কক্সবাংলা ডটকম(১৯ ডিসেম্বর) :: রাজধানী রাজ্য দিল্লীকে ধরে মোট ৩০টি রাজ্যের মধ্যে বিজেপি ও বিজেপির জোট এখন ক্ষমতায় ১৯ টি রাজ্যে৷ শতাংশের হিসাবে ৬৩ শতাংশ ভারত মোদীর করায়ত্বে৷ বাকি মাত্র ১১ টি রাজ্য৷ মোদীর নেতৃত্বে কি গোটা দেশের দখল নেবে বিজেপি? আগামী দিনে গোটা দেশেই কি গেরুয়া ঝড় লক্ষ্য করা যাবে? গুজরাত ও হিমাচল প্রদেশ জয়ের পর এই প্রশ্ন কিন্তু উঠতে শুরু করেছে৷
দিল্লী ধরে দেশের ৩০ টি রাজ্যের মধ্যে এখন ১৯ টি রাজ্যে বিজেপি বা বিজেপি জোট ক্ষমতায়৷ শতাংশের হিসাবে ৬৩ শতাংশ রাজ্য গেরুয়া পতাকার তলায়৷ এর মধ্যে ১৪ টি রাজ্যে সরাসরি ক্ষমতায় বিজেপি৷ বাকি ৫ টি রাজ্যে তাদের ন্যাশান্যাল ডেমক্রেটিক অ্যালায়েন্স বা NDA এর জোট আছে৷ রাজনৈতিক দলের পতাকা অনুযায়ী ভারতের ম্যাপ রঙ করলে পুরো ভারতবর্ষকেই গেরুয়া মনে হয়৷ বাকি পূর্ব আর দক্ষিণ ভারতের কিছুটা অংশ গেরুয়াহীন৷
২০১৮ সালেই বিধানসভা নির্বাচন ছত্তিশগড়, কর্ণাটক, মধ্যপ্রদেশ, মেঘালয়, মিজেরাম, নাগাল্যান্ড, ত্রিপুরা ও রাজস্থানে৷ এর মধ্যে মেঘালয়, মিজোরাম, কর্ণাটক ও ত্রিপুরাতে বিজেপি বা তার জোটের শাসন নেই৷ নিজেদের জেতা রাজ্য ধরে রাখার পাশাপাশি এই ৪ টি রাজ্যে বিজেপি শাসন কায়েম করার জন্য ইতিমধ্যেই অমিত শাহের নেতৃত্বে ঝাঁপিয়ে পড়েছেন বিজেপি নেতারা৷
২৪ বছর আগে কংগ্রেস ও তার জোট ১৮ টি রাজ্যে ক্ষমতায় ছিল৷ গুজরাত ধরে রেখে হিমাচল প্রদেশ জেতার পর কংগ্রেসের সেই রেকর্ডও ভেঙে দিল বিজেপি৷ এই মূহুর্তে বিজেপি ও তার জোট ন্যাশান্যাল ডেমক্রেটিক অ্যালায়েন্সের দখলে ১৯ টি রাজ্য৷ ২০১৪ সালের এপ্রিল মাসে মোদীর নেতৃত্বে দেশের ক্ষমতায় আসে বিজেপি৷ তারপর থেকে তেলেঙ্গনা, অরুণাচল প্রদেশ, বাংলা, দিল্লী ছাড়া সব রাজ্য নির্বাচনেই বিজেপি জয়-জয়কার৷ বিহারে প্রথমে হেরে গেলেও নিতীশ কুমারকে ভাঙিয়ে এখন ক্ষমতায় বিজেপি জোট৷
২০১৪ র মোদী ঝড়ের আগে ভারতের ৫ টি রাজ্যে ক্ষমতায় ছিল বিজেপি৷ গুজরাত, রাজস্থান, মধ্যপ্রদেশ, ছত্তিশগড় এবং নাগাল্যান্ডে৷ ২০১৪ সালে অন্ধ্রপ্রদেশ, ওডিশা, সিকিম, মহারাষ্ট্র, হরিয়ানা, জম্মু কাশ্মীর, ঝাড়খন্ড ক্ষমতায় আসে বিজেপি৷ এর মধ্যে মহারাষ্ট্র, হরিয়ানা ও ঝাড়খন্ডে সংখ্যাগরিষ্ঠ দল হিসাবে উঠে আসে বিজেপি৷ জম্মু কাশ্মীরে ২৫ টি আসন পায় বিজেপি৷
