বৃহস্পতিবার ২রা মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ১৯শে বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

শিরোনাম

বৃহস্পতিবার ২রা মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

শিরোনাম

বিদেশি পর্যটক টানতে কক্সবাজারের সাবরাং ও সোনাদিয়ায় স্থাপন হচ্ছে পর্যটন পার্ক

বুধবার, ২২ ডিসেম্বর ২০২১
410 ভিউ
বিদেশি পর্যটক টানতে কক্সবাজারের সাবরাং ও সোনাদিয়ায়  স্থাপন হচ্ছে পর্যটন পার্ক

বিশেষ প্রতিবেদক :: বিশ্বের দীর্ঘতম সমুদ্রসৈকত বাংলাদেশের কক্সবাজারে। অন্যান্য দেশের সৈকতে বিদেশি পর্যটকের ভিড় থাকলেও কক্সবাজারে তা নেই বললেই চলে। এ ঘাটতি পূরণে কক্সবাজারের পুরো পর্যটনচিত্রই পাল্টে ফেলা হচ্ছে। বিদেশি পর্যটক টানতে কক্সবাজার জেলায় থাইল্যান্ড-সিঙ্গাপুরের আদলে পর্যটন কেন্দ্র গড়ে তোলার উদ্যোগ নেওয়ার কথা জানিয়েছে সংশ্নিষ্ট সরকারি দপ্তরগুলো।

কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, কক্সবাজারের সাবরাং, নাফ ও সোনাদিয়া এলাকায় তিনটি বিশেষ (এক্সক্লুসিভ) পর্যটন পার্ক স্থাপন করা হচ্ছে। সাবরাংয়ে আন্তর্জাতিক মানের হোটেল-মোটেল, রিসোর্টসহ বিভিন্ন পর্যটন সুবিধার কাজ আগামী জুনে শুরু হবে। নাফে শুরু হয়েছে সাড়ে ৯ কিলোমিটারের কেবল কার নেটওয়ার্কের কাজ। আর সোনাদিয়ার কাজ প্রক্রিয়াধীন।

বর্তমানে বিশ্বব্যাপী পর্যটকের সংখ্যা ১০০ কোটির বেশি। ধারণা করা হচ্ছে, ২০২৫ সাল নাগাদ এ সংখ্যা দাঁড়াবে ২০০ কোটি।

পর্যটন বিশেষজ্ঞদের মতে, পর্যটকদের প্রায় ৭৩ শতাংশ ভ্রমণ করবে এশিয়ার দেশগুলোতে। এ বিশাল বাজার ধরতে চাইলে বাংলাদেশে দ্রুত আন্তর্জাতিক মানের পর্যটন কেন্দ্র গড়ে তুলতে হবে।

একটি সূত্র জানায়, সাবরাংয়ে আন্তর্জাতিক পর্যটন কেন্দ্র গড়ে তুলতে ৯টি দেশি-বিদেশি প্রতিষ্ঠানকে প্রায় ১৫০ একর জমি বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। পর্যটন সুবিধার কাজ শুরু করতে ইতোমধ্যে তারা মাটিও পরীক্ষা করেছে।

সিঙ্গাপুরের ইন্টার-এশিয়া গ্রুপ (পিটিই) লিমিটেড, নেদারল্যান্ডসের লিজার্ড স্পোর্টস বিভি, বাংলাদেশের হোয়াইট অরকিড গেস্ট হাউস, মুনলাইট ওভারসিজ, বিসমিল্লাহ, গ্রেট আউটডোরস অ্যান্ড অ্যাডভেঞ্চার লিমিটেড, সানসিট বাই লিমিটেড ও গ্রিন অর্চার্ড হোটেল অ্যান্ড রিসোর্ট লিমিটেড আগামী জুনে সাবরাংয়ে হোটেল-মোটেল ও রিসোর্টের কাজ শুরু করবে। এসব প্রতিষ্ঠান এ খাতে কয়েকশ কোটি টাকা বিনিয়োগ করবে। এতে কর্মসংস্থান হবে কয়েক হাজার মানুষের।

ট্যুর অপারেটরস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (টোয়াব) প্রেসিডেন্ট মো. রাফিউজ্জামান বলেন, আন্তর্জাতিক মানের পর্যটন কেন্দ্র তৈরি করতে হলে বিদেশি বিনিয়োগকারী জরুরি। এ জন্য এক্সক্লুসিভ ট্যুরিজম পার্কের সুবিধাগুলো বিদেশিদের জানাতে হবে, যাতে তারা বিনিয়োগে আকৃষ্ট হয়। আন্তর্জাতিক প্রচার-প্রচারণা বৃদ্ধি করতে হবে।

