বুধবার ৮ই মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ২৫শে বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

শিরোনাম

বুধবার ৮ই মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

শিরোনাম

প্রত্যাবাসন ইস্যূতে কক্সবাজার রোহিঙ্গা ক্যাম্পে ২৫ জুলাই আসছে মিয়ানমার উচ্চপর্যায়ের প্রতিনিধিদল

মঙ্গলবার, ১৬ জুলাই ২০১৯
164 ভিউ
প্রত্যাবাসন ইস্যূতে কক্সবাজার রোহিঙ্গা ক্যাম্পে ২৫ জুলাই আসছে মিয়ানমার উচ্চপর্যায়ের প্রতিনিধিদল

কক্সবাংলা রিপোর্ট(১৬ জুলাই) :: কক্সবাজারের একাধিক শিবিরে আশ্রয় নেওয়া মিয়ানমারের নাগরিক রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর প্রত্যাবাসন ইস্যূতে আগামী ২৫ জুলাই দুদিনের সফরে কক্সবাজার আসছে নেপিডোর উচ্চপর্যায়ের একটি প্রতিনিধিদল।

কূটনৈতিক সূত্র জানিয়েছে, কক্সবাজারের উখিয়া ও টেকনাফের একাধিক শিবিরে আশ্রয় নেওয়া মিয়ানমারের নাগরিকরা যাতে স্বেচ্ছায় মিয়ানমারে ফেরত যায় সেই বিষয়ে রোহিঙ্গাদের মাঝে আস্থা গড়তেই মিয়ানমারের উচ্চপর্যায়ের প্রতিনিধি দলটি আগামী ২৫ ও ২৬ জুলাই কক্সবাজার সফর করবেন।

এদিকে ঢাকার একাধিক কূটনৈতিক সূত্র জানিয়েছে, আগামী ২৫ ও ২৬ জুলাই মিয়ানমারের উচ্চ পর্যায়ের একটি প্রতিনিধিদল কক্সবাজার সফর করবে, নেপিডো আনুষ্ঠানিকভাবে ঢাকাকে এই তথ্য জানিয়েছে। তবে ওই প্রতিনিধিদলটি কার নেতৃত্বে, কতো সদস্যের এবং তারা এই সফরে কী কী করতে চায় তার কিছুই উল্লেখ করেনি। প্রকৃত অর্থে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের ক্ষেত্রে মিয়ানমারের ইতিবাচক মনোভাব নিয়ে সন্দেহ রয়েছে।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একজন কর্মকর্তা জানান, মিয়ানমার সৃষ্ট রোহিঙ্গা সঙ্কট কাটাতে এবং প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়া শুরু করতে বাংলাদেশ-মিয়ানমারের মধ্যে গঠিত যৌথ ওয়ার্কিং গ্রুপের চতুর্থ বৈঠকে গত ৩ মে (শুক্রবার) নেপিডোতে অনুষ্ঠিত হয়।

ওই বৈঠকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়, ‘রোহিঙ্গারা মিয়ানমারের নাগরিক। তারা যাতে স্বেচ্ছায় দেশটিতে ফিরে যায় এজন্য মিয়ানমারকে দায়িত্বশীল ভূমিকা নিতে হবে। কক্সবাজারের আশ্রয় শিবিরগুলো সফর করে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীকে স্বেচ্ছায় ফেরত যেতে উদ্বুদ্ধ করতে হবে।’

ওই কর্মকর্তা জানান, গত ৩ মে অনুষ্ঠিত বৈঠকের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী আগামী ২৫ ও ২৬ জুলাই মিয়ানমারের একটি প্রতিনিধিদল কক্সবাজার সফর করবেন।

অন্যদিকে প্রত্যাবাসনের জন্য বাংলাদেশ কয়েক দফায় মিয়ানমারকে রোহিঙ্গাদের তালিকা দিয়েছে। প্রথম ব্যাচের প্রত্যাবাসনের জন্য ওই তালিকা যাচাই-বাছাই করে মিয়ানমার প্রায় দুই হাজার রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর বিরুদ্ধে আপত্তি তুলেছে। মিয়ানমারের যাচাই-বাছাইয়ে আপত্তি ওঠা রোহিঙ্গাদের বিষয় সমাধানে খুব শিগগিরই ঢাকায় বৈঠক হবে বলে চতুর্থ যৌথ ওয়ার্কিং গ্রুপের চতুর্থ বৈঠকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। তবে গত ৩ মে’র বৈঠকের পর এখন পর্যন্ত এ বিষয়ে হালনাগাদ কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি।