২০১৫ তে অবশ্য বিহার ও দিল্লীতে শোচনীয় ফলাফল হয় গেরুয়া শিবিরের৷ কিন্তু পরে নীতিশ কুমারের সঙ্গে হাত মিলিয়ে বিহারে ক্ষমতা দখল করে বিজেপি৷ ২০১৬ তে কংগ্রেসকে সরিয়ে অসমে ক্ষমতা দখল করে বিজেপি৷ ২০১৭ তে গুজরাত ও হিমাচল প্রদেশ জয়ের আগে গোয়া, উত্তরাখন্ড, উত্তরপ্রদেশ, মণিপুর বিধানসভা নির্বাচনেও জয় পায় বিজেপি ও ন্যাশান্যাল ডেমক্রেটিক অ্যালায়েন্স৷
সব মিলিয়ে গোটা দেশের ১৯ টি রাজ্যে এখন বিজেপির শাসন৷ যা আগে কখনও হয় নি৷ এমনকি পারে নি জাতীয় কংগ্রেসও৷ তারাও সবচেয়ে বেশি ১৮ টি রাজ্যে ক্ষমতায় ছিল৷ ২০১৮ তে ৮ টি রাজ্যে বিধানসভা নির্বাচন৷ এর মধ্যে ৪ টি রাজ্যে ক্ষমতায় নেই বিজেপি৷ সোমবারই ভোটের ফলাফলের পর বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি অমিত শাহ জানিয়ে দিয়েছেন, ২০১৮ তে বিজেপির লক্ষ্য মেঘালয়, মিজোরাম, কর্ণাটক ও ত্রিপুরাতে বিজেপি বা জোটের সরকার প্রতিষ্ঠা করাই লক্ষ্য৷
একনজরে দেখে নেওয়া যাক, কোন ১১ টি রাজ্যে এই মূহুর্ত্বে বিজেপি ক্ষমতায় নেই৷ কংগ্রেসের হাতে রয়েছে ৪ টি রাজ্যের ক্ষমতা৷ পাঞ্জাব, কর্ণাটক, মেঘালয়া, মিজেরাম৷ দেশকে কংগ্রেস মুক্ত সরকার দেওয়ার ঘোষণা করেই দিয়েছে পদ্ম শিবির৷ ফলে এই ৪টি রাজ্যে ক্ষমতা দখলই যে তাদের প্রধান টার্গেট তা পরিস্কার বলেই দিচ্ছেন গেরুয়া নেতারা৷ বাকি কেরল ও ত্রিপুরায় এই মূহুর্ত্বে বাম শাসন৷ তেলেঙ্গানায় তেলেঙ্গানা রাষ্ট্রীয় সমিথি, তামিলনাড়ুতে এআইএডিএমকে, দিল্লীতে আপ, ওড়িশায় বিজু জনতা দল ও বাংলায় তৃণমূল কংগ্রেস৷
এর মধ্যে ২০১৮ তে কংগ্রেসের হাতে থাকা কর্ণাটক, মেঘালয়া, মিজেরাম ছিনিয়ে নেওয়াই বিজেপির প্রথম টার্গেট৷ সেটা হলে প্রায় গোটা দেশই ২০১৯ এর লোকসভা ভোটের আগে গেরুয়া শিবিরে পরিণত হবে তা বলাই যায়৷ নিজেদের জেতা রাজ্য ধরে রাখতে পারলে ও কংগ্রেস শাসিত ৩ টি রাজ্য জিততে পারলে ২০১৮ তেই বিজেপি ও ন্যাশান্যাল ডেমক্রেটিক অ্যালিয়েন্সের দখলে চলে আসবে ভারতের ২২ টি রাজ্য৷
তবে, গুজরাতের ভোট কিন্তু বিজেপিকে যথেষ্ট চিন্তায় রাখবে৷ ২০১২ তে বিজেপি গুজরাতে পেয়েছিল ১১৯ টি আসন৷ শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত সেটা কমে দাঁড়াল ৯৯ তে৷ অর্থাৎ গুজরাতে পদ্মের আসন কমল ২০ টি৷ গুজরাত মডেলে ভোট করে আসা বিজেপির নেতাদের যেটা যথেষ্ট চিন্তায় রাখছে৷
অন্যদিকে গুজরাতে এবারে কংগ্রেসের প্রচারের মুখ ছিলেন কংগ্রেস সভাপতি রাহূল গান্ধী৷ ২০১২ তে কংগ্রেসের আসন ছিল ৫৭ টি, সেটা এবার শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত দাঁড়িয়েছে ৮০ টি৷ মোদীর রাজ্যে কংগ্রেসের ২৩ টি আসন বাড়ার পিছনে সব কৃতিত্বই রাহূলকে দিচ্ছে কংগ্রেস৷ তবে ক্ষমতায় থাকা হিমাচল প্রদেশে শোচনীয় পরাজয় সেই কৃতিত্ব অনেকটাই ফিকে করে দিয়েছে৷
