কক্সবাংলা ডটকম(১৮ ফেব্রুয়ারী) :: ঋণ ও আমানতের মধ্যকার সুদহারের ব্যবধানের (স্প্রেড) বিষয়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নির্দেশনা মানছে না দেশি-বিদেশি ৩৩টি ব্যাংক। নির্দেশনা অনুযায়ী ব্যাংকে সর্বোচ্চ স্প্রেড হওয়ার কথা চার শতাংশ। কিন্তু এসব ব্যাংকগুলোর স্প্রেড এর চেয়ে বেশি। অর্থাৎ তারা অতিরিক্ত মুনাফা করছে।
গত ৩০ মে আমানত ও ঋণের মধ্যকার সুদহারের ব্যবধান চার শতাংশে নামিয়ে আনার নির্দেশ দেয় বাংলাদেশ ব্যাংক। এর আগে স্প্রেডসীমা পাঁর শতাংশের নামিয়ে আনার নির্দেশনা ছিল।
বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ প্রতিবেদন অনুযায়ী, চলতি বছরের প্রথম মাস জানুয়ারি শেষে ব্যাংকগুলোর গড় স্প্রেড দাঁড়িয়েছে ৪.১৫ শতাংশ। এর মধে রাষ্ট্রমালিকানাধীন ছয়টি বাণিজ্যিক এবং দুটি বিশেষায়িত খাতের ব্যাংকের গড় স্প্রেড যথাক্রমে ২.৩২ ও ১.৬৫ শতাংশ।
তবে বিদেশি মালিকানাধীন ৯ ব্যাংকের মধ্যে সাতটি এই নীতিমালা মানেনি। তাদের গড় স্প্রেড ৬.৫৭ শতাংশ। এর মধ্যে স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংকের স্প্রেড সবচেয়ে বেশি। অর্থাৎ তারা সবচেয়ে বেশি অতিরিক্ত মুনাফা করছে।
আরো যারা মাত্রাতিরিক্ত মুনাফা করছে তারা হলো: সিটি ব্যাংক এনএ (৭.০৯ শতাংশ), স্টেট ব্যাংক অব ইন্ডিয়া (৪.৭২ শতাংশ), কমার্শিয়াল ব্যাংক অব সিলন (৪.৮৫ শতাংশ), উরি ব্যাংক (৭ শতাংশ), এইচএসবিসি (৬.২৫ শতাংশ), ব্যাংক আলফালাহ্ (৫.০৪ শতাংশ)।
বেসরকারি খাতের ২৬ ব্যাংকের স্প্রেড সীমা ৪ শতাংশের উপরে। এর মধ্যে এবি ব্যাংকের স্প্রেড হার ৪.৫২ শতাংশ, দি সিটি ব্যাংকের ৫.৩৭ শতাংশ, আইএফআইসি ব্যাংকের ৪.৩৭ শতাংশ, পূবালী ব্যাংকের ৪.১ শতাংশ, উত্তরা ব্যাংকের ৪.৮৯ শতাংশ, সীমান্ত ব্যাংকের ৫.৪১ শতাংশ, ইস্টার্ন ব্যাংকের ৪.৯৩ শতাংশ, প্রাইম ব্যাংকের ৪.৭৯ শতাংশ, ঢাকা ব্যাংকের ৪.৬১ শতাংশ, ডাচ-বাংলা ব্যাংকের ৮.০১ শতাংশ, ওয়ান ব্যাংকের ৪.৩ শতাংশ, মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংকের ৪.৪৩ শতাংশ,
প্রিমিয়ার ব্যাংকের ৫.৩৩ শতাংশ, ব্যাংক এশিয়ার ৪.৮ শতাংশ, ট্রাস্ট ব্যাংকের ৪.৭৮ শতাংশ, শাহ্জালাল ইসলামী ব্যাংকের ৪.৯ শতাংশ, যমুনা ব্যাংকের ৪.৭ শতাংশ, ব্র্যাক ব্যাংকের ৭.১৪ শতাংশ, এনআরবি কমার্শিয়াল ব্যাংক লিমিটেডের ৫.৪৯ শতাংশ, সাউথ বাংলা এগ্রিকালচার অ্যান্ড কমার্স ব্যাংকের ৪.২৮ শতাংশ, মেঘনা ব্যাংকের ৪.৭২ শতাংশ, মিডল্যান্ড ব্যাংকের ৪.৮৩ শতাংশ, এনআরবি ব্যাংকের ৪.৭ শতাংশ, এনআরবি গ্লোবাল ব্যাংকের ৪.৯৫ শতাংশ, মধুমতি ব্যাংকের ৫.০২ শতাংশ ও আইসিবি ইসলামিক ব্যাংকের স্প্রেড দাঁড়িয়েছে ৪.৭৯ শতাংশ।
এ প্রসঙ্গে বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘যারা সীমিত আয় করেন কিংবা অবসর ভাতা ব্যাংকে জমা রাখেন, তাদের সুদের হার কমিয়ে দেওয়া হচ্ছে। আবার অদক্ষ ব্যাংকারদের কারণে খেলাপি ঋণ বাড়ছে। এর ফলে ঋণে সুদের হার কমাতে পারছে না।’
স্প্রেড কমানোর কথা না বলে বরং ব্যাংকগুলোকে পরিচালনা ব্যয়, বাহুল্য খরচ ও কুঋণ কমাতে বাধ্য করা দরকার বলেও মনে করেন এই অর্থনীতিবিদ।
Posted ২:৫৬ পূর্বাহ্ণ | মঙ্গলবার, ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০১৯
coxbangla.com | Chanchal Das Gupta