শরণার্থী, ত্রাণ এবং প্রত্যাবাসন সংক্রান্ত কমিশনার মোহাম্মদ আবুল কালাম সোমবার (১৫ জুলাই) বলেন, ‘আমরা এরই মধ্যে বৈঠকের প্রস্তুতি নিয়ে এ বিষয়ে মিয়ানমারকে জানিয়েছি। কিন্তু মিয়ানমার এখনও স্পষ্ট করে কিছু জানায়নি।’

আগামী ২৫ ও ২৬ জুলাই মিয়ানমারের প্রতিনিধিদলের কক্সবাজার সফরের সময় এই বৈঠকটি অনুষ্ঠিত হওয়ার সম্ভাবনা আছে কিনা জানতে চাইলে মোহাম্মদ আবুল কালাম বলেন, ‘বিষয়টি এখনও বুঝতে পারছি না। কেননা এই দুটি বিষয়ে দুই কমিটি কাজ করছে। সামনে যে প্রতিনিধিদল আসছে তাদের তালিকা পেলে বিষয়টি পরিস্কার হবে।’

রোহিঙ্গা সঙ্কট সমাধানে গত ২০১৭ সালের ২৩ নভেম্বর দুই দেশের মধ্যে একটি চুক্তি স্বাক্ষর করা হয়। চুক্তি অনুযায়ী, গত ২০১৭ সালের ১৯ ডিসেম্বর দুই দেশের মধ্যে ঢাকায় অনুষ্ঠিত বৈঠকে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে যৌথ ওয়ার্কিং কমিটি গঠন করা হয়।

রোহিঙ্গ সঙ্কট সমাধানে গত ২০১৭ সালের ডিসেম্বরে নেপিডোর সঙ্গে স্বাক্ষর করা চুক্তিতে উল্লেখ ছিল, ‘৯ অক্টোবর ২০১৬ এবং ২৫ আগস্ট ২০১৭ সালের পর যে সকল রোহিঙ্গা বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে তাদেরকে ফেরত নিবে মিয়ানমার। চুক্তি স্বাক্ষরের দুই মাসের মধ্যে প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়া শুরু হবে।’

পর্যবেক্ষণে দেখা গেছে, চুক্তি স্বাক্ষরের পর প্রায় দেড় বছর পার হলেও প্রত্যাবাসন বিষয়ে মিয়ানমারের পক্ষ থেকে কোনো সাড়া পাওয়া যায়নি। উল্টো একাধিক অজুহাতে প্রত্যাবাসনের বিষয়টি এড়িয়ে গেছে নেপিডো।

ঢাকা সফরে এসে মালয়েশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী সাইফুদ্দিন বিন আব্দুল্লাহ গত ৭ জুলাই (রোববার) গণমাধ্যমকর্মীদের বলেন, ‘নিজের বসত ভিটায় ফিরে যাওয়াই রোহিঙ্গা সঙ্কটের একমাত্র সমাধান। এই সঙ্কট সমাধানে মালয়েশিয়া বাংলাদেশকে যথাসাধ্য সহযোহিতা করছে। আশা করছি, এই বছর শেষ হওয়ার আগেই রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারে ফিরে যাওয়ার বিষয়ে যথাযথ প্রত্যাবসন প্রক্রিয়া চূড়ান্ত হবে। এই বিষয়ে বিস্তারিত পরিকল্পনা ঠিক করতে আসিয়ান দেশগুলোকে সঙ্গে নিয়ে মালয়েশিয়া কাজ করছে।’

জাতিসংঘসহ যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য এবং কানাডার সংশ্লিষ্ট প্রতিনিধিরা এরই মধ্যে জানিয়েছে যে, প্রত্যাবাসনের জন্য কোনো অনুকূল পরিবেশ সৃষ্টি করেনি মিয়ানমার। রোহিঙ্গা সঙ্কট সমাধানে মিয়ানমার সরকার আন্তরিক নয়।

গত ২০১৭ সালের ২৫ আগস্ট রাখাইনে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর ওপর নির্যাতন শুরু হলে প্রাণ বাঁচাতে বাংলাদেশে পালিয়ে আসে প্রায় সাত লাখেরও বেশি মানুষ। সব মিলিয়ে বাংলাদেশের একাধিক শিবিরে মিয়ানমারের প্রায় ১২ লাখ রোহিঙ্গা আশ্রয় নিয়েছে।

