কক্সবাংলা ডটকম(২ সেপ্টেম্বর) :: ভারতের আদানি গ্রুপের সঙ্গে যৌথভাবে সিঙ্গল ইঞ্জিন ফাইটার জেট তৈরি করবে সুইডেনের সংস্থা ‘সাব'(SAAB). বৃহস্পতিবার রয়টার্সের তরফ থেকে এমনটা জানানো হয়েছে।
মার্কিন সংস্থা লকহিড মার্টিনের সঙ্গে প্রতিযোগিতা করবে এই সুইডিশ সংস্থা। নরেন্দ্র মোদীর ‘মেক ইন ইন্ডিয়া’ উদ্যোগের আওতায় হবে এই ফাইটার জেট তৈরির কাজ।
ভারতের নতুন স্ট্র্যাটেজিক পার্টনারশিপে এই যৌথ উদ্যোগের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। শুক্রবার নয়াদিল্লিতে সাব সংস্থার প্রেসিডেন্ট হাকান বুশকে একটি সাংবাদিক বৈঠকও করেন। তবে আদানিদের তরফ থেকে কোনও মন্তব্য পাওয়া যায়নি। ইতিমধ্যেই পার্টনারশিপের জন্য ভারতীয় সংস্থা টাটাকে বেছে নিয়েছে মার্কিন সংস্থা লকহিড মার্টিন।
অন্যদিকে, F-16-এর বিজনেস ডেভেলপমেন্টের দায়িত্বে থাকা আধিকারিক র্যান্ডাল এল হওয়ার্ড জানিয়েছেন, ভারতকে F-16-এর প্রোডাকশন সেন্টার তৈরি করতে চাইছে লকহিড। অর্থাৎ কিনা, শুধু ভারতের জন্য নয় বিশ্বের অন্যান্য দেশের জন্যও যুদ্ধবিমান তৈরি হবে ভারতের মাটিতেই।
টেক্সাসে এই F-16-এর প্রোডাকশন বন্ধ করছে আমেরিকা। আপাতত নতুন অর্ডার নেওয়া হচ্ছে সাউথ ক্যারোলিনার নতুন সেন্টারে। তবে ক্রমশ সব বিমান ভারতে তৈরি করার পরিকল্পনা রয়েছে বলে জানা গিয়েছে। রয়টার্সকে এমন তথ্যই দিয়েছেন হওয়ার্ড।
লোকাল পার্টনার হিসেবে টাটাকে বেছে নিয়েছে লকহিড। ১২ বিলিয়ন ডলারের এই বরাত পাওয়ার জন্য মার্কিন সংস্থা লকহিড ভারতের টাটা অ্যাডভান্স সিস্টেম লিমিটেডের সঙ্গে গাঁটছড়া বেঁধে নিলামে অংশগ্রহণ করছে।
এক্ষেত্রে, ওই সংস্থার প্রতিযোগী হিসেবে থাকছে ‘গ্রিপেন ফাইটার জেট’-এর নির্মাতা সুইডিস সংস্থা SAAB. গত জুন মাসে প্যারিস এয়ার শো-তে F-16 যুদ্ধবিমান প্রদর্শিত হওয়ার পরেই মার্কিন সংস্থার সিইও মেরিলিন হিউসনের সঙ্গে দেখা করেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। এই চুক্তি হলে ভারত ও আমেরিকা দুই দেশই যথেষ্ট উপকৃত হবে।
আরও জানা গিয়েছে, বিশ্ব জুড়ে অন্তত ৩০০০ F-16 ফাইটার জেট রয়েছে। আর চুক্তি সম্পূর্ণ হলে সেই সব যুদ্ধবিমানের সার্ভিসিং হবে ভারতে। F-16 বিশ্বের সবথেকে সফল মাল্টি-রোল ফাইটার জেট। এই চুক্তি হলে, ভারতে প্রচুর কর্মসংস্থান হবে। চুক্তি কার্যকর হলে হায়দরাবাদে তৈরি হবে এই যুদ্ধবিমানগুলি।
এক সর্বভারতীয় সংবাদ মাধ্যমের সঙ্গে কথা বলতে গিয়ে এক শীর্ষ প্রতিরক্ষা আধিকারিক বলেন, ‘কৌশলগত অংশীদারিত্বের রাস্তা অনুসরণ করে, আমরা কেবল একক ইঞ্জিন বিশিষ্ট যুদ্ধবিমান ক্রয়ের বিষয়ে মনোনিবেশ করছি’। একইসঙ্গে তিনি জানিয়ে রাখেন, ‘দুই ইঞ্জিন যুদ্ধবিমানকে আমরা বর্তমানে অগ্রাধিকার দিচ্ছি না। আমাদের লক্ষ্য এক ইঞ্জিন বিশিষ্ট বিমান ক্রয় করা’।
উল্লেখ্য, গত বছর সেপ্টেম্বর মাসে ফ্রান্সের সঙ্গে স্বাক্ষরিত চুক্তি অনুসারে ভারতকে ৩৬টি রাফায়েল বিমান দেবে তারা। আশা করা হচ্ছে ২০২৩র মধ্যে ধীরে ধীরে সবকটি রাফায়েল পেয়ে যাবে বায়ুসেনা। কিন্তু তারপর রাফায়েল বিমানের নতুন কোনও চুক্তিতে বর্তমানে আগ্রহ দেখাচ্ছে না তারা।
এই মুহূর্তে কমপক্ষে ১০০টি এক ইঞ্জিন যুক্ত বোমারু দরকার বলে জানান শীর্ষ প্রতিরক্ষা আধিকারিক। নতুন চুক্তি স্বাক্ষর হলে ১০০টির মধ্যে কমপক্ষে ১৮টি সম্পূর্ণ তৈরি অবস্থায় তুলে দেওয়া হবে বায়ুসেনার হাতে। এবং বাকি ৮২টি যুদ্ধবিমান মেক ইন ইন্ডিয়া প্রকল্প অনুসরণ করে ভারতের মাটিতেই তৈরি হবে বলে জানান তিনি।
ভারতীয় বায়ুসেনার চাহিদা অনুসারে বাজারে এই মুহূর্তে শুধুমাত্র F-16 এবং গ্রিপেন বিমান রয়েছে। এই কারণেই সময় থাকতে যত দ্রুত সম্ভব একক ইঞ্জিন বিশিষ্ট যুদ্ধবিমানের চুক্তি সেরে ফেলতে চাইছে ভারত।