যদিও, দেশকে কংগ্রেস মুক্ত করার বিজেপির ডাক গুজরাতে কিছুটা হলেও ধাক্কা খেল বলেই মনে করছে রাজনৈতিক মহল৷ তবে, মোদীর নেতৃত্বে গেরুয়া রথ যে তড়তড়িয়ে এগুচ্ছে তা বলার অপেক্ষা রাখে না৷ আগামী দিনেও মোদীর অশ্বমেধের ঘোড়া ভারতের অন্য রাজ্যগুলিতেও দৌড়ায় কিনা তার দিকেই নজর থাকবে ভারতবাসীর৷ তবে, গোটা ভারতবর্ষকেই গেরুয়া রঙে রাঙাবার বিজেপির স্বপ্ন যে আপাতত: সত্যি হয়েই চলেছে তা আর অস্বীকার করার কোন উপায়ই নেই৷
গুজরাটে ক্ষমতা ধরে রেখে হিমাচল প্রদেশেও জিতেছে বিজেপি
ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির দল ভারতীয় জনতা পার্টি (বিজেপি) দেশটির গুজরাট ও হিমাচল প্রদেশে বিধানসভা নির্বাচনে জয় পেয়েছে।
ঘোষিত ফলাফল অনুযায়ী, বিজেপি ৯৯ আসন পেয়ে গুজরাটে ক্ষমতা ধরে রাখতে সমর্থ হয়েছে। একই সঙ্গে দলটি ৪৪ আসন পেয়ে কংগ্রেসের কাছ থেকে হিমাচল প্রদেশের ক্ষমতা কেড়ে নিতে পেরেছে।
খবর এনডিটিভি ও ফিন্যান্সিয়াল টাইমস।
ভারতের সবচেয়ে পশ্চিমের রাজ্য গুজরাট আর বিন্ধ্য পর্বতের ওপারে সবচেয়ে উত্তরের রাজ্য হিমাচল প্রদেশের বিধানসভা নির্বাচনের ভোটগ্রহণ হয় চলতি মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহে। গুজরাট বিধানসভার ১৯২টি আসনের নির্বাচনে ভোটগ্রহণ হয় ৯ ও ১৪ ডিসেম্বর।
আর হিমাচল প্রদেশের বিধানসভার ৬৮টি আসনে ভোটগ্রহণ হয় ৯ ডিসেম্বর। দুই রাজ্যে ভোটগণনা হয় গতকাল সোমবার। সর্বশেষ খবর অনুযায়ী, গুজরাটে বিজেপি ৯৯টি, কংগ্রেস ৮০টি ও অন্যান্য দল তিনটি আসন পেয়েছে।
এর মানে ২০১২ সালের তুলনায় গুজরাটে বিজেপির আসন ১৬টি কমেছে ও কংগ্রেসের আসন ১৯টি বেড়েছে। অন্যদিকে হিমাচল প্রদেশে বিজেপি ৪৪টি, কংগ্রেস ২১টি এবং বাম ও স্বতন্ত্র প্রার্থীরা তিনটি আসন পেয়েছে। আগেরবারের চেয়ে এ প্রদেশে বিজেপির আসন বেড়েছে ১৮টি আর কংগ্রেসের আসন কমেছে ১৫টি।
ফলাফল ঘোষণার পর এক বক্তৃতায় ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বলেছেন, গুজরাটে টানা ছয়বারের মতো জয়ের বিষয়টি নজিরবিহীন। গুজরাট ও হিমাচলের মানুষ উন্নয়নের পক্ষে ভোট দিয়েছে। তারা প্রমাণ করেছে দেশের মানুষ জিএসটির (গুডস অ্যান্ড সার্ভিসেস ট্যাক্স) মতো উন্নয়নের জন্য প্রস্তুত রয়েছে।