জাতিসংঘের মানবাধিকার কমিশন এই ঘটনাকে জাতিগত নিধনযজ্ঞের ‘পাঠ্যপুস্তকীয় উদাহরণ’ বলে আখ্যা দিয়েছে। রাখাইন সহিংসতাকে জাতিগত নিধন আখ্যা দিয়েছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রও। তুমুল সমালোচনা করছে যুক্তরাজ্য, কানাডা, কুয়েত, ইউরোপীয় ইউনিয়নসহ পুরো বিশ্ব।

উল্লেখ্য, ২০১৭ সালের ২ আগস্ট থেকে মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে জাতিগত সহিংসতা শুরু হয়। হত্যা-ধর্ষণসহ বিভিন্ন ধারার সহিংসতা ও নিপীড়ন থেকে বাঁচতে নতুন করে রোহিঙ্গারা বাংলাদেশে আশ্রয় নিতে শুরু করে। দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের হিসাব অনুযায়ী, ২০১৭ সালের ২৫ আগস্ট থেকে ২৮ নভেম্বর ২০১৮ পর্যন্ত বাংলাদেশে আশ্রয় নেয় ছয় লাখ ৯৩ হাজার ১৪ রোহিঙ্গা। এর আগেও বিভিন্ন সময়ে জাতিগত নিধনের শিকার হয়ে কয়েক লাখ রোহিঙ্গা বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়।

স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের হিসাব অনুযায়ী, বাংলাদেশে বর্তমানে ১১ লাখ ৫৮ হাজার ২৫৯ জন রোহিঙ্গা অবস্থান করছে। আর দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের হিসাব অনুযায়ী, ১১ লাখ ৫৮ হাজার ৪১৭ জন রোহিঙ্গা বাংলাদেশে অবস্থান করছে। এরমধ্যে আশ্রয়প্রার্থী এতিম শিশু রয়েছে ৩৯ হাজার ৮৪১ জন। নিবন্ধনকৃত আশ্রয়প্রার্থীর সংখ্যা ১১ লাখ ১৮ হাজার ৫৭৬ জন। বাংলাদেশে অবস্থানের পর আরও লক্ষাধিক রোহিঙ্গা শিশু জন্ম নিয়েছে বলেও বিভিন্ন সূত্রে জানা যায়।

রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর বেশিরভাগ কক্সবাজার জেলার উখিয়া ও টেকনাফ উপজেলায় বসতি স্থাপন করেছে। জাতিসংঘ শরণার্থী সংস্থা (ইউএনএইচসিআর)-এর ৩০ জুনের (২০১৯) হিসাব অনুযায়ী, ২০১৭ সালের ২৫ আগস্টের পর থেকে বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গা পরিবারের সংখ্যা এক লাখ ৭৩ হাজার ৪৪টি। এসব পরিবারের সদস্য সংখ্যা সাত লাখ ৪১ হাজার ৯৪৭ জন।

জাতিসংঘ দেশটিতে রোহিঙ্গাবিরোধী সামরিক অভিযানকে ‘জাতিগত নিধনযজ্ঞ’ হিসেবে আখ্যায়িত করেছে।

164 ভিউ

Posted ১২:১৫ অপরাহ্ণ | মঙ্গলবার, ১৬ জুলাই ২০১৯

coxbangla.com |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

Editor & Publisher

Chanchal Dash Gupta

Member : coxsbazar press club & coxsbazar journalist union (cbuj)
cell: 01558-310550 or 01736-202922
mail: chanchalcox@gmail.com
Office : coxsbazar press club building(1st floor),shaheed sharanee road,cox’sbazar municipalty
coxsbazar-4700
Bangladesh
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
বাংলাদেশের সকল পত্রিকা সাইট
Bangla Newspaper

ABOUT US :

coxbangla.com is a dedicated 24x7 news website which is published 2010 in coxbazar city. coxbangla is the news plus right and true information. Be informed be truthful are the only right way. Because you have the right. So coxbangla always offiers the latest news coxbazar, national and international news on current offers, politics, economic, entertainment, sports, health, science, defence & technology, space, history, lifestyle, tourism, food etc in Bengali.

design and development by : webnewsdesign.com