বৃহস্পতিবার ২রা মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ১৯শে বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

শিরোনাম

বৃহস্পতিবার ২রা মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

শিরোনাম

ব্যাংকিং খাতে বেড়েই চলেছে খেলাপি ঋণের বোঝা : ছাড়িয়েছে ৮৯ হাজার কোটি টাকা

মঙ্গলবার, ১১ সেপ্টেম্বর ২০১৮
339 ভিউ
ব্যাংকিং খাতে বেড়েই চলেছে খেলাপি ঋণের বোঝা : ছাড়িয়েছে ৮৯ হাজার কোটি টাকা

কক্সবাংলা ডটকম(১০ সেপ্টেম্বর) :: দিন দিন বাড়ছে খেলাপি ঋণের বোঝা। সরকার ও ব্যাংকগুলো নানা পদক্ষেপ নিলেও লাগাম টেনে ধরতে পারছে না। চলতি বছরের জুন মাস শেষে ব্যাংকিং খাতে খেলাপি ঋণের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৮৯ হাজার ৩৪০ কোটি টাকা, যা মোট ঋণের ১০ দশমিক ৪১ শতাংশ। অর্থাৎ বছর ব্যবধানে খেলাপি ঋণ বেড়েছে ১৫ হাজার কোটি টাকা। খেলাপি ঋণের এই পরিমাণ স্বাধীনতার পর এ যাবতকালে সর্বোচ্চ। রাইট অফ করা ঋণের পরিমাণ যোগ করলে প্রকৃত খেলাপি দাঁড়াবে এক লাখ ৩৮ হাজার কোটি টাকা। বাংলাদেশ ব্যাংকের হালনাগাদ প্রতিবেদনে এসব তথ্য পাওয়া গেছে।

গত বছরের একই সময়ে খেলাপি ঋণের পরিমাণ ছিল ৭৪ হাজার ১৪৮ কোটি টাকা। যা মোট ঋণের ১০ দশমিক ১৩ শতাংশ। ওই সময় মোট ঋণের পরিমাণ ছিল ৭ লাখ ৩১ হাজার ৬২৫ কোটি টাকা।

জানা যায়, গত বছরের শেষ দিকে বিপুল অঙ্কের ঋণ পুনঃতফসিলের মাধ্যমে নিয়মিত ও আদায় জোরদার করায় খেলাপি ঋণ এক অঙ্কের ঘরে নেমে আসে। কিন্তু চলতি বছরে খেলাপি ঋণ আবার লাগামহীনভাবে বাড়তে শুরু করে। এর কারণ হিসেবে অর্থনীতিবিদসহ সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ডিসেম্বর শেষে ব্যাংকগুলো তাদের অডিট রিপোর্ট প্রকাশ করে। তাই সেখানে ভালো অবস্থান দেখাতেই বিভিন্ন কৌশল প্রয়োগ করে থাকে ব্যাংকগুলো।

এর মধ্যে অন্যতম হলো- খেলাপি ঋণ পুনঃতফসিল বা নবায়ন। আর বছরের শেষ সময়ে এসে এই সুবিধা দেয়া-নেয়ার প্রবণতাও বাড়ে। এ ছাড়া শেষ সময়ে ঋণ আদায় কার্যক্রম জোরদার করা হয়। কিন্তু বছরের শুরুতেই ঋণ পুনঃতফসিল যেমন কম হয়, তেমনি আদায় কার্যক্রমেও সে রকম গতি থাকে না।

