্থীরা।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে ৮ম, ৯ম ১০ম শ্রেনীর একাধিক শিক্ষার্থী এ প্রতিবেদককে জানায়, আমরা পূর্ব থেকে প্রস্তুতি নিয়েছিলাম। স্যারেরা আমাদেরকে ব্যানার সরবরাহ দেয়।

আমরা অনেকের ইচ্ছা ছিল না এ কর্মসুচীর প্রতি। তবে হেড স্যার অনুরোধ করছিলেন সাথে মোর্শেদ স্যার ও আবুল হাসেম স্যার আমাদেরকে উৎসাহিত করছিলেন। তা ছাড়া মালেক স্যার ও মোনাফ স্যারদের প্রতি আমরা অনুগত ছিলাম। শিলখালী উচ্চ বিদ্যালয় ষ্টেশনের ব্যবসায়ীরা জানায়, ইব্রাহীম মাষ্টার এ পরিস্থিতি সৃষ্টি করেছেন। পূর্ব থেকে প্রস্তুতি ছিল।

বিপুল অর্থ স্কুল থেকে লুপাট হয়েছে। প্রধান শিক্ষক ও পূর্বের কমিটির সভাপতিসহ তারা লাখ লাখ টাকা এ স্কুল থেকে আত্মসাৎ করছিলেন। নতুন কমিটি এ সব বের করছিলেন। স্কুলের আয়-ব্যয়ের হিসাব চলছে। প্রধান শিক্ষক এ পরিস্থিতি থেকে পার পেতে মুলত শিক্ষার্থীদের ঢাল হিসেবে ব্যবহার করছিলেন। শিলখালী ইউনিয়ন আ’লীগের সাধারন সম্পাদক বেলাল উদ্দিন জানায়, ইব্রাহীম জামায়াত পন্থী শিক্ষক।

সরকারকে বেকায়দায় রাখতে শিক্ষক নিয়োগকে ইস্যু করে শিক্ষার্থীদের রাস্তায় নামিয়েছে। তিনি উস্কানি দিয়েছেন ছাত্রদের। আমরা এ পরিস্থিতি পর্যবেক্ষন করছিলাম কিছুৃদিন ধরে। তারা গোপন বৈঠক করছিল এ তথ্য আমাদের কাছে আছে। না হলে ছাত্ররা কিভাবে ব্যানার পেল।

এস,এম,সির সদস্য রা জানায়, ইব্রাহীম মাষ্টার এ পরিস্থিতির মুল নায়ক। শিলখালী উচ্চ বিদ্যালয়ে তিনি প্রধান শিক্ষক হওয়ার পর থেকে শিক্ষার মান, প্রশাসনিক মান ও একাডেমিক মানে হ্রাস তৈরী হয়েছে। সিন্ডিকেট তৈরী করে শিক্ষকতা করা যায় না। নীতি ও নিষ্টাবোধ হ্রাস পেয়েছে ইব্রাহীম মাষ্টারের। এস,এম,সির সভাপতি আসাদুজ্জামান চৌধুরী এর সত্যতা স্বীকার করেছেন। তিনি জানান, আসলে এ ধরনের পরিস্থিতি আমরা আগে থেকে লক্ষ করছিলাম। ১৫ আগষ্টের শোক সভা থেকে শিক্ষার্থীদের তাগিদ দিয়েছি। বলা হয়েছে স্টুডেন্ট কেবিনেট সহ আমরা এ বিষয়ে বৈঠক করব। কোন কুচক্রিমহল অপপ্রচার, গুজব ও প্রপাগান্ডা করিয়ে থাকলে এ সব থেকে বিরত থাকতে হবে। এটি অনাকাংখিত পরিস্থিতির জন্য যারা দায়ী এদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় পদক্ষেপ নিতে সংশ্লিষ্ট দপ্তরে লিখিত অভিযোগ দেব আমরা।

প্রধান শিক্ষক ইব্রাহীম জানায়, আসলে দুইজন শিক্ষক স্কুল থেকে চলে যাবেন সেটি শিক্ষার্থীরা মেনে নেয়নি। তারা আবেগী ছিল। আমি এ পরিস্থিতির জন্য মোটেই দায়ী নই।

পেকুয়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার মাহাবুব উল করিম জানায়, ছাত্রদের শান্ত করা হয়েছে। তারা ক্লাসে ফিরিয়ে গিয়েছিল। বলা হয়েছে তোমাদের দাবী মতে এ দুই শিক্ষককে রাখার চেষ্টা থাকবে। তবে কেউ যদি উস্কানি কিংবা ইন্ধন দিয়ে থাকলে সেটি খতিয়ে দেখা হবে। অবশ্যই সেটি প্রমাণিত হলে কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না। পরিপত্রটি খন্ডকালীন শিক্ষকের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য কিনা সেটি আরও পর্যালোচনা চলবে।

জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার ছালেহ আহমদ জানায়, একই স্কুলে চাকুরীরত সরকারী নীতিমালা অনুযায়ী অবসরে গেলে তাহলে প্রধান শিক্ষক, সহপ্রধান ও শিক্ষক-কর্মচারীদেরকে খন্ডকালীন ও প্যারা শিক্ষক পুন: নিয়োগ ও চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ দেওয়ার কোন সুযোগ থাকে না।

365 ভিউ

Posted ১১:২৪ অপরাহ্ণ | বৃহস্পতিবার, ১৬ আগস্ট ২০১৮

coxbangla.com |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

Editor & Publisher

Chanchal Dash Gupta

Member : coxsbazar press club & coxsbazar journalist union (cbuj)
cell: 01558-310550 or 01736-202922
mail: chanchalcox@gmail.com
Office : coxsbazar press club building(1st floor),shaheed sharanee road,cox’sbazar municipalty
coxsbazar-4700
Bangladesh
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
বাংলাদেশের সকল পত্রিকা সাইট
Bangla Newspaper

ABOUT US :

coxbangla.com is a dedicated 24x7 news website which is published 2010 in coxbazar city. coxbangla is the news plus right and true information. Be informed be truthful are the only right way. Because you have the right. So coxbangla always offiers the latest news coxbazar, national and international news on current offers, politics, economic, entertainment, sports, health, science, defence & technology, space, history, lifestyle, tourism, food etc in Bengali.

design and development by : webnewsdesign.com