শুক্রবার ৩রা মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ২০শে বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

শিরোনাম

শুক্রবার ৩রা মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

শিরোনাম

ব্যাংকের নামে ভুয়া ওয়েবসাইট খুলে প্রতারণা

রবিবার, ২৬ নভেম্বর ২০১৭
396 ভিউ
ব্যাংকের নামে ভুয়া ওয়েবসাইট খুলে প্রতারণা

কক্সবাংলা ডটকম(২৫ নভেম্বর) :: দেখতে ব্যাংকের প্রকৃত ওয়েবসাইটের মতোই। আপলোড করা তথ্যেরও ৮০ শতাংশ একই। পার্থক্য শুধু ওয়েবসাইটের জব ইনফো উইন্ডোয় ও ওয়েব ঠিকানার শেষ অংশে। ভুয়া সাইটগুলোয় ওয়েব ঠিকানার শেষ অংশে ব্যাংকের নামের সঙ্গে যোগ করা হয়েছে ইনফো। প্রায় হুবহু এসব ওয়েবসাইটের মাধ্যমে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকে চাকরি দেয়ার কথা বলে প্রতারণার পসরা খুলেছে অপরাধীরা। এ প্রক্রিয়ায় চক্রটি চাকরি প্রত্যাশীদের কাছ থেকে হাতিয়ে নিচ্ছে মোটা অংকের টাকা।

ব্যাংকের নাম ব্যবহার করে নকল ওয়েবসাইট খুলে ব্যাংকের ভুয়া প্যাডে নিয়োগপত্র দেয়ার ঘটনায় গত ১০ আগস্ট সোনালী ব্যাংকের পক্ষ থেকে অজ্ঞাতনামা ৮-১০ ব্যক্তিকে আসামি করে মতিঝিল থানায় একটি মামলা করা হয়।

মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, বেশ কিছুদিন ধরে সোনালী ব্যাংক লিমিটেডের নাম ব্যবহার করে সোনালী ব্যাংকে নিয়োগ দেয়ার কথা বলে একটি প্রতারক চক্র দেশের বিভিন্ন জেলার নিরীহ ও শান্তিপ্রিয় মানুষকে সোনালী ব্যাংকের ভুয়া প্যাডে নিয়োগপত্র প্রদান করে। একই দল সোনালী ব্যাংক লিমিটেডের অফিশিয়াল ওয়েবসাইট থেকে বিভিন্ন তথ্য হুবহু কপি করে একটি জাল ওয়েবসাইট পরিচালনা করে আসছে। মামলার অনুসন্ধানে গিয়ে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগও (সিআইডি) এর প্রমাণ পেয়েছে।

প্রতারক চক্র মূলত সরকারি ব্যাংকসহ গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠানের ওয়েবসাইটের আদলে ভুয়া সাইট তৈরি করে, যেখানে সব তথ্য হুবহু তুলে দেয়া হয়। শুধু পরিবর্তন করা হয় একটি অংশ। সেটি হলো নোটিস বোর্ড। ওয়েবসাইটের এ অংশেই দেয়া হয় চাকরিসহ গুরুত্বপূর্ণ সব তথ্য। ভুয়া ওয়েবসাইটের নোটিস বোর্ডে চাকরিপ্রার্থীর নাম ও রোল নম্বর প্রকাশ করে তাদের কাছ থেকে প্রতারকরা হাতিয়ে নেয় কোটি কোটি টাকা।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, সাধারণ মানুষের মধ্যে সচেতনতা সৃষ্টি ও ওয়েবসাইট তৈরির বিষয়টি এখনই নজরদারিতে আনা না হলে ভবিষ্যতে আরো বড় ধরনের ঝুঁকির মুখে পড়তে পারে আর্থিক খাতের প্রতিষ্ঠানগুলো। ব্যাংকের অভ্যন্তরীণ কারো যোগসাজশ ছাড়া এত নিখুঁতভাবে ওয়েবসাইট তৈরি এবং কর্মকর্তাদের সিল ও স্বাক্ষর জালিয়াতি করা সম্ভব নয় বলেও ধারণা গোয়েন্দাদের।

সোনালী ব্যাংকের মামলার এজাহারে ঘটনার বর্ণনা দিয়ে বলা হয়, গত ১০ আগস্ট বেলা সাড়ে ৩টায় তাজুল ইসলাম নামের এক ব্যক্তি সোনালী ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ের পঞ্চম তলায় সিকিউরিটি অ্যান্ড প্রটোকল ডিভিশনে আসেন। এ সময় তিনি একটি নিয়োগপত্র জমা দিয়ে কাজে যোগদান করতে চান।

পরে বিষয়টি সন্দেহ হলে ওই নিয়োগপত্র যাচাই করে দেখা যায়, এটি ব্যাংকের প্যাড হুবহু নকল করে তৈরি করা। শুধু তা-ই নয়, ওই নিয়োগপত্রে সোনালী ব্যাংক লিমিটেডের হিউম্যান রিসোর্স ডিভিশনের জেনারেল ম্যানেজার মো. মাহবুবুর রহমানের সিল ও স্বাক্ষর জাল করে ব্যবহার করা হয়েছে।

এর আগে গত ২৮ মে মতিঝিল থানায় সোনালী ব্যাংকের পক্ষে একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করা হয়। এতে বলা হয়, সোনালী ব্যাংক লিমিটেডের নাম ব্যবহার করে এক বা একাধিক প্রতারক চক্র বিভিন্ন পদে নিয়োগপত্র ইস্যু করে দেশের সাধারণ জনগণকে ধোঁকা দিয়ে অর্থ হাতিয়ে নেয়ার পাশাপাশি ব্যাংকের সুনাম ক্ষুণ্ন করছে। এ চক্রের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নিতে ওই জিডিতে অনুরোধ করা হয়।

