বিশেষ প্রতিবেদক(১১ ডিসেম্বর) :: কক্সবাজারের দ্বীপ উপজেলা মহেশখালীর বহুল প্রত্যাশিত শাপলাপুর ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন ১২ ডিসেম্বর বৃহস্পতিবার অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। শান্তিপূর্ণভাবে নির্বাচন সম্পন্ন করতে নয়টি ভোটকেন্দ্রে বাড়তি নিরাপত্তা ব্যবস্থা করেছে স্থানীয় প্রশাসন। তবে নির্বাচনকে ঘিরে প্রার্থীদের শেষ মূহুর্তে নির্ঘুম প্রচার প্রচারণায় সরগরম হয়ে উঠছে পাহাড়ি এ জনপদটি। ভোটারদের মাঝে উৎসবের আমেজ দেখা গেলেও তারা অজানা এক শঙ্কায় রয়েছে। তাহলো নির্বাচন সুষ্ঠু,অবাধ ও শান্তিপূর্ণ হবে কিনা। তবে সুষ্ঠু নির্বাচন হবে এ আশায় হাল ছাড়েনি চেয়ারম্যান পদের ডজনাধিক প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীরা।
পোস্টারে পোস্টারে ছেয়ে গেছে উপজেলার শাপলাপুর ইউনিয়নের প্রতিটি রাস্তাসহ অলি–গলি। কনকনে শীত উপেক্ষা করে নির্বাচন নিয়ে বেশ আগ্রহ লক্ষ্য করা যাচ্ছে ভোটারদের মাঝে। নির্বাচন সুুষ্ঠু হলে এখানে ত্রিমূখী প্রতিদ্বন্দ্বীতা হবার সম্ভাবনা পরিলক্ষিত হচ্ছে। অপরদিকে নির্বাচন সুষ্ঠু ভাবে সম্পন্ন করতে প্রশাসনের পক্ষ থেকে ব্যাপক নিরাপত্তামূলক প্রস্তুতি গ্রহন করা হয়েছে ।
স্থানীয় নির্বাচন কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে,এ ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে ৯টি কেন্দ্রে মোট ভোটার সংখ্যা ১৯৫১৯ জন। এতে পুরুষ ভোটার ৯৮৫৭ জন ও মহিলা ভোটার ৯৬৬২ জন। চেয়ারম্যান পদে ১৬ জন, সাধারণ মেম্বার পদে ৫৬ জন ও সংরক্ষিত মহিলা মেম্বার পদে ১৪ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বীতা করছেন।
স্থানীয় নির্বাচন কমিশন সুত্র জানিয়েছেন, উক্ত ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন সুষ্ঠু ভাবে সম্পন্ন করতে ৯টি ভোট কেন্দ্রে ৯ জন ম্যাজিষ্ট্রেট, ১ জন জুডিসিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট, ১ প্লাটুন বিজিবি, ১টি র্যাবের টিম , পুলিশ, আনসার ব্যাটালিয়ন, এপিবিএন মোবাইল টিম ৩টি, বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশন কার্যালয়ের ৩ জন কর্মকর্তা দায়িত্বে থাকবেন।
এ নির্বাচনে রিটার্নিং অফিসারের দায়িত্বে রয়েছেন উপজেলা নির্বাচন অফিসার মোঃ জুলকার নাঈম। তিনি বলেন, ইউনিয়নের ৯টি ভোট কেন্দ্রে ৯ জন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। মহেশখালী উপজেলা চৌকি আদালতের জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মোঃ আব্বাস উদ্দিনকে বিচারিক হাকিম নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। তিনি গত মঙ্গলবার থেকে দায়িত্ব পালন করছেন।
