কক্সবাংলা ডটকম(৫ মে) :: রুপালি পর্দায় তারকারা তাদের সম্পর্কগুলো টিকিয়ে রাখতে পারঙ্গম। কিন্তু ব্যক্তিজীবনে তার উল্টোটা হয়। সাধারণত পর্দায় দেখা চরিত্র দেখেই আমরা তারকারদের জীবনযাত্রা বিচার করি রঙ্গিন চরিত্র দেখে ভুলে যাই পর্দার বাইরে ওই মানুষটির জীবন অন্যরকম। অন্যরকম বলেই হয়তো সিনেমার মত তাদের সম্পর্কের শেষটা সবসময় শুভ হয় না। তেমনি ছয় তারকা জুটির ভেঙে যাওয়া সম্পর্কের আদ্যোপান্ত নিয়ে এই প্রতিবেদন।
১. হৃত্বিক রোশন ও সুজানে
‘কৃষ ৩’ ছবির শুটিং চলাকালীন হৃতিকের সঙ্গে কঙ্গনার প্রেমের সম্পর্ক ছিল। আর সেই ছবি মুক্তির কয়েক দিন পরই হৃতিক ও সুজানে তাদের বিয়ে বিচ্ছেদের ঘোষণা দেন। জানা যায় কঙ্গনার সঙ্গে পরকীয়া সম্পর্কের কারণেই হৃতিক-সুজানের ডিভোর্স হয়েছিল।
তবে হৃতিকের দাবি, একটা বিয়ে ভাঙার পেছনে অনেক কারণ থাকে। সুজানে ও তিনি এখনও ভালো বন্ধু। কিন্তু অনেকে ভেবে নেন, সুপারস্টার নিশ্চয়ই খারাপ কিছু করেছিলেন, তাই তাদের বিয়ে ভেঙেছে। কিন্তু ব্যাপারটা এমন নয়।
এদিকে ১৪ বছরের বিবাহিত জীবন কাটিয়ে যখন হৃতিক-সুজানে ডিভোর্সের সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছিলেন। তখন অবাক হয়েছিল হৃতিকের কাছের মানুষরা। হৃত্বিক রোশন ও সুজানের ভেঙে যাওয়া সংসারে দুই ছেলে এখন হতাশায় নিমজ্জিত। যদিও দুই ছেলে মায়ের সঙ্গে যায়নি। বাবা আর দাদুর সঙ্গে রয়েছে। মা চলে যাওয়ায় মন খারাপ হওয়াই স্বাভাবিক শিশুদের। তাই হৃত্বিক রোশন আর রাকেশ রোশনের এখন মূল কাজ হল, বাচ্চা দু’টির মন ভালো রাখা।
২. আরবাজ খান ও মালাইকা অরোরা
দীর্ঘ ১৮ বছরের দাম্পত্য জীবনের অবসান ঘটান আরবাজ খান ও মালাইকা অরোরা দম্পতি। অনেকেই চেষ্টা করেছেন দু’জনের সম্পর্ক জোড়া দিতে। কিন্তু সব প্রচেষ্টাকে ব্যর্থ করে দিয়ে বান্দ্রার একটি আদালতে ডিভোর্স হয় আরবাজ-মালাইকার। ভক্তদের প্রশ্ন মালাইকার সঙ্গে কেন টিকলো না আরবাজের সংসার?
