কক্সবাংলা ডটকম(২৮ সেপ্টেম্বর) :: বাংলাদেশ নিয়ে হঠাৎ তৎপর হয়ে উঠেছে পাকিস্তান। বাংলাদেশের পরিস্থিতি, আগামী নির্বাচন ইত্যাদি বিষয় নিয়ে ইসলামাবাদ এবং পাকিস্তানি গোয়েন্দা সংস্থা গুলো একের পর এক বৈঠক করেছে।
বিশ্বের বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার কার্যক্রম পর্যবেক্ষণ করে ‘গ্লোবাল ইন্টেলিজেন্স মনিটরিং’(জিআইএম) এর সর্বশেষ বুলেটিনে ‘ইন্টার সার্ভিস ইন্টেলিজেন্স (আইএসআই) এর মূখ্য কার্যক্রমের তালিকায় বাংলাদেশ তৃতীয় অবস্থানে রয়েছে।
ওই বুলেটিনের তথ্য মতে, আইএসআই সবচেয়ে বেশি কাজ করে ভারত নিয়ে। এরপর আফগানিস্তানে তাদের নেটওয়ার্ক।
জিএমআই এর দেওয়া তথ্য উদ্ধৃত করে সুষমা স্বরাজ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ফক্স নিউজকে এক সাক্ষাৎকারে বলেছেন, ‘পাকিস্তান উপমহাদেশে বিষফোঁড়া। তারা একটি ব্যর্থ রাষ্ট্র। অন্য রাষ্ট্রের ক্ষতি করার কাজেই বেশি সময় ব্যয় করে। তাঁরা ভারতে নানা সন্ত্রাসী তৎপরতা করে। বাংলাদশের ক্ষতি করতে চায়।’
যদিও পাকিস্তানের পক্ষ থেকে সুষমা স্বরাজের বক্তব্যের প্রতিবাদ করা হয়েছে। পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী জাতিসংঘের ভাষণে ভারতকে ‘সন্ত্রাসের মা’ হিসেবে অভিহিত করেছেন। কিন্তু পাকিস্তানের গোয়েন্দারা যে দুষ্ট কাজের কাজী, তা নিরাপত্তা নিরাপত্তা বিশ্লেষকরা এক বাক্যে স্বীকার করেন। বাংলাদেশ নিয়ে পাকিস্তানের পরিকল্পনা কী?
গ্লোবাল ইন্টেলিজেন্স মনিটরিং এর তথ্য অনুযায়ী, পাকিস্তানি স্বার্থকে বাংলাদেশে প্রতিষ্ঠিত করতে চায়। পাকিস্তানপন্থী রাজনৈতিক দলগুলোকে সংগঠিত করতে চায়। বর্তমান সরকারকে অস্থির এবং অস্থিতিশীল করতে চায়। এমন রাজনৈতিক দল বা গোষ্ঠীকে ক্ষমতায় আনতে চায়, যারা পাকিস্তানের জন্য সহায়ক হবে। পাকিস্তানের স্বার্থের অনুকূলে কাজ করবে।
জিআইএম মনে করে, বাংলাদেশে পাকিস্তানের স্বার্থ খুব সরাসরি ও এবং স্পষ্ট। ভারতের বিচ্ছিন্নতাবাদীদের সহায়তার জন্য পাকিস্তান প্রতিবছর প্রায় এক বিলিয়ন ডলার খরচ করে। কিন্তু, গত ৮ বছর ধরে ভারতে বিচ্ছিন্নতাবাদী তৎপরতা অনেক হ্রাস পেয়েছে। এই হ্রাস পাবার প্রধান কারণ হলো বাংলাদেশের পরিবর্তিত নীতি এবং অবস্থান।
বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সিদ্ধান্তে, বিচ্ছিন্নতাবাদীদের ব্যাপারে বাংলাদেশ জিরো টলারেন্স নীতি গ্রহণ করে। সম্প্রতি ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশ বন্দী বিনিময় চুক্তিও স্বাক্ষর করে। জিআইএম এর প্রতিবেদন অনুযায়ী, এই সব কর্মকাণ্ডই পাকিস্তানের বিরুদ্ধে। পাকিস্তানের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্কও শীতলতম পর্যায়ে।
গ্লোবাল ইন্টেলিজেন্স মনিটরিং এর রিপোর্টে বলা হয়েছে, যে ভুখণ্ডটি একসময় পাকিস্তানের প্রায় ক্রীতদাস ছিল, এখন তাঁরা সবক্ষেত্রেই পাকিস্তানের চেয়ে এগিয়ে। সম্প্রতি পাকিস্তানের পার্লামেন্টেও এনিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করা হয়। বাংলাদেশকে অস্থির, অশান্ত না করলে তাই শান্তি পাচ্ছে না পাকিস্তান।
তবে মনিটরিং এর প্রতিবেদনে পাকিস্তান কীভাবে বাংলাদেশে আশান্তি করবে, সে সম্পর্কে কিছুই বলা হয়নি। তবে ২০১৩ সালে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর আনুষ্ঠানিকভাবে পাকিস্তানি গোয়েন্দা সংস্থা আইএসআই এর বিরুদ্ধে সন্ত্রাসবাদ, জঙ্গি গোষ্ঠীকে আর্থিক ও সামরিক সহায়তা দেওয়ার অভিযোগ এনেছিল।
আর ২০১০ সালে পাকিস্তানের আদালতে এক স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে আইএসআই এর প্রধান স্বীকার করেছিলেন, ২০০১ সালের নির্বাচনে আইএসআই বাংলাদেশের রাজনৈতিক দল বিএনপিকে অর্থ যোগান দিয়েছিল। অতি সম্প্রতি লন্ডনে পাকিস্তান দূতাবাসে বেগম জিয়া পাকিস্তানি গোয়েন্দা কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেন।
Posted ১১:৩৫ পূর্বাহ্ণ | শুক্রবার, ২৯ সেপ্টেম্বর ২০১৭
coxbangla.com | Chanchal Das Gupta