বৃহস্পতিবার ১৯শে সেপ্টেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ৪ঠা আশ্বিন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

শিরোনাম

বৃহস্পতিবার ১৯শে সেপ্টেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

শিরোনাম

ভারী বর্ষণে ডুবেছে কক্সবাজারের হোটেল-মোটেল জোন : দুর্ভোগে পর্যটকরা

শুক্রবার, ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪
3 ভিউ
ভারী বর্ষণে ডুবেছে কক্সবাজারের হোটেল-মোটেল জোন : দুর্ভোগে পর্যটকরা

বিশেষ প্রতিবেদক :: টানা ২০ ঘণ্টার ভারী বর্ষণে ডুবেছে কক্সবাজার শহর। সৈকত এলাকার হোটেল-রিসোর্ট, কটেজ জোনে জলাবদ্ধতা দেখা দেওয়ায় বিপাকে পড়েছেন পর্যটকেরা।

শুক্রবার বিকেল ৪টা পর্যন্ত অন্তত ২৫ হাজার পর্যটক আটকা পড়েছেন হোটেল কক্ষে। জলাবদ্ধতার কারণে তাঁরা কোথাও বের হতে পারছেন না। সৈকতের বিভিন্ন পয়েন্টে লাল নিশানা উড়িয়ে পর্যটকদের সমুদ্রে নামতে নিষেধ করা হচ্ছে।

গত ৫০ বছরে শহরজুড়ে এমন জলাবদ্ধতা দেখেননি জানিয়ে কক্সবাজার হোটেল গেস্টহাউস মালিক সমিতির সভাপতি আবুল কাশেম সিকদার বলেন, অপরিকল্পিত সড়ক উন্নয়ন, ঠিকমতো নালা পরিষ্কার না করা এবং শহরের পাহাড় নিধন বন্ধ না হওয়ায় এমন জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হচ্ছে।

হোটেলমালিক, স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও ব্যবসায়ীরা জানান, বৃহস্পতিবার সকাল ৯টায় বৃষ্টিপাত শুরু হলেও ভারী বর্ষণ শুরু হয় দুপুর সাড়ে ১২টায়। এরপর রাত সাড়ে ১২টা পর্যন্ত টানা ১২ ঘণ্টার ভারী বর্ষণে পুরো শহরের ৮ লাখ মানুষের জীবন অনেকটা থেমে যায়।

শুক্রবার সকাল ১০টায় আবার ভারী বর্ষণ শুরু হয়, সঙ্গে ঝোড়ো হাওয়া। বেলা সাড়ে তিনটা পর্যন্ত আরও কয়েক ঘণ্টার ভারী বর্ষণে শহরের প্রধান সড়ক, কলাতলী সৈকত সড়কসহ অন্তত ৩৫টি উপসড়ক ডুবে গেছে। বন্ধ রয়েছে যানবাহন চলাচল।

কক্সবাজার আবহাওয়া কার্যালয়ের সহকারী আবহাওয়াবিদ এ বি হান্নান বলেন, গতকাল বেলা ৩টা থেকে আজ বেলা ৩টা পর্যন্ত গত ২৪ ঘণ্টায় কক্সবাজারে ৫০১ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। চলমান মৌসুমে এটি এক দিনে সর্বোচ্চ বৃষ্টির রেকর্ড। ভারী বর্ষণ অব্যাহত থাকতে পারে।

বাতাসের তীব্রতাও বেশি থাকবে, যা দমকা ও ঝোড়ো হাওয়া আকারে ঘণ্টায় সর্বোচ্চ ৬০ কিলোমিটার বেগে বৃদ্ধি পেতে পারে।

হোটেলে আটকা পর্যটকেরা

শুক্রবার বেলা সাড়ে ১১টা। কলাতলী সৈকতের একটি গেস্টহাউস থেকে নারী-পুরুষের পাঁচজনের একটি দল সড়কে নেমে সমুদ্রসৈকতের দিকে রওনা দেয়। কিছু দূর হাঁটার পর সামনে পড়ে চার লেনের কলাতলী সৈকতসড়ক। পুরো সড়ক তখন বৃষ্টির পানিতে ডুবে আছে। যানবাহনের চলাচল নেই। চলছে ঝোড়ো হাওয়াসহ ভারী বৃষ্টি। সবাই আশ্রয় নেন একটি দোকানের ভেতর।

দলের একজন সোহেল আহমদ (৩৪) বলেন, গতকাল সকালে তাঁরা ঢাকা থেকে কক্সবাজার ভ্রমণে আসেন। তাঁরা গাড়ি থেকে নামার পর বৃষ্টির শুরু হয়। এরপর হোটেলে উঠে কয়েক ঘণ্টা অপেক্ষা করে বিকেল পাঁচটার দিকে সুগন্ধা সৈকতে নামেন।

