শুক্রবার ৩রা মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ২০শে বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

শিরোনাম

শুক্রবার ৩রা মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

শিরোনাম

‘ফ্রি স্টাইলে’ নির্বাচন করবে স্বতন্ত্র প্রার্থীরা : ১৩ দিনের জন্য নামছে সেনাবাহিনী

মঙ্গলবার, ১২ ডিসেম্বর ২০২৩
38 ভিউ
‘ফ্রি স্টাইলে’ নির্বাচন করবে স্বতন্ত্র প্রার্থীরা : ১৩ দিনের জন্য নামছে সেনাবাহিনী

কক্সবাংলা ডটকম(১২ ডিসেম্বর) :: আওয়ামী লীগের হাইকমান্ড থেকেই ঘোষণা হলো, এবার কেউ বিনা ভোটে নির্বাচিত হতে পারবেন না। ভোটার উপস্থিতিও বাড়াতে হবে। কোনো আসনে বিরোধী প্রার্থী না থাকলে প্রয়োজনে ‘ডামি প্রার্থী’ দাঁড় করানো এবং ‘স্বতন্ত্র প্রার্থী’ রাখার ঘোষণাও দেওয়া হয়। হাইকমান্ডের ঘোষণার সুযোগে বেশির ভাগ আসনেই নৌকা মার্কার বিপরীতে লড়ছেন আওয়ামী লীগের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতা।

নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন বঞ্চিতরা ও সংসদ সদস্য, প্রতিমন্ত্রীরা যেমন আছেন তেমন স্থানীয় রাজনীতিতে প্রভাবশালীরাও রয়েছেন। স্থানীয় নেতারা অনেকে নৌকার প্রার্থীদের ভোটের মাঠে চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়েছেন।

এখনো স্বতন্ত্র প্রার্থীদের ব্যাপারে আওয়ামী লীগ সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করেনি। যারা দলীয় মনোনয়ন পাননি তারা কি ‘ফ্রি স্টাইলে’ নির্বাচন করতে পারবেন, নাকি দলীয়ভাবে তাদের নিয়ন্ত্রণ করা হবে? এমন প্রশ্নের জবাবে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক, সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেন, এটা তাদের ‘ইলেকশন স্ট্র্যাটেজি’ বা নির্বাচনি কৌশল। এটা তো ওপেনলি আমাদের সভানেত্রী বলে দিয়েছেন। একাধিকবার তিনি বলেছেন ‘ওই সিদ্ধান্তের কোনো পরিবর্তন নতুন করে হয়নি’।

এদিকে নির্বাচনে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন কেন্দ্রীয় ১৪ দলের শরিক দলগুলোর সঙ্গে দলটির একাধিকবার বৈঠক হলেও আসন বণ্টনের সুরাহা হয়নি। তবে শরিক দলগুলোকে নৌকা প্রতীক দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে। কিন্তু স্বতন্ত্র প্রার্থীদের প্রত্যাহারে জোর করবে না ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ। এতে করে শরিকরা নৌকা পেলেও ভোটে জেতা নিয়ে যেমন শঙ্কা রয়েছে। একই সঙ্গে দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটতে পারে মনের ভেতরে এক ধরনের শঙ্কাও কাজ করছে তাদের মধ্যে।

বিএনপি ছাড়া দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে এবার সারা দেশে ‘নৌকা মার্কা’র সঙ্গে আওয়ামী লীগের স্বতন্ত্র প্রার্থীদের প্রতিদ্বন্দ্বিতাই মুখ্য হবে এমন ধারণা করা হচ্ছে।

দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে যারা লড়ছেন, তাদের সিংহভাগই আওয়ামী লীগের রাজনীতি করেন। ফলে অনেক আসনে নৌকার প্রার্থীর চেয়ে আওয়ামী লীগের এসব স্বতন্ত্র প্রার্থীর দিকেই নেতাকর্মীরা বেশি ঝুঁকছেন। আবার কোথাও কোথাও নৌকার প্রার্থীর সঙ্গে স্বতন্ত্র প্রার্থীর অনুসারীদের সংঘাতের ঘটনাও ঘটছে।

