বৃহস্পতিবার ২রা মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ১৯শে বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

শিরোনাম

বৃহস্পতিবার ২রা মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

শিরোনাম

বাংলাদেশে ২০১৭তে রাজনীতির বাঁকবদল এবং নির্বাচনের বছর ২০১৮

বৃহস্পতিবার, ২৮ ডিসেম্বর ২০১৭
217 ভিউ
বাংলাদেশে ২০১৭তে রাজনীতির বাঁকবদল এবং নির্বাচনের বছর ২০১৮

কক্সবাংলা ডটকম(২৮ ডিসেম্বর) :: ২০১৭ সালে বাংলাদেশের রাজনীতিতে তেমন বড় কোন বাঁকবদল না থাকলেও এবছরের রাজনীতিতে বেশ কিছু আলোচিত সমালোচিত ঘটনা ছিল যেগুলো বেশ প্রভাব এনেছে দেশের রাজনৈতিক ইতিহাসে।

২০১৭ সালের সবচেয়ে আলোচ্য বিষয় বলতে গেলে প্রথমেই আসে রোহিঙ্গা ইস্যুর কথা। এরপর ছিল নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে রাজনৈতিক দলগুলোর সংলাপ এবং স্থানীয় নির্বাচন। এই বছরের শুরুর দিকে কুমিল্লা নির্বাচনের মধ্যে দিয়ে যার শুরু। সেটার শেষ হলো রংপুর নির্বাচনের মধ্য দিয়ে।

রাজনৈতিক নানা ঘটনাপ্রবাহের মধ্যে সরকার বিশেষ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিয়ে আন্তর্জাতিকভাবে প্রশংসিত হন। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৭ মার্চের ঐতিহাসিক ভাষণকে বিশ্ব প্রামাণ্য ঐতিহ্য হিসেবে ইউনেস্কো যে স্বীকৃতি দিয়েছে তা আরেকটি আনন্দের উপলক্ষ হয়ে আসে বাংলাদেশের জন্য। এমন অর্জন আর নানা উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের মধ্যে বেশ কিছু কোন্দলও খবর হয়ে এসেছে ২০১৭ সালে।

তবে আওয়ামী লীগের যুগ্ন সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ বলেন, ২০১৭ সাল ছিল বাংলাদেশের জন্য অর্জনের বছর। এবছর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিশ্বের তৃতীয়

সৎ রাষ্ট্রনায়ক হিসেবে নির্বাচিত হন এবছর। বিশ্বব্যাপি রোল মডেল হিসেবে নির্বাচিত হন তিনি। এই বছরের মিয়ানমার থেকে প্রায় ১০ লাখ রোহিঙ্গা বাংলাদেশে পালিয়ে আসে। এর আগে বিশ্বব্যাপি সবাই যখন শরণার্থীদের বিপক্ষে তখন বাংলাদেশ তাদের দরজা খুলে দেয়। এবছর বাংলাদেশের জিডিপি গ্রোথ রেট হয় ৭.২।

স্যাটেলাইট উৎক্ষেপনকেও একটি বড় অর্জন হিসেবে দেখছেন আওয়ামী লীগের এই নেতা। আর রোহিঙ্গা সমস্যার সমাধানকে একটি কূটনৈতিক সফলতা হিসেবেই দেখছেন তিনি। ইসির সঙ্গে সংলাপও একটি আলোচিত ঘটনা ছিলো বলে মন্তব্য তার।

‘এই নির্বাচন কমিশন দায়িত্ব নেওয়ার পরে যতগুলো নির্বাচন হয়েছে সবগুলোই হয়েছে উৎসবমুখর ও শান্তিপূর্ণ। ২০১৭ সাল ছিলো জঙ্গি ও সন্ত্রাসবাদ থেকে মুক্ত করার বছর। আমরা মনে করি এটা পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণ করা না গেলেও তাদের কিছুটা নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হয়েছে। এবং এটি করতে গিয়ে সরকারের পদক্ষেপগুলো আন্তর্জাতিক মহলে খুবই প্রশংসিত হয়েছে। সেটাও দেশের রাজনীতিতে বেশ বড় একটা প্রভাব এনেছে’, বলেন মাহবুব উল আলম হানিফ।

একইভাবে বেশ কিছু আলোচিত ঘটনা ছিল বিএনপির ঝুলিতেও। এর মধ্যে সবচেয়ে আলোচিত ঘটনা ছিলো খালেদা জিয়ার অসুস্থতা। অসুস্থ হয়ে দীর্ঘদিন দেশের বাইরে ছিলেন তিনি। এরপর ফিরে এসে যান মিয়ানমার থেকে নির্যাতনের শিকার হয়ে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গাদের দেখতে। যা ছিল অনেকটাই রাজনৈতিক শোডাউন।