অন্যদিকে কংগ্রেস সভাপতি রাহুল গান্ধী এক টুইটার বার্তায় বলেছেন, আমরা জনগণের রায় গ্রহণ করছি এবং গুজরাট ও হিমাচলে জয়ের জন্য সেখানকার নতুন সরকারগুলোকে অভিনন্দন জানাচ্ছি। একই সঙ্গে তিনি ঘৃণাকে মর্যাদা, সৌজন্যবোধ ও সাহসের সঙ্গে মোকাবেলা করে নির্বাচনী প্রচারণা চালানোর জন্য দলীয় কর্মীদের ধন্যবাদ জানিয়েছেন।
গুজরাটে ২২ বছর ধরে ক্ষমতাসীন রয়েছে বিজেপি। টানা ছয়বারের মতো রাজ্যের বিধানসভা নির্বাচনে জয়ের সুবাদে বিজেপি পশ্চিমবঙ্গে বামফ্রন্টের একসময়কার রেকর্ডের অনেকটা কাছাকাছি চলে এসেছে। জৌতি বসুর নেতৃত্বাধীন বামফ্রন্ট পশ্চিমবঙ্গে সাতবার বিধানসভা নির্বাচনে জিতেছিল।
এবারে গুজরাটের নির্বাচনে কংগ্রেসের কাছ থেকে শক্ত চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হয়েছে বিজেপি। প্রথাগতভাবে বিজেপি সমর্থক বলে পরিচিত রাজ্যের প্যাটেল সম্প্রদায় মোদির দল থেকে মুখ ফিরিয়ে কংগ্রেসকে সমর্থন দিয়েছে।
একইভাবে গুজরাটের নিম্নবর্ণ সম্প্রদায়ের আন্দোলনে নেতৃত্ব দেয়া জিগনেশ মেওয়ানি ও আদিবাসী সম্প্রদায়ের আন্দোলনে পরিচিতি পাওয়া মুখ আল্পেশ ঠাকুর কংগ্রেসের সমর্থন নিয়ে প্রার্থী হয়েছেন। সদ্য কংগ্রেস সভাপতির দায়িত্ব নেয়া রাহুল গান্ধী গুজরাটে ভীষণ জোরালো নির্বাচনী প্রচারণা চালিয়েছেন।
গুজরাটে বিজেপি হারলে বিষয়টিকে রাহুল গান্ধীর কাছে ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির নির্বাচনী হার হিসেবে দেখা হতো। কারণ গুজরাট নরেন্দ্র মোদির নিজের রাজ্য এবং তার রাজনৈতিক উত্থান এ রাজ্য থেকেই। ১৩ বছর তিনি রাজ্যটির মুখ্যমন্ত্রী ছিলেন। অন্যদিকে রাহুল গান্ধী দলীয় নেতৃত্বে অভিষেকের পাশাপাশি মোদির ঘরের মাটিতেই তার বিরুদ্ধে তেজি প্রচারণা চালিয়েছেন।
ঘোষিত ফলাফল অনুযায়ী গুজরাটের শহর এলাকার আসনগুলো বিজেপির করায়ত্ত রয়ে গেছে। অন্যদিকে গ্রামীণ এলাকায় কংগ্রেস অনেকগুলো নতুন আসন বগলদাবা করেছে। জিগনেশ মেওয়ানি, আল্পেশ ঠাকুর ও হার্দিকের সহযোগীরা বিধানসভায় এসেছেন।
এর ফলে কংগ্রেস গুজরাটে সংসদীয় চর্চায় নিজেদের শক্তি সংহত করতে পারবে। দীর্ঘদিন ধরে রাজ্যের ক্ষমতার বাইরে থাকা কংগ্রেসের সংগঠন দুর্বল না হলে ফলাফল অন্য রকম হতে পারত বলে মন্তব্য করেছেন রাজনৈতিক পর্যবেক্ষক যোগেন্দ্র যাদভ।
গুজরাটের পাশাপাশি হিমাচলে জয়ের সুবাদে বিজেপি ভারতের ২৯টি রাজ্যের মধ্যে ১৯টি নিজেদের নিয়ন্ত্রণে নিতে সমর্থ হলো। এতে ২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনে দলটি বাড়তি শক্তি অনুভব করবে। অন্যদিকে কংগ্রেসের শাসনাধীন রাজ্য সংখ্যা পাঁচ থেকে কমে চার হলো।
