কক্সবাংলা ডটকম(১ ফেব্রুয়ারি) :: বাংলাদেশের কোনও জাতীয় নির্বাচন থাকেন বিদেশি পর্যবেক্ষকরা৷ তাতে সরকার কিছু বলে না৷ কিন্তু দুটি সিটি কর্পোরেশনের ভোটে কেন থাকছেন বিভিন্ন দেশের দূতাবাস থেকে নিযুক্ত পর্যবেক্ষকরা ? এই প্রশ্নে আগেই বিতর্ক শুরু হয়েছে৷ এবার মুখ খুললেম প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা৷ তিনি বলেছেন, সিটি নির্বাচনে বাংলাদেশিদের বিদেশি পর্যবেক্ষক হিসেবে নিয়োগ দিয়ে বিদেশি দূতাবাসগুলো গর্হিত কাজ করেছে।
ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের ভোট পর্যবেক্ষণ করতে ১০টি দেশের দূতাবাস থেকে নিয়োগ করা ৭৪ জনকে অনুমতি দিয়েছে নির্বাচন কমিশন। এদের মধ্যে ২৮ জন বাংলাদেশি, যারা বিভিন্ন দূতাবাসে চাকরি করেন। এতে সরকার ও ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের ঘোর আপত্তি।
শনিবার সকালে ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের অন্তর্গত সিটি কলেজ কেন্দ্রে ভোট দেন শেখ হাসিনা৷ পরে তিনি বেরিয়ে এসে সাংবাদিকদের কাছে দূতাবাসগুলির ভূমিকা নিয়ে প্রবল ক্ষোভ উগরে দেন৷ তিনি বলেছেন, যারা উদ্বেগ প্রকাশ করছেন, তাদের দেশে ভোট কেমন হয় এমন কিছু কিছু নমুনা আমাদের জানা আছে।
তাঁর বক্তব্য ঘিরে শোরগোল পড়েছে৷ কারণ ঢাকায় থাকা বিভিন্ন দেশের দূতাবাসে কর্মরত বাংলাদেশিদের পর্যবেক্ষক করে ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন ঘুরিয়ে দেখানো হচ্ছে৷ শেখ হাসিনা বলেন, ‘একটা কাজ তারা ঠিক করেনি। তাদের বিভিন্ন দূতাবাসে বাংলাদেশি নাগরিক যারা চাকরি করেন, তাদেরকে তারা বিদেশি পর্যবেক্ষক হিসাবে নিয়োগ দিয়ে অত্যন্ত গর্হিত কাজ করেছে।’
শেখ হাসিনা কটাক্ষ করে বলেন, তারা বিদেশি হয় কি করে? পর্যবেক্ষক হয় কি করে? ওখানে তারা চাকরি করে, তাদেরকে তারা বিদেশি পর্যবেক্ষক হিসেবে পাঠায় কি করে। এটা সঠিক কাজ তারা করেননি। এদের মধ্যে অনেকে এমন আছে, কারও পিতা হয়ত ১৯৭৫ সালে বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের ষড়যন্ত্রের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন বা কেউ ছিলো স্বাধীনতা বিরোধী। মুক্তিযুদ্ধের সময় গণহত্যা চালিয়েছে। তাদের উত্তরসূরি এমন অনেক আছে। তারা রাষ্ট্রদূতদের ওখানে চাকরি করে। তাদের নামও পর্যবেক্ষক হিসেবে দূতাবাসগুলি দিয়েছে।
আওয়ামী লীগ বিরোধীদের অভিযোগ, সরকারপক্ষ ভোট লুঠ করতে পারে৷ নির্বাচন সুষ্ঠু করতে হবে৷ নির্বাচন কমিশন জানিয়েছে, ঢাকার দুটি সিটি কর্পোরেশনের ভোট সুষ্ঠু করতে সমস্ত রকম উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে৷
নির্বাচন কমিশনেরও সমালোচনা করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, দূতাবাসে কর্মরত বাংলাদেশিদের পর্যবেক্ষক হিসেবে নির্বাচন কমিশন কীভাবে গ্রহণ করল? আইনে স্পষ্ট বলা আছে, বিদেশি পর্যবেক্ষক মানে বিদেশি হতে হবে। দেশের নাগরিক, কীভাবে তাদের বিদেশি পর্যবেক্ষক হিসেবে নির্বাচন কমিশন গ্রহণ করেছে তা আমি জানি না। এটা তারা গ্রহণ করে ঠিক করেনি।
দুটি সিটি কর্পোরেশনের ভোটে মূল লড়াই চিরাচরিত আওয়ামী লীগ ও বিএনপির মধ্যে৷ ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের আওয়ামী লীগের মেয়র পদপ্রার্থী আতিকুল ইসলাম৷ তাঁর প্রতিদ্বন্দ্বী বিএনপির তাবিথ আউয়াল৷ অন্যদিকে ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনে আওয়ামী লীগ মেয়র প্রার্থী করেছে শেখ ফজলে নূর তাপস৷ তাঁর প্রতিদ্বন্দ্বী বিএনপির ইশরাক হোসেন৷ এছাড়াও লড়াই করছেন জাতীয় পার্টি ও বামপন্থীরা৷
রাজধানী ঢাকার দুটি সিটি কর্পোরেশনের নির্বাচনের দিকে বাংলাদেশের রাজনৈতিক মহল৷ কারণ, ঢাকা-কে কেন্দ্র করেই দেশের সর্বত্র রাজনৈতিক প্রচার কাজের সূচনা হয়৷ তার সঙ্গে রয়েছে বিশ্বের অন্যতম ঘনবসতিপূর্ণ মহানগরীর নাগরিক পরিষেবা দানের বিষয়৷ বিভিন্ন সময়ে ঢাকার সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনের ফলাফল দেশের শাসক দলের অনুকূলে গিয়েছে৷ সেই ধারা বজায় থাকবে বলেই বিভিন্ন সমীক্ষার দাবি৷ তবে নির্বাচনী লড়াইয়ে কোনওমতেই জমি ছাড়া হবে না বলেই জানিয়েছে বিরোধী বিএনপি নেতৃত্ব৷
Posted ১:৩৯ অপরাহ্ণ | শনিবার, ০১ ফেব্রুয়ারি ২০২০
coxbangla.com | Chanchal Das Gupta