নিয়োগকৃত নির্বাহী ম্যাজিস্ট্র্যট গণ হলেন-১ নম্বর ওয়ার্ডে কক্সবাজার জেলা প্রশাসনের সহকারী কমিশনার ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ইমরান জাহিদ, ২ নম্বর ওয়ার্ডে কক্সবাজার জেলা প্রশাসনের সহকারী কমিশনার ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মুহাম্মদ শামীম হোসাইন, ৩ নম্বর ওয়ার্ডে কুতুবদিয়া উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভ‚মি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সুপ্রভাত চাকমা, ৪ নম্বর ওয়ার্ডে রামুর সহকারী কমিশনার (ভ‚মি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট থোয়াইহলা চৌধুরী, ৫ নম্বর ওয়ার্ডে কক্সবাজার সদর উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভ‚মি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট শাহরিয়ার মুক্তার, ৬ নম্বর ওয়ার্ডে মহেশখালী উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভ‚মি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সুইচিং মং মারমা, ৭ নম্বর ওয়ার্ডে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আরাফাত হোসেন।এ ছাড়া সার্বিক দায়িত্বে থাকবেন মহেশখালী উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ জামিরুল ইসলাম।
ভোটারদের সাথে আলাপ কালে জানা যায়, চেয়ারম্যান পদে ১৬ জন প্রার্থীর মধ্যে কে হচ্ছেন বিজয়ী তা সহজে অনুমেয় না হলেও জনসমর্থনে ৩ প্রার্থী এগিয়ে রয়েছে।
তবে তারা জানান ত্রি–মূখী লড়াই হওয়ার সম্ভাবনা থাকলে ও ভোটের মাঠে এগিয়ে রয়েছেন মুক্তিযোদ্ধা মরহুম জাবের হেলালীর সন্তান ক্লিন ইমেজের যুবক সালাহ উদ্দিন কমল ও আওয়ামীলীগের দলীয় মনোনীত নৌকার প্রার্থী সাবেক চেয়ারম্যান আব্দুল খালেক চৌধুরী।
শাপলাপুর ইউনিয়নের ১ নং ওয়ার্ডের মহিলা ভোটার রফিকা বেগমসহ আরও অনেক ভোটার জানান, এবার তারা ক্লীন ইমেজের প্রার্থী নতুন মুখকে গুরুত্ব দেবেন এ নির্বাচনে। তিনি আরও জানান প্রতীক দেখে নয় এবার ভোটাররা প্রার্থী দেখে ভোট দেবে।
জানা গেছে, শাপলাপুর ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগে একক প্রার্থী, বিদ্রোহী শক্তিশালী প্রার্থী ও একজন স্বতন্ত্র আলোচিত প্রার্থী থাকায় নির্বাচনী মাঠে ত্রি–মূখী লড়াই হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। চেয়ারম্যান পদে ৭ জন প্রার্থী মূল প্রতিদ্বন্দ্বীতা করলেও ওই তিন প্রার্থীর মধ্যে প্রতিদ্বন্দ্বীতা সীমাবদ্ধ থাকতে পারে।
এরা হচ্ছেন যুমনা টিভির সিনিয়র রিপোর্টার সালাহ উদ্দিন কমল ( আনারস), আওয়ামী লীগের মনোনিত প্রার্থী এড.আব্দুল খালেক চৌধুরী (নৌকা) ও দিদারুল ইসলাম ( দোয়াত কলম)।
অন্যান্য প্রার্থীরা হচ্ছেন মহেশখালী উপজেলা আওয়ামী লীগের বন ও পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী সাইদুল হক ( অটোরিঙা), এড. রফিকুল ইসলাম (মোটর সাইকেল), নুরুল হক বর্তমান চেয়ারম্যান (ব্যাটারি), একে এম ইলিয়াস (টাইপ রাইটার) নুরুল হুদা ফরাজী (রজনী গন্ধা) ।
মহেশখালী উপজেলা নির্বাচন অফিসার ও শাপলাপুর ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনের রিটার্ণিং অফিসার মোঃ জুলকার নাঈম আরও জানান, অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠানের লক্ষ্যে প্রশাসনের পক্ষ থেকে সব প্রস্তুতি গ্রহন করা হচ্ছে।