তিনি বলেন, বিদেশি পর্যটকদের চাহিদা পূরণ না হওয়ায় তারা আমাদের দেশে ভ্রমণ করতে আসছে না। তারা চায় আনন্দ করতে, নাইট ক্লাবে থাকতে, নিরাপত্তার সঙ্গে বিভিন্ন স্থানে ঘুরতে। এগুলো আমরা দিতে পারছিলাম না।

বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষের (বেজা) নির্বাহী চেয়ারম্যান শেখ ইউসুফ হারুন বলেন, এক্সক্লুসিভ ট্যুরিজম পার্কগুলোতে হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালের মতো বিনিয়োগকারীদের আমন্ত্রণ জানিয়েছি। তারা যদি বিনিয়োগ করতে চায় আমরা প্রস্তুত। এখানে বিনিয়োগ করলে অনেক ধরনের ইনসেনটিভ (প্রণোদনা) তারা পাবে। জায়গার মূল্য কম। ইউটিলিটি (বিদ্যুৎ, গ্যাস ও পানি) সুবিধা দেব। রাস্তাঘাট উন্নয়নসহ প্লটের জমি বুঝিয়ে দেওয়া হবে।

আন্তর্জাতিক মানের পর্যটন কেন্দ্র গড়তে সরকার ২০১০ সালে পর্যটন সংরক্ষিত এলাকা ও বিশেষ পর্যটন অঞ্চল আইন তৈরি করে। এর পর ২০১৫ সালে জমি অধিগ্রহণ বিষয়ে পর্যটন করপোরেশনের সঙ্গে এ বিষয়ে চুক্তি করে বেজা। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০১৬ সালের ফেব্রুয়ারিতে আনুষ্ঠানিকভাবে সাবরাং এক্সক্লুসিভ ট্যুরিজম পার্কের উদ্বোধন করেন। এর পর ২০১৭ সালের মার্চে কক্সবাজার জেলা প্রশাসনের কাছ থেকে বেজা সোনাদিয়ার ৯ হাজার ৪৬৭ একর জমি গ্রহণ করা হয়। ২০২০ সালের ১৯ ফেব্রুয়ারি নাফ ট্যুরিজম পার্কের মাস্টারপ্ল্যান চূড়ান্ত হয়।

বেজার ম্যানেজার (পরিকল্পনা ও উন্নয়ন) মাহবুবুর রহমান বলেন, যেসব প্রতিষ্ঠানের নামে জমি বরাদ্দ হয়েছে তাদের আগামী তিন-চার মাসের মধ্যে প্লট দেওয়া হবে। এর পর তারা জুনের মধ্যে হোটেল-মোটেলের কাজ শুরু করতে পারবে। নাফ পার্কে ৫০ শতাংশ মাটি ভরাট কাজ শেষ হয়েছে। পরিস্থিতি বুঝে প্লট বরাদ্দের বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হবে।

বর্তমানে বাংলাদেশের পর্যটন খাতে আয় প্রায় ৭৬ দশমিক ১৯ মিলিয়ন ডলার। ভারত আয় করেছে ১০ হাজার ৭২৯ মিলিয়ন ডলার, মালদ্বীপ ৬০২ মিলিয়ন ডলার, শ্রীলঙ্কা ৩৮৫ মিলিয়ন ডলার এবং নেপাল ১৯৮ মিলিয়ন ডলার।

বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন প্রতিমন্ত্রী মো. মাহবুব আলী বলেন, বাংলাদেশে বিশাল সমুদ্র আছে কিন্তু থাইল্যান্ড-সিঙ্গাপুরের মতো পর্যটন কেন্দ্র তৈরি করতে পারিনি। বিদেশিদের জন্য আলাদা পর্যটন কেন্দ্র করতে প্রধানমন্ত্রী নির্দেশ দিয়েছেন। সে অনুযায়ী বেজা কক্সবাজারে কাজ করছে। কক্সবাজারের বিশেষ ট্যুরিজম পার্কগুলোর কাজ সম্পন্ন হলে বিদেশি পর্যটকদের উন্নত সেবা দেওয়া যাবে। আশা করি, তখন বিদেশিরা আকৃষ্ট হবেন।

