বৃহস্পতিবার ২রা মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ১৯শে বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

শিরোনাম

বৃহস্পতিবার ২রা মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

শিরোনাম

বাংলাদেশে বিভিন্ন প্রকল্প নিয়ে প্রতিযোগিতায় মেতেছে চীন-ভারত

সোমবার, ২৯ অক্টোবর ২০১৮
304 ভিউ
বাংলাদেশে বিভিন্ন প্রকল্প নিয়ে প্রতিযোগিতায় মেতেছে চীন-ভারত

কক্সবাংলা ডটকম(২৯ অক্টোবর) :: ভারত মহাসাগরে আধিপত্য নিয়ে চীন ও ভারতের প্রতিযোগিতা তীব্রতর হচ্ছে। এ প্রতিযোগিতার আঁচ সবচেয়ে বেশি পড়ছে দক্ষিণ এশিয়ায় চীন-ভারতের প্রতিবেশী দেশগুলোয়। ভৌগোলিক ও অর্থনৈতিক কারণে দুই প্রতিযোগীর সঙ্গে প্রতিবেশীদের রয়েছে অবিচ্ছেদ্য সম্পর্ক।

বেইজিং ও দিল্লির কৌশলগত স্বার্থচিন্তা এ সম্পর্ককে প্রভাবকের রূপ দিয়েছে। দুই দেশের রেষারেষির প্রভাব পড়ছে তৃতীয় দেশের রাজনীতিতে। আধিপত্যের এ প্রতিযোগিতার ছায়া বাংলাদেশেও পড়ছে কিনা বা পড়লে কতটা তা বিশ্লেষণ করে দেখছেন পর্যবেক্ষকরা।

গত বছরের শেষে নেপালে সরকার গঠনকে ঘিরে সংকট, গত মাসে মালদ্বীপে প্রেসিডেন্ট নির্বাচন ও চলতি সপ্তাহে শ্রীলংকায় রাজনৈতিক ঘটনাপ্রবাহে স্পষ্ট হয়েছে চীন-ভারত ছায়াযুদ্ধ। এ অঞ্চলের আরেক দেশ ভুটানকে নিয়ে কয়েক মাস আগে মুখোমুখি হয়েছিল দুই দেশের সেনাবাহিনী।

দুই প্রতিবেশীর রেষারেষির কারণে উত্তেজনা চলছে ভারত মহাসাগরের ক্ষুদ্র দ্বীপরাষ্ট্র মরিশাসের রাজনীতিতে। এ অবস্থায় বঙ্গোপসাগরের প্রবেশপথে থাকা বাংলাদেশেও বিভিন্ন উন্নয়ন ও অবকাঠামো প্রকল্প সামনে রেখে পরস্পরের প্রতিযোগিতায় মেতেছে দুই প্রতিবেশী দেশ।

পর্যবেক্ষকদের মতে, বাংলাদেশ ঘিরে গত ১০ বছরে চীন ও ভারতের প্রতিযোগিতা তীব্র রূপ নিয়েছে। ভারতের প্রভাবের কারণে চীনের কয়েকটি কৌশলগত বিনিয়োগ এরই মধ্যে আটকে গেছে। সোনাদিয়া গভীর সমুদ্রবন্দর নির্মাণে চীনের আগ্রহ এখানে সাড়া পায়নি। জ্বালানি কোম্পানি শেভরনের বাংলাদেশী ব্যবসা কিনতে চেয়ে নিয়ন্ত্রক সংস্থার অনুমোদন পায়নি চীনা প্রতিষ্ঠান।

দক্ষিণ এশিয়ার অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশও চীন-ভারত প্রতিযোগিতার বাইরে নয় বলে মন্তব্য করেছেন নিরাপত্তা বিশ্লেষক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) এম সাখাওয়াত হোসেন।

