কক্সবাংলা ডটকম(৫ সেপ্টেম্বর) :: চলতি অর্থবছরের আগস্ট মাসে প্রবাসী বাংলাদেশীরা ১৪১ কোটি ডলার রেমিট্যান্স পাঠিয়েছেন, যা বাংলাদেশী মুদ্রায় ১১ হাজার ৮০৮ কোটি টাকা (প্রতি ডলার ৮৩ টাকা ৭৫ পয়সা ধরে)। ঈদুল আজহার এ মাসে জুলাইয়ের তুলনায় ৭ দশমিক ২২ শতাংশ বেশি রেমিট্যান্স এসেছে দেশে।
এর আগে টানা দুই অর্থবছর কমার পর গত অর্থবছর রেমিট্যান্সে ১৭ দশমিক ৩২ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হয়েছে। প্রবৃদ্ধির এ ধারাবাহিকতা চলতি অর্থবছরের প্রথম দুই মাসেও বজায় রয়েছে। গতকাল বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রকাশিত হালনাগাদ প্রতিবেদনে এসব তথ্য পাওয়া গেছে।
রেমিট্যান্সের প্রবৃদ্ধির বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র সিরাজুল ইসলাম বলেন, ঈদের মাসে রেমিট্যান্স অনেক বেড়েছে। কারণ প্রবাসীরা কোরবানিসহ ঈদের কেনাকাটা করতে প্রচুর টাকা-পয়সা পাঠিয়েছেন।
এছাড়া বাংলাদেশ ব্যাংক ও সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় হুন্ডি রোধে নানা পদক্ষেপ গ্রহণ করার কারণে ব্যাংকিং চ্যানেলে রেমিট্যান্স প্রবাহ বেড়েছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ প্রতিবেদন অনুযায়ী, আগস্টে রাষ্ট্রায়ত্ত পাঁচ ব্যাংকের মাধ্যমে ৩৫ কোটি ৭২ লাখ ডলার, বিশেষায়িত এক ব্যাংকের মাধ্যমে ১ কোটি ৫৩ লাখ ডলার, বেসরকারি খাতের ৩৮টি ব্যাংকের মাধ্যমে ১০২ কোটি ৭৭ লাখ ডলার এবং বিদেশী সাত ব্যাংকের মাধ্যমে ১ কোটি ৭ লাখ ডলার রেমিট্যান্স এসেছে।
তবে রাষ্ট্রায়ত্ত বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক লিমিটেড (বিডিবিএল), বিশেষায়িত রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংক (রাকাব), বেসরকারি আইসিবি ইসলামিক ব্যাংক এবং বিদেশী হাবিব ব্যাংক ও ন্যাশনাল ব্যাংক অব পাকিস্তানের মাধ্যমে কোনো রেমিট্যান্স আসেনি।
প্রতিবেদন বিশ্লেষণে দেখা যায়, আগস্টে সবচেয়ে বেশি রেমিট্যান্স এসেছে ইসলামী ব্যাংকের মাধ্যমে, ২৯ কোটি ডলার। দ্বিতীয় অবস্থানে আছে রাষ্ট্রায়ত্ত অগ্রণী ব্যাংক। আগস্টে ব্যাংকটি রেমিট্যান্স এনেছে ১৫ কোটি ডলার।
এছাড়া সোনালী ব্যাংক ১০ কোটি ৫৫ লাখ ডলার, ডাচ্-বাংলা ব্যাংক ৮ কোটি ৮৮ লাখ, জনতা ব্যাংক ৮ কোটি ১১ লাখ, ব্যাংক এশিয়া ৫ কোটি ৫৫ লাখ, সাউথইস্ট ব্যাংক ৫ কোটি ১৬ লাখ, ট্রাস্ট ব্যাংক ৪ কোটি ৮০ লাখ, ন্যাশনাল ব্যাংক ৪ কোটি ৬৪ লাখ, পূবালী ব্যাংক ৪ কোটি ৬১ লাখ, ব্র্যাক ব্যাংক ৪ কোটি ২৬ লাখ, মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংক ৩ কোটি ৯৭ লাখ, উত্তরা ব্যাংক ৩ কোটি ৮৮ লাখ, এনসিসি ব্যাংক ৩ কোটি ৫২ লাখ ও দি সিটি ব্যাংক ৩ কোটি ডলার রেমিট্যান্স এনেছে।
সূত্র জানায়, অর্থবছরের প্রথম দুই মাসে ২৭৩ কোটি ডলারের রেমিট্যান্স এসেছে, যা আগের অর্থবছরের একই সময়ের চেয়ে ১৯ কোটি ডলার বা ৭ দশমিক ৬৬ শতাংশ বেশি। মূলত হুন্ডি ঠেকাতে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কঠোর পদক্ষেপ এবং ডলারের দর বৃদ্ধির ফলে ব্যাংকিং চ্যানেলে রেমিট্যান্স প্রবাহ বাড়ছে বলে সংশ্লিষ্টদের ধারণা।
২০১৫-১৬ ও ১৬-১৭ অর্থবছরে রেমিট্যান্স প্রবাহ কমার পাশাপাশি আমদানি ব্যাপক বৃদ্ধির ফলে চাপে রয়েছে দেশের বৈদেশিক মুদ্রাবাজার।
গত অর্থবছর আমদানিতে ২৫ দশমিক ২৩ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হয়। অথচ রফতানি বেড়েছে মাত্র ৫ দশমিক ৮১ শতাংশ। ডলারের বাড়তি চাহিদা মেটাতে গত অর্থবছর বিভিন্ন ব্যাংকের কাছে ২৩১ কোটি ডলার বিক্রি করে বাংলাদেশ ব্যাংক। এর পরও আন্তঃব্যাংক মুদ্রাবাজারে ডলারের দর বেড়ে ৮৩ টাকা ৭৫ পয়সা বিক্রি হচ্ছে।
তবে খুচরা পর্যায়ে সাধারণ গ্রাহক সে সুবিধা পাচ্ছে না। গতকালও খুচরা পর্যায়ে ডলারের সর্বোচ্চ দর ছিল প্রায় ৮৬ টাকা।
Posted ২:০৬ পূর্বাহ্ণ | বুধবার, ০৫ সেপ্টেম্বর ২০১৮
coxbangla.com | Chanchal Das Gupta