দুর্নীতি মামলায় খালেদা জিয়ার আদালতে হাজিরা আর আদালত চত্বরের কাছাকাছি কয়েকবার পুলিশের সঙ্গে বিএনপি সমর্থকদের সংঘর্ষের ঘটনাও ছিল আলোচনায়। সঙ্গে ছিলো অনেক আলোচনা সমালোচনা শেষে ১২ নভেম্বর খালেদা জিয়ার সমাবেশ। তবে এসব ছাড়িয়ে ২০১৭ সালকে গণতন্ত্র না থাকার বছর হিসেবেই বিবেচনা করছে বিএনপি।

বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু বলেন, ২০১৭ সালের সবচেয়ে বড় ঘটনা দেশে গণতন্ত্র না থাকা। গণতন্ত্র না থাকলে আইনের শাসন থাকে না। আর সেটা না থাকলে গুম খুন, অপহরণ বেড়ে যায়। এই বছরে দেশে অর্থনৈতিক দুর্নীতি বেড়েছে, শেয়ারবাজার লুট, ব্যাংকের টাকা লুট হয়েছে। বছরের শেষ মুহূর্তে শিক্ষামন্ত্রীও বলেছেন, ঘুষ দুর্নীতির সঙ্গে মন্ত্রীরাও যুক্ত।

২০১৭ সালের কুমিল্লা ও রংপুর নির্বাচনকে তেমন বড় কোন ঘটনা বলে মনে করছেন না শামসুজ্জামান দুদু। তিনি বলেন, স্থানীয় সরকার নির্বাচন প্রতিবছরই হতে থাকে। ফলে সেটাতে হার-জিত তেমন বড় কোন ঘটনা নয়। কারণ এই নির্বাচনে সরকার পরিবর্তন হয় না। এতে তাৎক্ষণিকভাবে কিছু ভালো মন্দ থাকতে পারে। ‘২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির নির্বাচন প্রমাণ করেছে সরকার খারাপ নির্বাচন চাইলে নির্বাচন কমিশনের পক্ষে ভালো নির্বাচন করা সম্ভব নয়। সরকার উদার হলে, হস্তক্ষেপ করতে না চাইলে নির্বাচন ভালো হয়। দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন ভালো হয় না।

তাই কুমিল্লা ও রংপুরের নির্বাচন খুব বড় ঘটনা বলে মনে হয় না।’
১৪ দল আর ২০ দলীয় জোটের বাইরে নির্বাচনকে সামনে রেখে বেশ কিছু জোট হয়েছে। এইচ এম এরশাদের জাতীয় পার্টির নেতৃত্বে ইসলামিক দলগুলো নিয়ে হয়েছে একটি জোট। জোট করেছে সিপিবি বাসদ সহ কয়েকটি বাম দল। তবে বেশি আলোচনায় এসেছে সাবেক রাষ্ট্রপতি ও বিকল্পধারার প্রেসিডেন্ট বদরুদ্দোজা চৌধুরীর নেতৃত্বে জেএসডি, কৃষক শ্রমিক জনতা লীগ ও নাগরিক ঐক্য নিয়ে গঠিত যুক্তফ্রন্ট।

এই বছরে রাজনীতির বাঁকবদল এসেছে কোন কোন ঘটনায়? এমন প্রশ্নের জবাবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক শান্তনু মজুমদার বলেন, ২০১৭ সালে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে খুব একটা রদবদল আসেনি। এবছরের রাজনৈতিক ক্ষেত্রে যেটা হলো, রোহিঙ্গা ইস্যুতে বাংলাদেশের অবস্থান বিশ্ববাসীর কাছে প্রশংসিত হয়েছে।

এটাই এই বছরের খুব গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা। ইউরোপ ও আমেরিকার মতো দেশ যেখানে শরণার্থী গ্রহণে ব্যাপক অনীহা দেখাচ্ছে, সেখানে বাংলাদেশ মানবতাকে সবচেয়ে আগে রাখতে পেরেছে। যদিও রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে এই নিয়ে কথার মারপ্যাচ দেখা গেছে, ও তাদের আশ্রয় দিলে বাংলাদেশের অবস্থান কী হবে সেটা নিয়েও আলোচনা দেখা গেছে। তবে বাংলাদেশের সংস্কৃতির দিক থেকে এটা বেশ বড় ঘটনা।

