কক্সবাংলা রিপোর্ট(১ আগস্ট) :: কক্সবাজার উপকূলের বঙ্গোপসাগর ঘেষেঁ মহেশখালীর সোনাদিয়া,কুতুবদিয়া চ্যানেলে ফিশিং ট্রলারে উদ্বেগজনক হারে বেড়ে গেছে জলদস্যুতা।ইলিশ ধরার মৌসুমকে কেন্দ্র করে জলদস্যুরা বেপরোয়া হয়ে উঠায় জেলে পরিবারে আতংক বিরাজ করছে।
বঙ্গোপসাগরে জলদস্যুরা জেলেদের জিম্মি করে বোট প্রতি দেড় থেকে দুই লাখ টাকা আদায় করছে। জেলেদের জীবন বাঁচাতে ও বোট ফিরে পেতে বোট মালিকরা ডাকাতদের কাছে হাতে হাতে, কখনো মোবাইল ব্যাংকিং চ্যানেলে নগদ অর্থ পাঠাচ্ছেন। ভয়ে বোট মালিকরা আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর কাছে ডাকাতির অভিযোগ করছেন না।
জেলেরা জানান,মহেশখালী,সোনাদিয়া,কুতুবদিয়া চ্যানেলের ও বিভিন্ন এলাকা থেকে জড়ো হওয়া জলদস্যুদের উপদ্রব বৃদ্ধি হওয়ায় সাগরের জেলেরা চরমভাবে আতংকে রয়েছে। যে কোন মুহুর্তে ঘটে যেতে পারে অপ্রতিকর ঘটনা।
জানা যায়,গত ২৮ জুলাই দুপুর ২টার দিকে বঙ্গোপসাগরে ১৬ বিউ নামক স্থানে ছোট মহেশখালী ইউনিয়নের রেজাউল করিম মেম্বারের মালিকানাধিন এফ,বি আল মদিনা নামক ফিশিং ট্রলারে জলদস্যুরা হামলা চালিয়ে ৫জনকে গুলিবিদ্ধও প্রায় ২০জনকে পিঠিয়ে আহত করেছে। আহত করার পর ফিশারম্যানদের জিম্মি করে ফিশিং ট্রলারের সব সরঞ্জমাদি লুট এবং ২লক্ষ টাকা মুক্তিপণ আদায় করেছে সহ বঙ্গোপসাগরে নিয়মিত ভাবে ঘটেই যাচ্ছে নানান ঘটনা।
জেলেরা আরো জানান, নিয়মিত মাসোহারা দিতে অপারগ হলে পরবর্তিতে এই ট্রলার সাগরে আর মাছ ধরার জন্য যেতে পারেনা, তাদের অবাধ্য হওয়া কোন ফিশিং ট্রলার সাগরে মাছ শিকারে গেলে ট্রলারের ইঞ্জিন, জাল, আহরনকৃত মাছ, তৈল ও প্রয়োজনীয় সরঞ্জামাদি লুট করে নিয়ে যায় পরিশেষে খালি ট্রলারটি ফুটো করে সাগরে ডুবিয়ে দেয়।
বোট মালিক সূত্রগুলো জানায়,সাগরে ইলিশ ধরার মৌসুমেই ফিশিং ট্রলারগুলো বেশির ভাগ ডাকাতের কবলে পড়ে। তাদের অভিযোগ কুতুবদিয়ার ৪টি প্রধান ডাকাত গ্রুপ সক্রিয়। এদের অনেকগুলো শাখা গ্রুপ রয়েছে। এরা স্থানীয়ভাবে বিভিন্ন ব্যক্তির নামে ‘বাহিনী’ হিসেবেও পরিচিত।এছাড়া মহেশখালী,সোনাদিয়ার ডাকাত গ্রুপগুলো বেশ সক্রিয়।
ক্ষতিগ্রস্ত বোট মালিকরা জানান, বোট ও জেলেদের মুক্ত করতে কুতুবদিয়ার ধুরং বাজারে গিয়ে হাতে হাতে কিংবা কোনো বিকাশ একাউন্টে টাকা পাঠাতে হয়। ধুরং ও লেমশিখালি ডাকাতদের শক্ত ঘাঁটি। প্রশাসন ডাকাতদের নির্মূলে যথাযথ ব্যবস্থা নিচ্ছে না বলেও মনে করছেন বোট মালিকরা।
মহেশখালী উপজেলা ফিশিং ট্রলার মালিক সমিতির সভাপতি সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান আলহাজ্ব আবু বক্কর ছিদ্দিক জানান, সাগরে জলদস্যুতা বৃদ্ধি পাওয়ায় আমাদের জেলে পরিবার গুলো চরম ভাবে আতংকে দিনাতিপাত করছে তাই জলদস্যুতা বন্ধে কোস্টগার্ড সহ প্রশাসনের সার্বিক সহযোগীতা কামনা করছি কেননা মহেশখালীর বেশীর ভাগ লোকজন ফিশিং এর উপর নির্ভর করে।
জেলা বোট মালিক সমিতির এক নেতা বলেন, প্রায় প্রতিদিনই ফিশিং ট্রলারে ডাকাতি হচ্ছে। বোটের মালিককে ফোন করে মুক্তিপণের টাকা দাবি করে। কোস্টগার্ড-র্যাবকে জানালে মাঝিমাল্লাদের হত্যা করারও হুমকি দেয় তারা। কিন্তু বোট মালিকরা এ ব্যাপারে এগিয়ে না আসায় প্রশাসনও কোনো ব্যবস্থা নিতে পারছেন না।
Posted ১:৩৫ পূর্বাহ্ণ | বৃহস্পতিবার, ০২ আগস্ট ২০১৮
coxbangla.com | Chanchal Das Gupta