কক্সবাংলা ডটকম(২৫ মার্চ) :: রাশিয়ার কাছ থেকে এস-৪০০ বিমান প্রতিরক্ষা সিস্টেম কেনার চুক্তির চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে ভারত। দুই বছর আগে এসব অস্ত্র কেনার উদ্যোগ শুরু হয়েছিল। আগামী এপ্রিলে ভারতের প্রতিরক্ষামন্ত্রী নির্মলা সিতারামনের প্রথম মস্কো সফরের সময় এ চুক্তি হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। বিষয়টি সম্পর্কে জানেন, এমন ব্যক্তিরা এ তথ্য দিয়েছেন।
ভারতীয় বিমানবাহিনী সম্প্রতি প্রতিরক্ষাবিষয়ক পার্লামেন্টারি কমিটিকে জানিয়েছে, চীন ও পাকিস্তানের কাছ থেকে সম্ভাব্য হুমকি মোকাবিলায় রাশিয়ার কাছ থেকে এস-৪০০ বিমান প্রতিরক্ষা সিস্টেম কেনা খুবই প্রয়োজনীয়। এরপর পার্লামেন্টারি কমিটি বিমানবাহিনীর প্রয়োজন অনুযায়ী ওই অস্ত্র কেনার জন্য প্রয়োজনীয় তহবিল সংস্থানের সুপারিশ করে।
ভারত ও রাশিয়া ২০১৬ সালে পাঁচটি এস-৪০০ সিস্টেম, ২০০ কামোভ হেলিকপ্টার কেনা নিয়ে আলোচনা শুরু করে। হেলিকপ্টারের কিছু রাশিয়া থেকে সরাসরি আনা হবে, বাকিগুলো ভারতে নির্মাণ করার কথা। স্টিলথ ফ্রিগেট কেনা নিয়েও দুই পক্ষের মধ্যে আলোচনা শুরু হয়েছে।
এস-৪০০ সিস্টেম আকাশ পথে হামলা ২৫০ মাইল দূরেই প্রতিরোধ ও ধ্বংস করতে সক্ষম। এগুলো একইসাথে ছয়টি টার্গেটে হামলা চালাতে পারে। প্রতিটি এস-৪০০ সিস্টেমে ট্র্যাকিং ও সার্চ রাডার, আটটি লঞ্চার, ১১২টি নিয়ন্ত্রিত ক্ষেপণাস্ত্র, কমান্ড ও সার্পোট যান রয়েছে।
একে সবচেয়ে কার্যকর প্রতিরক্ষা সিস্টেম হিসেবে অভিহিত করা হয়। চীন প্রথম দেশ হিসেবে রাশিয়ার কাছ থেকে এ অস্ত্র কেনে। গত বছর চীনকে এ অস্ত্র সরবরাহ করা হয়। ২০২০ সাল নাগাদ তুরস্কের কাছে এ সিস্টেম সরবরাহ করতে পারে রাশিয়া।
এস-৪০০ বিমান প্রতিরক্ষা সিস্টেম কেনার চুক্তি চূড়ান্ত করা ছাড়াও ভারতের প্রতিরক্ষামন্ত্রী পঞ্চম প্রজন্মের জঙ্গিবিমান (এফজিএফএ) নির্মাণে দ্বিপক্ষীয় সহযোগিতা নিয়েও আলোচনা করবেন। রুশ-নির্মিত প্রতিরক্ষাব্যবস্থার খুচরা যন্ত্রাংশ, রক্ষণাবেক্ষণ, আধুনিকায়ন ও গোলাবরুদ নিয়েও আলোচনা হবে। তিনি মস্কো আন্তর্জাতিক নিরাপত্তা সম্মেলনেও অংশ নেবেন।
দুই পক্ষ অন্যান্য ক্ষেত্রে সহযোগিতা সম্প্রসারণের দিকেও নজর দিচ্ছে। পুনঃনির্বাচনের পর যে কয়েকজন বিশ্বনেতা ভ্লাদিমির পুতিনকে শুরুতেই অভিনন্দিত করেছেন, তাদের অন্যতম ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। একই সময় রাশিয়ার তিন মন্ত্রী- অর্থনৈতিক উন্নয়ন, পরিবহন, কৃষি- নিজ নিজ প্রতিপক্ষের সাথে সাক্ষাত করতে দিল্লিতে ছিলেন।
দুই দেশ বর্তমানে নাগপুর ও সেকান্দারাবাদের মধ্যে উচ্চগতির রেলওয়ে প্রকল্পে মস্কোর সহযোগিতা নিয়ে আলোচনা করছে। তাছাড়া ভারতের বিশাল নদী নেটওয়ার্ক ব্যবহার করে পরিবহনব্যবস্থা উন্নয়ন নিয়েও কথা হচ্ছে। দুই দেশের মধ্যে সহযোগিতার আরেকটি খাত হচ্ছে আইটি-সংশ্লিষ্ট।
এদিকে ২০১৫ সাল নাগাদ দুই দেশের দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ৩০ বিলিয়ন ডলারে উন্নীত করা নিয়েও আলোচনা হচ্ছে। বিশাল ভারতীয় কোম্পানিগুলো ও রুশ বিনিয়োগকারীদের কাছাকাছি আনার উদ্যোগ গ্রহণ করতে ভারতের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছে রাশিয়া। দুই সরকার বাণিজ্যিক প্রতিবন্ধকতা দূর করার বিভিন্ন উপায় নিয়েও আলোচনা করছে। গত বছর দুই দেশের মধ্যকার বাণিজ্য ২১.৫ ভাগ বাড়া ইতিবাচক হিসেবেই দেখা হচ্ছে।
ভারত মনে করছে কানেকটিভিটি, রুশ অঞ্চল ও রাজ্যগুলোর মধ্যে সম্পৃক্ততা, জ্বালানি (হাইড্রোকার্বন ও পরমাণু) খাতের মধ্যে সম্পৃক্ততা, প্রতিরক্ষা ও নিরাপত্তা খাতে উচ্চপ্রযুক্তির সহযোগিতা আরো বাড়ানো যেতে পারে।
Posted ২:৩৭ পূর্বাহ্ণ | সোমবার, ২৬ মার্চ ২০১৮
coxbangla.com | Chanchal Das Gupta