একজন জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা জানান, বিশেষ পর্যটন পার্কগুলোর চারপাশে থাকবে বাউন্ডারি ওয়াল ও নিরাপত্তা প্রহরী। কক্সবাজারের অন্যান্য সমুদ্রসৈকতের মতো এসব সৈকতে ইচ্ছামতো প্রবেশ করা যাবে না। এতে বিদেশি পর্যটকরা আসতে নিরাপত্তাবোধ করবে। তাদের আসার জন্য যোগাযোগ ব্যবস্থাও উন্নত করা হবে। পানিপথে সিঙ্গাপুরে যাতায়াতের জন্য সাবরাং ট্যুরিজম পার্কে ক্রুজ জেটি চালু করা হবে।

সাবরাং : কক্সবাজারের টেকনাফ উপজেলার সাবরাং হবে দেশের প্রথম এক্সক্লুসিভ ট্যুরিজম পার্ক। এর আয়তন ১০২৭ একর। এখানে থাকবে ৫ তারকা হোটেল, ইকো-ট্যুরিজম, মেরিন অ্যাকুয়ারিয়াম, সি-ক্রুজ, বিদেশি পর্যটকদের জন্য সংরক্ষিত এলাকা, সেন্টমার্টিনে ভ্রমণের বিশেষ ব্যবস্থা, ভাসমান জেটি, শিশু পার্ক, ইকো-কটেজ, ওসানেরিয়াম, আন্ডার ওয়াটার রেস্টুরেন্ট, ভাসমান রেস্টুরেন্টসহ বিনোদনের নানা সুবিধা।

কেবল কার নেটওয়ার্ক : নাফ ট্যুরিজম পার্কে পাহাড়ে ভ্রমণে সাড়ে ৯ কিলোমিটার কেবল কার নেটওয়ার্কের কাজ চলছে। চট্টগ্রাম প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (চুয়েট) এ কাজ করছে। এটি দেশে প্রথম দ্বীপভিত্তিক পর্যটন অঞ্চল।

নাফ ট্যুরিজম পার্কের কেবল কারের সঙ্গে সাবরাং থেকে কেবল কার সংযোগ করা হবে। অবজারভেশন টাওয়ার থেকে পাহাড় ও সমুদ্রের দৃশ্য উপভোগ করা যাবে। ছবি তোলার অত্যাধুনিক ব্যবস্থাও থাকবে। হিলটপে মানুষ নামতে পারবে। তিন থেকে চার হাজার মানুষের বসবাসের ব্যবস্থা থাকবে।

এ ছাড়া নে-টাং হিল থেকে নাফ ট্যুরিজম পার্ক সাড়ে ৮ কিলোমিটার পর্যন্ত কেবল কার নির্মাণে কাজ চলছে। এতে মিয়ানমার ও বাংলাদেশ উভয়েরই পাহাড়ি দৃশ্যের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য উপভোগ করা যাবে। এসব পার্কে আরও থাকবে হানিমুন পার্ক, গলফ কোর্স, ইকো-ফ্রেন্ডলি রিসোর্ট, নাইট ক্যাম্প, জগিং ট্র্যাক, থিমযুক্ত প্যাভিলিয়ন জঙ্গল।

সোনাদিয়া : কক্সবাজারের মহেশখালী উপজেলায় সোনাদিয়া দেশের প্রথম ইকো-ট্যুরিজম পার্ক। ৯ হাজার ৪৯৭ একর জমিতে পার্কটি তৈরির পরিকল্পনা রয়েছে। পার্কটি দেশের আর্থসামাজিক উন্নয়নের পাশাপাশি সংস্কৃতি ও জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। মাস্টারপ্ল্যান ৫০০ একর জমি উন্নয়নের আওতায় রেখে বাকি অংশ অপরিবর্তিত রাখা হয়েছে এবং পরিবেশবান্ধব ব্যবহারের প্রস্তাব করা হয়েছে।

410 ভিউ

Posted ১২:২৯ অপরাহ্ণ | বুধবার, ২২ ডিসেম্বর ২০২১

coxbangla.com |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

Editor & Publisher

Chanchal Dash Gupta

Member : coxsbazar press club & coxsbazar journalist union (cbuj)
cell: 01558-310550 or 01736-202922
mail: chanchalcox@gmail.com
Office : coxsbazar press club building(1st floor),shaheed sharanee road,cox’sbazar municipalty
coxsbazar-4700
Bangladesh
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
বাংলাদেশের সকল পত্রিকা সাইট
Bangla Newspaper

ABOUT US :

coxbangla.com is a dedicated 24x7 news website which is published 2010 in coxbazar city. coxbangla is the news plus right and true information. Be informed be truthful are the only right way. Because you have the right. So coxbangla always offiers the latest news coxbazar, national and international news on current offers, politics, economic, entertainment, sports, health, science, defence & technology, space, history, lifestyle, tourism, food etc in Bengali.

design and development by : webnewsdesign.com