তথ্য অনুযায়ী, গত মার্চ মাস শেষে ব্যাংক খাতে খেলাপি ঋণ ছিল ৮৮ হাজার ৫৮৯ কোটি টাকা। যা মোট ঋণের ১০ দশমিক ৭৮ শতাংশ। উল্লিখিত সময় ব্যাংক ব্যবস্থায় মোট ঋণের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৮ লাখ ২২ হাজার ১৩৭ কোটি টাকা। ২০১৭ সালের ডিসেম্বর শেষে ব্যাংক খাতে খেলাপি ঋণের পরিমাণ ছিল ৭৪ হাজার ৩০৩ কোটি টাকা। যা মোট ঋণের ৯ দশমিক ৩১ শতাংশ। ২০১৭ সালের সেপ্টেম্বর শেষে খেলাপি ঋণ ছিল ৮০ হাজার ৩০৯ কোটি টাকা।

বাংলাদেশ ব্যাংকের হিসাব বলছে, মোট খেলাপি ঋণের অর্ধেকই রাষ্ট্রায়ত্ত ৬ বাণিজ্যিক ব্যাংকের। অবশ্য কিছুটা কমেছে আগের প্রান্তিকের তুলনায়। জুন শেষে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলোর খেলাপি ঋণ দাঁড়িয়েছে ৪২ হাজার ৮৫২ কোটি টাকা, যা মোট ঋণের ২৮ দশমিক ২৪ শতাংশ। এ সময় ব্যাংকগুলোর মোট বিতরণ করা ঋণ এক লাখ ৫১ হাজার ৭৫৯ কোটি টাকা। মার্চ শেষে রাষ্ট্রায়ত্ত বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর মোট খেলাপি ঋণ ছিল ৪৩ হাজার ৬৮৫ কোটি টাকা, যা মোট ঋণের ২৯ দশমিক ৮৪ শতাংশ। এ সময় ব্যাংকগুলোর মোট বিতরণকৃত ঋণ দাঁড়িয়েছে এক লাখ ৪৬ হাজার ৪১৯ কোটি টাকা। হিসাব বলছে, তিন মাসের ব্যবধানে রাষ্ট্রায়ত্ত বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর খেলাপি ঋণ ৮শ কোটি টাকা কমেছে।

গত ডি?সেম্ব?র শেষে এসব ব্যাংকের মোট ঋণের স্থিতি ছিল ১ লাখ ৪০ হাজার ৭৬৯ কোটি টাকা। এর মধ্যে খেলাপি ঋণের পরিমাণ ছিল ৩৭ হাজার ৩২৬ কোটি টাকা। যা মোট বিতরণ করা ঋণের ২৬ দশমিক ৫২ শতাংশ। বিশেষায়িত দুই ব্যাংকের জুন শেষে খেলাপি ঋণের পরিমাণ ৫ হাজার ২৪১ কোটি টাকা, যা মোট ঋণের ২১ দশমিক ৬৮ শতাংশ। এ সময় তাদের মোট ঋণ দাঁড়িয়েছে ২৪ হাজার ১৭৬ কোটি টাকা।

মার্চ শেষে বিশষায়িত বাংলাদেশ কৃষি ও রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংকের খেলাপি ঋণ ছিল ৫ হাজার ৪২৬ কোটি টাকা, যা মোট ঋণের ২৩ দশমিক ৩৯ শতাংশ। এ সময়ে এই দুই ব্যাংকের ঋণের স্থিতি ছিল ২৩ হাজার ১৯৯ কোটি টাকা। এ পরিমাণ আগের প্রান্তিকেও একই ছিল।

অন্যদিকে, খেলাপি ঋণ বেড়েছে বেসরকারি ব্যাংকগুলোর। জুন শেষে ৪০টি বেসরকারি ব্যাংকের মোট ঋণের স্থিতি ৬ লাখ ৪৮ হাজার ৫০১ কোটি টাকা। এর মধ্যে খেলাপি ঋণ ৩৮ হাজার ৯৭৫ কোটি টাকা, যা মোট ঋণের ৬ দশমিক ০১ শতাংশ। গত মার্চে বেসরকারি খাতে খেলাপি ঋণ ছিল ৩৭ হাজার ২৮৯ কোটি টাকা, যা মোট ঋণের ৬ শতাংশ। ওই সময়ে মোট ঋণের স্থিতি ছিল ৬ লাখ ২১ হাজার ২৯০ কোটি টাকা। ২০১৭ সালের ডিসেম্বর শেষে বেসরকারি ৪০টি ব্যাংকের খেলাপি ঋণ ছিল ২৯ হাজার ৩৯৬ কোটি টাকা, যা মোট বিতরণ করা ঋণের ৪ দশমিক ৮৭ শতাংশ। ডিসেম্বর শেষে ঋণ বিতরণ করে ৬ লাখ ৩ হাজার ৬০৩ কোটি টাকা।

