কক্সবাংলা ডটকম(২২ জানুয়ারী) :: ‘মানসিক চাপ’; মানুষের মাথায় শব্দ দুটি এখন বেশ ভালোভাবেই জেঁকে বসেছে। কর্মক্ষেত্রে কাজের চাপ, ই-মেইল, সেলফোন, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম— সব মিলিয়ে বেশ ভজকট অবস্থা।
বিশেষ করে সপ্তাহের প্রথম কর্মদিবসটিতে বোঝা যায়, কাকে বলে মানসিক চাপ। এ দিনগুলোয় ছুটির আমেজ যেন কাটতেই চায় না। আবার কাজের চাপও থাকে অন্য যেকোনো দিনের মতোই। সত্যি কথা বলতে, ‘মানসিক চাপ’ নামের বোঝাটি এখন মানবজাতির জন্য আগের যেকোনো সময়ের তুলনায় ভারী হয়ে উঠেছে।
তবে মানসিক চাপ আমাদের যতটা দুর্বল করে দেয় বলে আমরা মনে করি, আদতে তা ঘটে না। সাম্প্রতিক এক গবেষণায় বলা হয়েছে, মানসিক চাপকে যতটা ক্ষতিকর মনে করা হয়, তা আসলে ততটা নয়। বরং এ মানসিক চাপ সম্পর্কে যদি আমাদের মানসিকতাটাকেই বদলে দেয়া যায়, তাহলে তা হয়ে উঠতে পারে আমাদের জন্য লাভজনক। খবর ডেইলি মেইল।
জার্মানির ইউনিভার্সিটি অব মানহাইমের বিশেষজ্ঞদের পরিচালিত ওই গবেষণায় উঠে আসে, কর্মক্ষেত্রে কাজসংক্রান্ত মানসিক চাপকেই কাজে লাগিয়ে এর ফলে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার বদলে উপকৃত হওয়া সম্ভব। তবে তার জন্য এ চাপ সম্পর্কে আমাদের দৃষ্টিভঙ্গিতে পরিবর্তন আনতে হবে।
শিক্ষা, চিকিত্সা, আইটি ও সামাজিক সেবাসহ ভিন্ন খাতের কয়েকটি প্রতিষ্ঠানের ১৭১ জন কর্মীকে পর্যবেক্ষণের ভিত্তিতে এ গবেষণা চালান বিশেষজ্ঞরা। এতে তারা দেখতে পান, কর্মীদের মধ্যে যারা ইতিবাচক মানসিকতার অধিকারী, কাজের চাপকে তারা একটু ভিন্নভাবে মোকাবেলা করতে সক্ষম হন।
কাজের ক্রমবর্ধমান চাপ এদের দুর্বল তো করতেই পারে না, বরং পর্বতসমান বাধা অতিক্রমের মানসিকতা নিয়ে এরা আরো চাঙ্গা হয়ে ওঠেন। এ কারণে সারা সপ্তাহ কাজের চাপ সামলানোর পর ছুটির দিনগুলোকে আরো ভালোভাবে উপভোগ করতে সক্ষম হয়ে ওঠেন তারা।
এ বিষয়ে মনোবিজ্ঞানী ড. মেগান অ্যারোলের অভিমত হলো, মানসিকতার পরিবর্তনই কাজের চাপকে বোঝার বদলে শক্তি বানিয়ে তুলতে সক্ষম।
কাজসংক্রান্ত দৃষ্টিভঙ্গি পরিবর্তনের উপায় হিসেবে বেশকিছু পদক্ষেপ গ্রহণের পরামর্শ দিয়েছে মনোবিজ্ঞানীরা।
এর প্রথমটি হলো, যে কাজকে অনেক বেশি কঠিন ও চাপ সৃষ্টিকারী মনে হবে, সেখান থেকে শিক্ষণীয় বিষয়গুলোকে আলাদা করে মাথায় গেঁথে নিতে হবে।
দ্বিতীয়ত. নিজেকে ভালোবাসতে জানতে হবে।
তৃতীয়ত. প্রতিদিনই যেসব বাধা অতিক্রম করতে হবে, সেগুলো সম্পর্কে নিজেকে বারবার মনে করিয়ে দিতে হবে। এতে প্রতিটি নতুন চ্যালেঞ্জই হয়ে দাঁড়াবে উদ্দীপক এক অভিজ্ঞতা।
সর্বোপরি, কাজের প্রতি ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি মানে এই নয়, সব কাজেই ঝাঁপিয়ে পড়তে হবে। বরং কোন কাজ করা যাবে, আর কোনটি করা যাবে না; তার সীমানা আগে থেকেই ঠিক করে রাখতে হবে। সেটা কর্মক্ষেত্র, পরিবার, বন্ধু-বান্ধব বা আত্মীয়-স্বজন— যে ক্ষেত্রেই হোক না কেন, এ সীমা অতিক্রম করা চলবে না।
Posted ২:২৯ পূর্বাহ্ণ | মঙ্গলবার, ২৩ জানুয়ারি ২০১৮
coxbangla.com | Chanchal Das Gupta