ফলে দলের হাইকমান্ড থেকে অনুমোদন দেওয়া হলেও এসব স্বতন্ত্রকে ‘গলার কাঁটা’ বলে মনে করছেন আওয়ামী লীগের অনেক নেতা। শুধু নৌকার প্রার্থীর কাছে নয়, এসব স্বতন্ত্র প্রার্থী ভয়ের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছেন অন্যান্য দলের প্রার্থীর কাছেও। আসন ভাগাভাগি নিয়ে আওয়ামী লীগের সঙ্গে শরিকদের যে দরকষাকষি চলছে, সেখানেও এসব স্বতন্ত্র প্রার্থী একটা ইস্যু হয়ে দাঁড়িয়েছে।

নির্বাচন কমিশনের (ইসি) তথ্যানুযায়ী, এবার ৩০০ আসনে গড়ে সাত জন করে স্বতন্ত্র প্রার্থী রয়েছেন। নেত্রকোনা-৩ আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছেন ইফতেকার উদ্দিন তালুকদার পিন্টু। তাকে উদ্দেশ করে আওয়ামী লীগের প্রার্থী অসীম কুমার উকিলের অনুসারীরা হুশিয়ারি দিয়েছেন। স্বতন্ত্র প্রার্থীর নামে ভোট চাইতে এলে দড়ি দিয়ে বেঁধে রাখা হবে বলেও হুমকি দেওয়া হচ্ছে। এ ধরনের হুমকি দেওয়ার একটি ফুটেজ ইন্টারনেটে ছড়িয়ে পড়েছে।

ময়মনসিংহ-১১ (ভালুকা) আসনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেয়েছেন কাজিম উদ্দিন আহমেদ ধনু। কিন্তু ওই আসনে বেশির ভাগ নেতাকর্মী মাঠে নেমেছেন স্বতন্ত্র প্রার্থী এমএ ওয়াহেদের পক্ষে।

ময়মনসিংহ জেলা আওয়ামী লীগের সম্পাদক পদমর্যাদার এক নেতা বলেন, ‘হাতেগোনা দু-একটি ছাড়া বাকি আসনগুলোতে নৌকার প্রার্থী স্বতন্ত্র প্রার্থীর কাছে হেরে যাবে।’ কারণ হিসেবে তিনি বলেন, ‘তৃণমূলের দীর্ঘদিনের কোন্দলের ছাপ এবারের নির্বাচনে দৃশ্যমান হবে। টানা তিনবারের এমপিরা এতদিন তৃণমূলকে থোরাই কেয়ার করছেন। কমিটি হওয়ার পথে বাধা দিয়েছেন এমপিরা। নতুন নেতৃত্ব সৃষ্টিতেও বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছেন তারা। স্থানীয় নেতাদের অনেকে এমপি দ্বারা নির্যাতিত ও নিপীড়িত হয়েছেন। তাই সবাই একাট্টা হচ্ছেন বিদ্রোহী বা স্বতন্ত্র প্রার্থীর পক্ষে। আবার অনেকে কোন পক্ষে অবস্থান নেবেন, তা নিয়ে সিদ্ধান্তহীনতায় রয়েছেন।’

গত ২৯ নভেম্বর কক্সবাজার-১ (চকরিয়া-পেকুয়া) আসনে নৌকার প্রার্থী সালাহ উদ্দিন আহমদের সমর্থকদের ওপর হামলা হয়। এতে আহত হন ১২ জন। সালাহ উদ্দিনের অভিযোগ স্বতন্ত্র প্রার্থী জাফর আলমের অনুসারী সাহারবিল ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান নবী হোছাইনের নেতৃত্বে হামলা হয়েছে।

গত ৩০ নভেম্বর হামলা হয় গাইবান্ধার-৫ আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী ফারহানা রাব্বি বুবলি ও তার সমর্থকদের ওপর। বুবলির অভিযোগ, নৌকার প্রার্থীর অনুসারীরা এ হামলা চালায়।

ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৩ আসনে নৌকার প্রার্থী র আ ম উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী। সেখানে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছেন সদর উপজেলার সদ্য পদত্যাগী চেয়ারম্যান ফিরোজুর রহমান ওলি। স্থানীয়রা জানান, এই দুই নেতার মধ্যে তীব্র বিরোধ রয়েছে। ওলি দলের প্রার্থীর বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ কেন্দ্রে জমা দিয়েছেন।

ঝালকাঠি-১ আসনে বিএনপির সাবেক নেতা শাহজাহান ওমর আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেয়েছেন। সেখানে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছেন আওয়ামী লীগ নেতা মনিরুজ্জামান। স্থানীয় নেতাদের প্রায় সবাই মনিরুজ্জামান মনিরের পক্ষে রয়েছে বলে জানা গেছে।

খুলনা জেলা আওয়ামী লীগের শীর্ষস্থানীয় এক নেতা বলেন, ‘স্বতন্ত্র প্রার্থীর কারণে বিভিন্ন জায়গায় সমস্যা হচ্ছে আমরাও শুনছি। কিন্তু টেকনিক্যাল কারণে কিছু বলতেও পারছি না। আশা করছি শিগগিরই এ বিষয়ে সুনির্দিষ্ট নির্দেশনা আসবে।’

স্বতন্ত্র প্রার্থীদের ব্যাপারে সতর্ক আওয়ামী লীগের হাইকমান্ডও। গতকাল বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউতে আওয়ামী লীগের এক যৌথসভায় দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘আমাদের নেত্রী স্বতন্ত্র হিসেবে প্রতিযোগিতা করার একটা সুযোগ দিয়েছেন। এই সুযোগের অপব্যবহার যেন কেউ না করেন। এখানে জোরজবরদস্তি করবেন, নৌকার সঙ্গে মল্লযুদ্ধ করবেন সেটা হবে না। শৃঙ্খলার সঙ্গে থাকতে হবে। প্রতিযোগী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন। সন্ত্রাসীরা প্রশ্রয় পায় এমন কোনো কাজ করবেন না, করতে পারবেন না। শান্তিপূর্ণ নির্বাচন হবে, কেউ গায়ের জোর খাটাবেন না; আমরা এটা সহ্য করব না।’

আওয়ামী লীগের এসব স্বতন্ত্র প্রার্থী নিয়ে আওয়ামী লীগের শরিকরাও আছেন নানা শঙ্কায়। তাদের ভাষ্য- যেহেতু তারা জোটে আছেন, তাই কম-বেশি আসনে সমঝোতার ভিত্তিতে নির্বাচন করার সুযোগ পাবেন।

জাপার সঙ্গে একাধিক সমঝোতার বৈঠক হয়েছে আওয়ামী লীগের। সমঝোতার ভিত্তিতে যেসব আসনে নির্বাচন করার সুযোগ পাবেন, সেখানে নৌকার প্রার্থী ও স্বতন্ত্র প্রার্থী শেষ পর্যন্ত থাকবে কিনা, তা নিয়ে জাতীয় পার্টি সংশয়ে রয়েছে। ধর্মভিত্তিক দল ও জোটের সঙ্গে সমঝোতার আলোচনাতেই একই ‘সংশয়’ উঠে আসে বলে জানা গেছে।

স্বতন্ত্র প্রার্থী কোনো বাধা হয়ে দাঁড়াবে না বলে মনে করেন আওয়ামী লীগের সভাপতিম-লীর সদস্য আবদুর রহমান। তিনি বলেন, ‘আওয়ামী লীগ নির্বাচনী আমেজে আছে। জনগণ দলটিকে বিজয়ী করে দেশের উন্নয়ন ও অগ্রযাত্রার ধারাবাহিকতা চাইবে। বিএনপি-জামায়াত ষড়যন্ত্র না করলে কোনো কিছুই সমস্যা হয়ে দাঁড়াবে না।’

