কক্সবাংলা ডটকম(১৮ এপ্রিল) :: বাণিজ্য বিষয়ে প্রায় পুরো বিশ্বের বিপরীত পথেই হাঁটছে বিশ্বের শীর্ষ অর্থনীতি যুক্তরাষ্ট্র।সাম্প্রতিক মাসগুলোয় বাণিজ্য নিয়ে কঠোর অবস্থান নিয়েছে দেশটি, যা নিয়ে ভারতের সঙ্গেও মতপার্থক্য তৈরি হয়েছে। তা সত্ত্বেও ভারতের সঙ্গে শক্তিশালী বাণিজ্য সম্পর্কের আভাস দিয়েছেন মার্কিন বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়া-বিষয়ক উপসহকারী সচিব অ্যালিস ওয়েলস।
সম্প্রতি পিটিআইকে দেয়া এক সাক্ষাত্কারে বাণিজ্যযুদ্ধের শঙ্কার মধ্যে মার্কিন-ভারত বাণিজ্য সম্পর্ক নিয়ে কথা বলেন তিনি।
ভারতের সঙ্গে মার্কিন সম্পর্কের সম্ভাব্যতা উপলব্ধি করার আগ্রহ প্রকাশ করেছে ট্রাম্প প্রশাসন। একই সঙ্গে ভারতের বাজারে মার্কিন কোম্পানিগুলোর জন্য সমান সুযোগ চাইছে।
সাক্ষাত্কারে ওয়েলস বলেন, গত দশকে মার্কিন-ভারত বাণিজ্য দ্বিগুণের বেশি বৃদ্ধি পেয়েছে। মার্কিন কোম্পানিগুলোর জন্য সমান সুযোগ নিশ্চিত করতে আমরা ভারতের সঙ্গে বাজারে প্রবেশাধিকার ও বাণিজ্য প্রতিবন্ধকতা মোকাবেলায় কাজ করে যাচ্ছি। আমাদের মূল অগ্রাধিকারের মধ্যে রয়েছে দেশটির বিমান চলাচল, জ্বালানি ও প্রতিরক্ষা খাত।
ট্রাম্প প্রশাসনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সহকারী সচিব না থাকায় এক বছরের বেশি সময় ধরে মন্ত্রণালয়ের গুরুত্বপূর্ণ দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়া ব্যুরোর দায়িত্ব পালন করছেন ওয়েলস। তিনি বলেন, বহু বছর ধরে মার্কিন-ভারত সম্পর্ক একটি ইতিবাচক পথে আবর্তিত হচ্ছে। এ সম্পর্কের দ্রুত বিকাশ অব্যাহত থাকবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেছেন।
ওয়েলস বলেন, যেকোনো বড় সম্পর্কের মতোই, মাঝে মধ্যে কিছু বিষয় বা ইস্যু নিয়ে আমাদের মতানৈক্য তৈরি হতে পারে। কিন্তু উভয় পক্ষের নেতারা একটা বিষয়ে একমত যে, কোনো একটা বিষয়ে সম্পর্ক ক্ষুণ্ন হওয়ার থেকে মার্কিন-ভারত সম্পর্ক অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ। আমার মনে হয় অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে আমাদের অনেক কিছুই করার রয়েছে।
সাক্ষত্কারে ওয়েলসকে হার্লে ডেভিডসন মোটরবাইকসহ কিছু নির্দিষ্ট পণ্যের ওপর বৃদ্ধি ও বাজারের প্রবেশগম্যতা নিয়ে প্রশ্ন করা হয়। এ বিষয়ে তিনি বলেন, ট্রাম্প প্রশাসন ভারতসহ যুক্তরাষ্ট্রের সব বাণিজ্য অংশীদারের সঙ্গে সুষ্ঠু ও পারস্পরিক বাণিজ্য সম্প্রসারণের চেষ্টা করছে। বাণিজ্য ইস্যুগুলো নিয়ে ভারতের সঙ্গে আমাদের খোলামেলা আলোচনা হয়েছে। আমাদের এপ্রিল ট্রেড পলিসি ফোরামেও এ বিষয়ে আলোচনা হয়েছে।
তিনি বলেন, ৫০টির বেশি আমদানি পণ্যের ওপর সাম্প্রতিক শুল্ক বৃদ্ধি নিয়ে আমরা আমাদের উদ্বেগের কথা জানিয়েছি। একইভাবে আমরা হার্লে ডেভিডসন মোটরসাইকেল নিয়েও সমানভাবে আলোচনা করেছি। সেসঙ্গে এসব আলোচনায় ভারত-মার্কিন বাণিজ্য সম্পর্কের অনেক ইতিবাচক দিক উঠে এসেছে।
উদাহরণস্বরূপ ওয়েলস বলেন, গত বছর দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ১ হাজার ১০০ কোটি ডলার বেড়ে সাড়ে ১২ হাজার কোটি ডলার ছাড়িয়েছে, যা একটি নতুন রেকর্ড।
যুক্তরাষ্ট্রের এ কূটনীতিক বলেন, আমরা উভয় দেশ ও অর্থনীতির জন্য লাভজনক ধারা অব্যাহত রাখতে চাই। বাণিজ্য ও অর্থনৈতিক বিষয়গুলো নিয়ে সাময়িক মতানৈক্য ঘটলেও মার্কিন-ভারত সম্পর্ক যথেষ্ট শক্তিশালী রয়েছে।
ওয়েলস বলেন, ঘনিষ্ঠ মিত্রদের সঙ্গে আমাদের বাণিজ্য নিয়ে ইস্যু রয়েছে, এটা স্বাভাবিক। তবে ভারতের সঙ্গে আমাদের শক্তিশালী সম্পর্কের সুবিধাগুলোর একটি হলো এই যে, আমরা আমাদের মতপার্থক্য নিয়ে খোলামেলাভাবে আলোচনা করতে পারি। এ ধরনের আলোচনা চলছে এবং সব স্তরেই তা অব্যাহত রয়েছে।
আমরা আমাদের বাণিজ্য উদ্বেগ নিয়ে অগ্রগতির আশা করছি। অন্যান্য বহু ক্ষেত্রে আমাদের অগ্রগতির পথে বাণিজ্য-বিষয়ক এসব সাময়িক ইস্যু কোনো বাধা হয়ে নেই বলে মন্তব্য করেন ওয়লেস।
সূত্র: পিটিআই
Posted ১২:৩৫ পূর্বাহ্ণ | বৃহস্পতিবার, ১৯ এপ্রিল ২০১৮
coxbangla.com | Chanchal Das Gupta