বলিউড হাঙ্গামার বরাতে টাইমস অব ইন্ডিয়া জানায়, মালাইকা অরোরাই আর নিজেদের বিবাহিত জীবন কন্টিনিউ করতে চাননি। আরবাজের ক্যারিয়ার নিয়ে নাকি মালাইকা অসন্তুষ্টি ছিলেন। তার স্বামী নাকি ‘সুপারস্টার ভাইয়ের ছায়ার নিচে বাস করতো।’আর তাই এ নিয়ে সংসারে অশান্তি ছিল।
এর মধ্যে নাকি খান পরিবারের পক্ষ থেকে মালাইকাকে অভিনয় ছেড়ে ঘরকন্নার কাজে মনোযোগী হওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছিল। যেটা মালাইকা মেনে নেননি। এটাই ছিল মূল কারণ।
৩. ফারহান আখতার ও আধুনা ভবানী
এক যুগেরও বেশি সময় সংসার করার পর দাম্পত্য জীবনের ইতি টানেন বলিউড নির্মাতা-অভিনেতা ফারহান আখতার ও আধুনা ভবানী। তিন বছর প্রেম করার পর ২০০০ সালে বিয়ে করেন এ জুটি। দাম্পত্য জীবনে তাদের সাকিয়া এবং আকিরা নামে দুটি কন্যা সন্তান রয়েছে। বিচ্ছেদের ঘোষণা দিয়ে এ দম্পতি এক বিবৃতিতে বলেছিলেন, ‘আমরা (আধুনা এবং ফারহান) অনেক ভেবেচিন্তে ঘোষণা করছি, আমরা আলাদা হওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। তবে সন্তানরা আমাদের কাছে বেশি গুরুত্বপূর্ণ, তাই বাবা-মা হিসেবে আমাদের সন্তানদের সকল দায়িত্ব আমরা পালন করব। যেন তারা সকল প্রকার গুঞ্জণ এবং মানুষের কটূক্তি থেকে মুক্ত থাকে।’
৪. হিমেশ রেশমিয়া ও কোমল
২২ বছরের দাম্পত্য জীবনের ইতি টানেন হিমেশ রেশমিয়া ও তার স্ত্রী কোমল। মুম্বাইয়ের বান্দ্রায় একটি ফ্যামিলি কোর্টে তারা ডিভোর্সের আবেদন করেন। এ প্রসঙ্গে হিমেশ রেশমিয়া বলেন, ‘জীবনে কিছু সময় আসে যখন পারস্পরিক শ্রদ্ধার বিষয়টি সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠে এবং আমাদের সম্পর্ককে শ্রদ্ধা জানিয়ে কোমল এবং আমি সমঝোতার মাধ্যমে বিচ্ছেদের সিদ্ধান্ত নিয়েছি।
আমাদের এই সিদ্ধান্তে কারো কোনো সমস্যা নেই, আমাদের পরিবারও এই সিদ্ধান্তকে মেনে নিয়েছে। এরপরও কোমল আমাদের পরিবারের এবং আমি তার পরিবারের অংশ হয়ে থাকব।’
৫. কারিশমা কাপুর ও সঞ্জয় কাপুর
কারিশমা কাপুর ও সঞ্জয় কাপুরের ১৩ বছরের দাম্পত্য জীবন শেষ করেন তিক্ততার মধ্য দিয়ে। শিল্পপতি সঞ্জয়ের সঙ্গে ২০০৩ সালে বিয়ে হয় কারিশমার। দু’পক্ষের দোষারোপের পালা গড়ায় আদালত পর্যন্ত। কোন সমঝোতা না আসায় শেষমেশ ডিভোর্স হয় তাদের। এ বিচ্ছেদে সঞ্জয়ের একটি বাড়ি ছাড়াও ১৪ কোটি রুপির বন্ড পান কারিশমা। তবে এর বদলে ছেলেমেয়ের সঙ্গে ছুটি কাটানোর সুযোগ পান সঞ্জয়।
৬. সঞ্জয় দত্ত ও রিয়া পিল্লাই
সঞ্জয় দত্ত ও রিয়া পিল্লাই সংসার করার পাশাপাশি দু’জনই জড়িয়ে পড়েছিলেন পরকীয়ায়। সঞ্জয়ের সঙ্গে নাম জড়িয়েছে মান্যতার। অন্য দিকে, টেনিস তারকা লিয়েন্ডার পেজের সঙ্গে প্রেম চলছিল রিয়ার। ১৯৯৮ সালে বিয়ের পর থেকেই তাদের নিয়ে নানা রসালো কাহিনিতে ট্যাবলয়েডের পাতা ভরে গিয়েছিল। শেষ পর্যন্ত আর টেকেনি তাদের সংসার। বরং ২০০২ সালে ডিভোর্সের সময় ৮ কোটি রুপি ভরণ পোষণ পান রিয়া।
ভালোবেসে অথবা পারিবারিক ভাবে বিয়ের পরে নানা কারণেই অনেক দম্পতির মধ্যে নানাবিধ সমস্যা দেখা দেয়। সম্পর্কের পরিণতি গিয়ে দাঁড়ায় ডিভোর্সে। সেলিব্রেটিদের জীবনও এর বিপরীত কিছু নয়।
Posted ৬:৪৫ অপরাহ্ণ | শনিবার, ০৫ মে ২০১৮
coxbangla.com | Chanchal Das Gupta