এ ধরনের সংকট নিরসনে শেখ হাসিনার ওপর আস্থা রাখতে চান আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম। তিনি বলেন, ‘আওয়ামী লীগ উপমহাদেশের সবচেয়ে পুরনো দল। ক্রান্তিকালে দায়িত্বগ্রহণ করে সেই দলকে ফের মানুষের কাছে নিয়ে গেছেন শেখ হাসিনা।

সুতরাং তিনি জানেন, কখন কোথায় কী সিদ্ধান্ত নিতে হয়। দলের নেতাকর্মীরাও শেখ হাসিনার সিদ্ধান্তের প্রতি আস্থাশীল।’

এদিকে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ১৩ দিনের জন্য সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যদের মাঠে নামানোর পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। ওই পরিকল্পনা অনুযায়ী, আগামী ২৯ ডিসেম্বর থেকে ১০ জানুয়ারি পর্যন্ত ১৩ দিন সেনাসদস্যরা মাঠে অবস্থান করবেন। নির্বাচন কমিশনের প্রস্তাব রাষ্ট্রপতি অনুমোদন দেওয়ার পর সেই অনুযায়ী তাদের মোতায়েন করা হবে। তবে এবারও ইন এইড টু সিভিল পাওয়ারের আওতায় সশস্ত্র বাহিনী মোতায়েন হবে। গত নির্বাচনের মতো এবারও একই পদ্ধতিতে নির্বাচনের মাঠে সেনাসদস্যরা দায়িত্ব পালন করবেন। সোমবার নির্বাচন ভবনে সশস্ত্র বাহিনী বিভাগের সঙ্গে ইসির বৈঠকে এ বিষয়ে নীতিগত সিদ্ধান্ত হয়েছে।

ওই বৈঠকে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল, চার নির্বাচন কমিশনার, নির্বাচন কমিশন সচিবসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। অন্যদিকে বৈঠকে সশস্ত্র বাহিনীর প্রিন্সিপাল স্টাফ অফিসার লে. জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান, জননিরাপত্তা বিভাগের সিনিয়র সচিব ও প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব অংশ নেন। বৈঠকের পর সশস্ত্র বাহিনীর প্রিন্সিপাল স্টাফ অফিসার লে. জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান এবং ইসি সচিব মো. জাহাংগীর আলম সভার সিদ্ধান্তের কথা জানান।

বৈঠকের পর লে. জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান উপস্থিত সাংবাদিকদের বলেন, আগামী ২৯ ডিসেম্বর থেকে ১০ জানুয়ারি পর্যন্ত ১৩ দিনের জন্য মোতায়েনের মোটামুটি আলোচনা হয়েছে। এ বৈঠকে আলোচনা শুনে মনে হয়েছে, উনারা (ইসি) সুষ্ঠু, স্বচ্ছ ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন করতে চায়। আমরা আশ্বস্ত করেছি, যেভাবে সহায়তা চাওয়া হবে সশস্ত্র বাহিনী থেকে সেভাবেই দেওয়া হবে।

38 ভিউ

Posted ১১:১১ পূর্বাহ্ণ | মঙ্গলবার, ১২ ডিসেম্বর ২০২৩

coxbangla.com |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

এ বিভাগের আরও খবর

Editor & Publisher

Chanchal Dash Gupta

Member : coxsbazar press club & coxsbazar journalist union (cbuj)
cell: 01558-310550 or 01736-202922
mail: chanchalcox@gmail.com
Office : coxsbazar press club building(1st floor),shaheed sharanee road,cox’sbazar municipalty
coxsbazar-4700
Bangladesh
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
বাংলাদেশের সকল পত্রিকা সাইট
Bangla Newspaper

ABOUT US :

coxbangla.com is a dedicated 24x7 news website which is published 2010 in coxbazar city. coxbangla is the news plus right and true information. Be informed be truthful are the only right way. Because you have the right. So coxbangla always offiers the latest news coxbazar, national and international news on current offers, politics, economic, entertainment, sports, health, science, defence & technology, space, history, lifestyle, tourism, food etc in Bengali.

design and development by : webnewsdesign.com