কিন্তু নিষেধাজ্ঞার কারণে গোসল করা হয়নি কারও। শুক্রবারের অবস্থা আরও ভয়াবহ। বৃষ্টির থামাথামি নেই।

আরেক পর্যটক সাইফুর রহিম বলেন, পর্যটন শহরের এমন জলাবদ্ধতা কল্পনা করা যায় না। বৃষ্টির পানি নামার কোনো পথই নেই। সড়কের পাশের নালাগুলো ময়লা-আবর্জনায় ভরা।

যে কারণে বৃষ্টির পানি সড়কের ওপর জমে আছে। যানবাহন চলাচল বন্ধ থাকায় পর্যটকদের চরম দুর্ভোগ যাচ্ছে।

দেখা গেছে, সকাল সাতটা থেকে হোটেল–মোটেল জোনের পাঁচ শতাধিক হোটেল, গেস্টহাউস, কটেজ-রিসোর্ট বৃষ্টির পানিতে তলিয়ে গেছে।

কলাতলী সড়ক, সুগন্ধা সড়ক, সিগাল সড়ক পানিতে সয়লাব। এই তিন সড়কের দুই পাশসহ ঝিনুক মার্কেটের তিন হাজার দোকানপাট পানিতে নিমজ্জিত।

ভারী বর্ষণে টিকতে না পেরে সৈকতে থাকা ৩৫টির বেশি ঘোড়া এদিক-সেদিক ছুটছে। কিছু ঘোড়া দোকানপাট ও রেস্তোরাঁয় আশ্রয় নিয়েছে।

জলাবদ্ধতার কারণে হোটেল–মোটেল জোনের ১৮টি সড়ক ডুবে গেছে জানিয়ে কক্সবাজার হোটেল রিসোর্ট মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মুকিম খান বলেন, শুক্রবার ৫ শতাধিক হোটেলে অন্তত ২৫ হাজার পর্যটক অলস বসে থেকে সময় কাটাচ্ছেন।

ভারী বর্ষণের কারণে তাঁরা হোটেল থেকে কোথাও যেতে পারছেন না। অনেকে হোটেল বুকিং বাতিল করে গন্তব্যে ফিরে যাচ্ছেন। নানা কারণে তিন মাস ধরে পর্যটকের আগমন কমেছে, এ কারণে হোটেল ব্যবসাও জমছে না।

গেস্টহাউস মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক সেলিম নেওয়াজ বলেন, ভারী বর্ষণ হলেই হোটেল–মোটেল জোনে জলাবদ্ধতা দেখা দেয়। তখন পর্যটকদের ওপর দুর্ভোগ নেমে আসে। ব্যবসা-বাণিজ্যে মন্দাভাব দেখা দেয়।

গত জুলাই মাসেও কয়েক দফায় শহরজুড়ে জলাবদ্ধতা দেখা দিয়েছিল জানিয়ে সেলিম নেওয়াজ বলেন, তখন পৌরসভার মেয়র-কাউন্সিলররা জরুরি ভিত্তিতে নালা পরিষ্কার ও অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করে জলাবদ্ধতা নিরসনের উদ্যোগ নিয়েছিলেন।

গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে শেখ হাসিনা সরকারের পতন ঘটলে মেয়রসহ বেশির ভাগ কাউন্সিলর আত্মগোপন করেন। এখন জলাবদ্ধতা নিরসনের তেমন উদ্যোগ চোখে পড়ছে না।

দীর্ঘ ৫৩ দিন পর ১০ সেপ্টেম্বর থেকে সৈকতে পর্যটকের সমাগম ঘটছে। শুক্রবার অন্তত এক লাখ সমাগমের আশা ছিল জানিয়ে হোটেল মালিকেরা জানান, বৈরী পরিবেশে অধিকাংশ পর্যটক বুকিং বাতিল করেন।

 

3 ভিউ

Posted ১০:৫৫ অপরাহ্ণ | শুক্রবার, ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪

coxbangla.com |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

Editor & Publisher

Chanchal Dash Gupta

Member : coxsbazar press club & coxsbazar journalist union (cbuj)
cell: 01558-310550 or 01736-202922
mail: chanchalcox@gmail.com
Office : coxsbazar press club building(1st floor),shaheed sharanee road,cox’sbazar municipalty
coxsbazar-4700
Bangladesh
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
বাংলাদেশের সকল পত্রিকা সাইট
Bangla Newspaper

ABOUT US :

coxbangla.com is a dedicated 24x7 news website which is published 2010 in coxbazar city. coxbangla is the news plus right and true information. Be informed be truthful are the only right way. Because you have the right. So coxbangla always offiers the latest news coxbazar, national and international news on current offers, politics, economic, entertainment, sports, health, science, defence & technology, space, history, lifestyle, tourism, food etc in Bengali.

design and development by : webnewsdesign.com