কক্সবাংলা ডটকম(১৭ জুলাই) :: এমনটা বোধহয় এর আগে কখনো দেখা যায়নি। ২০ বছর পর বিশ্বকাপ জিতেছে ফ্রান্স, অথচ আফ্রিকানরা এমনভাবে উল্লাস করছেন, যেন বিশ্বকাপ ফ্রান্স নয়, জিতেছে আফ্রিকাই।
আফ্রিকানদের এমন উল্লাসের পেছনে অবশ্য কারণও আছে। ফ্রান্সের বিশ্বকাপজয়ী স্কোয়াডের ২৩ জনের মধ্যে ১৫ জনই যে আফ্রিকান বংশোদ্ভূত।
ফাইনালে গোল করা পল পগবার কথাই ধরা যাক। পগবার নিজের জন্ম ফ্রান্সে হলেও তার বাবা-মা দুজনের জন্মই আফ্রিকান দেশ গিনিতে। পগবার এক ভাই ম্যাথিয়াস তো গিনি জাতীয় দলেরই ফুটবলার।
ফাইনালের আরেক গোলদাতা ও টুর্নামেন্টের সেরা উদীয়মান খেলোয়াড়ের পুরষ্কার জেতা কিলিয়ান এমবাপের সাথেও জড়িয়ে আছে আফ্রিকার নাম। এমবাপের জন্ম প্যারিসে হলেও তার বাবা উইলফ্রেড এমবাপে এসেছেন ক্যামেরুন থেকে, আর মা ফাইজা লামারির জন্মস্থান আলজেরিয়া।
কেবল এমবাপে-পগবা নন, ফ্রেঞ্চ একাদশের আরও তিন অবিচ্ছেদ্য খেলোয়াড়ের পূর্বপুরুষরাও এসেছেন আফ্রিকা থেকে। ডিফেন্সিভ মিডফিল্ডার এন’গোলো কান্তের বাবা মা দুজনেই ছিলেন মালির অধিবাসী। ডিফেন্ডার স্যামুয়েল উমতিতির তো জন্মই ক্যামেরুনে। আর ব্লেইজ মাতুইদির বাবা-মা দুজনের আদি নিবাস অ্যাঙ্গোলাতে।
এছাড়া স্কোয়াডের আরও বেশ কয়েকজনের পূর্বপুরুষের আদি নিবাস আফ্রিকান দেশে। ডিফেন্ডার প্রেসনেল কিম্পেম্বের বাবা কঙ্গোর ও মা হাইতির অধিবাসী। কোরেন্টিন তোলিসোর বাবা এসেছেন টোগো থেকে। ডিফেন্ডার বেঞ্জামিন মেন্ডির বাবা-মার আদি নিবাস সেনেগালে। স্টিফেন এন’জঞ্জির পূর্বপুরুষ এসেছেন কঙ্গো থেকে।
প্রতিটি ম্যাচেই বদলি হিসেবে নামা নাবিল ফেকিরের বাবা আলজেরিয়ান। দলের রিজার্ভ গোলকিপার স্টিভ মান্দান্দার বাবা-মা’র জন্ম কঙ্গো ও জায়ারে। ওসমান ডেমবেলের পূর্বপুরুষের আদি নিবাস মৌরিতানিয়ায়। আর যে আদিল রামির গোঁফকে সৌভাগ্যের প্রতীক বানিয়ে নিয়েছিলেন ফ্রেঞ্চ ফুটবলারেরা, তার বাবা-মা এসেছেন মরক্কো থেকে। সাধে কী আর আফ্রিকানরা বিশ্বকাপজয়ের উল্লাস করছেন।
ফ্রান্সের উদার বৈচিত্র্যপূর্ণ সংস্কৃতির জন্য অনেক দেশ থেকে নানা সময়ে সেখানে আশ্রয় নিয়েছে মানুষ। ফরাসীরাও তাদেরকে গ্রহণ করেছে নিজেদের মতো করেই। আফ্রিকান বংশোদ্ভূত হলেও তারা সবাই আসলে এখন খাঁটি ফরাসীই। তাদের নিয়ে যেমন গর্ব আফ্রিকার, ফ্রান্স বাস করতে পেরেও গর্ববোধ করেন নানা সময়ে অভিবাসী হয়ে আসা এসব মানুষ।
Posted ৬:২৭ অপরাহ্ণ | মঙ্গলবার, ১৭ জুলাই ২০১৮
coxbangla.com | Chanchal Das Gupta