দেশে পরিচালিত ৯টি বিদেশি মালিকানার ব্যাংকের খেলাপি ঋণের হার ৬ দশমিক ৬৬ শতাংশ। জুন শেষে তাদের মোট ঋণ ৩৪ হাজার ৮৪ কোটি টাকা। খেলাপি ঋণ ২ হাজার ২৭১ কোটি টাকা। মার্চ শেষে এসব ব্যাংকের খেলাপি ঋণের পরিমাণ ২ হাজার ১৮৮ কোটি টাকা, যা মোট ঋণের ৭ দশমিক শূন্য এক শতাংশ। মোট ঋণের পরিমাণ ৩১ হাজার ২১৭ কোটি টাকা। ডিসেম্বর শেষে ২ হাজার ১৫৪ কোটি টাকা খেলাপি ঋণ ছিল, যা মোট ঋণের ৭ দশমিক শূন্য ৪ শতাংশ। বিদেশি ব্যাংকগুলোর মোট ঋণ ছিল ওই সময় ৩০ হাজার ৬২২ কোটি টাকা।

খেলাপি ঋণ তিনটি শ্রেণিতে বিভাজন করা হয়। নিম্নমান, সন্দেহজনক ও খারাপ। মন্দ বা খারাপ ঋণ আদায় হবে না বলে ধারণা করা হয়। বাংলাদেশ ব্যাংকের হিসাব মতে, মোট খেলাপি ঋণের ৭৩ হাজার কোটি টাকাই মন্দ ঋণ। অর্থাৎ এই পরিমাণ ঋণ আর ব্যাংক তার গ্রাহকের কাছ থেকে আদায় করতে পারবে না বলা যেতে পারে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক সিরাজুল ইসলাম এ প্রসঙ্গে বলেন, আমরা (বাংলাদেশ ব্যাংক) যত পদক্ষেপই নেই না কেন, তা সরাসরি খেলাপি ঋণ কমিয়ে আনবে না। ব্যাংকগুলোর নিজেদের উদ্যোগ ও কার্যকর পদক্ষেপ থাকতে হবে। ব্যাংকের পর্ষদ ও ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষকে ঋণ বিতরণের সময় মান যাচাই করতে হবে।

339 ভিউ

Posted ১:১৬ পূর্বাহ্ণ | মঙ্গলবার, ১১ সেপ্টেম্বর ২০১৮

coxbangla.com |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

এ বিভাগের আরও খবর

Editor & Publisher

Chanchal Dash Gupta

Member : coxsbazar press club & coxsbazar journalist union (cbuj)
cell: 01558-310550 or 01736-202922
mail: chanchalcox@gmail.com
Office : coxsbazar press club building(1st floor),shaheed sharanee road,cox’sbazar municipalty
coxsbazar-4700
Bangladesh
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
বাংলাদেশের সকল পত্রিকা সাইট
Bangla Newspaper

ABOUT US :

coxbangla.com is a dedicated 24x7 news website which is published 2010 in coxbazar city. coxbangla is the news plus right and true information. Be informed be truthful are the only right way. Because you have the right. So coxbangla always offiers the latest news coxbazar, national and international news on current offers, politics, economic, entertainment, sports, health, science, defence & technology, space, history, lifestyle, tourism, food etc in Bengali.

design and development by : webnewsdesign.com