বাংলাদেশের পররাষ্ট্রনীতির ক্ষেত্রে প্রতিবেশি দেশের সঙ্গে সম্পর্ক ২০১৭ তে আলাদা করে বলবার মতো কিছু নয় বলেই মনে করেন তিনি। বলেন, বিগত কয়েক বছর ধরে সেটা ইতিবাচক দিকেই যাচ্ছে। প্রতিবেশিদের মধ্যে কিছু সমস্যা থাকেই যেটা কখনোই সমাধান হবে না, সেটাকে কমিয়ে আনাটাই জরুরি। সীমান্তের দুই পাড়েই সমস্যা আছে।

দুই দেশেই সুর্নির্দিষ্ট কিছু শক্তি আছে যারা কোনভাবেই চায় না দুই দেশের সম্পর্ক ভালো হোক। তারা দুদেশের সম্পর্ককে প্রোপাগান্ডা হিসেবে ব্যবহার করতে চায় তারা। তাই দুই দেশের সম্পর্ক উন্নয়ন হলে সেটা তাদের জন্য ভালো হয় না। বরং দুই দেশের সম্পর্ক খারাপ থাকলে তাদের রাজনৈতিক লাভ হয়।

২০১৮ সালটি হবে নির্বাচনের বছর। এই বছরে দেশের রাজনীতির মাঠে যে বেশ উত্তাপ থাকবে তা বোঝা যায় তিনজনের কথাতেই।

শান্তনু মজুমদার বলেন, আসছে বছরের মাঝামাঝি থেকেই নির্বাচনের ডামাডোল শুরু হয়ে যাবে। ২০১৭ সালের শুরুতে হয়েছে কুমিল্লা নির্বাচন এবং শেষে রংপুর নির্বাচন। নারায়ণগঞ্চ, কুমিল্লা ও রংপুরের স্থানীয় সরকার নির্বাচনের দিকে তাকালে বোঝা যায় যে সরকার নিজেকে নিরপেক্ষ প্রমাণ করতে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। বিরোধীদলের দাবি , দলীয় সরকার সুষ্ঠু নির্বাচন করতে পারে না, সেটা তারা কমানোর চেষ্টা করে যাচ্ছে।

এই তিনটি নির্বাচনে তেমন কোনো বিবাদ উঠেনি। তবে এটুকু বোঝা যাচ্ছে যে আগামী নির্বাচনে খুব বেশি হঠকারিতার কোনো বিষয় না থাকলে সবগুলো বড় দলই নির্বাচনে অংশ নিবে। তবে অংশ নিয়েও দলগুলো কতখানি গ্রহণযোগ্যতা ও দায়িত্বশীলতা দেখাতে পারে সেটাও আলোচনার বিষয়।

নির্বাচনের বছর ২০১৮ সম্পর্কে মাহবুব উল আলম হানিফ বলেন, আমরা চাই দেশকে এগিয়ে নিতে। দেশের মঙ্গল চাই। আত্মমর্যাদাশীল দেশ হিসেবে গড়ে তুলতে হবে। সবারই উচিত হবে নেতিকবাচক রাজনীতি থেকে সরে আসা। আমরা চাই সবাই নির্বাচনে অংশ গ্রহণ করবে এবং জনগণের ম্যান্ডেট নিয়েই নির্বাচনে অংশ নেবে।

শামসুজ্জামান দুদু বলেন, ২০১৮ সালটি নির্বাচনের বছর বলেই মনে করছে সবাই। সাংবিধানিকভাবেই আগামী বছর নির্বাচন হবেই। আর সেটিই পরিবর্তনের বছর হিসেবে চিহ্নিত হবে। ২০১৮ হবে দেশবাসীর জন্য খুব গুরুত্বপূর্ণ ও বড় পরিবর্তনের বছর।

সবমিলিয়ে সবাই মনে করছেন ২০১৮ সালে বেশ উত্তাপ ছড়াবে রাজনীতির মাঠ।

217 ভিউ

Posted ১:৫২ পূর্বাহ্ণ | বৃহস্পতিবার, ২৮ ডিসেম্বর ২০১৭

coxbangla.com |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

এ বিভাগের আরও খবর

Editor & Publisher

Chanchal Dash Gupta

Member : coxsbazar press club & coxsbazar journalist union (cbuj)
cell: 01558-310550 or 01736-202922
mail: chanchalcox@gmail.com
Office : coxsbazar press club building(1st floor),shaheed sharanee road,cox’sbazar municipalty
coxsbazar-4700
Bangladesh
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
বাংলাদেশের সকল পত্রিকা সাইট
Bangla Newspaper

ABOUT US :

coxbangla.com is a dedicated 24x7 news website which is published 2010 in coxbazar city. coxbangla is the news plus right and true information. Be informed be truthful are the only right way. Because you have the right. So coxbangla always offiers the latest news coxbazar, national and international news on current offers, politics, economic, entertainment, sports, health, science, defence & technology, space, history, lifestyle, tourism, food etc in Bengali.

design and development by : webnewsdesign.com