এবার মিশন কর্ণাটক৷ হিমাচল প্রদেশ, গুজরাতের পর এবার কংগ্রেস শাসিত কর্ণাটকে ক্ষমতায় আসবে বিজেপি৷ গেরুয়া ঝড়ে উড়ে যাবে হাত শিবির৷ এই সুরেই সংবাদমাধ্যমের সামনে নিজের আশার কথা শোনালেন রাজ্যে দলের দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতা মুরলীধর রাও৷
দুই রাজ্যে বিধানসভা নির্বাচনে ফের মোদী ম্যাজিকের পর এমনই আশা ভাজপার কন্নড় নেতাদের৷কঠিন সংস্কারের পথে হেঁটেও যে সাফল্য এসেছে, তাতে প্রধানমন্ত্রীকেই অভিনন্দন জানিয়েছেন রাও৷ ২০১৮ সালে রাজ্যে বিধানসভা নির্বাচনের ফলেও সেই মোদিই হাতিয়ার হয়ে উঠবেন বলে জানিয়েছেন তিনি৷
গুজরাত নির্বাচনের ফলের দিকে গোটা দেশ তাকিয়ে ছিল, সেই অগ্নিপরীক্ষায় সসম্মানে উত্তীর্ণ গেরুয়া শিবির৷ আর এই ফলের প্রভাব অবশ্যই পড়বে কর্ণাটকের পরের বছরের নির্বাচনে৷ প্রভাবিত হবেন রাজ্যের মানুষ, আর তার প্রভাব পড়বে ভোট বাক্সে, বলে মত মুরলীধর রাও-এর৷
টানা বাইশ বছর ক্ষমতায় থাকা সত্ত্বেও ষষ্ঠবারের মতো গুজরাত শাসনের অধিকার অর্জন করেছে বিজেপি। একই সঙ্গে তারা কংগ্রেসকে ক্ষমতাচ্যুত করেছে উত্তর ভারতের পাহাড়ি রাজ্য হিমাচল প্রদেশে। এই রাজ্যে প্রতি পাঁচ বছর অন্তর সরকারের পরিবর্তন ঘটে। এবারও তার ব্যতিক্রম ঘটেনি৷
হিমাচল হারানোর ফলে দেশে কংগ্রেস শাসিত রাজ্যের সংখ্যা দাঁড়াল চারে। কর্ণাটক, পাঞ্জাব, মেঘালয় ও মিজোরাম। পাঞ্জাব ছাড়া বাকি তিন রাজ্যে আগামী বছর ভোট। দেশকে কংগ্রেস-মুক্ত করার যে ডাক নরেন্দ্র মোদী দিয়েছেন, তা ব্যর্থ করাই কংগ্রেস সভাপতি রাহুল গান্ধীর কাছে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ। আগামী বছর নির্বাচনে কর্ণাটককে কংগ্রেসের কাছ থেকে ছিনিয়ে নিতে নরেন্দ্র মোদী নতুন উদ্যমে নামছেন বলে বিজেপি সূত্রে খবর৷
বিধানসভার আসনের নিরিখে কর্ণাটকই এখন সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ রাজ্য, যা কংগ্রেসের হাতে আছে৷ তাই এখানে বিজেপি আলাদা গুরুত্ব দিচ্ছে বলে মত মুরলীধর রাও-এর৷
তবে গুজরাত নির্বাচনে প্রাপ্ত ভোটের হার বেড়েছে দুই দলেই। কিন্তু কমে গেছে বিজেপির জয়ের মার্জিন। এসব বিবেচনা করলে দেখা যাচ্ছে, ক্ষমতা ধরে রাখলেও এই ভোট বিজেপি রাজ্য নেতৃত্বের কাছে অনেকগুলো প্রশ্ন রেখে দিচ্ছে। সেই প্রশ্নের উত্তর পেতে কর্ণাটক নির্বাচন পর্যন্ত অপেক্ষা করলে যে চলবে না, তা বিলক্ষণ বুঝতে পারছেন বিজেপির রাজ্যস্তরের নেতারা৷