সিআইডি সূত্র জানায়, সংঘবদ্ধ প্রতারক চক্রটি তিন স্তরে বিভক্ত হয়ে কাজ করে। প্রথম স্তরে রয়েছেন কয়েকজন ব্যাংক কর্মকর্তা। তারাই প্রতারণার অভিনব এ পন্থার উদ্ভাবক। বিভিন্ন সময় চাকরির জন্য ব্যাংকে যারা আসেন, তাদের তথ্যগুলো ওইসব কর্মকর্তা সংগ্রহ করেন। পরে এসব তথ্য পাচার করা হয় চক্রের দ্বিতীয় স্তরের সদস্যদের কাছে। এরা চাকরিপ্রার্থীদের সঙ্গে যোগযোগ করে বলেন, ‘আপনার চাকরি হয়ে যাবে। এজন্য দেয়া লাগবে ১০ লাখ টাকা। তবে টাকা আগে দেয়া লাগবে না। আপনার নাম নোটিস বোর্ডে ওঠার পর টাকা দেবেন।’ তৃতীয় স্তরে রয়েছেন প্রতারক চক্রের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সদস্যরা। এরা রাজধানীর বিভিন্ন প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানে কর্মরত। অর্ধশতাধিক সদস্য রয়েছেন এ স্তরে। এদের মূল কাজ সরকারি বিভিন্ন ব্যাংক ও সংস্থার ওয়েবসাইটসদৃশ ভুয়া ওয়েবসাইট তৈরি করা। চক্রের দ্বিতীয় স্তরের সদস্যরা নিয়োগসংক্রান্ত তথ্য জানার জন্য চাকরিপ্রার্থীদের এসব ভুয়া ওয়েবসাইটের লিংক দেন।

সিআইডির এক কর্মকর্তা জানান, চাকরিপ্রার্থীরা প্রতারক চক্রের দেয়া ওয়েবসাইটের লিংক ভিজিট করেন এবং সেখানে দেয়া নির্দেশনা অনুযায়ী পরীক্ষায়ও অংশ নেন। ফলাফল প্রকাশের দিন চাকরিপ্রার্থীদের ওয়েবসাইটের নোটিস বোর্ড লক্ষ্য করতে বলা হয়। চাকরিপ্রার্থীরা সেখানে নিজের নাম ও রোল নম্বর দেখতে পেয়ে চুক্তি মোতাবেক টাকা পরিশোধ করেন। চাকরিতে যোগ দিতে যাওয়ার আগে তারা প্রতারণার বিষয়টি জানতে পারেন না।

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ও সিআইডির ডেমরা ইউনিটের এসআই মো. কামাল হোসেন বলেন, প্রতারক চক্রের নিচের স্তরের এক সদস্যকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তার নাম ইঞ্জিনিয়ার মাহমুদুল হাসান। বয়স কম হলেও প্রযুক্তি বিষয়ে তিনি পারদর্শী। মাহমুদুল দীর্ঘদিন ধরে কারওয়ান বাজারের জনতা টাওয়ারে অবস্থিত ইকরা ডটকম নামের একটি আইটি ফার্মে চাকরি করেন। তার সঙ্গে এ চক্রের অন্য দুই স্তরে আরো বেশ কয়েকজন সদস্য জড়িত রয়েছেন। তাদের বিষয়ে সব তথ্য সংগ্রহ করা হয়েছে। তাদের গ্রেফতারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।

ইঞ্জিনিয়ার মাহমুদুলকে জিজ্ঞাসাবাদে পাওয়া তথ্যের বরাত দিয়ে এসআই কামাল জানান, চক্রটি শুধু সোনালী ব্যাংকের নয়, অগ্রণী ও জনতা ব্যাংকের ওয়েবসাইটসদৃশ ওয়েবসাইট তৈরি করে একই ধরনের প্রতারণা করেছে। তারা সেনাবাহিনীর ওয়েবসাইটসদৃশ্য ওয়েবসাইটও বানিয়েছে। পরে এসব ওয়েবসাইট ব্যবহার করে কয়েক কোটি টাকার প্রতারণা করেছে।

এ বিষয়ে সিআইডির ডেমরা ইউনিটের সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার মো. এহসান উদ্দিন চৌধুরী বলেন, সুনির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে এ চক্রের এক সদস্যকে গ্রেফতার করা গেছে। তবে চক্রের অনেক সদস্যই এখনো বিভিন্ন ধরনের প্রতারণামূলক কাজ করে যাচ্ছে। তাদের সবাইকে আইনের আওতায় আনতে কাজ করা হচ্ছে বলেও জানান তিনি।

396 ভিউ

Posted ৩:০৭ পূর্বাহ্ণ | রবিবার, ২৬ নভেম্বর ২০১৭

coxbangla.com |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

এ বিভাগের আরও খবর

Editor & Publisher

Chanchal Dash Gupta

Member : coxsbazar press club & coxsbazar journalist union (cbuj)
cell: 01558-310550 or 01736-202922
mail: chanchalcox@gmail.com
Office : coxsbazar press club building(1st floor),shaheed sharanee road,cox’sbazar municipalty
coxsbazar-4700
Bangladesh
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
বাংলাদেশের সকল পত্রিকা সাইট
Bangla Newspaper

ABOUT US :

coxbangla.com is a dedicated 24x7 news website which is published 2010 in coxbazar city. coxbangla is the news plus right and true information. Be informed be truthful are the only right way. Because you have the right. So coxbangla always offiers the latest news coxbazar, national and international news on current offers, politics, economic, entertainment, sports, health, science, defence & technology, space, history, lifestyle, tourism, food etc in Bengali.

design and development by : webnewsdesign.com