আগামী জাতীয় নির্বাচনে এ প্রতিযোগিতার প্রভাব সম্পর্কে সাবেক এ নির্বাচন কমিশনার  বলেন, কী ধরনের প্রভাব থাকবে তা বলা মুশকিল। তবে প্রভাব থাকবে। ভারতের প্রভাব গত নির্বাচনে দেখা গেছে। আসন্ন নির্বাচন নিয়েও অনেক কথাবার্তা রয়েছে। নির্বাচনের আগে চীন সফরে যাচ্ছে আওয়ামী লীগের প্রতিনিধি দল।

এ ঘটনাগুলো থেকেই প্রতীয়মান হয়, অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতে চীন-ভারতের প্রভাব ও প্রতিযোগিতা থাকবে ও রয়েছে। আমরা মালদ্বীপে দেখেছি। শ্রীলংকায় একটি সাংবিধানিক ক্যুর মতো হয়ে গেল।

মহাসাগরে সম্ভাব্য সামরিক সংঘাতে ভারতের শক্তি খর্ব করতে দেশটিকে ঘিরে বন্দর অবকাঠামোর বেষ্টনী গড়তে চাইছে চীন। স্ট্রিং অব পার্লস অভিধা পাওয়া এ বেষ্টনী গুরুত্বপূর্ণ সমুদ্রপথে চীনের প্রভাব বহুগুণ বাড়িয়ে দেবে। ভারতকে ঘিরে রাখতে শ্রীলংকায় হাম্বানটোটা ও পাকিস্তানে গোয়াদর বন্দর নির্মাণ করেছে চীন।

মালদ্বীপ, মরিশাসে করেছে হেলিপ্যাড ও কৃত্রিম দ্বীপ। বাংলাদেশেও  সোনাদিয়া গভীর সমুদ্রবন্দর নির্মাণের প্রায় সবকিছুই চূড়ান্ত হয়ে গিয়েছিল। ২০১৪ সালে প্রধানমন্ত্রীর চীন সফরের সময় এ নিয়ে চুক্তি সই হওয়ার কথা থাকলেও শেষ মুহূর্তে তা হয়নি। পরবর্তী সময়ে পটুয়াখালী উপকূলে পায়রা বন্দর নির্মাণের কাজ পেয়েছে চীন।

যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক বহুজাতিক প্রতিষ্ঠান শেভরন বাংলাদেশে তাদের ২০০ কোটি ডলারের সম্পদ চীনের হিমালয় এনার্জির কাছে বিক্রয়ে চুক্তি করেছিল। তবে পেট্রোবাংলার পক্ষ থেকে শেভরনকে জানিয়ে দেয়া হয়, চীনা প্রতিষ্ঠানটি গ্রহণযোগ্য নয়। এর পরই শেভরন বাংলাদেশে নতুন বিনিয়োগের ঘোষণা দেয়।

চীন ও ভারতের দ্বন্দ্বের কিছু প্রভাব বাংলাদেশের ওপরও পড়ছে বলে মন্তব্য করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক এহসানুল হক। বণিক বার্তাকে তিনি বলেন, বাংলাদেশের জন্য ভারত ও চীন দুটি গুরুত্বপূর্ণ রাষ্ট্র।

আগামী নির্বাচন ঘিরে বাংলাদেশ এ বৃত্তের বাইরে থাকতে পারবে কিনা, এটা বিবেচ্য বিষয়। আমরা নির্বাচন করব, সেটি আমাদের অভ্যন্তরীণ বিষয়। বহিঃশক্তির কোনো প্রভাব আমাদের নির্বাচনের ওপর পড়ুক, এটি আমরা চাই না। তবে বিশ্লেষণ অনুযায়ী দুটি রাষ্ট্রের প্রভাব পড়তে পারে।

অধ্যাপক এহসানুল হক বলেন, বাংলাদেশের নেতৃত্ব যত শক্তিশালী হবে, বহিঃশক্তির প্রভাব ততই কমে আসবে। এটি আমাদের নেতৃত্বের ওপর নির্ভর করছে। আমাদের অভ্যন্তরীণ রাজনীতির যে নিয়ামকগুলো রয়েছে, সেগুলো যদি আমরা ঠিকমতো পরিচালনা করতে পারি, তবে বহিঃশক্তির প্রভাব থাকবে না বলে মনে করি।

বাংলাদেশের রাজনীতিতে চীন ও ভারতের প্রতিযোগিতার তীব্রতা মালদ্বীপ বা শ্রীলংকার তুলনায় কম বলে মনে করেন সাবেক রাষ্ট্রদূত এম হুমায়ূন কবির। বণিক বার্তাকে তিনি বলেন, মালদ্বীপ ও শ্রীলংকার অর্থনৈতিকভাবে চীনের ওপর অতিমাত্রায় নির্ভরতা রয়েছে। ঋণের বোঝার কারণে নির্ভরতা একটি নেতিবাচক পর্যায়ে চলে গেছে।

বর্তমানে চীনের সঙ্গে দরকষাকষির জায়গায় মালদ্বীপ ও শ্রীলংকা দুর্বল হয়ে পড়েছে। এ পরিস্থিতি বাংলাদেশের হয়নি জানিয়ে তিনি বলেন, এখানে চীন ও ভারতের প্রতিযোগিতা এতটা তীব্র নয়। ভারতের বিশেষ আগ্রহ রয়েছে। তবে বাংলাদেশের অর্থনীতিতে চীনের অংশগ্রহণ বেশ শক্তিশালী।

কৌশলগত বিবেচনায় জাতীয় ঐক্যের মাধ্যমে দুই প্রতিবেশীর প্রতিযোগিতার সুফল নেয়ার পরামর্শ দেন এ কূটনীতিক। তিনি বলেন, যদি অভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক বিভাজন অতিক্রম করে জাতীয় ঐকমত্যের ভিত্তিতে নীতিগত কৌশলগত অবস্থান সুদৃঢ় করতে পারি, তাহলে চীন ও ভারতের সঙ্গে সম্পর্ক চালিয়ে নিতে মালদ্বীপ ও শ্রীলংকার চেয়ে আমরা ভালো অবস্থানে থাকব।

বাংলাদেশে দুই প্রতিবেশী দেশের প্রভাব সম্পর্কে নিরাপত্তা বিশ্লেষক মেজর জেনারেল (অব.) আবদুর রশিদ বলেন, আমরা চীনের ইন্টারেস্টের বাইরে নই। যত সময় যাচ্ছে, চীনের ইন্টারেস্ট ততই বাড়ছে এবং বাড়ানোর চেষ্টা করছে। তবে এ ইন্টারেস্ট কিছুটা ধাক্কা খেয়েছে রোহিঙ্গা সংকটের পর। আমরা মনে করি, চীন এখন আর বাংলাদেশের বিশ্বস্ত বন্ধু নয়।

এর প্রভাব আমাদের পররাষ্ট্রনীতিতে পড়বে। চীনের কারণে আমরা কিছু কৌশলগত বিষয় হারিয়েছি। আর চীনকে সেটি বহন করতে হবে। ফলে সেদিক থেকে চীনের প্রভাবে কিছুটা পর্দা পড়েছে। তবে আমরা তাদের বৃত্তের বাইরে নই।

304 ভিউ

Posted ১:২২ অপরাহ্ণ | সোমবার, ২৯ অক্টোবর ২০১৮

coxbangla.com |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

Editor & Publisher

Chanchal Dash Gupta

Member : coxsbazar press club & coxsbazar journalist union (cbuj)
cell: 01558-310550 or 01736-202922
mail: chanchalcox@gmail.com
Office : coxsbazar press club building(1st floor),shaheed sharanee road,cox’sbazar municipalty
coxsbazar-4700
Bangladesh
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
বাংলাদেশের সকল পত্রিকা সাইট
Bangla Newspaper

ABOUT US :

coxbangla.com is a dedicated 24x7 news website which is published 2010 in coxbazar city. coxbangla is the news plus right and true information. Be informed be truthful are the only right way. Because you have the right. So coxbangla always offiers the latest news coxbazar, national and international news on current offers, politics, economic, entertainment, sports, health, science, defence & technology, space, history, lifestyle, tourism, food etc in Bengali.

design and development by : webnewsdesign.com